
ফরিদপুর পৌরসভার আদমপুর এলাকায় পৌরসভা বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় প্রায় চার একর জায়গার উপর রাখা বিপুল পরিমাণ বর্জ্যের ভাগাড়ে গত ১৫-১৬ দিন ধরে আগুন জ্বলছে। এতে তেজস্ক্রিয়া ও কালো ধোয়ায় বিরুপ প্রভাব পড়ছে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে।
স্থানীয়দের দাবী, এতে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন প্লান্টের উত্তর অংশের তিন গ্রামসহ নদী বন্দর এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা। এদিকে এটিকে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় উল্লেখ করে পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে দূষণ বন্ধের পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের অদূরে আদমপুর এলাকায় পৌরসভা বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ এলাকার সাথে অন্তত চার একর জায়গার উপরে রাখা হয়েছে বাসাবাড়ী ও বাণিজ্যিক এলাকা থেকে সংগৃহীত বর্জ্য। বিপুল পরিমাণ এই বর্জ্যে প্রায় ১৫ দিন ধরে অগুন দেয়া হয়েছে। রাত নামতেই বাড়ে আগুনের লেলিহান শিখা ও আকাশে ছড়িয়ে পড়ে কালো ধোয়া।
স্থানীয়দের দাবী, একটানা দুই সপ্তাহের অধিক সময় ধরে আগুন জ্বালিয়ে রাখায় বিরুপ প্রভাব পড়ছে প্লান্ট থেকে দেড় কিলোমিটারেরও অধিক দূরের এলাকা পর্যন্ত। ওইসব এলাকার মানুষ আগুনের কালো ধোয়ার সাথে পোড়া পলিথিন, প্লাস্টিকসহ অন্যান্য দ্রব্যের তেজস্ক্রিয়ায় চোখ জ্বালাপোড়াসহ শ্বাস কষ্টে ভুগছেন। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলেও দাবী তাদের।
স্থানীয়রা আরো জানান, প্লান্টের উত্তর অংশের আইজউদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী, পরান বিশ্বাসের ডাঙ্গী ও মোস্তফার ডাঙ্গী গ্রামের কয়েক শত পরিবারের কয়েক হাজার মানুষ পরিবেশ দূষণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি বিরুপ প্রভাবে নদী বন্দর এলাকার ব্যবসায়ীদেরও বিপাকে পড়তে হচ্ছে জানিয়ে অবিলম্বের পরিবেশের বিপর্যয় থেকে তাদের রক্ষার্থে আগুণ নেভানোর দাবী আক্রান্তদের।
আর জেলার পরিবেশ অধিদপ্তর এটিকে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় হিসেবে দেখছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাঈদ আনোয়ার জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অপরদিকে, ফরিদপুর পৌরসভার দ্বায়িত্বে থাকা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক চৌধুরী রওশন ইসলাম সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে জেনে তাৎক্ষণিক আগুন নেভানোর নির্দেশ দেন। যদিও পৌরসভার পানিবাহী সাধারণ গাড়ী দিয়ে বুধবার বিকালে এই আগুন নিয়ন্ত্রক করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তারা জানান, পৌরসভার সাধারণ পানিবাহী গাড়ী দিয়ে এতো বড় আগুন নেভানো সম্ভব নয়। এই আগুন সম্পুর্ণরুপে নেভাতে হলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ী দরকার।
যদিও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ওই আগুন নেভাতে যাবেন না বলে জানিয়েছেন। তারা জানান, কেউ স্বেচ্ছায় আগুন লাগালে সেটা নেভাতে যান না তারা। এদিকে এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও সাড়া দেননি তিনি।