ফরিদপুরে পেনশনের টাকা নিয়ে জটিলতা, বিপাকে ৪৯ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারি

Faridpur Protidin
ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশের সময়: সোমবার, ১২ মে, ২০২৫ । ৪:০২ পিএম
ফরিদপুরে পেনশনের টাকা ব্যাংক হিসাবে যুক্ত হয়ে আবার ফেরৎ যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ফরিদপুর সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে পেনশনভোগী ৪৯ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর সোনালী ব্যংক কর্পোরেট শাখার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ইনচার্জ) শেখ আমির খসরু বলেছেন এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের সমস্যা। ‘ডাবল এন্ট্রি’ হওয়ায় এক ব্যাংকের ৪৯ গ্রাহক এ সমস্যায় পড়েছেন।  তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন আগামী দুই একদিনের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
এ ঘটনার ভুক্তভোগী ফরিদপুরের প্রবীণ সাংবাদিক, সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শাহজাহান (৮০) । তিনি ফরিদপুর শহরের আলীপুর মহল্লার বাসিন্দা। আজ থেকে ২৩ বছর আগে  ২০০২ সালের ৩১ জুলাই শরীয়তপুরের নড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে অবসরে যান।
পরবর্তিতে তিনি সাংবাদিকতায় যোগ দেন। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) দিয়ে তিনি সাংবাদিক জীবন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি বার্তা-২৪ এর উপদেষ্টা সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছেন।
সোনালী ব্যাংকের ফরিদপুর কর্পোরেট শাখায় তার হিসেব নম্বরে (একাউন্টে) গত ২৩ বছর ধরে অবসরকালীন ভাতা, উৎসব ভাতাসহ আনুষঙ্গিক টাকা ঠিকমত জমা হয়। গত ২৩ বছরে এর কোন ব্যত্যয় ঘটেনি। কিন্তু গত ৪ মে তার মুঠোফোনে আসা দুটি মেসেজ থেকে তিনি একাধারে যেমন বিস্মিত হন অপরদিকে হয়ে পড়েন শঙ্কিত।
প্রবীণ সাংবাদিক প্রফেসর মো. শাহজাহান বলেন, গত ৪ মে তার মুঠোফোনে আসা খুদে বার্তা থেকে তিনি জানতে পারেন, সোনালী ব্যাংকে তার হিসেবে পেনশন বাবদ পাওয়া এপ্রিল মাসের টাকা জমা হয়েছে। এর কয়েক মিনিট পরে মুঠোফোনে আসা আরেকটি ক্ষুদে বার্তা থেকে তিনি জানতে পারেন পেনশন বাবদ যে পরিমাণ টাকা তার হিসেবে যুক্ত হয়েছিল তা কেটে দেওয়া হয়েছে।
মো. শাহজাহান আরও বলেন, এ ব্যাপারে পরদিন ৫ মে তিনি ব্যাংকে যোগাযোগ করলে ব্যাংকের কোন কর্মকর্তা সদুত্তর তাকে দিতে পারেন নি। পরে তিনি হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী ৬ মে তার হিসেব থেকে এক হাজার টাকা তোলেন এবং ব্যাংক থেকে তার হিসাবের বিপরীতে একটি ‘স্টেটমেন্ট’ সংগ্রহ করেন। সে ‘স্টেটমেন্ট’ থেকেও দেখা যায় গত ৪ মে পেনশনের টাকা তার হিসেবে জমা হওয়ার পর আবার কেটে নেওয়া হয়েছে এবং নতুন করে কোন টাকা তার হিসেবে যুক্ত হয়নি।
পেনশন যুক্ত না হওয়া সোনালী ব্যাংকের  ৪৯ জন গ্রাহকের অনেকেরই সারা মাস চলে পেনশনের এই  টাকায়। তদুপরি সামনে পবিত্র ঈদুল আজহা। পেনশনের টাকা না এলে ঈদ বোনাসও আটকে যাবে। তাহলে কিভাবে তারা ঈদ করবেন। মো. শাহজাহানের মত এ ভাবনা তাদেরকেও শঙ্কিত করে তুলেছেন বলে জানায় সোনালী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা।
‘এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের সমস্যা’-দাবি করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর সোনালী ব্যংক কর্পোরেট শাখার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ইনচার্জ) শেখ আমির খসরু সোমবার (১২ মে) সকালে জানান, শুধু প্রফেসর মো. শাহজাহানই নয় এ সমস্যা এ ব্যাংকের মাধ্যমে পেনশন ভোগকারী আরও ৪৯ জনের ক্ষেত্রে হয়েছে। ‘বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ‘ডাবল এন্ট্রি’ করার এ সমস্যা হয়েছে’-মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে এ সমস্যা নিয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি, আশা করছি আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

প্রিন্ট করুন