
ফরিদপুর সদর উপজেলার হোগলাকান্দি গ্রামে মোবাইলে জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ইজ্জল শেখ (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে মারধর ও বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
নিহত ইজ্জল শেখ ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি এক ছেলে ও দুই মেয়ের জনক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদের দিন শনিবার দুপুরে হোগলাকান্দি বাজারের পাশে নদীর তীরে মোবাইলে লুডু খেলেন ইজ্জল শেখ ও স্থানীয় হানিফ শেখ। খেলা শেষে মোবাইল খুঁজে না পেয়ে হানিফ শেখ তাকে ডেকে এনে মারধর করেন। পরে ইজ্জল মোবাইলটি খুঁজে এনে ফিরিয়ে দেন।
এরপর বিকেলে আবারও হানিফ ও তার সহযোগীরা ইজ্জলকে মারধর করেন। কিছু সময় পর ইজ্জল শেখকে রাস্তার পাশে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা জানান, তার মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল। পরে হানিফের লোকজন তাকে তুলে নিয়ে নদীর পানিতে চুবিয়ে রেখে যায়। রাত ৯টার দিকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্ত্রী নবীরন বেগম অভিযোগ করেন, ‘মারধরের পর আমার স্বামীর মুখে বিষ ঢেলে নদীতে চুবিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এখন মিটমাটের প্রস্তাব ও হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমি গরিব হতে পারি, কিন্তু স্বামীর হত্যার বিচার চাই।’
নিহতের বোন ফরিদা খাতুন বলেন, ‘ভাই মারা যাওয়ার আগে একটি কাগজে কারা তাকে মেরেছে, সেই নামগুলো লিখে গেছে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আলতাফ হুসাইন বলেন, ‘এলাকায় মাদক ও জুয়ার অবাধ বিস্তার ঘটেছে। অনেক চেষ্টার পরও তা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। ইজ্জল শেখের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। পুলিশকে তদন্তের অনুরোধ করছি।’
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। চিকিৎসকদের প্রাথমিক ধারণা, মৃত্যু বিষক্রিয়ায় হয়েছে। থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। তবে পরিবার মারধর ও হত্যার অভিযোগ দিয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’