“একজন রিকশা চালকের গল্প”

হারুন-অর-রশীদ
প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫ । ১:০৬ পিএম

‘ভাপস্যা গরম। গতর দিয়ে দরদরিয়ে ঘাম ঝরছে। তবুও থেমে নেই রিকশার পেট্রল। বিড়বিড় করে নিজের সাথে নিজ কথা বলে চলছে। কি বলছে- সবকিছুই যেন অস্পষ্ট।’

নাম তার রহিম খাঁ (ছদ্মনাম)। গ্রাম ফরিদপুর সদরের কোনো একটি এলাকায় হলেও, থাকেন শহরের টিনের ভাঙাচোরা ভাড়া ঘরে। ছেলে আছেন, তবে ভাত দেননা তাকে। সারাদিন রিকশা না চালালে কিস্তির টাকাও জোগাড় হয়না, আর তো দুমুঠো বুড়ো-বুড়ির খাবার!

রিকশায় মটর বা ইঞ্জিন না থাকায়, পায়ে চালানো পেট্রলই তার শেষ ভরসা। আমি শহরের সোনালী ব্যাংক থেকে পুলিশ লাইন্সে এলাম। পথেমধ্যে একটুআধটু কথা হলো তার সাথে। খুব আক্ষেপ জীবন নিয়ে তার। বলা চলে কষ্টে কষ্টেই তার জীবন। সেই ছোট্ট সময়ে মা-বাবাকে হারিয়েছেন। হারিয়েছেন ভাই-বোনদেরও। পথে পথে জীবন। মানুষের লাঠি গুঁতাও কম খাননি জীবনে। তাইতো বেঁচে থাকাটা বিস্বাদে যেন রুপ নিয়েছে আজ।

এরপর জীবন নিয়ে প্রশ্ন করলেই, ‘এক বাক্যে বললেন’- “জীবনডা পুইরা গেসে রে বাজান, সুখ টা কি সেটা জীবনে কপালে দেখলুম না। সবই যেন কেমন হয়ে গেছেরে বাজান। এহন দেহ থ্যাইকা দমটা চলে গেলেই হয়। যদি আল্লাহ ও-ই পারে এট্টু সুখ দেয়।” অতঃপর বিড়বিড় করে কথা বলতে বলতে রিকশা নিয়ে চলে গেলেন চোখের আড়ালে।

লেখক: হারুন-অর-রশীদ, সংবাদকর্মী, ফরিদপুর।

© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

প্রিন্ট করুন