ফরিদপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে অপহ্নত ব্যক্তিকে উদ্ধার, অপহরণকারী আটক

Faridpur Protidin
ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশের সময়: সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫ । ৩:১২ পিএম
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় অপহরণের শিকার শেখ জামাল উদ্দিন (৩৬) নামে এক এজেন্সী (বিদেশগামী অফিস) কর্মচারীকে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি আভিযানিক দল। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত অপহরণকারী সাবেক প্রবাসী শফিকুল ইসলাম মাতুব্বরকে (৩৫) আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় মামলা হয়েছে।
সোমবার (৩০ জুন) ভোররাতে যৌথবাহিনীর টহল দল জেলার ভাঙ্গা উপজেলার পশ্চিম আলগি এলাকার একটি পরিত্যক্ত খড়ের ঘরে অভিযান চালিয়ে অপহৃত শেখ জামালকে জীবিত ও অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে। এ সময় অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়।
অপহরণকারী শফিকুল ইসলাম মাতুব্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার পশ্চিম আলগী গ্রামের মনতাজ মাতুব্বরের ছেলে এবং অপহৃত শেখ জামাল শেরপুর জেলার নলিতাবাড়ী উপজেলার বাগকুচি গ্রামের বাসিন্দা। তারা দুইজনই এক সময় বিদেশে থাকতেন। বিদেশ থেকে ফিরে শেখ জামাল ঢাকার একটি বিদেশ যাওয়া এজেন্সীতে চাকরি শুরু করেন।
সেনা সূত্রে জানা যায়, রবিবার বিকেলে ঢাকার পল্টন এলাকা থেকে শেখ জামাল নামে একজনকে অপহরণ করে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় অজ্ঞাত এক স্থানে আটকে রাখা হয়েছে। অপহরণকারীরা ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণের শিকার শেখ জামালকে মারধর করা হচ্ছে। রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এমন একটি বিষয় নিয়ে ফরিদপুর আর্মি ক্যাম্পে অপহ্নতের স্ত্রী নাসিমা আক্তার (৩২) অভিযোগ করেন। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই সোমবার সকালে ১৫ রিভারাইন ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নের ফরিদপুর আর্মি ক্যাম্প ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা তথ্য ও স্থানীয় সূত্রের ভিত্তিতে ভাঙ্গা উপজেলার পশ্চিম আলগি এলাকায় একটি পরিত্যক্ত খড়ের ঘর থেকে অপহৃত শেখ জামালকে জীবিত ও অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। একই সাথে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়। আটককৃত শফিকুল ইসলামকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ভাঙ্গা থানা সূত্রে জানা যায়, শেখ জামাল বিদেশে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে শফিকুল ইসলামের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু তিনি সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে ঢাকায় আত্মগোপনে চলে যান। প্রতারিত হয়ে শফিকুল ইসলাম আরো কয়েকজনকে সাথে নিয়ে অপহরণের পরিকল্পনা করেন এবং ঢাকার পল্টন এলাকা থেকে জামালকে অপহরণ করে ভাঙ্গার আলগী এলাকায় আটকিয়ে রেখে শেখ জামালের পরিবারের কাছে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে শেখ জামালের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে সেনা বাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে জামালকে উদ্ধার করেন। ঘটনাস্থল থেকে অপহরণকারী শফিকুল ইসলামকেও আটক করা হয়। এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় শেখ জামাল বাদি হয়ে শফিকুলের নামে মামলা করেছেন। আটককৃত আসামীকে সোমবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার ওসি (তদন্ত) ইন্দুজিৎ মল্লিক জানান, অপহরণকারী শফিকুল ও অপহরণের শিকার জামালউদ্দিনের মধ্যে বিদেশ যাওয়ার টাকা নিয়ে ঝামেলা চলছিল। এক পর্যায়ে বিদেশ যাওয়া টাকা নিয়ে জামালকে অপহরণ করে আটকিয়ে রেখে মুক্তিপন দাবি করা হয়। এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় মামলা হয়েছে। আটককৃত আসামীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সেনা ক্যাম্প জানিয়েছেন, এলাকায় অবৈধ অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে রয়েছে সেনাবাহিনী। অপরাধ দমনে সেনা ক্যাম্পসমূহকে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের সকলকে অনুরোধ করেছেন।
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

প্রিন্ট করুন