শীতের আগমনী বার্তায়ও ফরিদপুরে কমছে না সবজির বাজার

মফিজুর রহমান শিপন, ফরিদপুর:
প্রকাশের সময়: শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫ । ১:২২ পিএম

শীতের আগমনী বার্তার সাথে নেই সবজির বাজার দর কমার খবর। এখনো চড়া বেশিরভাগ সবজির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানেও বাজারে দামের তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকাল থেকে ফরিদপুর শহরের সবজির অন্যতম বড় পাইকারি বাজার হাজী শরিয়াতুল্লাহ বাজার। প্রতিদিন ভোরে এই বাজারে বিভিন্ন প্রকারের সবজি নিয়ে আসে বিক্রেতারা। বেশিরভাগ সবজিই বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা মধ্যেই।

ফরিদপুরের স্থানীয় চাহিদা পূরনে বেশিরভাগ সবজি আসছে যশোর, মাগুরা অঞ্চল থেকে।

শুক্রবার সকালের হাজী শরিয়াতুল্লাহ পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়, পটল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০, কাকরোল ৬০-৭০ টাকা, মুলা ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ১৫-২০ টাকা, প্রকারভেদে বিভিন্ন কচুমুখি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত।

এছাড়াও আগাম শীতকালীন সবজির মধ্যে স্থানীয় টমেটো ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, আমদানিকৃত টমেটো ১০০ টাকা, সিম ১৪০ টাকা, ফুলকপি ৯০-১০০ ও ধনিয়া পাতা বিক্রি হচ্ছে ২’শ টাকা কেজি দরে। তবে বাজারে এখনো রয়েছে কাঁচামরিচ অতিরিক্ত ঝাঁজ।

গত সপ্তাহে বাজারে খুচরা ৩০০ টাকার উপরে কেজিপ্রতি কাঁচামরিচ বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে তা কমেছে। বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৭০ টাকার মধ্যে ।

বিক্রেতারা বলছেন, ধারাবাহিক বৃষ্টিতে সবজির ক্ষেত ক্ষতির মুখে রয়েছে যে কারণে বাজার এখনো ঊর্ধ্বমুখী। স্থানীয়ভাবে উৎপাদন বাড়লে কমে আসবে দাম বলেও জানান তারা।

এ বাজারের সবজি কিনতে আসা রেজাউল কমির বিপুল জানান, এখনো শাকসবজির চড়া দাম। শীতকালিন সবজির বাজার নিয়ন্ত্রণ আসতে মনে হয় আরো সময় লাগবে। তিনি বললেই, এক মুঠা লাল শাক ২০ টাকা দরে কিনতে হয়েছে, একটি লাউ মাঝারি আকারের কিনতে হয়েছে ৬০ টাকা দিয়ে।

রিক্সসা চালক হাবিব মোল্লা কাঁচা তরকারি কিনে ফেরার পথে জানালেন, বাজার দর এ সময়ে যদি এমন হয় তাহলে স্বল্প আয়ের মানুষগুলো কি ভাবে চলবে।

বাজারে গিয়ে দেখা যায়, শীতকালীন আগাম সবজি সিম টমেটোসহ অনান্যে সবজি আছে সবগুলোর অনেক চড়া দর।

স্কুল শিক্ষক মনিরুজ্জামান বলেন, বাজারে যে সকল নতুন সবজি উঠছে তা ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে আমাদের। এখনো কাঁচা মরিচের দাম কমে নাই। যদি দাম কমে তাহলে আমরা সামান্য হলেও কিনতে পারবো এবং সুস্থভাবে চলতে পারবো।

স্থানীয় আরেক ক্রেতা মফিজুর রহমান শিপন জানান, বাজারে শীতকালীন আগাম সবজিগুলো আসছে কিন্তু চাহিদা বেশি দামও অনেক বেশি। এখন তুলনামূলক মানুষের যেখানে এক কেজির প্রয়োজন সেখানে হাফ কেজি বা তারও কম নিয়ে চলছে। যেহেতু উৎপাদন কম যার কারণে দাম বেশি। এর ফলে সাধারণ মানুষের সবজি কিনে খাওয়াটা অনেক কষ্টের ব্যাপার।

সবজি বিক্রেতা আবু জাফর শেখ জানান, এখন সবজির দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আছে। যদিও শীতকালীন নতুন সবজিগুলো দাম একটু বেশি। এছাড়া বাজারের সরবরাহ যেমন দর-দামও ঠিক তেমন, সরবরাহ না বাড়লে দামের নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শাহদুজ্জামান বলেন, গত দুই মাসে বেশ কয়েক বার ধারবাহিক বৃষ্টির কারণে সব ধরনের সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়েছে যে কারণে এখন বাজারে তার প্রভাব পড়ছে। আমরা তার পরেও চাষীদের সব সময় সরকারি সহায়তা দিয়ে জাগিয়ে তুলে রাখছি, যাতে হতাশ না হয়ে আবার ক্ষেতে ফিরে আবাদে মনোযোগ দিতে পারে ।

© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

প্রিন্ট করুন