ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পদ্মা নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোতে আবারও শুরু হয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। বছর জুড়ে নদীর ভয়াল তাণ্ডবে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে অসংখ্য পরিবার। এবারে নতুন করে শুরু হওয়া ভাঙনে আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার আকোটের চর ইউনিয়নের শয়তানখালী ও ছলেনামা গ্রাম এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়া আকোটের চর গুচ্ছ গ্রামের পরিস্থিতি এখন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এই তিন এলাকার প্রায় ২’শ পরিবার নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মালেক প্রামানিক বলেন, বছরের পর বছর ধরে আমরা ভাঙনের শিকার হচ্ছি। এখন আবার নদী খেয়াল করেছে আমাদের ঘাড়ে। ঘর-বাড়ি ছেড়ে কোথায় যাব, কিছুই বুঝতে পারছি না।
শয়তানখালী ঘাটের চা বিক্রেতা মোতালেব বেপারী জানান, এই এলাকায় এবছর নদীতে প্রায় শতাধিক বিঘা জমি ও গাছপালা নদীগর্ভে চলে গেছে। অনেক পরিবার ঘরবাড়ি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত আছি এবং জরুরি ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা চলছে বলে তিনি দাবি করেন।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন জানান, পদ্মার পানি কমতে শুরু করলেও ভাঙনের ঝুঁকিও বাড়ছে। আমরা ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলোতে পর্যবেক্ষণ করে ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১৩ হাজার জিও ব্যাগ ফেলেছি । নতুন করে যে ভাঙন দেখা দিয়েছে সে বিষয়ে খুব শিগগিরই টেকসই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়দের জোর দাবি, ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ও দ্রুত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। না হলে আগামী দিনে এই অঞ্চল থেকে বহু পরিবার স্থায়ীভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়বে।

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশের সময়: রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫ । ১১:৫২ এএম