অ্যান্টিবায়োটিক এখন অনেক ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হচ্ছে। কারণ জীবাণু ধীরে ধীরে এসব ওষুধের প্রতি প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে নিচ্ছে। এই সংকট মোকাবিলায় বিজ্ঞানীরা আবারও ফিরে যাচ্ছেন শতবর্ষ পুরোনো এক চিকিৎসা পদ্ধতি—ফেজ থেরাপির দিকে।
ফেজ থেরাপিতে ব্যবহার করা হয় বিশেষ ধরনের ভাইরাসকে, যাদের বলা হয় ব্যাকটেরিওফেজ। এরা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে আক্রমণ করে ধ্বংস করতে সক্ষম। ১৯২০-এর দশকে এ পদ্ধতি জনপ্রিয় ছিল, তবে পরে অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার ও সহজলভ্য হওয়ায় ফেজ থেরাপি ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়।
সম্প্রতি হিব্রু ইউনিভার্সিটি অব জেরুজালেম ও মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা নতুন এক গবেষণায় দেখিয়েছেন, এই থেরাপি অ্যান্“সুপারবাগ” মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে বৈজ্ঞানিক জার্নাল সেল রিপোর্টস-এ।
তবে এখানে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। যেমন—যেভাবে ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, সেভাবেই তারা ফেজের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধী হয়ে উঠতে পারে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ব্যাকটেরিয়া ও ফেজের এই ‘লড়াইয়ের কৌশল’ ভালোভাবে বুঝতে পারলেই ভবিষ্যতে আরও কার্যকর চিকিৎসা তৈরি করা সম্ভব হবে।
গবেষণায় দেখা গেছে, Bacillus subtilis নামের এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া ফেজ আক্রমণ ঠেকাতে YjbH নামের একটি প্রোটিন ব্যবহার করে। এই তথ্য ভবিষ্যতে চিকিৎসা উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী দেবনাথ ঘোষাল বলেন, আমরা আশা করি, আবারও ফেজ থেরাপি চালু করে সংক্রমণের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের বাইরেও নতুন চিকিৎসা তৈরি করা সম্ভব হবে। অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে, শত বছর পরও ফেজ থেরাপির সুফল নতুন করে ভাববার সময় এসেছে।

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময়: সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫ । ১১:৫৬ এএম