সালথায় হালি পেঁয়াজের চারা রোপণের ধুম পড়েছে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময়: সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ । ১০:২১ এএম

পেঁয়াজের রাজধানী খ্যাত ফরিদপুরের সালথায় ফসলি জমিতে হালি পেঁয়াজের চারা রোপণের ধুম পড়েছে।

এখানকার কৃষকদের প্রধান অর্থকরী মসলা জাতীয় ফসল পেঁয়াজ। এর চাষ করে বছরের অর্থনৈতিক চাহিদা মিটিয়ে থাকেন তারা।

যেকারণে তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে প্রতিদিন খুব সকালে মাঠে নামেন কৃষকেরা। সবগুলো জমিতেই দল বেঁধে পেঁয়াজ উৎপাদনের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। মোট কথা দম ফেলার ফুসরত নেই তাদের।

 

সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সালথা উপজেলায় ১২হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। ফরিদপুর জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হালি পেঁয়াজ চাষ হয়ে থাকে সালথা উপজেলায়।

তবে গতবারের উৎপাদিত পেঁয়াজের আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় অনেক কৃষক এবার অন্য ফসল আবাদ করছেন বলে জানা গেছে।

 

সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঠান্ডা ও কুয়াশা উপেক্ষা করে খুব সকালে একেকটা জমিতে দুজন করে শ্রমিক ছোট হাত নাঙ্গল দিয়ে জমির গুড়া মাটির ফাঁক করে দিচ্ছেন আর ২৫-৩০ জনের একদল শ্রমিক সারিবদ্ধভাবে বসে সেখানে পেঁয়াজের চারা রোপণ করছেন।

অন্যদিকে, আরো এক গ্রুপ শ্রমিক পেঁয়াজের চারা (হালি) উত্তোলন করে এনে জমিতে কর্মরত শ্রমিকের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন। এরপর জমিতে চারা রোপণের কাজ শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গেই শ্যালোমেশিন দিয়ে জমিতে সেচ ও সার-ওষুধ ছিটিয়ে দেয়া হচ্ছে। এভাবেই চলছে পুরো এলাকায় পেঁয়াজ আবাদের কর্মযজ্ঞ।

 

সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের পুরুরা গ্রামের কৃষক সিরাজ মোল্যা বলেন, এবার আমি ১৫ কেজি পেঁয়াজের বীজ বপন করেছিলাম। সেখান থেকে যে চারা উৎপাদিত হয়েছে, তা দিয়ে ১৫ বিঘা জমিতে হালি পেঁয়াজ রোপণ করছি। প্রতিবিঘা জমিতে ২০-২৫ হাজার টাকা মত খরচ হচ্ছে। কিন্তু বাজারে পেঁয়াজের যে দাম, এই দাম চলমান থাকলে পেঁয়াজ আবাদ করে আমাদের লোকসান শুনতে হবে। আশা করি এবার পেঁয়াজের ফলন ও দাম ভাল পাবো।

 

উপজেলার মাঝারদিয়া গ্রামের কৃষক রফিক মোল্লা বলেন, আমাদের এলাকার বেশিরভাগ মানুষ পাট ও পেঁয়াজের উপর নির্ভরশীল। এই দুটি ফসল ও দাম ভাল হলে আমরা সারা বছর ভাল থাকি, আর খারাপ হলে আমরাও খারাপ থাকি। গতবার পেঁয়াজ আবাদ করে লোকসান হয়েছে। তারপরেও এবার ঝুঁকি নিয়ে হালি পেঁয়াজ চাষ করছি।

 

এই বিষয়ে সালথা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সুদর্শন শিকদার বলেন, সালথা উপজেলা পেঁয়াজের জন্য বিখ্যাত। এই উপজেলায় এ বছর পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২হাজার ৩০০ হেক্টর। ধারনা করা হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে। বর্তমানে চলছে পেঁয়াজের হালি রোপণের কাজ। আমরা প্রতিনিয়ত চাষিদের সব ধরণের পরামর্শ দিয়ে আসছি।

© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

প্রিন্ট করুন