ফরিদপুরে সবুজে ফিরছে বরো ধান, মাঠে মাঠে আশার বার্তা

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশের সময়: রবিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ । ১১:৫৯ এএম

ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় চলতি বরো মৌসুমে ধানের ক্ষেতে আবারও ফিরছে সবুজের ছোঁয়া। মৌসুমের শুরুতে কিছু এলাকায় পাতোর রোগের হালকা প্রভাব দেখা দিলেও সময়মতো কৃষি বিভাগের তদারকি ও কৃষকদের সচেতন ব্যবস্থাপনায় বর্তমানে অধিকাংশ জমির ধান সুস্থ ও সতেজ হয়ে উঠেছে। এতে করে মাঠে মাঠে আশার বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে কৃষক সমাজে। ফলে ভালো ফলনের প্রত্যাশা করছেন কৃষকরা।

ফরিদপুর সদর, ভাঙ্গা, মধুখালী, বোয়ালমারী ও সালথা উপজেলার একাধিক মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কিছু জমিতে ধানের পাতায় দাগ দেখা দিলেও অধিকাংশ ক্ষেতেই তা বিস্তার লাভ করেনি। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক ছত্রাকনাশক প্রয়োগ ও সুষম সার ব্যবস্থাপনার ফলে গাছ আবারও সবুজ হয়ে উঠছে।

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষক হায়দার খাঁন বলেন, “শুরুর দিকে পাতায় দাগ দেখে চিন্তায় পড়েছিলাম। কৃষি অফিসের পরামর্শে ওষুধ দেওয়ার পর ধান এখন বেশ ভালো আছে। ফলন নিয়ে এখন আশাবাদী।”

ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডিএ) কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে বলেন, ‘ফরিদপুর জেলায় মোট ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে বরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে রয়েছে এবং বড় ধরনের রোগবালাইয়ের প্রাদুর্ভাব নেই। মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত নজরদারি করছেন এবং কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।”

তিনি আরও জানান, ‘কোথাও রোগ বা পোকার আক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে কৃষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি অনুসরণ ও সুষম সার ব্যবহারে জোর দেওয়া হচ্ছে, যাতে ফলন আরও বাড়ে।’

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কৃষকদের আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি, রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার এবং নিয়মিত মাঠ পর্যবেক্ষণের ফলে ধানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বজায় রয়েছে। পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ ও কৃষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও জোরদার করা হয়েছে। এবছর বরো ধানের ভালো ফলন হলে জেলার খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাজারে চালের সরবরাহ বাড়বে, যা দাম স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক হবে।

সব মিলিয়ে ফরিদপুরের মাঠে মাঠে সবুজ বরো ধান যেন কৃষকের মুখে হাসি ফিরিয়ে আনছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবছর বরো মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত ফলন অর্জনের ব্যাপারে আশাবাদী কৃষক ও সংশ্লিষ্টরা।

© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

প্রিন্ট করুন