কুয়াশা ও শীতে বিপর্যস্ত ফরিদপুর, দুর্ভোগে নিম্নআয়ের মানুষ

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ । ৭:১৮ এএম

ফরিদপুরে শীতের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। ঘন কুয়াশা, হাড় কাঁপানো ঠান্ডা আর ঠান্ডা বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ, দিনমজুর, ছিন্নমূল ও চরাঞ্চলের বাসিন্দারা। শীতজনিত রোগেও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।

ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ফরিদপুর শহর ও গ্রামাঞ্চলে কুয়াশার দাপট দেখা যাচ্ছে। সকালে সড়কে যান চলাচল কমে যায়, কাজে বের হতে দেরি করছেন দিনমজুররা। ফরিদপুর বাসস্ট্যান্ড ও রেলস্টেশন এলাকায় দেখা যায়, খোলা জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন ভাসমান মানুষজন। অনেকের গায়ে নেই পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র।

সদর উপজেলার ছুরাপ আলী নামের এক দিনমজুর ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে বলেন, “শীতে কাজ কমে গেছে। ঠান্ডায় শরীর চলে না, তবু না নামলে সংসার চলবে না।” একই অবস্থা চরাঞ্চলের মানুষেরও। কাঁচা ঘর, পলিথিন আর খড়ের বেড়ায় শীত ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবারগুলো।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেলা সদর হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট ও জ্বর নিয়ে প্রতিদিন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহমুদুল হাসান ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে বলেন, “শীতকালে শিশু ও বয়স্করা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। নিউমোনিয়া, ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্টের রোগী বাড়ছে। তাইতো সবাইকে গরম কাপড় ব্যবহার, ঠান্ডা এড়িয়ে চলা এবং প্রয়োজনে দ্রুত হাসপাতালে আসার পরামর্শ দিচ্ছি।”

শীত মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন।

এব্যাপারে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্যা ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে বলেন, ‘মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে ফরিদপুরের জন্য শীতবস্ত্র পাঠানো হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যেই হয়তো সেগুলো আমরা হাতে পেয়ে যাব। এরপর থেকেই শীতবস্ত্র বিতরণের কাজ শুরু করবো।

‘প্রকৃত অসহায়, হতদরিদ্র ও দুস্থদের তালিকা করে এ শীতবস্ত্র সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানান এ জেলা প্রশাসক।”

তবে স্থানীয়দের দাবি, ‘শীত যত বাড়ছে, ততই প্রয়োজন বাড়ছে সহায়তার। তাই ফরিদপুরের এই শীতে শুধু আবহাওয়ার খবর নয়—এটি মানুষের জীবনযুদ্ধের খবর। কর্তৃপক্ষের উদ্যোগের পাশাপাশি সমাজের সামর্থ্যবানদের আরও এগিয়ে আসার মধ্য দিয়েই শীতের এই দুর্ভোগ কিছুটা হলেও লাঘব হতে পারে।’

© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

প্রিন্ট করুন