বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ । ১২:৪০ পিএম
বাংলার অন্যতম সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার পর নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশে আপাতত আর না ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী সিরাজ আলী খান। তিনি উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতগুরু ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর প্রপৌত্র এবং মাইহার ঘরানার প্রতিনিধিত্বশীল শিল্পী। বর্তমানে তিনি ভারতে বসবাস করেন।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ঢাকার ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা ছিল সিরাজ আলী খানের।
কিন্তু বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ছায়ানট প্রাঙ্গণে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়, আগুন দেওয়া হয়। এরপর শিল্পী ও তার সহযোগীদের মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়।এ বিষয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে সিরাজ আলী খান বলেন, আমি সবসময় বাংলাদেশে ফিরেছি আমার শেকড়ের টানে। আমার পরিবারের সংগীত, বড়ো বাবা ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ঐতিহ্য এবং মাইহার ঘরানার জীবন্ত ধারাটি ভাগ করে নেওয়ার জন্য।
আমি এসেছিলাম শুধু সংগীত, বিনয় ও শ্রদ্ধা নিয়ে। কিন্তু এই প্রথম আমাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে ভয় পেয়েছি।তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে নিজেকে একজন ভারতীয় শিল্পী হিসেবে পরিচয় দেওয়া যে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, তা আমি কখনো কল্পনাও করিনি। সৌভাগ্যক্রমে আমরা নিরাপদে ভারতে ফিরে আসতে পেরেছি।
সিরাজ আলী খান মনে করেন, ছায়ানটে হামলার ঘটনাটি কেবল একটি স্থাপনা বা বাদ্যযন্ত্রের ওপর আক্রমণ নয়। তিনি বলেন, এটি শিল্পী, সংস্কৃতি এবং আমাদের যৌথ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ওপর সরাসরি আঘাত।ভারাক্রান্ত হৃদয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, শিল্পী, সংগীত এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান যতদিন না যথাযথ সম্মান ও সুরক্ষা পাবে, ততদিন আমি বাংলাদেশে আর ফিরব না।
তবে হতাশার মধ্যেও আশার কথা শোনান এই শিল্পী। তার ভাষায়, আমি এখনো বিশ্বাস করি সংগীত মানুষের মাঝে সেতু তৈরি করে।
একদিন সেই পরিবেশ ফিরে আসবে যখন শিল্প ও সংস্কৃতি আবার নিরাপদ হবে- এই আশাই রাখি।উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর ঢাকার লালবাগ কেল্লায় ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য আয়োজনের ধ্রুপদী সংগীতের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিল সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সেই অনুষ্ঠানেও সংগীত পরিবেশন করে প্রশংসিত হয়েছিলেন সিরাজ আলী খান। এরপর গেল ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় এসেছিলেন তিনি।