হঠাৎ করে তাপমাত্রা নেমে যাওয়ায় হাড় কাপাঁনো শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে ফরিদপুরের জনজীবন। ভোর থেকে ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শীতের তীব্রতায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ, দিনমজুর, ভ্যানচালক, রিকশাচালক ও খেটে খাওয়া শ্রমজীবীরা।
সকালে শহরের সড়কগুলোতে মানুষের চলাচল ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় কম। অনেকেই গরম কাপড় জড়িয়ে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের সর্দি-কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শীতের প্রভাব পড়েছে কর্মজীবী মানুষের আয়ে। ভ্যানচালক ও রিকশাচালকরা জানান, সকালবেলা যাত্রী কম থাকায় আয় অর্ধেকে নেমে এসেছে। দিনমজুরদের অনেকেই কাজ না পেয়ে বসে আছেন। নদী ও চরাঞ্চলের মানুষ শীতের প্রকোপে আরও বিপাকে পড়েছেন। পর্যাপ্ত গরম কাপড় না থাকায় তারা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
শীতের কারণে জেলার হাট-বাজারগুলোতেও আগের মতো ভিড় নেই। সবজির বাজারে কিছুটা দাম বাড়তির দিকে, কারণ ভোরের কুয়াশায় কৃষকরা সময়মতো পণ্য আনতে পারছেন না। তবে শীতের সবজি উঠতে শুরু করায় ক্রেতাদের আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চিকিৎসকরা গরম কাপড় ব্যবহারের পাশাপাশি ঠান্ডা এড়িয়ে চলা ও শিশু-বয়স্কদের বিশেষ যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে সমাজসেবা অধিদপ্তর ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় তা এখনও অপ্রতুল বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। দ্রুত আরও শীতবস্ত্র বিতরণ ও মানবিক সহায়তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
হাড় কাপাঁনো এই শীতে ফরিদপুরবাসী এখন তাকিয়ে আছে একটু উষ্ণতার আশায়, যেন স্বস্তি ফিরে আসে।

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশের সময়: শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ । ১০:০০ এএম