খুঁজুন
সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫, ৯ আষাঢ়, ১৪৩২

ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ফরিদপুরের মথুরাপুর দেউল

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ১০:১৮ এএম
ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ফরিদপুরের মথুরাপুর দেউল

ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার গাজনা ইউনিয়নে মোঘল আমলে প্রতিষ্ঠিত ফরিদপুরের মথুরাপুর দেউল।

ষোড়শ শতাব্দীর শেষার্ধে নির্মিত এই দেউলটি শুধু স্থাপত্য নয়, বাংলার ঐতিহ্যবাহী শিল্প ও সংস্কৃতির এক অনন্য নিদর্শন হিসেবেও বিবেচিত। তবে কালের বিবর্তনে অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে স্থাপত্যটি।

এটি ফরিদপুর শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং আনুমানিক ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। ফরিদপুরের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মধুখালী বাজার থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে মধুখালী-বালিয়াকান্দি আঞ্চলিক সড়কের পাশেই এর অবস্থান। রাস্তার বিপরীতে শান্তভাবে বয়ে চলেছে চন্দনা নদী। নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই মনোমুগ্ধকর দেউলটি দেখতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটক ও ইতিহাসপ্রেমীরা। অথচ, পর্যটকদের জন্য নেই কোনো মৌলিক সুযোগ-সুবিধা। ফলে দর্শনার্থীদের মুখোমুখি হতে হয় নানারকম বিড়ম্বনার।

দেশের ইতিহাসে মোগল সাম্রাজ্যের যেসব স্মৃতি বিদ্যমান, তার মধ্যে এই দেউলটি অন্যতম। সরকারের উদাসীনতার কারণে দেউলটির ইতিহাস ধরে রাখতে নেয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা। কাগজে-কলমে ইতিহাসে থাকলেও বাস্তবিক অর্থে নেই কোনো সংরক্ষণের ব্যবস্থা।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৪০ শতাংশ জায়গাজুড়ে বিস্তৃত প্রায় ৮০ ফুট উচ্চতার দেউলটির গায়ে খচিত টেরাকোটার চিত্রকর্ম ও স্থাপত্য শৈলী চোখ জুড়িয়ে যায়। প্রাচীন ইট ও চুন-সুরকির মিশ্রণে নির্মিত এই দেউলের দেয়ালে ফুটে উঠেছে হিন্দু পুরাণের রামায়ণ ও কৃষ্ণলীলা, গায়ক, নৃত্যশিল্পী, পবনপুত্র হনুমান ও যুদ্ধদৃশ্যের নিপুণ চিত্র। প্রতিটি কোণের মাঝে স্থাপন করা হয়েছে কৃত্তিম মুখাবয়ব, যা সেই যুগের শিল্পভাবনার পরিচায়ক।

দেউলটির একমাত্র প্রবেশপথটি দক্ষিণমুখী এবং এটি বারো কোণা বিশিষ্ট, যা বাংলার স্থাপত্যধারায় বিরল। রেখা প্রকৃতির এই দেউল বাংলায় নির্মিত একমাত্র এরকম কাঠামো বলেই প্রত্নতত্ত্ববিদদের কাছে এটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

দেউলটি নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে রয়েছে ভিন্নমত। এক সূত্রমতে, সংগ্রাম সিং নামক এক সেনাপতি এটি নির্মাণ করেন। ১৬৩৬ সালে ভূষণার জমিদার সত্রাজিতের মৃত্যুর পর সংগ্রাম সিং-কে এই অঞ্চলের রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠার পর তিনি মথুরাপুরে বসবাস শুরু করেন এবং এক স্থানীয়
বৈদ্য পরিবারের কন্যাকে বিবাহ করেন। ধারণা করা হচ্ছে, তারই উদ্যোগে এই দেউলটি নির্মিত হয়।

সদরপুরে ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

ফরিদপুর অফিস:
প্রকাশিত: রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ৬:১৭ পিএম
সদরপুরে ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ফরিদপুর সদরপুর উপজেলার চর বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তা সুজিৎ ভক্তর বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেঙ্কারি, অসদাচরণ ও হুমকির অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, তার বিরুদ্ধে ঘুষ না দিলে নামজারি আবেদন বাতিলে করা সহ হয়রানির অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তার বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়েও সঠিক সময়ে কাজ না করে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে একাধিক ভুক্তভোগীর।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগও করেছেন ইউনিয়নের ভুক্তভোগী জাকেরের ডাঙ্গী গ্রামের আজগর চোকদার।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সে জরিপের ডাঙ্গী মৌজার ১৯৭৫ নং খতিয়ানের তার জমির কর অনলাইনে দাখিল করার জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যান। এরপর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা সুজিৎ ভক্ত উক্ত খতিয়ানের কর বাবদ তার নিকট ১৮ হাজার টাকা দাবি করেন। সে এতটাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ইউপি ভূমি কর্মকর্তা সুজিৎ কমিয়ে রাখার আশ্বাস দিয়ে ১২ হাজার টাকা দাবী করে। পরবর্তীতে সে আবারও অপারগতা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে সে তার ভাতিজাকে সাথে গিয়ে যাওয়ার পর ১০ হাজার টাকার একটি রশিদ হাতে দেন সুজিৎ।

এরপর সে রশিদে দেখতে পায় ৩৩৮৯ টাকা অনলাইনে জমা দেওয়া হয়েছে বলে রশিদে উল্লেখ আছে। পরবর্তীতে অতিরিক্ত যে টাকা নিয়েছে সেই টাকা ফেরত চাওয়ার জন্য ভাতিজাকে সাথে ইউপি ভূমি অফিসে গেলে তহশিলদার সুজিৎ ভক্ত তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন ও কর পরিশোধের রশিদ বাতিলের হুমকি দেন। এসব কারণে তিনি প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেছেন।
আজগর চোকদার বলেন, এই কর্মকর্তার কাছে সেবার জন্য গেলে সবাইকে হয়রানি করেন। তিনি প্রকাশ্যে বলেন, সরকার যে কয় টাকা বেতন দেয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। টাকা না দিলে আমি কোনো কাজ করবো না। আমি নিজে একজন ভুক্তভোগী এবং যারা তার কাছে গিয়ে হয়রানির শিকার হন, সবার দাবি তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তা সুজিৎ ভক্ত বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টির সত্যতা যাচাই করছে। সেবা নিতে আসা আজগর চোকদার যেসব অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয়। তিনি নিজে অনলাইনে আবেদন করে নিজেই ভূমি উন্নয়ন কর পরিষদ করেছেন। এরপর ওনার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রামানন্দ পাল বলেন, ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে অবগত হয়েছি। বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। আমি ঢাকায় ট্রেনিয়ে আছি, বিস্তারিত অফিসে গিয়ে কাগজপত্র দেখে বলতে হবে।

মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে ঢাকা শহরে মিলছে নিজের ফ্ল্যাট ও দোকান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ৫:৩৮ পিএম
মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে ঢাকা শহরে মিলছে নিজের ফ্ল্যাট ও দোকান

ভিলেজ ল্যান্ডমার্ক লিমিটেড ২০১৮ সাল থেকে ঢাকার শিক্ষানগরী নামে পরিচিত পশ্চিম উত্তরা বিরুলিয়া ঢাকা নামক স্থানে ”কম খরচে শেয়ারে নিজের বাড়ি নিজে করি” এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে মধ্যবিত্ত পরিবারের স্বপ্ন বাস্তবে রুপ দেবার জন্য ৪০% কম খরচে ফ্ল্যাট ও দোকান তৈরী করার কাজ শুরু করে।

প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন মিনু এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বেলাল হোসেনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি তাদের ৬ ষ্ঠ প্রজেক্টের সফল সমাপ্তির পরে প্রস্তাবিত ১২০ ফিট মেইন রোডের সাথে তিন দিকের রাস্তা সম্বলিত ২৮ কাঠা জমির উপরে ৭ম প্রজেক্ট ভিলেজ প্লাজা ১১ তলা বিশিষ্ট কমার্শিয়াল কাম রেসিডেন্সিয়াল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে।

বেসমেন্টে থাকছে গাড়ি পার্কিং সুবিধা, ১ম থেকে ৩য় তলা পর্যন্ত ১২৮টি দোকান নিয়ে শপিংমল এবং ৪র্থ থেকে ১১ তম তলা পর্যন্ত ১২৮ টি ফ্ল্যাট থাকছে। যেখানে প্রতিটি পরিবারের জন্য থাকছে ৩ রুম বিশিষ্ট ৯৮০ স্কয়ার ফিট এর একটি ফ্ল্যাট এর সাথে ২৪৪ স্কয়ারফিটের একটি দোকান। এছাড়া ৫ রুম বিশিষ্ট ১৯৬০ স্কয়ারফিট এর একটি ফ্ল্যাট এর সাথে ২৪৪ স্কয়ারফিটের দুইটি দোকান। মাত্র ২০০০ টাকা স্কয়ারফিট খরচে তৈরী হবে আপনার স্বপ্নের ফ্ল্যাট ও দোকান।

১২৮ টি শেয়ার এর মধ্যে ৬৮ টি শেয়ার বিক্রয় সম্পাদিত করে সাবকাবলা দলিলের মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডারদের জমির অংশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। উক্ত প্রজেক্টে অগ্রীম কোন টাকা গ্রহণ করা হয় না, জমির দলিল বুঝে পাবার পরে টাকা গ্রহণ করা হয়। প্রজেক্ট এর পাশে রয়েছে ৭ টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এর নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাস। তার মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হচ্ছে- ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সিটি ইউনিভার্সিটি, ইষ্টার্ণ ইউনিভার্সিটি, ফয়েজউল্লাহ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ।

ফরিদপুরে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর সাত বছরের কারাদণ্ড 

ফরিদপুর প্রতিদিন ডেস্ক:
প্রকাশিত: রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ৫:২৫ পিএম
ফরিদপুরে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর সাত বছরের কারাদণ্ড 
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শেখর গ্রামে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড  এবং দশ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
রবিবার (২২ জুন) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আইয়ুব আলী (৫২) ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শেখর গ্রামের মো. ইদ্রিস শেখের পুত্র। রায় ঘোষণার সময় আইয়ুব আলী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে পুলিশ প্রহরায় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নিহত ওই নারী ফজরন বেগমের (৩০) বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার পোয়াইল গ্রামে। বোন হত্যার দায়ে তার ভাই আইয়ুব শেখ ২০১৩ সালের ০৯ অক্টোবর মামলা দায়ের করেন বোয়ালমারী থানায়। তিনি মামলায় উল্লেখ করেন, গত ২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর দিবাগত রাতে আমার বোনকে স্বামীর বাড়ি বোয়ালমারী উপজেলার শেখর গ্রামে স্বামীর পরিবারের লোকজন যৌতুকের জন্য মারধর করে হত্যা করে। ওই বাড়িতে গিয়ে পরিবারে কোন লোকজনকে না দেখে আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানাই। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
এ বিষয়ে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া রতন জানান, আমরা রাষ্ট্রপক্ষ মামলার এ রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছি। সকল আলামত ও সাক্ষীদের জবানবন্দীতে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এই রায় দেন। তিনি বলেন, এই মামলা একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে থাকবে যৌতুক লোভী মানুষের জন্য, যারা যৌতুক না পেয়ে নিজের স্ত্রীকে হত্যা করে।