খুঁজুন
শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ১৬ কার্তিক, ১৪৩২

ডাক্তারদের উপঢৌকন বন্ধ হলে ৩০% কমবে ওষুধের দাম

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১০:৫৭ এএম
ডাক্তারদের উপঢৌকন বন্ধ হলে ৩০% কমবে ওষুধের দাম

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। বেলা ১১টা।

বহির্বিভাগের ডাক্তারের কক্ষ থেকে কোনো রোগী বের হলেই তাকে ঘিরে ধরছেন বেশ কয়েকজন মানুষ। হুমড়ি খেয়ে তার হাতের প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন তারা।

 

কথা বলে জানা যায়, তারা ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি। ছবি তোলার কারণ, নিজেদের কোম্পানির ওষুধ চিকিৎসক প্রেসক্রিপশনে লিখেছেন কি না, সেটা যাচাই করে দেখা। প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা সেই ছবি কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও পাঠিয়ে দেন।

কেবল সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালেই নয়, রাজধানীর প্রায় প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তারের কক্ষ থেকে রোগী বের হওয়া মাত্রই প্রেসক্রিপশনের ছবি তোলার দৃশ্য এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। আর এর কারণ হিসেবে জানা যায়, নিজেদের কোম্পানির ওষুধ লেখার জন্য ডাক্তারদের কোম্পানির পক্ষ থেকে নিয়মিত দামি দামি উপহার এবং নগদ টাকাও দেওয়া হয়। এ ছাড়াও দেশে-বিদেশে একক বা দলগতভাবে ভ্রমণ কিংবা সেমিনারে অংশগ্রহণের ব্যবস্থাও করে ওষুধ কোম্পানিগুলো।

একটি মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক পর্যায়ের একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, এখন অধিকাংশ চিকিৎসক ওষুধ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে নানারকম সুবিধা নিয়ে থাকেন। এসব নিয়ে আর কী বলব! যারা এমন করছেন তারা আমাদেরই ছাত্র, ভাই-বন্ধু ও সহকর্মী। আবার সৎ ডাক্তার যে একেবারে নেই, তা নয়। কোনো কোম্পানি নগদ খাম দেয়, কেউ দামি উপহার দেয়, কেউ হয়তো ডাক্তারদের পরিবার-পরিজনদের দেশে-বিদেশে ট্যুরের টাকাও দেয়।

তিনি আরও বলেন, এই যে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এত এত লোকজন লাগিয়ে রেখেছে ওষুধ কোম্পানি, তারা প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলতে থাকে, কোন ডাক্তার কী ওষুধ লিখছে দেখার জন্য। এসবের তো একটা খরচ আছে। সব খরচ কিন্তু ওষুধের মূল্যের সাথেই যুক্ত হয়ে যায়।

গত কয়েক মাস থেকে দেশে ওষুধের দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ থেকে ৯০ শতাংশ। স্বল্প আয়ের মানুষ বাড়তি মূল্যে ওষুধ কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। ওষুধের দাম বৃদ্ধির ফলে জনসাধারণের মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে, ওষুধ কোম্পানি ও চিকিৎসকদের মধ্যে চলা প্রমোশনের নামে অনৈতিক লেনদেন। কারণ, ডাক্তারদের দেওয়া টাকা বা উপহার কোনো কোম্পানিই নিজেদের পকেট থেকে দেয় না। ওষুধের দাম বাড়িয়ে সেই টাকা ক্রেতাদের কাছ থেকেই আদায় করা হয়। ওষুধ কোম্পানিগুলো প্রমোশন কিংবা মার্কেটিংয়ের নামে ডাক্তারদের যে অনৈতিক সুবিধা দেয়, তা বন্ধ করা গেলে বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে ওষুধের দাম অনেকটাই কমানো সম্ভব।

ওষুধের কাঁচামাল ও উৎপাদন খরচ, লেভেলিং-প্যাকেজিং, প্রোমোশন ও মার্কেটিংসহ ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত কোন পর্যায়ে কত টাকা খরচ হয় জানতে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় ওষুধ শিল্পে ৪২ বছরের বেশি কাজের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এ বি এম জামালুদ্দিনের সঙ্গে। বর্তমানে তিনি গণস্বাস্থ্য বেসিক কেমিক্যাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

গণস্বাস্থ্য বেসিক কেমিক্যালের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালনের আগে এ বি এম জামালুদ্দিন ফাইজারের ম্যানেজার পদে ১৩ বছর, রেনেটায় ১৩ বছর, অ্যাক্টিভ ফাইন ক্যামিক্যালসে ১৫ বছর কাজ করেছেন। এ ছাড়াও ওষুধ তৈরির কাঁচামাল বিষয়ক জাতীয় এপিআই (অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্স) পলিসির স্টেকহোল্ডার হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন।

ওষুধের উৎপাদন খরচ প্রসঙ্গে জামালুদ্দিন বলেন, ওষুধের ইন জেনারেল থিউরি হচ্ছে, কস্ট অব গুডস অর্থাৎ উৎপাদন খরচ ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। মার্কেটিং, প্রোমোশন এবং অন্যান্য খরচ আরও ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কোম্পানির মুনাফা। এটা বড় কোম্পানির ক্ষেত্রে, ছোট কোম্পানির মুনাফা আরও বেশি হয়। ডাক্তারদের অনৈতিক সুবিধা না দিলে কোম্পানির মার্কেটিং খরচ ১০ শতাংশে নামিয়া আনা সম্ভব।

প্যারাসিটামল ট্যাবলেট উৎপাদনের খরচ প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, প্রতিটা প্যারাসিটামল ট্যাবলেটে গড়ে ৩০ থেকে ৫০ পয়সা খরচ হয়। এটা বিক্রি করা হচ্ছে ১.২০ টাকায়, মার্কেটিং খরচ বাদে যা থাকে সেটাই লাভ।

এ বি এম জামালুদ্দিন আরও জানান, ডায়াবেটিস রোগে ব্যবহৃত মেটফরমিন ৫০০ মি.গ্রা. এবং ৮৫০ মি.গ্রা. আকারে বাজারে পাওয়া যায়। মেটফরমিন ৮৫০ মি.গ্রা. প্রতিটির উৎপাদন খরচ হয় ৫৫ পয়সা, এর সাথে এক্সিপিয়েন্ট (সহযোগী উপাদান) যোগ করলে মোট খরচ হয় ৭০ থেকে ৮০ পয়সা। প্যাকেজিংসহ এই ওষুধে মোট প্রায় এক টাকা খরচ হয়। এটা প্রতি পিস বিক্রি হয় ছয় টাকায়। এই ছয় টাকার ১৫ শতাংশ জনগণ ভ্যাট হিসেবে দেয়। বাকি পাঁচ টাকার মধ্যে আবার প্রমোশনাল এবং মার্কেটিং বাবদ প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ব্যয় হয়। বাকিটা কোম্পানির লাভ থাকে।

উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় ব্যবহৃত লোসারটান পটাশিয়াম ১০০ মি.গ্রা. প্রতি ট্যাবলেটে উৎপাদন খরচ হয় দশমিক শূন্য ছয় পয়সা। সহযোগী কেমিক্যাল, প্যাকেজিং সব মিলে প্রতি ট্যাবলেটে ১.২৫ টাকার মতো খরচ হয়। এটা কোম্পানি ভেদে বিক্রি করা হয় ১০ থেকে ১২ টাকায়। এর মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মার্কেটিং ও প্রমোশন খরচ।

এ বি এম জামালুদ্দিন বলেন, কোনো ওষুধের গায়ে যদি মূল্য ১০০ টাকা থাকে, সেইখান থেকে সরকার ভ্যাট ১৫ টাকা পায়, ফার্মেসির লাভ থাকে ১৫ টাকা। বাকি ৭০ টাকার মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কাঁচামালসহ উৎপাদন খরচ, এর সাথে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মার্কেটিং ও প্রোমোশন খরচ, বাকিটা কোম্পানির মুনাফা।

তিনি জানান, ওষুধের দাম বাড়ার একটা বড় কারণ; ডাক্তারদের স্পিড মানি, খাম ও উপহার সামগ্রী দেওয়ার মাধ্যমে প্রায় কোম্পানির ৩০ শতাংশ ব্যয় হয়ে যায়। ডাক্তারদের যদি এসব না দিতে হতো তাহলে ওষুধের দাম বর্তমান বাজার মূল্যের থেকে ৩০ শতাংশ কম থাকতো।

ওষুধ কোম্পানির পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের উপহার দেওয়ায় প্রবণতা বন্ধ হলে ওষুধের দাম কমতে পারে কি না জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ সাব্বির হায়দার বাংলানিউজকে বলেন, প্রমোশনের নামে চিকিৎসকদের বিভিন্ন উপহার, টাকা-পয়সা দেওয়াসহ অনৈতিক সব ব্যয় ওষুধের মূল্যের সাথে যুক্ত হয়। সেই মূল্য ভোক্তাকেই পরিশোধ করতে হয়। কোম্পানি অযৌক্তিক এসব ব্যয় কমালে ওষুধের মূল্য বেশ কমে আসবে।

ওষুধ কোম্পানি এবং ডাক্তারদের অনৈতিক সুবিধা আদান-প্রদান বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, এটাকে আমরা বলি অ্যাগ্রেসিভ মার্কেটিং। ওষুধের দাম যদি সরকারের প্রাইসিং ফর্মুলার ভিত্তিতে হয়, তাহলে কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত মূল্য নেওয়ার সুযোগ থাকবে না। অতিরিক্ত মূল্য যখন নিতে পারবে না তখন ওষুধ কোম্পানির সারপ্লাস থেকেই অ্যাগ্রেসিভ মার্কেটিংয়ের খরচ বহন করতে হবে। তখন তারা এই অ্যাগ্রেসিভ মার্কেটিং থেকে সরে আসবে।

তিনি আরও বলেন, এখন যেহেতু কোম্পানি নিজেরাই দাম নির্ধারণ করে, তাই দাম ১০ টাকা বাড়িয়ে দিয়ে সেখান থেকে ডাক্তারকে ৮ টাকা দিলে তো তাদের ক্ষতি নাই। তারা যেহেতু দাম নির্ধারণ করে তাই তারা এটা করতে পারছে। কিন্তু দাম যখন সরকারের অথরিটি নির্ধারণ করবে, তখন এটা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই সমস্ত প্রকার ওষুধের দাম ফর্মুলার ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে হবে। এজন্য একটা জাতীয় ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি তৈরি করতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া) সাবেক উপদেষ্টা এবং স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, ডাক্তারদের যেমন নৈতিকতা মেনে চিকিৎসাসেবা দেওয়া উচিত ঠিক তেমনি ওষুধ কোম্পানিগুলোকেও নৈতিকতার সঙ্গে ব্যবসা করা উচিত। যদি ওষুধ কোম্পানিগুলো নৈতিকতার সঙ্গে ব্যবসা করে এবং ডাক্তারদের কোনোরকম অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা না দেয়, তাহলে ওষুধের দাম অবশ্যই কমে আসতে পারে।

Source: Banglanews24

‘নভেম্বরের মধ্যেই দেশে গণভোট দিতে হবে’ — খেলাফত আন্দোলন মহাসচিব

সালথা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ৩:১৫ পিএম
‘নভেম্বরের মধ্যেই দেশে গণভোট দিতে হবে’   — খেলাফত আন্দোলন মহাসচিব

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদিক হাক্কানী বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে জনগণের মতামতই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই নভেম্বরের মধ্যেই দেশে গণভোট দিতে হবে। এতে জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক চর্চাকে শক্তিশালী করবে।

শনিবার (০১ নভেম্বর) সকালে ফরিদপুরের সালথায় দলটির ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা-সালথা) আসনের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বকুল মিয়ার সাথে নির্বাচনী মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মাওলানা ইউসুফ সাদিক হাক্কানী বলেন, ‘যুগোপযোগী একটি ইসলামিক আন্দোলন গড়ে তুলতে আমরা একাধিক ইসলামি দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। দেশের অবস্থা অনুকূল হলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে আমরা আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যোগারদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক মোহাম্মদ ইব্রাহিম হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান মাওলানা ইউসুফ সাদিক হাক্কানী। পরে কবর জিয়ারত করেন। এ সময় তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

ফরিদপুরে দিনদুপুরে পিস্তল ঠেকিয়ে গৃহবধূর কানের দুল ছিনতাই, ২ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ২:৪৮ পিএম
ফরিদপুরে দিনদুপুরে পিস্তল ঠেকিয়ে গৃহবধূর কানের দুল ছিনতাই, ২ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

ফরিদপুরে দিনদুপুরে পিস্তল ঠেকিয়ে মঞ্জু রানী দাস (৩৬) নামের এক গৃহবধূর কানের দুল ছিনতাইয়ের চাঞ্চল্যকর ঘটনার মূল হোতাসহ তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১০।

শনিবার (০১ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে সিপিসি-৩ ফরিদপুর ক্যাম্প, র‍্যাব-১০-এ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা কেরানীগঞ্জের র‍্যাব-১০ এর অধিনায়ক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।

এর আগে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে ফরিদপুরের সালথা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, প্রধান আসামি মো. শরীফুল ইসলাম ডন শরীফ (৩৮) ও তার সহযোগী মো. রায়হান মোল্লা (২৫)।

শরীফুল ইসলাম ডন শরীফ ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার কবিরপুর এলাকার মৃত ফারুক শেখের ছেলে ও রায়হান মোল্লা একই এলাকার আলতাফ মোল্লার ছেলে।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে খেলনা পিস্তল, সুইচ গিয়ার, চোরাই মোটরসাইকেল ও ১.৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা কেরানীগঞ্জের র‍্যাব-১০ এর অধিনায়ক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, সম্প্রতি ফরিদপুরে এক গৃহবধূর কানের দুল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূর কাছ থেকে স্বর্ণের কানের দুল ছিনিয়ে নেয়। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। র‍্যাব-১০ এর বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে এই ঘটনার প্রধান আসামী এবং তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া ডন শরীফের বিরুদ্ধে ডাকাতি, খুন, চুরি ও মাদকসহ ১০টি মামলা রয়েছে। তিনি ২০১৮ সালে ফরিদপুরের ঝিলটুলি এলাকায় এক স্টাফ নার্স অরুণিমা ভৌমিক হত্যা মামলারও প্রধান আসামি ছিলেন।

মোহাম্মদ কামরুজ্জামান আরও বলেন, অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে র‍্যাবের এই অভিযান চলমান থাকবে। কেউ আইন হাতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে র‍্যাব-১০। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২১ অক্টোবর) সকালে ফরিদপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর শোভারামপুর এলাকায় দিনদুপুরে পিস্তল ঠেকিয়ে ওই এলাকার বিষু দাসের স্ত্রী মঞ্জু রানী দাস (৩৬) নামের এক গৃহবধূর কানের দুল ছিনিয়ে নেয় দুই যুবক। ছিনতাইয়ের পুরো ঘটনাটি পাশে থাকা একটি সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। পড়ে এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

 

চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙনে ৩০ মিটার জিওব্যাগের বাঁধ বিলীন

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৫২ পিএম
চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙনে ৩০ মিটার জিওব্যাগের বাঁধ বিলীন

oplus_0

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের সদর ইউনিয়নের টিলারচর গ্রামে হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে পদ্মা নদীর ভাঙ্গন।

গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে এ ভাঙনে ওই এলাকার নদী পাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিওব্যাগের ডাম্পিং করা প্রায় ত্রিশ মিটার বাঁধ ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

ভাঙন এলাকা হতে প্রায় ৯০ মিটার দূরে রয়েছে এমপি ডাঙ্গী ও জাকেরেরশুরা হয়ে জেলা শহর ফরিদপুরের যাতায়াতের পাকাসড়ক, শতশত বসত বাড়ি ও সরকারী স্কুল।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পদ্মা নদীর পানি কমতে থাকা অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে হঠাৎ করে নদী ভাঙন দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে নদী পাড়ের মানুষ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরজমিনে ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এখানে নদীর তীর রক্ষা স্থায়ী বাঁধের সাথে আপদকালীন সময়ে জিওব্যাগের ডাম্পিং করা বাঁধের বড় একটা অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া কয়েকটি অংশের মাটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে।

ভাঙনের বিষয়ে নদী পাড়ের বসতি শেক মেতালেব (৫৩) ও মো. ইমারত হোসেন (২৫) জানায়, বুধবার সকাল থেকে ওই এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। কিছু সময় পর পর মাটির বড় বড় অংশ পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।

তারা বলেন, দ্রুত ভাঙন রোধে কাজ না করলে বিলীন হয়ে যাবে ফসলি জমি, পাকা সড়ক সহ স্থানীয় শত শত বসত বাড়ি।

ভাঙনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরা খাতুন বলেন, “আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার নিকট থেকে ওই এলাকায় নদী ভাঙনের খবর পেয়েছি। জায়গাটি পরিদর্শন করে দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলব।

ভাঙনের বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, “ টিলারচর গ্রামের কয়েকটি পয়েন্টে আপদকালীন ভাঙন রোধে বর্ষা মৌসুমে জিওব্যাগের ডাম্পিং করা হয়েছিল। ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া ভাঙন রোধে চরভদ্রাসন উপজেলার কয়েকটি পয়েন্ট মিলে ৩.১৫ কি.মি. জায়গায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে রয়েছে বলেও জানান পাউবোর এই নির্বাহী প্রকৌশলী।