ফরিদপুরের সাবেক পুলিশ সুপার সুভাষ সাময়িক বরখাস্ত

অতিবৃষ্টির কারণে ফরিদপুরের বিভিন্ন ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতায় ক্ষতির মুখে চাষিরা। দ্রুত ফসলের মাঠ থেকে পানি অপসারণ করতে না পাড়ায় শাক-সবজিসহ আমন ধানের আবাদে মারাত্মক লোকশানের দাবি কৃষকের। সম্প্রতি ঘন বৃষ্টির কারণে সবজি চাষিদের ক্ষতির কথা স্বীকার করে কৃষকের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস কৃষি বিভাগের।
সরেজমিনে দেখা যায়, গত কয়েক দিনে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ফরিদপুরে ফসলের মাঠগুলোতে পানি জমে গেছে। চাষীদের আবাদ করা মরিচ, বেগুন, করলা, ঝিঙা, পুঁইশাক, মূলাসহ বিভিন্ন ফসলের জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জেলার সদর উপজেলার কানাইপুর, মৃগী, কৃষ্ণনগরসহ অনেক এলাকায় মাঠের ফসল ডুবে গেছে। আমন মৌসুমে জন্য প্রস্তুত করা জমিতে ধান রোপণ করতে পারছে না কৃষক।
ধান-পাটের পাশাপাশি নানা ধরনের সবজি আবাদ করেছে অনেক কৃষক। জেলার নয়টি উপজেলায় উঁচু জমির তুলনায় নীচু জমিতে বৃষ্টির পানি জমেছে বেশি। তাছাড়া অনেক মাঠ থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা। আবার কোথাও সরকারি খাল ভরাট করায় মাঠে তৈরি হয়েছে কৃত্রিম জলাবদ্ধতা। যার প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, দাবি কৃষকদের।
জেলার সদর উপজেলার পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় তেতুলতলা-সমেশপুর সংযোগ সড়কের দিকনগরে সরকারি খাল ভরাট করায় ফসলি মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে মৃগী, শিরপোতলী ও দিকনগর গ্রামের প্রায় ১০০ একর জমির ফসলের আবাদ নিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। খালের মুখ কেটে দিয়ে দ্রুত পানি অপসারণ করার দাবি চাষি ও স্থানীয়দের।
ওই এলাকার কৃষক সালাম শেখ এবং জিন্না মাতুব্বর আমন ধান আবাদ করার জন্য জমি প্রস্তুত করেছেন। দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও জলাবদ্ধতার কারণে রোপণ করতে পারছেন না ধান। স্থানীয় কৃষক জিন্নাত আলী জমাদ্দার এবং মো রুবেল তাদের জমিতে বিপুল পরিমাণ শাক-সবজি রোপণ করেছেন, সঙ্গে রয়েছে মরিচ। সবই বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে মরে গেছে। তারা সবাই অভিযোগ করেন, স্থানীয় প্রভাবশালীরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খাল ভরাট করে দখল করায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে তাদের জলাবদ্ধতার শিকার হতে হয়।
ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, গত এক সপ্তাহের অতিরিক্ত বৃষ্টিতে নীচু জমির ফসল বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মরিচ ও গ্রীষ্মকালীন সবজির মাঠে পানি বেশি দিন জমে থাকলে ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া যদি কোথাও সরকারি খাল ভরাটের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তারা চাষিদের পাশে থাকবেন বলে জানান।
জেলায় গত এক সপ্তাহে ৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।
চার শ্রেণির করদাতা ছাড়া অন্য সব করদাতার জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
আজ রবিবার এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান স্বাক্ষরিত বিশেষ আদেশে এ নির্দেশনা জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৩২৮ এর উপ-ধারা (৪) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ৪ আগস্ট থেকে ২০২৫-২০২৬ করবর্ষের জন্য সব স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার অনলাইনে (www.ctaxnbf.gov.bd) আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে।
তবে বিশেষ আদেশে চার শ্রেণির করদাতাকে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন-
১. ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রবীণ করদাতা;
২. শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা (যথাযথ সনদ দাখিল সাপেক্ষে);
৩. বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক;
৪. মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধিরা।
তবে শর্ত থাকে যে, এই চার শ্রেণির করদাতাও ইচ্ছা করলে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
বিশেষ আদেশে আরও বলা হয়েছে, ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন সংক্রান্ত সমস্যার কারণে উপরে উল্লিখিত করদাতা ব্যতীত অন্য যেকোনো স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলে সমর্থ না হলে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে সুনির্দিষ্ট যৌক্তিকতাসহ আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত বা যুগ্ম কর কমিশনারের অনুমোদনক্রমে ওই করদাতা পেপার রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
আগে আয়কর রিটার্ন মানেই লম্বা লাইন, কাগজপত্রের ঝামেলা, সময় আর টেনশন। কিন্তু এখন চাইলে বাসায় বসেই অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া যায়—একদম সহজভাবে।
আজকের লেখায় চলুন ধাপে ধাপে জেনে নিই কীভাবে আপনি নিজেই আয়কর রিটার্ন অনলাইনে জমা দিতে পারেন।
ধাপ ১: টিআইএন (TIN) নম্বর থাকলে তবেই শুরু
রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য প্রথমেই আপনার ই-টিআইএন (e-TIN) থাকতে হবে। যদি না থেকে থাকে, তাহলে [https://etaxnbr.gov.bd](https://etaxnbr.gov.bd) ওয়েবসাইটে গিয়ে কয়েক মিনিটেই রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারেন।
ধাপ ২: অনলাইনে রিটার্ন জমার ওয়েবসাইটে যান
অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে গেলে যেতে হবে এই ঠিকানায়: [https://etaxnbr.gov.bd](https://etaxnbr.gov.bd)
এই ওয়েবসাইটেই আপনি রিটার্ন ফরম পূরণ, জমা দেওয়া, এবং রিসিপ্ট ডাউনলোড – সব কিছু করতে পারবেন।
ধাপ ৩: অ্যাকাউন্ট খুলুন
প্রথমবার হলে আপনাকে সাইটে একটা অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এখানে আপনার কিছু তথ্য লাগবে:
– টিআইএন নম্বর
– জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর
– মোবাইল নম্বর
– ইমেইল
এসব দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে অ্যাকাউন্ট খুলে নিন। এরপর লগইন করুন।
ধাপ ৪: আয়কর রিটার্ন ফরম পূরণ করুন
লগইন করার পর রিটার্ন ফরম আসবে। এখানে আপনাকে কিছু সহজ তথ্য দিতে হবে:
– আপনার মোট আয় (যেমন বেতন, ব্যবসা, ফ্রিল্যান্সিং ইত্যাদি)
– কর কাটা হয়েছে কি না
– কোনো কর ছাড় (যেমন চিকিৎসা খরচ, দান, বীমা ইত্যাদি)
– আপনার সম্পদের বিবরণ
চাকরিজীবীদের জন্য তথ্য দেওয়া অনেক সহজ—শুধু বেতন স্লিপ হাতে রাখলেই হবে।
ধাপ ৫: দরকার হলে কাগজপত্র যুক্ত করুন
সব সময় নয়, তবে কারও কারও ক্ষেত্রে কিছু স্ক্যান করা কাগজপত্র যুক্ত করতে হতে পারে। যেমন:
– ব্যাংক স্টেটমেন্ট
– বেতন স্লিপ
– পুরোনো রিটার্ন কপি ইত্যাদি
এসব পিডিএফ আকারে আপলোড করতে হবে।
ধাপ ৬: ফরম ভালো করে দেখে সাবমিট করুন
সব তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করার পর একবার ভালো করে দেখে নিন—কোনো ভুল আছে কি না। সব ঠিক থাকলে Submit বাটনে ক্লিক করে দিন।
ধাপ ৭: রিসিপ্ট ডাউনলোড করে রেখে দিন
রিটার্ন জমা দেওয়ার পর একটা Acknowledgement রিসিপ্ট পাবেন। এটাকে PDF আকারে ডাউনলোড করে কম্পিউটারে বা মোবাইলে রেখে দিন। ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।
কিছু দরকারি কথা
সর্বশেষ সময় : সাধারণত প্রতিবছর ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন জমা দিতে হয়
জরিমানা এড়াতে : সময়মতো না দিলে জরিমানা বা অন্য ঝামেলা হতে পারে
যদি না পারেন : নিজে না পারলে একজন ট্যাক্স প্র্যাকটিশনার বা হিসাববিদের সাহায্য নিতে পারেন
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দেওয়া এখন অনেক সহজ। নিজে করলেই সময়, টাকা— দুটোই বাঁচে।
দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের সবারই উচিত নিয়মিত আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া। এতে যেমন আপনি আইনি ঝামেলা এড়াতে পারবেন, তেমন দেশের উন্নয়নে ছোট একটা অবদানও রাখতে পারবেন।
আপনার মতামত লিখুন
Array