খুঁজুন
সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ৮ বৈশাখ, ১৪৩২

মধুখালীতে বিধবার সম্পত্তি দখলের অভিযোগ ভাতিজা ও দেবরের বিরুদ্ধে

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫, ১০:৪৫ এএম
মধুখালীতে বিধবার সম্পত্তি দখলের অভিযোগ ভাতিজা ও দেবরের বিরুদ্ধে
চার কন্যা সন্তানের জননী বিধবা সুরাইয়া বেগম (৬০) এর বসতভিটা জবরদখল করে উচ্ছেদ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে আপন দেবর ও ভাতিজার বিরুদ্ধে। কন্যাদের উপরে মারপিট করে শারীরিক ও পাশবিক নির্যাতনের মতোও গর্হিত কাজ করেছে চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার গাজনা ইউনিয়নের আশাপুর গ্রামের ঐতিহ্যবাহি মিয়া বাড়ির ঘটনা এটি।
এ বিষয়ে মধুখালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও এখনও কোন আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
জানা যায়, সুরাইয়া বেগমের স্বামী হামিদুর রহমান মিয়া ২০০৭ সালে মারা যান। হামিদুর রহমান মারা যাওয়ার পর তাদের  কোন পুত্র সন্তান না থাকায় সুরাইয়া বেগমের কাছে আফসা সম্পত্তি দাবী করে ভিটে ছাড়া করার চেষ্টা করেন মৃত হামিদুর রহমানের ছোট ভাই শহিদুর রহমান মিয়া ও আরেক ভাই ফজলুর রহমান মিয়ার ছেলে তাওয়াবুর রহমান বাবু।
এ ঘটনার পর সুরাইয়া বেগম তার শশুর মৃত আব্দুল জলিল মিয়ার জমি-সম্পত্তি বাটোয়ারার আবেদন করেন এবং তার দেবর ও ভাতিজাদেরকে জমিজমা বাগবাটোরে করে দিতে বলেন। এরপর থেকেই শুরু হয় সুরাইয়া বেগম ও তার চার কন্যার উপরে নানা ভাবে নির্যাতন। এমনকি তাদের লাগানো ফসলি জমি থেকেও ফসল তুলতে দেন না তার শরিকেরা।
সর্বশেষ গত ২৫ ফ্রেব্রুয়ারী সুরাইয়া বেগম ও তার কন্যাদের বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেন তাদের চাচাতো ভাই বাবু মিয়া ও তপু মিয়া। তৎক্ষণাৎ নির্যাতনের শিকার সুরাইয়া বেগমের ছোট কন্যা সাজিয়া আফরিন মধুখালি থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও তাওয়াবুর রহমান বাবু বিএনপি নেতা হওয়ায় পুলিশ ভয়তে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে নি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, আশাপুর গ্রামের মিয়া বাড়ির মৃত আব্দুল জলিল মিয়ার চার সন্তানের মধ্যে হাবিবুর রহমান মিয়ার কোন পুত্র সন্তান নেই। ২০০৭ সালে হামিদুর রহমান মিয়া মারা গেলে মুসলিম আইন অনুযায়ী এখন তার জীবি এক চাচা ও অন্যান্য চাচতো ভায়েরা। কিন্তু এই আফসা সম্পত্তির দাবির ছলে চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা বিধবা সুরাইয়া বেগম ও তার কন্যাদের উপর হামলা চালিয়ে বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ চেষ্টা করে।
বিধবা সুরাইয়া বেগম বলেন, আমার চার কন্যা সন্তানের মধ্যে তিন কন্যার বিবাহ হয়ে গেছে। আমি এক কন্যা নিয়ে আমার স্বামীর ভিটায় বসবাস করি। আমার স্বামীর অন্যান্য ভাইয়েরাও পাশাপাশি আলাদা বাড়ি করে বসবাস করে। তাদের সকলের জমি বাটোয়ারা করা। আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর এখন আমাদের ভিটার জমিতে আফছা জমির দাবী করে নির্যাতন চালানো শুরু করে। তারা পাশেই থাকে, আমার ঘরে কোন পুরুষ মানুষ নেই। সারাক্ষণ নিরাপত্তা হীনতায় ভুগি। গত ২৫ তারিখে আমার ছোট কন্যার জামাকাপড় ছিড়ে মারপিট করে। আমার ভাতিজা তাওয়াবুর রহমান বাবু বিএনপি নেতা হওয়ায় পুলিশও কিছু বলে না।
সুরাইয়া বেগমের সেজ কন্যা নুপুর সুলতানা বলেন, মা আর বোন একা বাড়িতে থাকে। কখন কি হয় এ দুশ্চিন্তার থাকি। কয়েকদিন আগে তারা একবার আক্রমণ করে। এজন্য আমি বাড়িতে এসেছি। বাড়ি এসে স্থানীয় গন্যমান্যদের সাথে কথা বলেছি, কেউ কোন কথা বলেন না আমাদের হয়ে। স্থানীয় মেম্বারের সহায়তায় জমির বাটোয়ারা মামলা করতে কাজ শুরু করেছি। মেম্বার মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদের ব্যবস্থা করেছি। সেখানেও তারা বিপত্তি বাধিয়েছে। আমার তৈরি ওয়ারিশ সনদকে ভুল প্রমান করাতে তারা জন্ম তারিখ বাড়িয়ে জন্মসনদ তৈরি করে আমার কাজে ক্ষতি করছে। স্থানীয় মেম্বার নজরুল ইসলাম আমাদের পাশে দাড়ালে তাকেও নানা ভাবে হয়রানি করছে। আমরা আমার বাবার পৈতৃক সম্পত্তি থেকে মুসলিম আইন অনুযায়ী আফসা সম্পত্তি প্রদান করতে চাই। এজন্য বাটোয়া মামলা করে আইনগত ভাবে সমাধান করতে চাই। কিন্তু আমার বাবার সম্পত্তি জোর করে জবরদখল হতে দেবো না।
মিয়া বাড়ির মুরব্বি ও সন্তান লুৎফর রহমান মিয়া বলেন, সুরাইয়া ও তার কন্যাদের উপর অন্যায়ভাবে নির্যাতন করছে তারা। তারা আমার কথা শোনেন না। আমি একাধিকবার বলেছি। বাবু এখন বিএনপি নেতা হওয়ায় সে কাউকে গোনেন না।
গাজনা ইউনিয়নের স্থানীয় মেম্বার নজরুল ইসলাম বলেন, এলাকার কেউ অসহায় বিধবা পরিবারটির পাশে এসে দাড়াতে সাহস পান না বিএনপি নেতা তাওয়াবুর রহমান বাবুর ভয়ে। আমি তাদের বাটোয়ারা মামলা করার বিষয়টি সমাধানের জন্য এগিয়ে যাই। মামলার প্রয়োজনীয় বিষয়ে সহায়তা করি। তাদের দেওয়া তথ্য মতে পরিষদ থেকে ওয়ারিশ সনদ বের করে দেই। এতে বাবু ক্ষিপ্ত হয় আমার উপর। আমার বিরুদ্ধে বাবু মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
গাজনা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো: গোলাম কিবরিয়া বলেন, মৃত হামিদুর রহমানের পরিবারটি একটি অসহায় পরিবার। হামিদুরের ভাই ভাতিজারা তাদের সাথে ভালো আচরণ করছেন না। আমি একাধিক বার তাদের বলেছি। তাদের নিয়ে সালিশও করেছি। কিন্তু দু পক্ষই কেউ কারো কথা শোনেন না।
মৃত হামিদুর রহমানের ভাই শহিদুর রহমান মিয়া বলেন, আমরা আমাদের জমির বাটোয়ারা করায় জন্য প্রায় ১০ বারের বেশি বসা হয়েছে। কেউই কথা শুনতে চায় না। আমার ভাই মৃত হামিদুর রহমানের পরিবার বাটোয়ারা মূলে ৩ একরের বেশি সম্পত্তি পাওয়ার কথা। কিন্তু তারা ভোগদখলে প্রায় সাড়ে ৪ একর জমি ব্যবহার করছে। তারা তা ছাড়তে চায় না। আর তারা অসহায় নয় তারা সবাই স্বাবলম্বী। আমাদের পৈতৃক ভিটায় তাদের জন্য পা রাখতে পারি না। পৈতৃক ভিটায় তো আমাদের ভাগ আছে স্মৃতি আছে। তার মেয়েরা সেখানে গেলে বলে আমাদের কুপায় দেবে। এ কথা শুনে আমার মানবতা থাকে না।
এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) মো: ইমরুল হাসান বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধ বিষয়টি আসলে বিজ্ঞ আদালতের বিষয়, এ বিষয়ে তো সিদ্ধান্ত আদালতের। তবে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা খেয়াল রাখবো।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নারী দালাল আটক

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫, ৭:৩৮ পিএম
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নারী দালাল আটক
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে হেলেনা আক্তার (৪৫) নামের এক নারী দালালকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রবিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
থানা ও এলাকা সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিয়োগকৃত কর্মচারী না হয়েও রোগীদের জিম্মি করে অর্থ আদায় করে আসছিলেন হেলেনা আক্তার। হাসপাতালের আইডি কার্ড ব্যবহার করে রোগীদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে নানা সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ওই নারীর বিরুদ্ধে।
বিষয়টি জানতে পেরে রবিবার দুপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরাসহ স্থানীয়রা হেলেনা আক্তারকে হাতে নাতে আটক করে। পরে পুলিশের কাছে তাকে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় হাসপাতালের পক্ষ থেকে কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেছে।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পিযুষ কান্তি বিশ্বাস জানান, হাসপাতালের কর্মচারী না হয়েও দীর্ঘদিন যাবত হাসপাতালে আসা রোগীদের সাথে প্রতারণা করছিল হেলেনা আক্তার। এমন অভিযোগে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা তাকে হাতে নাতে আটক করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছালে ওই নারীকে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় হেলেনা আক্তারের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাদি হয়ে মামলা করেছেন।

ফরিদপুরের অবৈধ পাঁচ দোকানঘর ভেঙ্গে দিল ইউএনও

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫, ৭:৩৫ পিএম
ফরিদপুরের অবৈধ পাঁচ দোকানঘর ভেঙ্গে দিল ইউএনও
ফরিদপুরের সদরপুরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে ৫টি দোকান ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। অভিযানকালে ৫টি দোকান ঘর ভাঙ্গা ছাড়াও সদর বাজারের একটি শেড ঘর দখলমুক্ত করা হয়।
রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলা সদরের স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করেন ইউএনও জাকিয়া সুলতানা।
অভিযান সূত্রে জানা যায়, জেলার সদরপুর উপজেলা সদর বাজারে সরকারি জায়গায় অবৈধবাবে দোকানঘর উঠিয়ে ব্যবসা করছিল কিছু প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা। উপজেলা প্রশাসন থেকে দোকানঘর সরিয়ে নিতে বার বার নোটিশ দেওয়া হলেও ওই ব্যবসায়ীরা তা কর্নপাত করেনি। এ সময় ৫টি দোকানঘর উচ্ছেদ করে সরকারি জায়গা দখল মুক্ত করা হয়।
সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা জানান, সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে দোকানঘর উঠিয়ে ব্যবসা করে আসছিল কতিপয় ব্যবসায়ীরা। তাদেরকে এর আগে দোকান সরিয়ে নিতে নোটিশ দেওয়া হলেও তারা তা ভেঙ্গে না নেওয়ায় অভিযান চালিয়ে ৫টি দোকান ঘর ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। এ সময় বাজারের একটি শেড ঘরও দখলমুক্ত করা হয়। এধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ভাঙ্গায় সরকারি রাস্তা দখল করে দেয়াল নির্মাণের অভিযোগ

সোহাগ মাতুব্বর, ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫, ৪:১১ পিএম
ভাঙ্গায় সরকারি রাস্তা দখল করে দেয়াল নির্মাণের অভিযোগ
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সরকারি রাস্তা দখল করে দেওয়াল নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে বদিউজ্জামান নামে এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে।
উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের শরীফাবাদ এলাকায় ঘারুয়া টু শরীফাবাদ আঞ্চলিক সড়কে এই ঘটনা ঘটেছে। বদিউজ্জামান আব্দুল হক ব্যপারীর ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার ঘারুয়া বাজার টু শরীফাবাদ আঞ্চলিক সড়কের শরীবাদ স্কুল মোড় ব্রিজের সামনে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডির পাকা রাস্তার পশ্চিম পাশ দখল করে বাড়ির ইটের দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে বড় যানবাহন চলাচলে মারাত্মক দুর্ঘটনা, ব্যঘাত সৃষ্টিসহ ভবিষ্যতে রাস্তা প্রশস্তকরণেও নানা ব্যাঘাত পোহাতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, সরকারি রাস্তা ঘেঁষে বিশাল দেয়াল নির্মাণ করার কারণে বড় যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। রাস্তা প্রশস্ত করার পথও বন্ধ করে দিচ্ছে বদিউজ্জামান। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
এই বিষয়ে বদিউজ্জামান বলেন, সরকারি রাস্তা দখলের প্রশ্নই আসে না। আমার জায়গায় রাস্তা। আমি জায়গা না দিলে রাস্তা হতো না। আমার জায়গায় আমি বাড়ির দেয়াল নির্মাণ করছি। আমাকে আপনাদের চেয়ে বড় এসিল্যান্ড ইউএনও জায়গা বুঝিয়ে দিছেন।
এই বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমি ইতিমধ্যেই খবর পেয়েছি। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।