সালথায় আমগাছে ঝুলছিল যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ
ফরিদপুরে বহুল আলোচিত নববধূ সাজিয়া আফরিন রোদেলা (২০) হত্যা মামলায় ঘাতক স্বামী সোহানুর রহমান সোহানকে (৩৫) মৃত্যুদন্ড দিয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতব দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক। রায়ে মামলার অন্য সব আসামিকে বেকুসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুন্যালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এই রায় দেন।
রায়ে মামলার প্রধান আসামি স্বামী সোহানকে মৃত্যুদন্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমান করা হয়। একই সাথে বিদেশে পলাতক মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি সোহানকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন। অপরাধ প্রমাণিত না
হওয়ায় মামলার অন্য সাতজন আসামিকে বেকুসুর খালাস দেওয়া হয়।
মামলায় খালাস প্রাপ্তরা হলেন, রোদেলার ননদ সুমি বেগম (৪৫), শাশুড়ী আনোয়ারা বোগম (৬০), ভাসুর মো. সুমন (৪৫), ভাসুরের স্ত্রী রেখা বেগম (৩০), শ্বশুর মোমিনুর রহমান (৭০), ননদের স্বামী মো. হাফিজ (৫০), ও সোহানের মামাতো ভাই মো. সাজিদ (৪৫)।
রোদেলা ফরিদপুর শহরের আলিপুর খাঁপাড়া মহল্লার শওকত হোসেন খান ও রুমানা খান দম্পত্তির মেয়ে এবং সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজে ইংরেজি বিষয়ে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
স্ত্রী রোদেলাকে হত্যার পর পরই বিদেশে পালিয়ে যায় সোহান। সেসময় পুলিশ রোদেলার স্বামীকে গ্রেফতার করতে না পারায় সোহানের বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠে ফরিদপুরবাসী। বেশ কয়েকবার মানববন্ধনও পালন করে তার সহপাঠীরা।সামাজিকভাবে ব্যাপক প্রভাব পড়ে এই হত্যা মামলা। দীর্ঘদিন এই নিয়ে শহরে আলোচনা সমলোচনা চললে বিষয়টি আলোচিত হয়।
২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারি ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামটের নতুন বাজার মহল্লার মমিনুর রহমান সেন্টুর ছেলে সোহানুর রহমান সোহানের সঙ্গে রোদেলার বিয়ে হয়। বিয়ের মাত্র দেড় মাসের মাথায় ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বামীর বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৮ ফেব্রুয়ারি ময়নাতদন্ত শেষে রোদেলাকে দাফন করা হয়। ১ মার্চ মা রুমানা
বেগম বাদী হয়ে রোদেলার স্বামী সোহান, শশুর-শাশুড়ী, ননদ-ভাসুর, ভাসুরীরেরমস্ত্রীসহ পরিবারের ৮ জনের নামে কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৪১৭/১৭।
রোদেলার মরদেহের ভিসেরা রিপোর্টে শ্বাসরোধ করে হত্যার আলামত পাওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গাফফার তদন্ত শেষে স্বামী সোহানসহ আটজনের নামে অভিযোগপত্র দেন।
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবি গোলাম রব্বানী রতন বলেন, আদালেতে স্বাক্ষী প্রমাণে স্বামী সোহান দোষী সাবস্ত হয়েছে এবং আদালত তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ায় আমারা এই রায়ে খুশি। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি সোহান স্ত্রী রোদেলাকে হত্যার পর পরই বিদেশে পালিয়ে যায় বলে জেনেছি। তাই তাকে এখনো গ্রেফতার করা যায়নি। বর্তমানে তিনি সুইডেনে আছে। তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় মহাসড়কের পাশে থেকে লাগেজভর্তি ৩২টি পেট্রোল বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ঘোষিত চলমান লকডাউন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নাশকতার উদ্দেশ্যে এসব বোমা সেখানে রাখা হয়েছিল। তবে ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করা যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা–খুলনা মহাসড়কের ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের মুনসুরাবাদ এলাকা থেকে এসব বোমা অবিস্ফোরিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গতকাল বুধবার আজিমনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী টিটু সরদারের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ ককটেল, পেট্রোল বোমা ও বোমা তৈরির উপাদান উদ্ধার করা হয় এবং তিনজনকে আটক করা হয়।
ভাঙ্গা থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে মুনসুরাবাদ এলাকায় নাশকতার প্রস্তুতির খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় দুর্বৃত্তরা টের পেয়ে লাগেজটি ফেলে পালিয়ে যায়। পরে সড়কের পাশ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় কালো রংয়ের লাগেজটি উদ্ধার করা হয়। পরে সেটি খুলে ভেতর ৩২ বোতল পেট্রোল বোমা পাওয়া যায়।সেভেন আপ, পেপসি ও কোকাকোলার কাচের বোতলের ভেতর পেট্রোল দিয়ে এসব বোমা বানানো হয়। তবে ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, সড়কের পাশে ফেলে যাওয়া লাগেজে ৩২ বোতল পেট্রোল বোমা পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়নি, তবে তদন্ত চলছে।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন
Array