খুঁজুন
শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ১৬ কার্তিক, ১৪৩২

জনপ্রশাসনে সংস্কার: বৈষম্য ঘোচাতে কী রূপরেখা থাকছে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৭:৫৯ এএম
জনপ্রশাসনে সংস্কার: বৈষম্য ঘোচাতে কী রূপরেখা থাকছে

সরকারকে জনমুখী করতে জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে একগুচ্ছ সুপারিশ রাখছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।

সরকারি চাকরিতে প্রচলিত ‘ক্যাডার’ শব্দ বাদ দিয়ে সিভিল সার্ভিস রাখার পাশাপাশি বৈষম্য দূর করতে পদোন্নতিতে ভারসাম্য ও সমানুপাতিকভাবে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর মত সুপারিশ রাখা হচ্ছে কমিশনের প্রতিবেদনে।

দীর্ঘমেয়াদের জন্য টেকসই পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি সব সার্ভিসের জন্য সুবিচারের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সুপারিশ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য সাবেক সচিব মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।

জনপ্রশাসনে ‘ভারসাম্য রাখতে’ রূপরেখা তুলে ধরা হচ্ছে বলে জানান সংস্কার কমিশনের আরেক সদস্য সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

জেলা-উপজেলায় গিয়ে মতামত নেওয়া, জনমত ও অনলাইনে মতামত নেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “প্রতিবেদন জমার কথা ছিল গত মাসে, কিন্তু আমরা আমাদের কাজের কারণে তা করতে পারেনি। এগুলোর ভিত্তিতে আজকে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে স্বাক্ষর করা হবে। প্রতিবেদনে ১০০টির বেশি সুপারিশ থাকছে। এখন এর বাইরে আমি কিছু জানাতে পারব না।”

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীকে প্রধান করে গত ৩ অক্টোবর ১১ সদস্যের জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। ৯০ দিনের মধ্যে প্রস্তুত করা প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমার কথা ছিল। পরে কমিশনের মেয়াদ ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

জনপ্রশাসনে পদোন্নতির জন্য পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টিও যৌক্তিক মনে করেন না সাবেক সচিব এ কে এম আব্দুল আউয়াল মজুমদার।

বৈষম্য নিয়ে তোলপাড়

উপসচিব পদে পদোন্নতির একটি নতুন বিধান চালুর সুপারিশ থাকতে পারে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে, যেখানে প্রশাসন ক‌্যাডার থেকে ৫০ ও অন‌্য ক‌্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কর্মকর্তাকে উপসচিব পদে পদোন্নতির বিধান রাখার কথা বলা হতে পারে।

বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডার থেকে ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য পরিষদ আন্দোলনও করছে। তারা কোটা ব্যবস্থার বিলোপ চায়।

গত ১৭ ডিসেম্বর এক সভায় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী ‘পরীক্ষার মাধ্যমে’ জনপ্রশাসনে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কোটা ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ করার কথা বলেন।

তার বক্তব্যের প্রতিবাদে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা। এ নিয়ে প্রশাসন ও বাকি ২৫ ক্যাডারের মধ্যে উত্তেজনার মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা পড়লে ‘সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান’ ঘটবে।

দৃষ্টিভঙ্গি সবার প্রতি জাস্টিস: আইয়ুব মিয়া

মঙ্গলবার জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য সাবেক সচিব মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া বলেন, প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে বুধবার জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে প্রতিবেদন জমার আগে ‘কী ধরনের সংস্কারের সুপারিশ রয়েছে সে বিষয়ে খুঁটিনাটি তুলে ধরতে চাননি তিনি।

এ সদস্য বলেন, সংস্কার কমিশন এ পর্যন্ত অন্তত ৫০টি বৈঠক করেছে। মাঠ পর্যায় ও নানা মহল থেকে সুপারিশ, বক্তব্য পাওয়া গেছে। ডেটা অ্যানালাইসিস করা হয়েছে, জনমত নেওয়া হয়েছে; জনমতকে (জরিপ) গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের কোটা কমিয়ে ৫০ শতাংশ করতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সম্ভাব্য প্রস্তাবের প্রতিবাদে ডিসেম্বরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিক্ষোভ দেখান কর্মকর্তারা। ফাইল ছবি

বর্তমান বাস্তবতায় প্রশাসনে অস্থিরতার বিষয়ে কোনো সুপারিশ রয়েছে কি না জানতে চাইলে আইয়ুব মিয়া বলেন, “সাম্প্রতিক যেসব প্রবলেম, সেগুলো তো আমরা ডিল করিনি। আমরা দীর্ঘমেয়াদের জন্য সাসটেইনেবল পরামর্শ দেওয়ার দিকে নজর রেখেছি। তাৎক্ষণিক কী প্রমোশন হল, পদোন্নতি হল- এগুলো আমাদের এখতিয়ার নয়, আমাদের কাজ নয়। এগুলো গভার্নমেন্ট আলাদাভাবে দেখছে।”

আন্তঃক্যাডার বৈষম্যের নানা দাবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, “আমরা চেষ্টা করেছি, সবার মধ্যে সুইটেবল জাস্টিস-সেটার একটা বিষয় রেখেছি। সবার প্রতি জাস্টিস- আমরা এ দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সুপারিশ রাখার চেষ্টা করেছি।”

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, পদোন্নতির ক্ষেত্রে পরীক্ষা, প্রশাসনিক প্রদেশের বিষয়ে সুপারিশ থাকার ইঙ্গিত দেন তিনি।

বৈষম্য ঘোচাতে ভারসাম্য আনতে একটা রূপরেখা রয়েছে: হাফিজুর রহমান

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের আরেক সদস্য সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান প্রশাসনে ভারসাম্য আনা, প্রশাসনিক প্রদেশের সুপারিশের বিষয়ে বলেছেন, “চ্যাপ্টার বাই চ্যাপ্টার থাকবে প্রতিবেদনে। রিপোর্ট আজ বাঁধাই হবে। এগুলো আমাদের রিপোর্টের মধ্যে মোটামুটিভাবে অ্যানালাইসিস করে, একটা আলোচনা-পর্যালোচনা করে একটা মতামত দেওয়া রয়েছে।”

ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী এবং খুলনা- চারটি প্রশাসনিক প্রদেশে বিভক্ত করার সুপারিশ থাকতে পারে কমিশনের প্রতিবেদনে।

প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণে দীর্ঘমেয়াদে এই সুপারিশের বিষয়ে হাফিজুর রহমান বলেন, “প্রদেশ- এটা তো অনেক বড় ব্যাপার। শুনছি-রিপোর্ট পাওয়ার পরে পলিটিক্যাল পার্টি, সবার সাথে আলোচনা করে উনারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। জনসংখ্যা আগে ছিল ৭ কোটি, এখন ১৮ কোটি। সুবিধা-অসুবিধা অনেকগুলো বিষয়। এ নিয়ে বিতর্ক আলোচনার মধ্যে আছে, আরও কিছু বিষয় আছে।”

আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর ও পদোন্নতি সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধানে সুপারিশ থাকছে বলে জানান এ সদস্য।

তিনি বলেন, “আমরা একটা পরামর্শ রেডি করেছি- যাতে সমানুপাতিকভাবে সবাই সুযোগ-সুবিধা পেতে পারে। সরকারের কাজ করাই তো ব্যাপার; সুযোগ-সুবিধা নেওয়া তো ব্যাপার নয়; সবাই তো বেতন পায়। দেশের উন্নয়নের জন্য, মানুষের উপকারের জন্য যেভাবে চালাবে সেভাবে চলবে। সবার মতামত কম্বাইনড করে মোটামুটিভাবে একটা সুপারিশ থাকছে।”

পদোন্নতির ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনার চেষ্টা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “…এদেশের যারা মালিক তাদের কাজ করতে গিয়ে, আমারও দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে একটা স্বীকৃতির দরকার। স্বীকৃতিটা সবাই চায়, স্বীকৃতির চাহিদা আছে সবার। সব বিবেচনা করে মোটামুটিভাবে একটা রূপরেখা দিয়েছি আমরা।”

সাবেক এ আমলা বলেন, “কমিশনের সুপারিশ পাওয়ার পর সরকারের আলাদা এক্সপার্ট রয়েছে, তারা দেখবেন, পর্যালোচনা করবেন, বিবেচনা করবেন এবং অনেকের সাথে কথা বলবেন। যেটা বাস্তবায়ন করার করবেন।”

গতবছরের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার ‘প্রাণকেন্দ্র’ হয়ে ওঠে সচিবালয়। ফাইল ছবি

‘ক্যাডার’ নয়, ‘সার্ভিস’ হবে

সরকারি চাকরিতে ‘ক্যাডার’ শব্দটি তুলে দেওয়ার সুপারিশ থাকছে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে।

কমিশন সদস্য হাফিজুর রহমান বলেন, “সবগুলো সার্ভিস করার চিন্তাভাবনা করা আছে।…ক্যাডার শব্দটি আমরা (বাদ) দেওয়ার সুপারিশ করতে চাচ্ছি। ক্যাডার শব্দ দিয়ে অন্য কিছু বোঝায়। ক্যাডারটা না করে সার্ভিস রাখতে বলছি। বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিস, এগ্রিকালচার সার্ভিস- নানা সার্ভিস হবে। এভাবে নামকরণের চিন্তা করছি।”

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে (বিসিএস) সব মিলিয়ে ক্যাডার রয়েছে ২৬টি।

বিসিএস (ক্যাডার) পদে নিয়োগ পরীক্ষা পদ্ধতি বিষয়ে পিএসসির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের জন্য প্রণীত বিসিএস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা-২০১৪ অনুযায়ী বিসিএস-এর ২৬টি ক্যাডারে উপযুক্ত প্রার্থী নিয়োগের উদ্দেশ্যে কমিশনে ৩ স্তরবিশিষ্ট পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়।

এক মত বিনিময় সভায় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী

প্রশাসনিক প্রাদেশ ‘সম্ভব না’, ৫০-৫০ কোটায় আপত্তি বিশ্লেষকের

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে প্রাদেশিক প্রশাসন ও পদোন্নতিতে ৫০-৫০ বণ্টনের যে সুপারিশ করা হচ্ছে, তা নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন প্রশাসন বিষয়ে গবেষক এ কে এম আব্দুল আউয়াল মজুমদার। তবে ‘ক্যাডার’ শব্দটি উঠিয়ে দেওয়ার প্রশংসা করেছেন তিনি।

সাবেক এই সচিব বলেন, “এরকম পৃথিবীর কোথাও নেই। আফ্রিকা, ইউরোপ কোথাও বিসিএস ব্র্যাকেটে খাদ্য, বিসিএস ব্র্যাকেটে প্রশাসন- এসব কোথাও নেই। ভারত, পাকিস্তান, জাপান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য সব জায়গায় যেখানে সিভিল সার্ভিস টাইপের আছে, সবখানে সার্ভিস। কমিশন ব্র্যাকেট তুলে দিয়ে ভালো কাজ করেছে।

“১৯৭৯ সালে মাজেদুল হক সাহেব করেছিলেন; আমাদের এখানেও এটা আগে ছিল সার্ভিস। সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান, পুলিশ সার্ভিস অব পাকিস্তান, পাকিস্তান ফরেন সার্ভিস- এরকম। এ কারণে উনারা এটা সার্ভিস করে দিয়েছেন, এটা যুক্তিসঙ্গত করেছেন।”

তবে পদোন্নতিতে ৫০-৫০ কোটার বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে সাবেক এ আমলার।

নিজেকে জনপ্রশাসন বিষয়ক একজন ছাত্র, গবেষক হিসেবে বর্ণনা করে আব্দুল আউয়াল বলেন, “ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া-সব জায়গায় এনট্রান্সে যে যেখানে যাচ্ছেন, সেখানেই গড়ে উঠছেন। এখন ৪০তম ব্যাচ থেকে তো আর কোটা নেই। তাই যিনি যেখানে ঢুকবেন, সেখানে তৈরি হওয়ার বিষয় রয়েছে। ১০/১২/১৪ বছর পরে একজন কর্মকর্তা হঠাৎ উপসচিব হয়ে এসে তৈরি হওয়া খুব ডিফিকাল্ট।”

বিশ্ব এখন দুই ধরনের সিভিল সার্ভিস রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া-একরকম; এগুলো হলো লাইন প্রমোশন। আমেরিক, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া-সেখানে ওপেন সিলেকশন। একটা পদ খালি হলে তখন দরখাস্ত আহ্বান করা হবে। যোগ্যতার ভিত্তিতে ভেতরে-বাইরের সবাই দরখাস্ত করতে পারেন।

“ধরেন ঢাকার অধ্যক্ষ বা এসপির পদ খালি হবে যখন, তখন অ্যাডভারটাইজমেন্ট হবে, যোগ্যরা আবেদন করতে পারবে। ইনডিপেন্ডেন্ট কমিশন বা কমিটি করা থাকে, সাক্ষাৎকার নিয়ে তারা বাছাই করবে। এটা ওপেন সিলেকশন। লাইন প্রমোশন হচ্ছে- সহকারী কমিশনার হিসেবে ঢুকলেন, প্রমোশন পেয়ে পেয়ে সেখান থেকে ডিসি, কমিশন, সেক্রেটারি হবেন।”

এখন আর কোটা নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আগে কোটার কারণে হয়ত কুমিল্লার একজন বেশি নম্বর পেয়ে পেছনের দিকের ক্যাডার পেত; লালমনিরহাটের একজন কম নম্বর পেয়ে সামনের দিকের ক্যাডার পেত। সে কারণে ২৫% রাখার একটা ভিত্তি ছিল।

“কিন্তু এখন যেহেতু আর ওরকম কোটা নেই; মেধার ভিত্তিতে নম্বরের ভিত্তিতে পছন্দের ভিত্তিতে একটি ক্যাডারে যোগ দেবেন। সেখানে তিনি তৈরি হবেন।”

প্রশাসন ক্যাডারের সাবেক এ কর্মকর্তা বলেন, “শুধু অ্যাডমিনে যারা জয়েন করবে, তারা সচিবালয়ের পদগুলোর জন্য তৈরি হবে। ফিল্ডে, সচিবালয়ে কাজ করে তৈরি হবে, যেভাবে সিএসপিরা তৈরি হয়েছে। অন্য ক্যাডারদের সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দেন। অন্য ক্যাডার থেকে এভাবে আসে না। প্রেসিডেন্টের হাতে ১০% আছে, তিনি মনে করলে যোগ্য লোকদের আনেন।”

অন্য ক্যাডারদের সুবিধা বাড়িয়ে দিলে আন্তঃক্যাডারের প্রশ্ন আসবে না বলে মনে করেন তিনি।

পদোন্নতির জন্য পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টিও যৌক্তিক মনে করেন না সাবেক এ সচিব। তার মতে, যার যার ক্যাডারে পদোন্নতির বিধান থাকতে পারে।

বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী এবং খুলনা- এ চার প্রদেশ গঠনের মত যোগ্যতা এখনও বাংলাদেশে অর্জন করেনি বলে মন্তব্য করেন এ সাবেক আমলা।

“এতে দুর্নীতি বাড়বে। ওভারহেড কস্ট বাড়বে। মানুষের কোনো কল্যাণ হবে বলে আমি মনে করি না। কিছু লোকের হয়ত চাকরি হবে, ভোগ-উপভোগ করবে। কিন্তু মানুষের কল্যাণ হবে না।”

–বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর

চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙনে ৩০ মিটার জিওব্যাগের বাঁধ বিলীন

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৫২ পিএম
চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙনে ৩০ মিটার জিওব্যাগের বাঁধ বিলীন

oplus_0

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের সদর ইউনিয়নের টিলারচর গ্রামে হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে পদ্মা নদীর ভাঙ্গন।

গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে এ ভাঙনে ওই এলাকার নদী পাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিওব্যাগের ডাম্পিং করা প্রায় ত্রিশ মিটার বাঁধ ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

ভাঙন এলাকা হতে প্রায় ৯০ মিটার দূরে রয়েছে এমপি ডাঙ্গী ও জাকেরেরশুরা হয়ে জেলা শহর ফরিদপুরের যাতায়াতের পাকাসড়ক, শতশত বসত বাড়ি ও সরকারী স্কুল।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পদ্মা নদীর পানি কমতে থাকা অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে হঠাৎ করে নদী ভাঙন দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে নদী পাড়ের মানুষ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরজমিনে ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এখানে নদীর তীর রক্ষা স্থায়ী বাঁধের সাথে আপদকালীন সময়ে জিওব্যাগের ডাম্পিং করা বাঁধের বড় একটা অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া কয়েকটি অংশের মাটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে।

ভাঙনের বিষয়ে নদী পাড়ের বসতি শেক মেতালেব (৫৩) ও মো. ইমারত হোসেন (২৫) জানায়, বুধবার সকাল থেকে ওই এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। কিছু সময় পর পর মাটির বড় বড় অংশ পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।

তারা বলেন, দ্রুত ভাঙন রোধে কাজ না করলে বিলীন হয়ে যাবে ফসলি জমি, পাকা সড়ক সহ স্থানীয় শত শত বসত বাড়ি।

ভাঙনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরা খাতুন বলেন, “আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার নিকট থেকে ওই এলাকায় নদী ভাঙনের খবর পেয়েছি। জায়গাটি পরিদর্শন করে দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলব।

ভাঙনের বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, “ টিলারচর গ্রামের কয়েকটি পয়েন্টে আপদকালীন ভাঙন রোধে বর্ষা মৌসুমে জিওব্যাগের ডাম্পিং করা হয়েছিল। ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া ভাঙন রোধে চরভদ্রাসন উপজেলার কয়েকটি পয়েন্ট মিলে ৩.১৫ কি.মি. জায়গায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে রয়েছে বলেও জানান পাউবোর এই নির্বাহী প্রকৌশলী।

ফরিদপুরে কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থামানোর দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৩৬ পিএম
ফরিদপুরে কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থামানোর দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

ফরিদপুর শহরের এডুকেশন জোন খ্যাত বাইতুল আমান কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থামানোর দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন ফরিদপুর রেল স্টেশন পরিদর্শনে আসলে তার কাছে বাইতুল আমান এলাকাবাসী ও আশেপাশে কলেজগুলোতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা তাদের এই দীর্ঘদিনের দাবি তুলে ধরেন এবং স্মারকলিপি প্রদান করেন।

স্মারকলিপি প্রদানের সময় ফরিদপুর কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থামানো দাবি কমিটির সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর সৈয়দ আলাওল হোসেন তনু, ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সৈয়দ আদনান হোসেন অনু, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাহিম, ফরিদপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সভাপতি মো. পার্থ আহমেদ, মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান,মোহাম্মদ রোমন চৌধুরী, মো. আব্দুস সালাম সহ স্থানীয় এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, বাইতুল আমান কলেজগেটে বহু আগে থেকেই রেলের একটি স্টেশন রয়েছে, সেখানে আগে ট্রেন এসে থামতো, অজ্ঞাত কারণে এখন আর এখানে ট্রেন থামে না । এলাকাটি ফরিদপুরের মধ্যে এডুকেশন জোন নামে খ্যাত। যেখানে রয়েছে‌ ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, সরকারি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, ফরিদপুর সরকারি কলেজ, ফরিদপুর সিটি কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ।

সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিলে ৫০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। এই শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের একেক জেলার একেক প্রান্ত থেকে তারা শিক্ষা লাভের জন্য কেউ বাসে, কেউ লঞ্চে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এবং অধিক ভাড়া দিয়ে তারা ফরিদপুর থেকে যাতায়াত করেন। অথচ বায়তুল আমান কলেজগেট স্টেশন থেকে কলেজের কোনোটির দূরত্ব ৪০০ মিটার, ৫০০ মিটার, ৬০০ মিটার। বাইতুল আমান কলেজ গেট স্টেশনে যদি ট্রেন থামানো হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূর হবে তাদের সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্প ভাড়ায় তারা বাড়িতে যাতায়াত করতে পারবে।

এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূর করতে বাইতুল আমান রেলগেট স্টেশনে পুর্বের মতো ট্রেন থামানো নির্দেশনার মতো একটি সুন্দর সিদ্ধান্ত নিতে রেলের মহাপরিচালকের কাছে আবেদন এলাকাবাসী ও প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থীর।

‘আমি এমপি হলে আমার কাছে আসতে কোন নেতা ধরতে হবে না’ — স্থপতি মুজাহিদ বেগ

সোহাগ মাতুব্বর, ভাঙ্গা:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:১৩ পিএম
‘আমি এমপি হলে আমার কাছে আসতে কোন নেতা ধরতে হবে না’ — স্থপতি মুজাহিদ বেগ

‘আমি এমপি হলে আমার কাছে আসতে কোন নেতা ধরতে হবে না। সরাসরি আমার সাথে দেখা করতে পারবেন। কথা বলতে পারবেন বলে মন্তব্য করেছেন ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মো. মুজাহিদ বেগ।’

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের উচাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক উঠান বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মুজাহিদ বেগ বলেন, ‘আমি যদি ফরিদপুর-৪ আসনের এমপি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে আমি আপনাদেরকে নিয়ে এই আসনটি এমনভাবে সাজাবো যাতে বাংলাদেশের মধ্যে রোল মডেল হিসেবে তৈরি হয়।’

এসময় তিনি আরো বলেন, ফরিদপুর-৪ আসনের একটা যুবক ভাই বেকার থাকবে না। যুবক ভাইয়েরা আমার হৃদয়ে আছে। তাদের শিক্ষা নিশ্চিত করা, খেলাধুলা করার সুযোগ তৈরি করার জন্য সব করব।

হাফেজ কুব্বাত মাতুব্বরের সভাপতিত্বে ও সাগর বেগের সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন- হায়দার হোসেন, সোবাহান হোসেন, বাকী মাতুব্বর, সেলিম মাহমুদ, সহিদুল ইসলাম, আল-আমিন, মো. রাসেল মোল্লা ও সৌরভ বিশ্বাস প্রমূখ।