খুঁজুন
শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫, ২১ আষাঢ়, ১৪৩২

জাল দলিলে জীবিত মাকে ‘মৃত’ দেখিয়ে জমি দখলের চেষ্টা: কারাগারে কৃষকলীগ নেতা

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫, ১১:২০ এএম
জাল দলিলে জীবিত মাকে ‘মৃত’ দেখিয়ে জমি দখলের চেষ্টা: কারাগারে কৃষকলীগ নেতা
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯নংওয়ার্ডের  (ইউপি) সদস্য এবং ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন জমি দখল ও জালিয়াতির মামলায় কারাগারে গেছেন।
বুধবার (১৪ মে) আসামি ইব্রাহিম হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন এপিপি (সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর) দুলারী আক্তার।
এর আগে সোমবার (১২ মে) ফরিদপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৯নং আমলী আদালতের বিচারক শাওন আহমেদ এ আদেশ দেন।
এই মামলায় আরও অভিযুক্ত উপজেলা কৃষকলীগের সদস্য সচিব খান আমিরুল ইসলাম, জব্বার শেখ, ইয়ার আলী, আখি আক্তার ও সোহাগী বেগম—তাদের মধ্যে চারজনকে ২৮ দিনের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, আয়েশা বেগমের পাঁচ ছেলের মধ্যে তিনজন জীবিত এবং দুইজন মৃত—আলমগীর ও অলিয়ার। আলমগীর ২০০৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ১৭ বছর বয়সে অবিবাহিত অবস্থায় মারা যান। এরপর ২০১৪ সালে তার বাবা আব্দুর রহমান মোল্যা মৃত্যুবরণ করেন। মামলা নম্বর: আলফাডাঙ্গা সি.আর.-১৮/২৫। বাদী—৬২ বছর বয়সী আয়েশা বেগম।
অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের ২৩ মে আলফাডাঙ্গা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ৮০৯/২৪ নম্বরের একটি জাল দলিল তৈরি করা হয়। দলিলে দাতা হিসেবে দেখানো হয় মৃত আলমগীরের সাজানো স্ত্রী সোহাগী বেগম এবং মেয়ে হিসেবে আখি আক্তারকে। অথচ আখির জন্ম ২০০৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর, অর্থাৎ আলমগীরের মৃত্যুর দুই বছর পর।
এই জাল দলিলের সহায়তায় আয়েশা বেগমকে (যিনি জীবিত) ‘মৃত’ দেখিয়ে একটি ভুয়া ওয়ারিশ সনদ তৈরি করা হয়। ওয়ারিশ সনদে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম হোসেন শনাক্তকারী হিসেবে স্বাক্ষর করেন।
২০২৫ সালের ৯ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) আয়েশা বেগমের পাড়াগ্রাম মৌজার বি.এস. খতিয়ান ২৩৫,  ৩৭১নম্বর দাগে জমিতে দখল নিতে গেলে অভিযুক্ত ইব্রাহিম ও তার সহযোগীরা উপস্থিত হন। বাধা দিলে ইব্রাহিম দাবি করেন—তিনি জমি ক্রয় করেছেন।
এ ঘটনায় আদালত ফরিদপুর পিবিআই-কে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ওয়াহিদুজ্জামান অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
স্থানীয়রা জানান, ইউপি সদস্য ইব্রাহিম হোসেন এর আগেও একাধিক বিতর্কে জড়িয়েছেন। এক প্রবাসী—নিয়ামুলের স্ত্রী সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত থাকার সময় এলাকাবাসী তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে।

ভাঙ্গায় স্ত্রীর সামনে ট্রেনে কাটা পড়ে স্বামীর মৃত্যু

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫, ১:১৫ পিএম
ভাঙ্গায় স্ত্রীর সামনে ট্রেনে কাটা পড়ে স্বামীর মৃত্যু

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় স্বামী-স্ত্রী মিলে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার পথে স্ত্রীর সামনে ট্রেনে কাটা পড়ে সোলেমান কাজী (৭০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন।

শনিবার (০৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বালিয়াচরা খাল সংলগ্ন রেললাইনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সোলেমান কাজী উপজেলার আলগী ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, স্বামী- স্ত্রী মিলে মেয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন তারা। তিনি একজন শ্রবণ প্রতিবন্ধী ছিলেন। রেললাইন দিয়ে বালিয়াচড়া মাদ্রাসা মাঠে আসার সময় যশোর থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনের সাথে ধাক্কা খেয়ে রাস্তার পাশে পড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, স্বামী-স্ত্রী মিলে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ট্রেনে কাটা পড়ে স্ত্রীর সামনে স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। এটি রেল পুলিশের বিষয়, তাদের খবর দেওয়া হয়েছে। রেল পুলিশের কর্মকর্তারা এসে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

ফরিদপুরে কবি আব্দুল লতিফ ভূঁইয়ার ২০ তম ‌ মৃত্যুবার্ষিকীতে আলোচনা সভা

মানিক কুমার দাস, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫, ৯:৪৫ এএম
ফরিদপুরে কবি আব্দুল লতিফ ভূঁইয়ার ২০ তম ‌ মৃত্যুবার্ষিকীতে আলোচনা সভা

বহু গ্রন্থের প্রণেতা ‌ ও বিভিন্ন সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক ‌ কবি আব্দুল লতিফ ভূঁইয়ার ২০ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফরিদপুরে ‌আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (০৪ জুলাই) সন্ধ্যায় ‌ কবি আব্দুল লতিফ ভূঁইয়া ফাউন্ডেশন এর আয়োজনে ‌ এবং ‌ ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদ ‌এর সহযোগিতায় শহরের টেপাখোলায় অবস্থিত কোহিনুর পাবলিক লাইব্রেরীতে এ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

আব্দুল লতিফ ভূঁইয়া ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ‌ আব্দুস সামাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- ‌ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ‌ অধ্যাপক আলতাফ হোসেন, যশোর শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ‌ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এবিএম সাত্তার, ‌ প্রবীণ ‌হিতৈষী সংঘের ‌ সভাপতি ডাক্তার আব্দুল জলিল, ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের ‌ সাধারণ সম্পাদক ‌সাংবাদিক ও সাহিত্যিক ‌ মফিজ ইমাম মিলন, খেলাঘর ফরিদপুর শাখার সভাপতি ‌ আলতাফ হোসেন, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর ‌ কালচারাল অফিসার ‌ সাইফুল হাসান মিলন, এফ ডি এর নির্বাহী পরিচালক ‌ মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম, ফরিদপুর ‌সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থার আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম স্ট্যালিন,‌ লোক সাহিত্য গবেষক ‌ খলিলুল্লাহ দিল দরাজ , খেয়া ‌ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সভাপতি ‌ ম নিজাম, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক ‌ বিজয় পোদ্দার, কবি মাহফুজ খান বাদল, জেবা তাবাসসুম নেহা ‌ প্রমুখ।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ‌ ইঞ্জিনিয়ার জাহিদুল ইসলাম।

সভায় বক্তারা ‌কবি আব্দুল লতিফ ভূঁইয়ার ‌ জীবন ও কর্ম তুলে ধরে আলোচনা করেন। তারা বলেন ‌ফরিদপুরের সাহিত্য অঙ্গনে ‌ আব্দুল লতিফ ভুঁইয়ার অবদান ‌চির স্মরণীয় থাকবে। তিনি শুধু একজন ভালো ‌সাহিত্যিক ছিলেন না ভালো মনের মানুষ ছিলেন। অত্যন্ত সৎ ও সাদা মনের মানুষ ছিলেন।‌ সব সময় মানুষের সুখে দুঃখে পাশে থাকবেন।
ফরিদপুরের সাহিত্যঙ্গনে ‌ তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল ‌।

তিনি অসংখ্য কবি সাহিত্যিক ‌ বইয়ের প্রকাশক ছিলেন । মানুষের কল্যাণে তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। অনুষ্ঠানের পরবর্তী পর্বে ‌ ‌ মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া‌ মোনাজাত ‌ অনুষ্ঠিত হয় ‌।

অনুষ্ঠানে তাঁর পুত্র ‌ অ্যাডভোকেট ‌ গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া রতন, ফরিদপুর জেলা ‌ বিএনপির সদস্য ‌সচিব ‌ এ কে এম কিবরিয়া স্বপন, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের ‌ সাধারণ সম্পাদক মাহবুব পিয়াল সহ স্থানীয় ও গণ্যমান্য ‌ ব্যক্তিবর্গ ‌ উপস্থিত ছিলেন।

সালথায় বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সঙ্কট, বারান্দায় চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান

আবু নাসের, সালথা:
প্রকাশিত: শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫, ৯:০১ এএম
সালথায় বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সঙ্কট, বারান্দায় চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কুমারপুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুটি ভবনের একটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পাঠদানে ম্রেণিকক্ষ সঙ্কট হয়ে পড়েছে। ভবনের বারান্দায় চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। দ্রুত ভবনের দাবী বিভিন্ন মহলের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুমারপুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুটি ভবন রয়েছে। তার একটি ভবনের তিনটি কক্ষের ছাদের পলিস্টার খসে পড়ছে নিচে। তাই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অন্য ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়। ওই ভবনটি রয়েছে তিনটি কক্ষ। একটি কক্ষে শিক্ষকরা তাদের অফিস করেন। বাকি দুটি কক্ষে চলে পাঠদান। ম্রেণিকক্ষ স্বল্পতার কারণে ভবনের বারান্দায় ক্লাস নেন শিক্ষকরা।

উপজেলার শিক্ষক নেতারা জানান, শ্রেণী কক্ষের অভাব একটি গুরুতর সমস্যা, যা শিক্ষা কার্যক্রমকে ব্যাহত করে। কুমারপুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রেণীকক্ষ না থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে এবং তাদের অসুবিধা হচ্ছে। এই সমস্যার সমাধানে দ্রুত ভবনের খুব প্রয়োজন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো আমানুর রশীদ বলেন, বিদ্যালয়ের দুটি ভবনের মধ্যে পুরাতন ভবনটি ঝুঁকিপুর্ণ হয়ে পড়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসারের পরামর্শে ওই ঝুঁকিপুর্ণ ভবনটিতে কয়েক মাস ধরে পাঠদান বন্ধ করা হয়েছে। আমাদের স্কুলে মোট ২০৬ জন শিক্ষার্থী রযেছে। একটি ভবনের অফিস রুম বাদে দুটি শ্রেনীকক্ষ আছে। শিশু শ্রেনীসহ ৬টি শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের দুটি কক্ষে পাঠদান করানো সম্ভব নয়। তাই বারান্দায় দুটি ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। আমরা ভবন চেয়ে উপজেলায় রেজিলেশন জমা দিয়েছি। দ্রুত ভবন পেলে পাঠদানে কোন ভোগান্তি হবে না।

সালথা উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, কুমারপুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেনীকক্ষ সঙ্কটের বিষয়ে সরেজমিনে দেখেছি। কুমারপুটি বিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি বিদ্যালয়ের ভবনের জন্য উপজেলা শিক্ষা কমিটির মাধ্যমে খুব শীগ্রই শিক্ষা অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হবে।

সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, কুমারপুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের বিষয়ে আবেদন পেলে আমরা উপজেলা শিক্ষা কমিটিতে রেজুলেশন করে তারপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবো।