ফরিদপুরে তীব্র খরায় লিচুর ফলন বিপর্যয়, লোকসানে চাষিরা
ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫, ২:৪২ পিএম

ফরিদপুরে এবার লিচুর ফলন বিপর্যয় ফরিদপুরের মধুখালীতে এবার লিচুর ফলন বিপর্যয় হয়েছে।
ফরিদপুরের মধুখালীতে এবার লিচুর ফলন বিপর্যয় হয়েছে। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ফলন মোটেও ভালো হয়নি। মূলত অনাবৃষ্টি ও টানা তাপপ্রবাহের কারণে এ ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (০৬ এপ্রিল) মধুখালী এলাকার উল্লেখিত এলাকা ঘুরে চাষিদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য উঠে আসে।
চাষিরা জানান, লিচুর ফুল ও মুকুল ঝরে পড়ায় আশানুরূপ ফল আসেনি। আকার ছোট হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে এবছর ফরিদপুরের লিচু বাগান মালিক ও মৌসুমি লিচু ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের লোকসানে পড়তে হচ্ছে। গতবার যে বাগানে সাত লাখ টাকার লিচু বিক্রি হয়েছে, এবার একই বাগানে তিন লাখ টাকার লিচু বিক্রি হবে কি-না আশঙ্কা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার জাহাপুর গ্রামটি লিচুর জন্য বিখ্যাত। অনেকের কাছে এটি ‘লিচু গ্রাম’ নামেও পরিচিত। জাহাপুর গ্রামের প্রায় মানুষেরই লিচুর বাগান রয়েছে। অন্য ফসল উৎপাদন ছেড়ে দিয়ে এ গ্রামের সবাই লিচু চাষে ঝুঁকেছেন। লিচুগাছ-বাগান নেই, এমন একটিও বাড়ি খুঁজে পাওয়া যাবে না। প্রতিটি বাড়ি কিংবা জমিতে রোপণ করা হয়েছে লিচুগাছ। গত ২৫ বছরে এ ইউনিয়নে লিচু চাষ ব্যাপক হারে বেড়েছে।
চাষিরা জানান, দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে লিচু চাষ। কম খরচে অধিক মুনাফার আশায় প্রতি বছরই কৃষকরা ঝুঁকছেন এই চাষাবাদের দিকে। তবে উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের জাহাপুর, দোস্তরদিয়া, টেংরাকান্দি, মনোহরদিয়া, চর মনোহরদিয়া, খাড়াকান্দি ও মির্জাকান্দি গ্রামে ব্যাপকভাবে লিচুর চাষ হয়। মোজাফফরি জাতের পাশাপাশি গুটি, বোম্বাই এবং চায়না-থ্রি জাতের লিচুর চাষ বেশি হয় এসব এলাকায়। তবে এবার চরম ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, মধুখালী উপজেলার প্রায় শতাধিক বাগানে এবছর ৯৫ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে, যার মধ্যে শুধু জাহাপুরেই ৪০ হেক্টর। চলতি মৌসুমে প্রতি হেক্টরে গড় ফলন হয়েছে ৪ দশমিক ১ টন। আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রতি ১০ শতাংশ জমিতে গড়ে ৫-৭টি পূর্ণবয়স্ক লিচুগাছ থেকে প্রায় ২৫-৩০ হাজার টাকার লিচু বিক্রি করা সম্ভব।
এ বিষয়ে মধুখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব এলাহী বলেন, জাহাপুরের লিচু ফরিদপুর ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করা হয়। মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে পুরোদমে লিচু সংগ্রহ শুরু হয় এবং জুনের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে থাকে। এবার অনাবৃষ্টিতে গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়েছে। ফলনও বেশ কম হয়েছে। তবে প্রযুক্তিনির্ভর পরিচর্যা এবং সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে এই ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
আপনার মতামত লিখুন
Array