খুঁজুন
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২ পৌষ, ১৪৩২

ফরিদপুরে বিএনপি’র সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি বাতিলের দাবিতে এক্সপ্রেসওয়েতে অবরোধ, যানজট-ভোগান্তি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই, ২০২৫, ২:১৯ পিএম
ফরিদপুরে বিএনপি’র সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি বাতিলের দাবিতে এক্সপ্রেসওয়েতে অবরোধ, যানজট-ভোগান্তি
ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌর বিএনপি’র সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি বাতিলের দাবিতে ঢাকা-বরিশাল হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে প্রায় ঘন্টাব্যাপী টায়ার জালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
বুধবার (০২ জুলাই) দিনগত রাত সাড়ে ৯ টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মহাসড়কে টায়ার জালিয়ে অবরোধ করা হয়। এসময় দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সড়কের দুই পাশে দূরপাল্লার শত শত যানবাহন আটকা পড়ে এবং যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন ।
খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ও হাইওয়ে থানা পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধে পরে মহাসড়কের অবরোধ তুলে নেয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
এদিকে, মহাসড়ক অবরোধের কারণে আটকে পড়া বরিশালগামী একটি পরিবহনের যাত্রী আশরাফুল আলম জানান, ঘন্টার পর ঘন্টা বাসের মধ্যে বসে আছি। দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। এতে সাধারণ যাত্রীদের চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে।
দলীয় ও স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, ভাঙ্গা পৌর বিএনপি‍‍`র সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক এম এ ওয়াদুদ ও সদস্য সচিব জাকির হোসেন সহ আরো ১৩ জনকে সদস্য করে মোট ১৫ জনের কমিটি গঠন করে ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার (২ জুলাই)সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফরিদপুর জেলা বিএনপি‍‍`র আহবায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোদারেস আলী ইছা ও সদস্য সচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন স্বাক্ষরিত কমিটি ছড়িয়ে পড়ে। এই কমিটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কমিটি নিয়ে একটি পক্ষ স্বাগত জানালেও আরেকটি পক্ষ পকেট কমিটি ও আওয়ামী লীগের লোকদের নিয়ে কমিটি হয়েছে বলে দাবি করে প্রতিবাদ জানান।
নেতা কর্মীদের দাবি, ভাঙ্গা পৌর বিএনপির সম্মেলন কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে পদ বঞ্চিতদের জায়গা হয় নাই। পকেট কমিটি করেছেন। আমরা অবিলম্বে এই কমিটি বাতিল চাই। অন্যথায় আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে কমিটি প্রত্যাহার করা না হলে পুনরায় সড়ক অবরোধের ঘোষণা দেন তারা।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মোঃ মিজানুর রহমান মুন্সি, আলম মুন্সি (ছোট), ছোট্টো শিকদার, বিল্লাল কাজী, লাবলু মুন্সি, সজীব মাতুব্বর, সৈয়দ মেহেদী, মিসান আহসান, সুমন মুন্সি, আরিফ মুন্সি সহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
ভাঙ্গা পৌর বিএনপি‍‍`র সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক এম এ ওয়াদুদ জানান, সারাজীবন দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছি। শেষ বয়সে দল আমাকে মূল্যায়ন করেছে। দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
ভাঙ্গা পৌর বিএনপি নেতা, মোঃ আলম মুন্সি জানান, এটি পকেট কমিটি ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিগত ১৭টি বছর জুলুম নির্যাতন সহ্য করে এ পর্যায়ে এসেছি। আমাদের মতো ত্যাগী কোন নেতাকর্মীদের এই কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) রোকিবুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরোধকারীদের অনুরোধ করে মহাসড়ক অবরোধ মুক্ত করা হয়। এ সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে এখন কোন যানজট নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন বলেন, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি নিয়ে মহাসড়ক অবরোধের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে কমিটির বিষয়ে যদি কোন অভিযোগ থাকে তাহলে আমাদের লিখিতভাবে জানাতে পারে,কিন্তু সড়ক অবরোধ করে এ ধরনের কর্মকান্ড গ্রহণযোগ্য বা কাম্য নয়।

সালথায় মাছ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আরেক আসামি গ্রেপ্তার

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২:৪৬ পিএম
সালথায় মাছ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আরেক আসামি গ্রেপ্তার

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (২৬) নামে এক মাছ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় জড়িত অভিযোগে জাফর মোল্যা (৪২) নামের আরেক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩, ফরিদপুর ক্যাম্পের সদস্যরা।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩, ফরিদপুর ক্যাম্পের দেওয়া এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জাফর মোল্যাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানানো হয়।

এর আগে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ঢাকার সাভারের পশ্চিম ব্যাংক টাউন এলাকা থেকে জাফরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জাফর মোল্যা ফরিদপুরের কোতয়ালী থানাধীন তেঁতুলিয়া এলাকার মৃত কাদের মোল্যার ছেলে।

এদিকে, গত ১৩ ডিসেম্বর এ হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ফিরোজ মাতুব্বর নামের অপর এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছিল র‌্যাব-১০।

র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩, ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লীডার তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় জাফর মোল্যাকে সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাছ ব্যবসায়ী উৎপল হত্যায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিতে তার নাম এসেছিল। জাফরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।’

প্রসঙ্গ, গত ৫ ডিসেম্বর ভোর রাতে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌড়দিয়া গ্রামের কালীতলা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় মাছ ব্যবসায়ী উৎপল সরকারকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এসময় তার কাছে থাকা টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় হত্যার একদিন পর উৎপলের বাবা অজয় কুমার সরকার বাদী হয়ে সালথা থানার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

কচুলতায় জেগে উঠছে সম্ভাবনা, বদলাচ্ছে কৃষকের ভাগ্য

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৫৭ এএম
কচুলতায় জেগে উঠছে সম্ভাবনা, বদলাচ্ছে কৃষকের ভাগ্য
কচুলতায় এসেছে কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তনের বার্তা। দেড়শ বিঘা দিগন্তজুড়ে কচুর লতার সফল চাষ মৌলভীবাজার জেলায় সৃষ্টি করেছে নতুন সম্ভাবনা। তুলনামূলক কম খরচ, কম পরিশ্রম এবং বেশি লাভজনক হওয়ায় কচুর লতা চাষে এক ধরনের কৃষি বিপ্লব দেখা যাচ্ছে এ জেলায়।

জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা প্রচলিত অনেক ফসলের তুলনায় বেশি আয়ের আশায় কচুর লতি চাষে ঝুঁকছেন। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি মৌলভীবাজার থেকে প্রতিদিনই লতি পাঠানো হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় তিনশ হেক্টর জমিতে কচুর লতি চাষ হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর, শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের যাত্রাপাশা এবং কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর গ্রামে।

গিয়াসনগর এলাকায় দেখা গেছে, পুরো গ্রামজুড়ে এখন বাণিজ্যিকভাবে লতি চাষ হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, কয়েক বছর আগেও দুই-তিন বিঘা জমিতে বিচ্ছিন্নভাবে লতি চাষ হলেও বর্তমানে তা ব্যাপক বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে। শুধু গিয়াসনগর এলাকাতেই মৌসুমে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে লতির চাষ হচ্ছে।

গিয়াসনগর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, তিনি ২১ শতাংশ জমিতে লতিরাজ বারি কচু–১ রোপণ করেছেন। প্রায় এক মাস ধরে তিনি লতি তুলছেন। প্রতি সপ্তাহে ৭০ থেকে ৭৫ কেজি লতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। মৌসুম যত এগোচ্ছে, দামও বাড়ছে। প্রায় ৩০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে তিনি দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভের আশা করছেন।

একই গ্রামের কৃষক আবদুল আজিজ জানান, তিনি এক কিয়ার জমিতে লতি চাষ করেছেন এবং আরও জমিতে চারা রোপণের পরিকল্পনা করছেন। কৃষক মিলন, কাজিম ও আফাই মিয়াসহ অনেকেই বড় পরিসরে লতি চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলায় কচুর লতি চাষে সফল হয়েছেন বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার। উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামে তার উদ্যোগে লতি চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তার দেখাদেখি স্থানীয় অন্যান্য কৃষকরাও লতি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

এ ছাড়া শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের যাত্রাপাশা গ্রামের এংরাজ মিয়া, রোকন মিয়া, আব্দুল মজিদ ও ইউনুস মিয়া বাণিজ্যিকভাবে কচুর লতি চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছেন।

স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিরোজ কান্তি রায় বলেন, গিয়াসনগর গ্রামে লতি এখন একটি সমৃদ্ধ ফসলে পরিণত হয়েছে। চার-পাঁচ বছর আগে যেখানে দুই-তিন বিঘা জমিতে লতি চাষ হতো, এখন সেখানে মৌসুমে ১৫০ বিঘা জমিতে লতির আবাদ হচ্ছে। সারা বছর ৫০ থেকে ৭০ বিঘা জমিতে লতি চাষ হয়। লতি অত্যন্ত লাভজনক ফসল এবং এতে রোগবালাই তুলনামূলক কম। গ্রামটি যেন এখন ‘লতার গ্রাম’ হয়ে উঠছে।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দিন বলেন, কচুর লতি এ অঞ্চলে একটি দীর্ঘমেয়াদি ও লাভজনক ফসল। অল্প খরচে কৃষকরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। লতি চাষ সম্প্রসারণে কৃষি বিভাগ সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে।

সালথায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কৃষকলীগ নেতা আটক

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:০৯ পিএম
সালথায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কৃষকলীগ নেতা আটক

ফরিদপুরের সালথায় ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামীকে ধরতে গিয়ে খোরশেদ খান (৪৫) নামে এক কৃষক লীগ নেতার হামলার শিকার হয়েছেন পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল। এ ঘটনায় ওই হামলাকারী কৃষকলীগ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আগুলদিয়া মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

খোরশেদ খান গট্টি ইউনিয়নের কৃষকলীগের সহ-সভাপতি ও ওই গ্রামের উচমান খানের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আগুলদিয়া মোড় এলাকায় এক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে ধরতে যায় একদল পুলিশ। এ সময় ওই আসামীকে ধরতে বাধা দেন কৃষক লীগ নেতা খোরশেদ খান। এক পর্যায়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল আহত হন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলু রহমান খান বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামীকে ধরতে গেলে খোরশেদ খান বাধা প্রদান করেন এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল আহত হন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।