খুঁজুন
রবিবার, ১১ মে, ২০২৫, ২৮ বৈশাখ, ১৪৩২

ফরিদপুরে সূর্যের হাসি নিয়ে ফুটেছে সূর্যমুখী, দেখতে মানুষের ভিড়

পান্না বালা, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৮:৫৭ পিএম
ফরিদপুরে সূর্যের হাসি নিয়ে ফুটেছে সূর্যমুখী, দেখতে মানুষের ভিড়

ফরিদপুর সদরের ডোমরাকান্দিতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রে সূর্যমুখীর দুটি বাগানে ফুটেছে হাজারো সূর্যমুখী। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, দুটি হলুদ গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। সূর্যের হাসি নিয়ে ফুটে থাকা এসব সূর্যমুখী দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

মূলত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে চার মাসের জন্য করা হয়েছে এই দুটি বাগান। বাগান দুটির আকার প্রায় পাঁচ একর। গত ১৮ থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত বপন করা হয়েছে বারি সূর্যমুখী-৩ জাতের সূর্যমুখী ফুলের বীজ। বর্তমানে বীজ থেকে হওয়া প্রায় প্রতিটি গাছে ফুল ফুটেছে। পরিপক্ব হওয়ার পর আগামী ৮ মার্চ থেকে বীজ সংগ্রহ করা শুরু হবে।

ফরিদপুর শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে বাগান দুটির অবস্থান। ফুলগুলো বাতাসে দোল খেয়ে আমন্ত্রণ জানায় দর্শনার্থীদের। সূর্যমুখীর সৌন্দর্য দেখতে ভিড় বাড়ে বিকেল ও ছুটির দিনে।

সম্প্রতি সূর্যমুখীর বাগানে ঘুরে দেখা যায়, শত শত মানুষের ভিড়ে বাগানের রক্ষণাবেক্ষণ করতে হিমশিম অবস্থা কর্তৃপক্ষের। দর্শনার্থীরা যেন বাগানের ভেতর গিয়ে বা পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে গিয়ে বাগান নষ্ট না করেন, ফুলে হাত না দেন; এ জন্য সার্বক্ষণিক হ্যান্ডমাইক নিয়ে সচেতন করে চলেছেন এক মালি।

বিএডিসি কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৭ বছর ধরে এখানে সূর্যমুখীর চাষাবাদ হচ্ছে। শুরুতে চাষের পরিধি ছিল খুবই সামান্য। বর্তমানে বিশাল এলাকাজুড়ে সূর্যমুখীর বাগান করা হচ্ছে।

বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে এসেছেন সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকিয়া জুঁই। তিনি বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে আমরা বন্ধুরা মিলে শহরের কোথাও না কোথাও ঘুরতে বের হই। আজ এ বাগানে এসেছি। হাজার হাজার ফুল দেখে মনে এক অনাবিল শান্তি অনুভব করছি।’

সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের বাংলা বিভাগের সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শুভ বিশ্বাস বলেন, ‘প্রতিবছরই সূর্যমুখীর বাগান দেখতে এখানে আসি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এখানে এলে সবুজের সংস্পর্শ পাওয়া যায়, সূর্যমুখী ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য পাওয়া যায়।’

বিএডিসির কর্মকর্তারা বলেন, ১ একর জমিতে ৭০০ থেকে ৮০০ কেজি বীজ হয়। ১ একর জমি চাষ করতে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়।

বিএডিসির বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রের উপসহকারী পরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর উৎপাদিত বীজ থেকে তেল উৎপাদন করে বিক্রি করা হবে না। এবার এই বীজ কৃষকদের মধ্যে প্রণোদনা হিসেবে বিতরণ করা হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, এ বছর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মোট ২৬ দশমিক ৮৫ একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ করা হয়েছে। গত বছর আবাদ করা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৪৪ একর জমিতে। দিনে দিনে ফরিদপুরে সূর্যমুখীর চাষাবাদ বাড়ছে।