ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় পাওনা টাকা আদায়ের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে মো. আব্দুল হালিম মোল্লা (৬১) নামে এক বৃদ্ধের জিহ্বা কর্তনের ঘটন্য়া দুইদিনের মাথায় চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের একমাত্র মেয়ে রিনা বেগম (৩৭) বাদি হয়ে বুধবার সকালে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলফাডাঙ্গা থানার ওসি হারুন অর রশিদ।
এর আগে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকালে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃদ্ধ আব্দুল হালিম মোল্যা মারা যান। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে।
নিহত আব্দুল হালিম মোল্লা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পাড়াগ্রাম বাজারে নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি পাড়াগ্রামের মৃত আবু সাঈদ মোল্লার ছেলে। নিহত ব্যক্তির একটি মাত্র মেয়ে রিনা বেগমের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় এবং স্ত্রী মারা যাওয়ায় তিনি একাই বাড়িতে বসবাস করতেন।
মামলা ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মো. আব্দুল হালিম মোল্লা (৬১) তার মা তছিরণ নেছা ওরফে ছুটু বিবিকে (৭৫) নিজের ধার দেওয়া টাকা আদায়ের কথা বলে গত ১২ এপ্রিল বিকেলে আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাড়াগ্রাম নিজ বাড়ি থেকে বের হন। পরেরদিন ১৩ এপ্রিল সকালে পাড়াগ্রামের লাল্টুর পরিত্যক্ত জমিতে ওই গ্রামের নুর ইসলাম (৫৮) নামে এক ব্যক্তি আব্দুল হালিম মোল্যাকে জিব্বা কাটাসহ জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ডাক চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে হালিম মোল্যাকে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ বাবলুর সহায়তায় আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য আলফাডাঙ্গা হাসপাতাল থেকে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকালের দিকে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় বুধবার সকালে নিহতের একমাত্র মেয়ে রিনা বেগম (৩৭) বাদি হয়ে আলফাডাঙ্গা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-০৯। মামলার পর সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই এলাকার তিনজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ঘটনার দিন আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আবিদ হোসেন জানান, বৃদ্ধ আব্দুল হালিম মোল্যাকে জিব্বা কাটা অবস্থায় হাসপাতালে আনার পর অবস্থার অবনতি হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তিনি গুরুতর জখম ছিলেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা থানার ওসি হারুন অর রশিদ বলেন, খবর পেয়েই ওইদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। এ ঘটনায় নিহত আব্দুল হালিম মোল্যার মেয়ে রিনা বেগম বাদি হয়ে থানায় আজ হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তবে মামলার এজাহারে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। বাদি কারো নাম উল্লেখ করেননি। মামলার পর ঘটনাস্থল এলাকার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। হত্যার রহস্য উৎঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। আশা করি দ্রুতই প্রকৃত আসামিদের আমরা গ্রেপ্তার করতে পারবো।
আপনার মতামত লিখুন
Array