খুঁজুন
সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫, ৬ শ্রাবণ, ১৪৩২

লালমিতে হাসছে ফরিদপুরের কৃষক, ৪৫ কোটি বাণিজ্যের টার্গেট!

বি কে সিকদার সজল, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১:৪৬ পিএম
লালমিতে হাসছে ফরিদপুরের কৃষক, ৪৫ কোটি বাণিজ্যের টার্গেট!

চলতি বছর ফরিদপুরে লালমির বাম্পার ফলন হয়েছে। রমজান মাস সামনে রেখে ফলটির চাহিদা ও দামও বেড়েছে। ফলে লাভের মুখ দেখে কৃষকের মুখে ফুটেছে আনন্দের হাসি। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এখানকার উৎপাদিত লালমি যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। চলতি বছর ৪৫ কোটি টাকার বাণিজ্যের আশা করছে কৃষি বিভাগ।

বাঙ্গি জাতীয় সুস্বাদু ফল লালমি দেখতে অনেকটা বাঙ্গির মতো হলেও স্বাদ ও ঘ্রাণে এটি ভিন্ন। পানির পরিমাণ বেশি থাকায় রোজাদারদের কাছে ফলটি বেশ জনপ্রিয়। রমজান সামনে রেখে প্রতি বছর ফরিদপুরের কৃষকরা লালমির চাষ করেন। এবারও সদরপুরসহ বিভিন্ন উপজেলায় এর আবাদ হয়েছে। কম খরচে লাভজনক হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে লালমির চাষ। চলতি মৌসুমে একশ লালমি প্রকারভেদে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সরেজমিনে সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকেরা লালমি উত্তোলনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ক্ষেত থেকে লালমি তুলে পাশেই ধোয়া হচ্ছে, এরপর ভ্যান ও গাড়িতে করে পাঠানো হচ্ছে হাটে। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও এতে শ্রম দিচ্ছেন।

লালমি চাষি আবেদ আলী বলেন, ‘এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে, পাশাপাশি দামও ভালো পাচ্ছি। যদিও খরচ কিছুটা বেশি হয়েছে, তবে লাভ ভালোই হচ্ছে।’

অন্য এক চাষি ছলেমান শেখ বলেন, ‘রমজান উপলক্ষে প্রতি বছরই আমরা লালমি চাষ করি। চার মাসের মধ্যেই বিক্রি করা যায়, খরচও কম, লাভও বেশি। তাই এলাকার কৃষকেরা লালমির চাষে আগ্রহী হচ্ছে।’

লালমি চাষে নারীদের অংশগ্রহণ

নারীরাও লালমি চাষ ও বিক্রির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। শারমিন বেগম বলেন, ‘লালমি আবাদ থেকে উত্তোলন পর্যন্ত পরিবারের সবাই মিলে কাজ করি। এখান থেকে যা লাভ হয়, তা দিয়ে সারা বছরের সংসার ও সন্তানদের পড়ালেখার খরচ চলে।’
কৃষিকাজ করে সংসার চালানো শিউলি আক্তার বলেন, ‘বাবা অসুস্থ, সংসারের দায়িত্ব আমার ওপর। তাই গত পাঁচ বছর ধরে লালমি চাষ করছি। কম সময় ও খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এটা চাষ করি।’
গৃহবধূ লাকি খাতুন বলেন, ‘লালমির মৌসুমে ক্ষেতে কাজ করি। কখনো লালমি তুলি, কখনো ধুই। প্রতিদিন দুই থেকে তিনশ টাকা রোজগার হয়, যা সংসার ও সন্তানদের পড়াশোনায় কাজে লাগে।’
লালমির বাজার ও বাণিজ্য

 

উপজেলার চর দড়িকৃষ্ণপুর এলাকায় গড়ে উঠেছে লালমির হাট। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে পাইকাররা লালমি কিনে নিয়ে যান। এখানে কোনো আড়ৎদারি নেই। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাপারীরা এসে লালমি কিনে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছেন। ফরমালিন মুক্ত হওয়ায় এখানকার লালমির চাহিদা দেশজুড়ে।

পাবনা থেকে আসা পাইকার কবির হোসেন বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে দুই দিন এখানে আসি। একশ লালমি আড়াই হাজার থেকে আট হাজার টাকায় কিনতে হয়। গাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে একশ পিসে এক হাজার টাকা খরচ হয়। পরে প্রতিটি লালমি ১০ টাকা লাভে বিক্রি করি।’

ঢাকা থেকে আসা ব্যাপারী সামচুল আলম বলেন, ‘এখানে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে লালমি কেনা যায়, কোনো আড়ৎদার নেই। এখানকার লালমির স্বাদ ভালো, রাসায়নিক মুক্ত হওয়ায় সারা দেশে এর চাহিদা রয়েছে।’
ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, ‘এই হাটে প্রতিদিন চার লাখ টাকার লালমি বিক্রি হচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে, বিক্রিও বাড়ছে।’

লক্ষ্যমাত্রা ও কৃষি বিভাগের তথ্য

 

ফরিদপুর কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বছর জেলায় ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে লালমি আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, ‘রমজান সামনে রেখে এ অঞ্চলের মানুষ লালমির চাষ করে। কম খরচে লাভজনক হওয়ায় চাষ বাড়ছে। এ বছর বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ভালো দামও পাচ্ছেন কৃষকেরা। চাহিদা থাকায় জেলার লালমি দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানকার লালমিতে কোনো রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় না, তাই এটি সুস্বাদু ও জনপ্রিয়। এ কারণেই দেশজুড়ে ফরিদপুরের লালমির চাহিদা বেড়েছে।’

ফরিদপুরে হাইওয়ে থানায় পুলিশের জব্দ বাসে আগুন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২০ জুলাই, ২০২৫, ১১:০২ এএম
ফরিদপুরে হাইওয়ে থানায় পুলিশের জব্দ বাসে আগুন

ফরিদপুরের করিমপুর হাইওয়ে থানায় সড়ক দুর্ঘটনায় জব্দ করা একটি বাসে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। তবে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেনি হাইওয়ে থানা পুলিশ।

শনিবার (১৯ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের করিমপুর হাইওয়ে থানা সংলগ্ন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিস গিয়ে রাত ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‌‘গত ঈদুল আজাহার আগে আরএসএফ পরিবহনের বাসটি মধুখালীতে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়। এরপর বাসটি জব্দ করে থানার দেড়শ গজ পশ্চিমে সড়কের পাশে রাখা ছিল। মালিকপক্ষ লোক রেখে বাসটি দেখাশুনা করত। শনিবার দুপুর থেকে তারাও ছিলেন না। রাত সাড়ে ১১টার দিকে জানতে পারি বাসটিতে আগুন লেগেছে। কীভাবে আগুনের সুত্রপাত বা দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে কিনা জানি না।’

ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্বরণে ফরিদপুরে ম্যারাথন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫, ৬:৩৮ পিএম
ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্বরণে ফরিদপুরে ম্যারাথন

ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্বরণে ফরিদপুরে প্রতীকী ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে ‌
ফরিদপুর জেলা প্রশাসন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও ফরিদপুর জেলা ক্রীড়া অফিসের যৌথ উদ্যোগে এর আয়োজন করা হয়।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিন্টু বিশ্বাস, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত ‌ জাহান, জেলা শিক্ষা অফিসার বিষ্ণুপদ ঘোষাল, জেলা ক্রীড়া অফিসার ‌ আল আমিন খন্দকার, এন সি পির ১ নং যুগ্ন সমন্বয়ক এস এম জাহিদ।

ম্যারাথনটি ‌ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে ‌শহর প্রদক্ষিণ করে ‌ রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

ম্যারাথনে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ, সাবেক খেলোয়াড় বৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে ফরিদপুরে বিএনপির মৌন মিছিল

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫, ৬:২৩ পিএম
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে ফরিদপুরে বিএনপির মৌন মিছিল

oppo_0

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে ফরিদপুরে জেলা বিএনপির উদ্যোগে মৌন মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকালে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‌ এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

জেলা বিএনপি’র ‌ সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন- ‌যুগ্ন আহবায়ক সৈয়দ জুলফিকার হোসেন জুয়েল, অ্যাডভোকেট আলী আশরাফ নান্নু, খন্দকার ফজলুল হক টুলু, দেলোয়ার হোসেন দিলা, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোজাম্মেল হোসেন মিঠু প্রমূখ।

জুলাই গণ অভ্যুত্থানে ফরিদপুর থেকে নিহত ছয় জন শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়। বক্তারা বলেন, দেশের এই অবস্থায় জরুরী নির্বাচন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। একটা নির্বাচিত সরকারের হাতে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে দেশের দায়িত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান। তারেক রহমানের নেতৃত্বেই দল পরিচালিত হবে। আর তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানান ‌।

এছাড়া দুপুরে ‌শহরের চকবাজার মসজিদে গণ অভ্যুত্থানে নিহত সকল শহীদদের প্রতি দোয়া ও মোনাজাত‌ অনুষ্ঠিত হয়।