খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ২১ কার্তিক, ১৪৩২

নতুন ছাত্রসংগঠনের নাম ‘বিপ্লবী ছাত্রশক্তি’, নেতৃত্বে সাবেক সমন্বয়করা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৩:৩৭ পিএম
নতুন ছাত্রসংগঠনের নাম ‘বিপ্লবী ছাত্রশক্তি’, নেতৃত্বে সাবেক সমন্বয়করা

আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন ছাত্রসংগঠনের। আজ সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) মধুর ক্যান্টিন থেকে এর আত্মপ্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।

সংগঠনটির সম্ভাব্য নাম ‘বিপ্লবী ছাত্রশক্তি’। এ সংগঠনের নেতৃত্বে থাকছেন জুলাই অভ্যুত্থানের সাবেক সমন্বয়করা। তারা সবাই কার্যক্রম স্থগিত হওয়া ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’র সাবেক নেতা।

 

শিবিরের পদধারী কোনো নেতা এই সংগঠনে যুক্ত হচ্ছেন না। তবে শিবিরের সঙ্গে কোনো না কেনো সময় যুক্ত ছিলেন — এমন শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ নতুন সংগঠনে থাকছেন।

ছাত্রসংগঠনটির চারজন উদ্যোক্তা গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

জানা গেছে, ‘বিপ্লবী ছাত্রশক্তি’র সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগী এবং আওয়ামী লীগের শাসনামলে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে বাধ্য হয়ে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে সাবেক সমন্বয়কদের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া নতুন ছাত্রসংগঠনের উদ্যোক্তাদের কয়েকজন গণমাধ্যমকে জানান, আওয়ামী লীগের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো ছিল ছাত্রলীগের একক নিয়ন্ত্রণে। হলে ওঠা থেকে আসন পাওয়া—সবই নির্ভর করত ছাত্রলীগের নেতাদের ইচ্ছার ওপর। হলে থাকতে হলে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছিল বাধ্যতামূলক। এ পরিস্থিতিতে অনেক শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে মিছিল–সমাবেশসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। ওই শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা অতীতে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না, তারা চাইলে নতুন সংগঠনে সম্পৃক্ত হতে পারেন।

এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে আছেন মাস্টারদা সূর্য সেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান ওরফে জিম। ছাত্রলীগের সূর্য সেন হল শাখা কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। কোটা সংস্কারের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে তিনিই প্রথম ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। পরে তার দেখাদেখি অনেকে আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে তখন ছাত্রলীগের পদ ছাড়েন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি থেকে পদত্যাগ করা এমন নেতার সংখ্যা দুই শতাধিক হবে।

আবার কোনো পদে না থেকেও বাধ্য হয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন — এমন অনেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগ থেকে দূরে সরে যান। এমন ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম সূর্য সেন হলের শিক্ষার্থী লিমন মাহমুদ হাসান। আরও আছেন অমর একুশে হলের মহির আলম। তারা দুজনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। পরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন তারা। ছাত্রলীগ ছেড়ে আসা এই ধরনের শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক। তাদেরকেও নতুন ছাত্রসংগঠনে যুক্ত করতে চাইছেন উদ্যোক্তারা।

সংগঠনটির শীর্ষ পদের নেতারা জানিয়েছেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যে সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি হয়েছে, তার সঙ্গে নতুন এই ছাত্রসংগঠনের কোনো সম্পর্ক থাকবে না। এমনকি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে নতুন যে রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে সেই দলের সঙ্গে নতুন এই ছাত্রসংগঠনের যুক্ততা থাকছে না। তবে নতুন ছাত্রসংগঠন ও নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের পরও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি বহাল থাকবে।

নতুন ছাত্রসংগঠনের নেতৃত্বে আলোচনায় যারা

একাধিক সাবেক সমন্বয়কের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হচ্ছেন আবু বাকের মজুমদার। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব ছিলেন।

কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যসচিব পদের জন্য আলোচনায় আছেন সাবেক সমন্বয়ক ও বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সেলের সম্পাদক জাহিদ আহসান এবং সাবেক সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী। তারা দুজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

সদস্যসচিবের পদে এ দুজনের মধ্যে কে হচ্ছেন তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে জাহিদ ও তাহমিদের মধ্যে যিনি সদস্যসচিব হবেন না, তিনি নতুন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক হবেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে নতুন সংগঠনের মুখপাত্র পদের জন্য আলোচনায় আছেন আশরেফা খাতুন ও রাফিয়া রেহনুমা হৃদি। তারাও গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এর মধ্যে আশরেফা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। আর রাফিয়া ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অন্যদিকে গণ–অভ্যুত্থানের সময় সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সাবেক নেতা আবু বাকের মজুমদার, আবদুল কাদের, হাসিব আল ইসলাম, সানজানা আফিফা অদিতিসহ বেশ কয়েকজন আছেন নতুন ছাত্রসংগঠনে। তারাই মূলত এ সংগঠনের উদ্যোক্তা।

‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’ উদ্যোক্তারা জানান, সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক হতে যাচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে আলোচনায় এসেছিলেন কাদের। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব পদের জন্য আলোচনায় আছেন ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মহির আলম ও লিমন মাহমুদ হাসান। তারা একসময় ছাত্রলীগের (কোনো পদে ছিলেন না) রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

এছাড়া নতুন ছাত্রসংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক পদের জন্য আলোচনায় রয়েছেন ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাসিব আল ইসলাম ও রিফাত রশীদ। মুখপাত্র পদের জন্য আলোচনায় আছেন রাফিয়া রেহনুমা। এই তিনজনই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক। তারা গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তিরও নেতা ছিলেন।

উদ্যোক্তারা জানান, নতুন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটি একসঙ্গে ঘোষণা করা হবে। এ ছাত্রসংগঠনের নীতি হবে ‘স্টুডেন্টস ফার্স্ট’ ও ‘বাংলাদেশ ফার্স্ট’। ছাত্র-নাগরিকের স্বার্থ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করবে তারা।

নতুন ছাত্রসংগঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা সাবেক সমন্বয়ক রেজওয়ান আহমেদ রিফাত গণমাধ্যমকে বলেন, নতুন ছাত্রসংগঠন কারও লেজুড়বৃত্তি করবে না। কোনো ‘মাদার পার্টির’ এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে না। নতুন সংগঠনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা তাদের নেতা নির্বাচন করবে।

তিনি আরও বলেন, তরুণরা রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর তরুণদের অনেকে রাজনীতির বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এই তরুণদের নিয়ে একটি আদর্শ সমাজ-রাষ্ট্র গড়তে কাজ করবে নতুন ছাত্রসংগঠন।

আবার আলোচনায় ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের অগ্রভাগে যারা ছিলেন, তারা প্রায় সবাই ছাত্রশক্তির নেতা ছিলেন। এ সংগঠনের দুই নেতা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আন্দোলনের প্রথম পর্বে কোটা সংস্কারের দাবির আন্দোলনে ১ থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল শাখার নেতা-কর্মীদের অনেকে অংশ নিয়েছিলেন। তাদের কেউ কেউ তখন ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগও করেছিলেন। কোটা সংস্কারের আন্দোলনে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরাও অংশ নেন। অবশ্য তারা সাংগঠনিক পরিচয়ে এ আন্দোলনে অংশ নেয়নি।

এখন নতুন যে ছাত্রসংগঠন আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে, সেটির উদ্যোক্তারা মূলত ছাত্রশক্তির সাবেক নেতা।

উল্লেখ্য, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের রাজনৈতিক দল গণ অধিকার পরিষদের ছাত্রসংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদ থেকে বেরিয়ে একদল নেতা-কর্মী ২০২৩ সালের অক্টোবরে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি নামে নতুন সংগঠন গড়ে তোলেন।

ফরিদপুরে ফুটপাতে চাঁদা তোলার সময় হাতেনাতে ধরে পুলিশে দিলেন স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫, ২:৪৮ পিএম
ফরিদপুরে ফুটপাতে চাঁদা তোলার সময় হাতেনাতে ধরে পুলিশে দিলেন স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী

ফরিদপুর শহরের ফুটপাতে চাঁদা তোলার সময় ইব্রাহিম শেখ (৩১) নামে এক ব্যক্তিকে হাতেনাতে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন ফরিদপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী মোর্শেদুল ইসলাম আসিফ।

বুধবার (০৫ নভেম্বর) দুপুরে তাকে ফরিদপুরের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) দিবাগত রাতে শহরের জনতা ব্যাংক মোড় এলাকার রায়প্লাজার সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়।

ইব্রাহীম শেখ শহরের হাড়োকান্দি এলাকার শাহ আলমের ছেলে। এ ঘটনায় কোতয়ালী থানায় একটি মামলা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা জনি বিশ্বাস।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে শহরের মুজিব সড়ক, জনতা ব্যাংকের মোড় সহ বিভিন্ন এলাকায় ফরিদপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন মোর্শেদুল ইসলাম আসিফ। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা জনি বিশ্বাস কয়েকজনকে রায়প্লাজার সামনে ফুটপাতের বিভিন্ন দোকান থেকে চাঁদা তোলা দেখে ভিডিও করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন তাঁরা। এ সময় মোর্শেদুল ইসলাম আসিফ ওই ব্যক্তিকে আটকিয়ে জেরা করেন এবং কাছে থাকা একটি ব্যাগে নগদ ৪ হাজার টাকা দেখতে পান। তখন তাঁর সাথে থাকা দুই ব্যক্তি পালিয়ে যান। পরবর্তীতে কোতয়ালী থানা পুলিশকে খবর দেয়া হয়।

মামলার বাদী জনি বিশ্বাস বলেন, মোর্শেদুল ইসলাম আসিফ ভাইয়ের নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি ফুটপাতের দোকানিদের সাথে কথা বলেন এবং চাঁদা তোলা হয় কি-না জানতে চান। তখনই ইব্রাহিম শেখ সহ কয়েকজনকে বিভিন্ন দোকান থেকে টাকা তুলতে থাকেন। প্রতিটি দোকান থেকে ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০/২০০ টাকা তোলা হচ্ছিল।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় মোর্শেদুল ইসলাম আসিফের সাথে। তিনি আমেরিকান প্রবাসী ও থাকেন নিউইয়র্কে এবং ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট এলাকার বাসিন্দা।

তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী প্রচারণাপত্রে উল্লেখ রয়েছে- আমি যদি নির্বাচিত হই তাহলে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে শহরকে চাঁদাবাজ মুক্ত করব। সেই প্রেক্ষিতে ঘুরে ঘুরে ব্যবসায়ীদের মাঝে প্রচারণা চালাচ্ছিলাম, তখনই ওই লোকটিকে টাকা তুলতে দেখা যায়। তাঁর কাছে জানতে চাইলে সে কোনো রশিদ বা কাগজপত্র দেখাতে পারে নাই। আমার একটাই হুশিয়ারি ফরিদপুর শহরে কোনো চাঁদাবাজী চলবে না, সে যেই হোক।

এ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন কোতয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল্লাহ বিশ্বাস বলেন, এ ঘটনায় রাতেই চাঁদাবাজির মামলা নেয়া হয়েছে এবং তাকে বুধবার আাদালতে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আটক ব্যক্তি তিতুমীর বাজার বণিক সমিতির লোক দাবি করলেও ফুটপাত থেকে তাঁর টাকা তোলার নিয়ম নেই, সরকারতো ফুটপাত ইজারা দেয়নি। এছাড়া এসপি স্যারের নির্দেশ আজ বুধবার থেকে ওই এলাকার ফুটপাতে কোনো দোকান বসতে পারবে না।

ফরিদপুরে ৩৬ বছর ধরে চলছে টিনের ঘরে পাঠদান, সরকারি হলেও জুটেনি ভবন

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:০৬ পিএম
ফরিদপুরে ৩৬ বছর ধরে চলছে টিনের ঘরে পাঠদান, সরকারি হলেও জুটেনি ভবন

ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের জন্য ফরিদপুর সদর উপজেলার ভাজনডাঙ্গা এলাকায় ১৯৮৯ সালে ৮২টি ঘর বসতি নিয়ে গঠিত হয় গুচ্ছগ্রাম। যে গুচ্ছগ্রামটি ১৯৯০ সালে উদ্বোধন করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এই গুচ্ছগ্রামের অবহেলিত ও শিক্ষাবঞ্চিত কোমলমতি ছেলেমেয়েদের শিক্ষামুখী করতে ১৯৮৯ সালে গড়ে তোলা হয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যার নাম রাখা হয় ‘ভাজনডাঙ্গা গুচ্ছগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়’। এরপর এ বিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে জাতীয়করণ করা হয়। তবুও বিদ্যালয়টিতে মিলেনি ভবন, টিনের জরাজীর্ণ ঘরে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদপুর সদর উপজেলার মধ্যে গুচ্ছগ্রামের মানুষের জন্য একমাত্র বিদ্যাপীঠ ‘১১৯ নং ভাজনডাঙ্গা গুচ্ছগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।’ ১৯৮৯ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই টিনের ঘর দিয়ে শুরু করে শিক্ষা কার্যক্রম। এখনো ওই ঘরেই চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। বিদ্যালয়ের ঘরগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন না থাকায় পূর্বের টিনের ঘরেই ঝুঁকির মধ্যেই শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নেই, তাইতো কোমলমতি শিশুরা সবসময় আতঙ্ক আর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

স্থানীয় ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অনগ্রসর গুচ্ছগ্রামের কোমলমতি শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার কথা মাথায় রেখে ১৯৮৯ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর ৩৬ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও টিনের জরাজীর্ণ ঘরে শিক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছে পাঠদান। বৃষ্টি আসলে চুইয়ে চুইয়ে পানি পড়ে। কখনো-বা ভাঙাচোরা জিনিসপত্র মাথায় এসে পড়ে শিক্ষার্থীদের। ভয়ে শিক্ষার্থীরা আসতে চায়না স্কুলে। তাইতো কমে গেছে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আশেপাশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তুলনায় সুবিধাবঞ্চিত ও অবহেলিত একমাত্র এ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়টিতে একসময় ৬ শতাধিক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করলেও জরাজীর্ণ টিনের ঘর আর সাথে ভবন না থাকায় বর্তমানে মাত্র শতাধিক শিক্ষার্থী পাঠদান করছে। নানা কারণে ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে নিয়মিত।

অভিভাবক হানিফ হোসেন জানান, ‘ঝুঁকিপূর্ণ টিনের ঘরের কারণে আমাদের ছেলে মেয়েদের অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করতে হচ্ছে। সরকার যদি নতুন ভবনের ব্যবস্থা না করে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরও কমে যাবে।’

ভাজনডাঙ্গা গুচ্ছগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চঞ্চলা রানী সরকার বলেন, ‘ভবন সংকটের কারণে ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ার মান ব্যাহত হচ্ছে। ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার জানালেও কাজ হচ্ছে না। এ ছাড়া ২০২৪ সালে সরকার থেকে একটি ভবন বরাদ্দ হলেও অদৃশ্য কারণে সেটা বাতিল হয়ে গেছে। অতিশ্রীঘ্রই বিদ্যালয়টিতে ভবন নির্মাণ করা সময়ের দাবি হয়ে গেছে।’

ফরিদপুর সদর সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন জানান, ‘ওই স্কুলের ভবন নিয়ে বারবার উপর মহলে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু, এখনও ভবন হয়নি। তবে, এর আগে গত বছর ওই স্কুলের জন্য একটি ভবন পাশ হলেও ঠিকাদার কাজ না করায় ভবনটি অন্য জায়গায় দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গত এক মাস আগে ওই স্কুলের ভবনের জন্য কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। আশা করছি, দ্রুতই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’

ফরিদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘প্রচুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। তবে, ওই স্কুলের ভবন এখনও না হওয়া দুঃখজনক। আমাদের পিডিপি-০৪ ফাইল আগামী ২০২৬ সালের জুলাইয়ে স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। তখন আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওই স্কুলের ভবন নির্মাণে ব্যবস্থা নিব।’

ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ গেল গৃহবধূর

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৪:২২ পিএম
ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ গেল গৃহবধূর

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ট্রেনে কাটা পড়ে মিলি আক্তার (৩৩) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

খুলনা থেকে ঢাকাগামী জাহানাবাদ এক্সপ্রেসে কাটা পড়ে মারা যান তিনি। মিলি আক্তার ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের সৌদি প্রবাসী আনোয়ার কাজীর স্ত্রী। তিনি এক ছেলে ও মেয়ের মা।

রেলওয়ে পুলিশের ভাঙ্গা ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মো. শওকত হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা মরদেহ উদ্ধার করেছি। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’

ভাঙ্গা রেলওয়ে জংশন স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মো. সাকিব আকন্দ বলেন, ‘খুলনা থেকে ঢাকাগামী জাহানাবাদ এক্সপ্রেসে কাটা পড়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। মরদেহটি রেলওয়ে পুলিশ উদ্ধার করেছে।’