খুঁজুন
রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ১২ শ্রাবণ, ১৪৩২

নতুন ছাত্রসংগঠনের নাম ‘বিপ্লবী ছাত্রশক্তি’, নেতৃত্বে সাবেক সমন্বয়করা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৩:৩৭ পিএম
নতুন ছাত্রসংগঠনের নাম ‘বিপ্লবী ছাত্রশক্তি’, নেতৃত্বে সাবেক সমন্বয়করা

আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন ছাত্রসংগঠনের। আজ সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) মধুর ক্যান্টিন থেকে এর আত্মপ্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।

সংগঠনটির সম্ভাব্য নাম ‘বিপ্লবী ছাত্রশক্তি’। এ সংগঠনের নেতৃত্বে থাকছেন জুলাই অভ্যুত্থানের সাবেক সমন্বয়করা। তারা সবাই কার্যক্রম স্থগিত হওয়া ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’র সাবেক নেতা।

 

শিবিরের পদধারী কোনো নেতা এই সংগঠনে যুক্ত হচ্ছেন না। তবে শিবিরের সঙ্গে কোনো না কেনো সময় যুক্ত ছিলেন — এমন শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ নতুন সংগঠনে থাকছেন।

ছাত্রসংগঠনটির চারজন উদ্যোক্তা গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

জানা গেছে, ‘বিপ্লবী ছাত্রশক্তি’র সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগী এবং আওয়ামী লীগের শাসনামলে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে বাধ্য হয়ে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে সাবেক সমন্বয়কদের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া নতুন ছাত্রসংগঠনের উদ্যোক্তাদের কয়েকজন গণমাধ্যমকে জানান, আওয়ামী লীগের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো ছিল ছাত্রলীগের একক নিয়ন্ত্রণে। হলে ওঠা থেকে আসন পাওয়া—সবই নির্ভর করত ছাত্রলীগের নেতাদের ইচ্ছার ওপর। হলে থাকতে হলে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছিল বাধ্যতামূলক। এ পরিস্থিতিতে অনেক শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে মিছিল–সমাবেশসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। ওই শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা অতীতে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না, তারা চাইলে নতুন সংগঠনে সম্পৃক্ত হতে পারেন।

এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে আছেন মাস্টারদা সূর্য সেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান ওরফে জিম। ছাত্রলীগের সূর্য সেন হল শাখা কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। কোটা সংস্কারের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে তিনিই প্রথম ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। পরে তার দেখাদেখি অনেকে আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে তখন ছাত্রলীগের পদ ছাড়েন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি থেকে পদত্যাগ করা এমন নেতার সংখ্যা দুই শতাধিক হবে।

আবার কোনো পদে না থেকেও বাধ্য হয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন — এমন অনেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগ থেকে দূরে সরে যান। এমন ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম সূর্য সেন হলের শিক্ষার্থী লিমন মাহমুদ হাসান। আরও আছেন অমর একুশে হলের মহির আলম। তারা দুজনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। পরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন তারা। ছাত্রলীগ ছেড়ে আসা এই ধরনের শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক। তাদেরকেও নতুন ছাত্রসংগঠনে যুক্ত করতে চাইছেন উদ্যোক্তারা।

সংগঠনটির শীর্ষ পদের নেতারা জানিয়েছেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যে সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি হয়েছে, তার সঙ্গে নতুন এই ছাত্রসংগঠনের কোনো সম্পর্ক থাকবে না। এমনকি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে নতুন যে রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে সেই দলের সঙ্গে নতুন এই ছাত্রসংগঠনের যুক্ততা থাকছে না। তবে নতুন ছাত্রসংগঠন ও নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের পরও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি বহাল থাকবে।

নতুন ছাত্রসংগঠনের নেতৃত্বে আলোচনায় যারা

একাধিক সাবেক সমন্বয়কের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হচ্ছেন আবু বাকের মজুমদার। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব ছিলেন।

কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যসচিব পদের জন্য আলোচনায় আছেন সাবেক সমন্বয়ক ও বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সেলের সম্পাদক জাহিদ আহসান এবং সাবেক সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী। তারা দুজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

সদস্যসচিবের পদে এ দুজনের মধ্যে কে হচ্ছেন তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে জাহিদ ও তাহমিদের মধ্যে যিনি সদস্যসচিব হবেন না, তিনি নতুন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক হবেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে নতুন সংগঠনের মুখপাত্র পদের জন্য আলোচনায় আছেন আশরেফা খাতুন ও রাফিয়া রেহনুমা হৃদি। তারাও গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এর মধ্যে আশরেফা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। আর রাফিয়া ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অন্যদিকে গণ–অভ্যুত্থানের সময় সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সাবেক নেতা আবু বাকের মজুমদার, আবদুল কাদের, হাসিব আল ইসলাম, সানজানা আফিফা অদিতিসহ বেশ কয়েকজন আছেন নতুন ছাত্রসংগঠনে। তারাই মূলত এ সংগঠনের উদ্যোক্তা।

‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’ উদ্যোক্তারা জানান, সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক হতে যাচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে আলোচনায় এসেছিলেন কাদের। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব পদের জন্য আলোচনায় আছেন ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মহির আলম ও লিমন মাহমুদ হাসান। তারা একসময় ছাত্রলীগের (কোনো পদে ছিলেন না) রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

এছাড়া নতুন ছাত্রসংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক পদের জন্য আলোচনায় রয়েছেন ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাসিব আল ইসলাম ও রিফাত রশীদ। মুখপাত্র পদের জন্য আলোচনায় আছেন রাফিয়া রেহনুমা। এই তিনজনই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক। তারা গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তিরও নেতা ছিলেন।

উদ্যোক্তারা জানান, নতুন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটি একসঙ্গে ঘোষণা করা হবে। এ ছাত্রসংগঠনের নীতি হবে ‘স্টুডেন্টস ফার্স্ট’ ও ‘বাংলাদেশ ফার্স্ট’। ছাত্র-নাগরিকের স্বার্থ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করবে তারা।

নতুন ছাত্রসংগঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা সাবেক সমন্বয়ক রেজওয়ান আহমেদ রিফাত গণমাধ্যমকে বলেন, নতুন ছাত্রসংগঠন কারও লেজুড়বৃত্তি করবে না। কোনো ‘মাদার পার্টির’ এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে না। নতুন সংগঠনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা তাদের নেতা নির্বাচন করবে।

তিনি আরও বলেন, তরুণরা রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর তরুণদের অনেকে রাজনীতির বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এই তরুণদের নিয়ে একটি আদর্শ সমাজ-রাষ্ট্র গড়তে কাজ করবে নতুন ছাত্রসংগঠন।

আবার আলোচনায় ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের অগ্রভাগে যারা ছিলেন, তারা প্রায় সবাই ছাত্রশক্তির নেতা ছিলেন। এ সংগঠনের দুই নেতা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আন্দোলনের প্রথম পর্বে কোটা সংস্কারের দাবির আন্দোলনে ১ থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল শাখার নেতা-কর্মীদের অনেকে অংশ নিয়েছিলেন। তাদের কেউ কেউ তখন ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগও করেছিলেন। কোটা সংস্কারের আন্দোলনে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরাও অংশ নেন। অবশ্য তারা সাংগঠনিক পরিচয়ে এ আন্দোলনে অংশ নেয়নি।

এখন নতুন যে ছাত্রসংগঠন আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে, সেটির উদ্যোক্তারা মূলত ছাত্রশক্তির সাবেক নেতা।

উল্লেখ্য, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের রাজনৈতিক দল গণ অধিকার পরিষদের ছাত্রসংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদ থেকে বেরিয়ে একদল নেতা-কর্মী ২০২৩ সালের অক্টোবরে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি নামে নতুন সংগঠন গড়ে তোলেন।

সালথায় অভিযানের পর নদ-নদী ছেড়ে তিন ফসলি জমিতে মাটিখেকোদের হানা 

সালথা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫, ৭:৩৫ পিএম
সালথায় অভিযানের পর নদ-নদী ছেড়ে তিন ফসলি জমিতে মাটিখেকোদের হানা 

ফরিদপুরের সালথায় প্রশাসনিক অভিযানের পর নদ-নদীতে বালু উত্তোলন বন্ধ হলেও এখন তিন ফসলি জমিকে টার্গেট করেছে মাটিখেকোরা। বর্ষা মৌসুমকে টার্গেট করে উপজেলার সর্বত্রই তিন ফসলি নিচু জমির জলাশয়ে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের ভয়াবহ তৎপরতা বেড়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ফসলি জমিতে সমৃদ্ধ এই উপজেলায় প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীরা দিনের পর দিন ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করার ফলে ভেঙে পড়ছে আশপাশের কৃষিজমি।

অন্যদিকে ড্রেজারের বিকট শব্দে শিশু ও বৃদ্ধদের স্বাভাবিক জীবনযাপনও ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চলা এই অবৈধ ড্রেজিং কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের কুষ্টিয়ার চকে ফসলি জমির জলাশয়ে স্থানীয় দেলোয়ার হোসেন নামে এক মাটি ব্যবসায়ী বড় একটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে বালু উত্তোলন করছে। পাশেই রিয়াজ হোসেন নামে আরেক বালু ব্যবসায়ী একটি ড্রেজার স্থাপন করতে দেখা গেছে।

এ ছাড়া উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের ভাবুকদিয়া বিলের ফসলি জমিতে মিজান নামে এক মাটি ব্যবাসায়ী ও আগুলদিয়া দীঘের বিলে ফসলি জমিতে মাহমুদ নামে আরেক মাটি ব্যবসায়ী ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। তাছাড়াও উপজেলার বিভিন্নস্থানে তিন ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলনের খবর পাওয়া গেছে।

জানা যায়, উপজেলার মধ্যে দেলোয়ার, মিজান ও মাহমুদসহ একাধিক চিহ্নিত মাটি ও বালু ব্যবসায়ী রয়েছে। এটাই তাদের পেশা। তারা নদ-নদী, খাল-বিল ও তিন ফসলি জমি থেকে মাটি ও বালু উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তাদের ভয়াল থাবার শিকার হয় নিরিহ সাধারণ কৃষক। স্থানীয় কৃষকরা জানান, প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় জমির অংশ ভেঙে যাচ্ছে। ফলে তাদের ফসল চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

আটঘর ইউনিয়নের কৃষক জব্বার মোল্যা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার দাদা-পরদাদার আমলের কৃষিজমি এখন বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কিছু বললে হুমকি দেওয়া হয়। আমরা অসহায়। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত এই অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

বালু ও মাটি ব্যবসায়ী মাহমুদ, মিজান ও দেলোয়ার বলেন, আমরা সকলকে ম্যানেজ করেই মাটি ব্যবসা করি। এতে কৃষিজমির ক্ষতি হলেও আমাদের কিছু করার নেই। কারণ জমির মালিকরা যদি না বুঝে, তাহলে আমাদের কি করার আছে। জমির মালিকরা তো আমাদের কাছে মাটি বিক্রি করে। আমরা এই মাটি ইট ভাটাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করি।

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, তিন ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যেহুত অভিযোগ আসছে, তাই দ্রুতই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন উপজেলার মধ্যেদিয়ে বয়ে যাওয়া বিভিন্ন নদ-নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছিল। পরে নদ-নদী থেকে বালু উত্তোলনের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরপর থেকে মাটিখেকোরা তিন ফসলি জমি ধ্বংসে মেতে উঠেছে।

ফরিদপুরের গ্রামের বাড়িতে শায়িত হলো ছোট্ট রাইসা মনি, শোকে স্তব্ধ বাবা-মা

আলফাডাঙ্গা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫, ৭:৩২ পিএম
ফরিদপুরের গ্রামের বাড়িতে শায়িত হলো ছোট্ট রাইসা মনি, শোকে স্তব্ধ বাবা-মা

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় গ্রামের বাড়িতে শায়িত হলো মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ১১ বছরের রাইসা মনি। শোকে স্তব্ধ মা-বাবা। শোকে বিহ্বল আত্মীয়-স্বজন ও পুরো এলাকাবাসী। শোকে পাথর পুরো পরিবার। সোমবার থেকে অনবরত চোখের পানি ঝরছে বাবা-মায়ের।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল নয়টার দিকে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া ঈদগাহ ময়দানে নামাজের জানাজা শেষে বাজড়া কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

তিন সন্তানের মধ্যে এক সন্তানের মৃত্যুতে শোকে কাতর শাহাবুল-মিম দম্পতি। রাইসা মনির জন্মের দুই বছর আগে তাদের কোলজুড়ে আসে তার বড় বোন সিনথিয়া (১৩) ও সব ছোট ছেলে রাফসান শেখ (৪)।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রাইসা মনির বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল ছেলে-মেয়েকে ভালো স্কুলে পড়ানোর। উচ্চশিক্ষায় সু-শিক্ষিত করে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন। সেই লক্ষ্যে ভর্তি করেছিলেন উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। রাইসা মনি তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তো। একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী বড় বোন সিনথিয়া।

স্থানীয় ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ওবায়দুর রহমান বলেন, রাইসা মনির অকাল মৃত্যুতে পুরো এলাকার মানুষ শোকে বিহ্বল। তার মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর পর হৃদয়-বিদারক দৃশ্যর অবতারণা হয়। এমন কোন মানুষ নেই তার জন্য কাঁদেনি।

রাইসা মনির বাবা শাহাবুল শেখ বলেন, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের পরদিন ২২ জুলাই ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন সিআইডির ডিএনএ ল্যাবের সদস্যরা। পরে নমুনাগুলো বিশ্লেষণ করে আমার মেয়ের রাইসা মনি মরদেহ শনাক্ত করার পর আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতেই মেয়ের মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফ‌রিদপুরের আলফাডাঙ্গায় আসি। বাড়িতে পৌঁছাতে ভোর হয়ে যায়। শুক্রবার দাফন সকাল নয়টায় স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে নামাজের জানাজা শেষে বাজড়া কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

উল্লেখ্য, গত সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হায়দার আলী ভবনে বিধ্বস্ত হয়। সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় ৩১ জন নিহত ও আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৬৯ জন।

ফরিদপুরে দুই বাসের সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ১০

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫, ৩:০৫ পিএম
ফরিদপুরে দুই বাসের সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ১০
ফরিদপুরে দুটি বাসের সংঘর্ষে তিন জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল ১০ টার দিকে ফরিদপুরের করিমপুরের আবুল হোসেন পেট্রল পাম্পের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।
ফরিদপুরের করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, রয়েল পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে লোকাল একটি বাসের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে তিনজন নিহত হয়। আহত হয় অন্তত ১০-১২ জন। আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।