খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০ পৌষ, ১৪৩২

ফরিদপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তিতে বিএনপির বিজয় র‌্যালি

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫, ১০:১৩ পিএম
ফরিদপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তিতে বিএনপির বিজয় র‌্যালি

ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ফরিদপুরে বিজয় র‌্যালি ও সমাবেশ করেছে ফরিদপুর জেলা ও মহানগর বিএনপি।

বুধবার (০৬ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে শহরের ব্রহ্মসমাজ সড়কের সামনে থেকে বিজয় র‌্যালিটি শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জনতা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

জেলা ও মহানগর বিএনপির আয়োজনে বিভিন্ন এলাকা থেকে সমাবেশ ও র‌্যালিতে কয়েক হাজার বিএনপি নেতাকর্মী অংশ নেয়।

র‌্যালির পূর্বে এক সমাবেশে মহানগর বিএনপির আহবায়ক এএফএম কাইয়ূম জঙ্গীর সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব একেএম কিবরিয়া স্বপনের সঞ্চালনায় সমাবেশ বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির সাবেক মন্ত্রী মরহুম চৌধুরী কামাল ইউসুফের বড় কন্যা চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা, জেলা যুবদলের সভাপতি রাজিব হোসেন, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মিরাজ, জেলা মহিলা দলের সভাপতি নাজনীন চৌধুরী, মহানগর মহিলা দলের আহ্বায়ক রোকসানা পারভিন পাপিয়া, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তানজিদুল হাসান কায়েস, জেলা তাঁতী দলের সদস্য সচিব শাহেদা বেগম, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব খাইরুল আলম চুন্নু, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি মুনিব হাসান সোহাগ, জেলা জাসাসের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ রাশেদুল আলম তুহিন ও সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান চৌধুরী রঞ্জন প্রমুখ।

অপরদিকে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল খান পলাশ, সৈয়দ জুলফিকার হোসেন জুয়েল ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে বুধবার বিকেল ৪টার দিকে জেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে থেকে একটি বিজয় র‌্যালি বের হয়ে জনতা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন পলাশ, সৈয়দ জুলফিকার হোসেন জুয়েল ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।

সমাবেশে গত আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ডের সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থেকে ‌ বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর ‌ নির্যাতন চালিয়েছে‌। তারা বিরোধী দলের আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য দমন পীড়ণ নীতি অবলম্বন করেছেন। যে কারণে ‌ অনেক বিএনপি নেতাকর্মীকে হয়রানি শিকার হতে হয়েছে। অনেকের প্রাণ দিতে হয়েছে। একের পর এক মিথ্যা মামলায় ‌দিনের পর দিন কারাবরণ করতে হয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ই আগস্টে ছাত্র জনতার আন্দোলনের পর ‌ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হয়েছে। তারা বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসরদের ষড়যন্ত্র এখনও অব্যাহত রয়েছে।

বক্তারা বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন ‌ বেগম খালেদা জিয়া ‌ এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ‌ দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে দল পরিচালিত হবে। আর তাই আগামী বছর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে জয়লাভ করার জন্য ‌ সবাইকে সকল ভেদাভেদ হলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।

শৈশবের স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে ফরিদপুরে শুরু হচ্ছে ৯ম ঘুড়ি উৎসব

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:৫৩ এএম
শৈশবের স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে ফরিদপুরে শুরু হচ্ছে ৯ম ঘুড়ি উৎসব

বছর ঘুরে আবারও ফিরে এলো বহুল প্রতীক্ষিত Papertech Industries Ltd-এর ৯ম ঘুড়ি উৎসব। শৈশবের হারানো আনন্দ, আকাশভরা রঙিন ঘুড়ি আর প্রাণের উচ্ছ্বাসে মুখর হতে যাচ্ছে ফরিদপুর। পৌষের হিম শীতল সকালে ছোট-বড় সবাইকে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে দিতে এই ব্যতিক্রমী আয়োজন আবারও ডাকছে ঘুড়ি ও নাটাই হাতে মাঠে নামতে।

আয়োজকদের ভাষায়, এই ঘুড়ি উৎসব শুধু বিনোদনের নয়—এটি আমাদের হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ি সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার এক আন্তরিক প্রয়াস। প্লাস্টিক আর প্রযুক্তির যুগে শৈশবের সেই কাগজের ঘুড়ি, বাঁশের কাঠামো আর সুতোয় জড়িয়ে থাকা আবেগকে আবার জীবন্ত করতেই এই আয়োজন।

আগামী ২৭ ডিসেম্বর, শনিবার, ফরিদপুরের ধলার মোড় এলাকায় অনুষ্ঠিত হবে এই উৎসব। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলবে ঘুড়ি ওড়ানো, নানা রকম ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ির প্রদর্শনী এবং আনন্দঘন মিলনমেলা। শিশুদের পাশাপাশি তরুণ-তরুণী ও বয়োজ্যেষ্ঠরাও ফিরে যেতে পারবেন তাদের শৈশবের স্মৃতিময় দিনগুলোতে।

এই উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে Papertech Industries Limited—যারা ধারাবাহিকভাবে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করে আসছে। বিশেষ সহযোগী পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছে Fustan Emporium Limited। এছাড়াও সহযোগী পৃষ্ঠপোষক হিসেবে যুক্ত রয়েছে Eblum Cafeteria, Times University Bangladesh, EPD IT Solution, Digital Plus Faridpur—যারা এই আয়োজনকে আরও সমৃদ্ধ করতে পাশে দাঁড়িয়েছে।

পুরো আয়োজন বাস্তবায়ন করছে ফরিদপুর সিটি অর্গানাইজেশন, যারা স্থানীয় সংস্কৃতি ও জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে।

আয়োজকদের প্রত্যাশা, এবারের ঘুড়ি উৎসব শুধু একটি দিনের অনুষ্ঠান নয়, বরং ফরিদপুরের সাংস্কৃতিক ক্যালেন্ডারে একটি স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে।

রঙিন ঘুড়িতে ভরে উঠবে আকাশ, হাসি-আনন্দে মুখর হবে চারপাশ—শৈশবের সেই নির্মল আনন্দ ফিরে পেতে সবাইকে আমন্ত্রণ ৯ম ঘুড়ি উৎসবে।

সরিষা ফুলের মাঝে জমে থাকা এক হারানো শৈশব

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:৩৩ এএম
সরিষা ফুলের মাঝে জমে থাকা এক হারানো শৈশব

সরিষার হলুদ ফুলে ভরা বিস্তীর্ণ মাঠ। রোদে ঝলমল করে ওঠা গ্রামীণ প্রান্তর। সেই মাঠের মাঝখানে চার-পাঁচটি শিশু—মুখে অদম্য হাসি, শরীরে কাদা-মাখা জামা, হাতে পুরোনো একটি চাকার রিম। কেউ সেটি ঠেলে দিচ্ছে, কেউ দৌড়ে পিছু নিচ্ছে। ছবিটি এক নজরে আনন্দের হলেও, গভীরে তাকালে ধরা পড়ে হারিয়ে যেতে বসা এক শৈশবের নীরব আর্তনাদ।

এই শিশুরা কোনো দামি খেলনার দাস নয়। তাদের খেলাধুলা জন্ম নেয় মাঠে, মাটিতে, প্রকৃতির কোলে। একসময় গ্রামবাংলার প্রায় প্রতিটি শৈশবই এমন ছিল। বিকেলের আলো ফুরোতে না ফুরোতেই মাঠে নেমে পড়ত শিশুরা—ডাংগুলি, মার্বেল, চাক্কা ঘোরানো, লুকোচুরি। এখন সেই দৃশ্য ক্রমেই বিরল। মোবাইল ফোন, ট্যাব আর শহুরে ব্যস্ততা গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।

ছবির শিশুরা হয়তো জানেই না—তাদের এই দৌড়ানো, মাটিতে গড়াগড়ি খাওয়া, ফুলের গন্ধ মাখা মুহূর্তগুলো একদিন স্মৃতি হয়ে থাকবে। বড় হয়ে তারা হয়তো কাজের খোঁজে শহরে যাবে, ঢুকে পড়বে কংক্রিটের জঙ্গলে। তখন আর এমন সরিষার মাঠ থাকবে না, থাকবে না খোলা আকাশের নিচে অবাধ খেলাধুলা।

হারানো শৈশব বলতে শুধু খেলাধুলার অভাব নয়; এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নিরাপত্তাহীনতা, দারিদ্র্য, শিশুশ্রমের ভয়। অনেক শিশুই আজ মাঠে দৌড়ানোর বয়সে কাজে নামতে বাধ্য হচ্ছে। কেউ ইটভাটায়, কেউ হোটেলে, কেউ রিকশার পেছনে ঝুলে থাকা এক ছোট সহকারী। তাদের শৈশব হারিয়ে যায় প্রয়োজনের চাপে।

এই ছবিটি তাই শুধু সুন্দর দৃশ্য নয়; এটি একটি সতর্কবার্তা। আমাদের মনে করিয়ে দেয়—শিশু মানেই দায়িত্ব। তাদের জন্য চাই নিরাপদ শৈশব, খেলাধুলার সুযোগ, শিক্ষার নিশ্চয়তা। প্রযুক্তির যুগে দাঁড়িয়ে আমরা যদি প্রকৃতির সঙ্গে বেড়ে ওঠার এই সহজ আনন্দটুকু রক্ষা করতে না পারি, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানবেই না—সরিষার হলুদ মাঠে দৌড়ানোর সুখ কতটা গভীর হতে পারে।

ছবির শিশুরা আজ হাসছে। প্রশ্ন হলো—এই হাসি কি আগামী দিনের বাংলাদেশেও টিকে থাকবে?

মধুখালীতে মোটরসাইকেল চোরচক্রের সদস্য গ্রেপ্তার, উদ্ধার চোরাইকৃত মোটরসাইকেল

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:১৭ পিএম
মধুখালীতে মোটরসাইকেল চোরচক্রের সদস্য গ্রেপ্তার, উদ্ধার চোরাইকৃত মোটরসাইকেল

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় মোটরসাইকেল চোরচক্রের একজন সক্রিয় সদস্যকে চোরাইকৃত মোটরসাইকেল ও একটি মাস্টার চাবিসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে মধুখালী থানা পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার মেগচামী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মধুখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মাসুদের নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্স অভিযান পরিচালনা করে ওই ব্যক্তিকে আটক করে।

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলার হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত আব্দুল শুকুর মোল্লার ছেলে। অভিযানের সময় তার হেফাজত থেকে একটি চোরাইকৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মোটরসাইকেলটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর কুষ্টিয়া হ-১৬-০২২৫। এছাড়া মোটরসাইকেল চুরিতে ব্যবহৃত একটি মাস্টার চাবিও জব্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে গ্রেফতারকৃত আসামিকে ফরিদপুরের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফকির মো. তাইজুর রহমান বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মধুখালী থানা পুলিশের একটি দল মোটরসাইকেল চোরচক্রের একজন সক্রিয় সদস্যকে চোরাইকৃত মোটরসাইকেল ও মাস্টার চাবিসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। চোরচক্রের সঙ্গে জড়িত অন্য সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশি তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।”

তিনি আরও জানান, এর আগে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটলেও সেগুলোর কোনোটিই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে গ্রেফতারকৃত আসামির মাধ্যমে এসব চুরির রহস্য উদঘাটনের সম্ভাবনা রয়েছে।