খুঁজুন
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৬ বৈশাখ, ১৪৩২

অনিয়ম ও অবহেলায় চলছে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা!

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫, ৪:১৩ পিএম
অনিয়ম ও অবহেলায় চলছে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা!
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়ম ও চিকিৎসক সংকট যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। রোগীরা অফিস সময়ে ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ বিস্তর। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালটিতে মাত্র পাঁচ-ছয়জন চিকিৎসক দিয়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বেশিরভাগ চিকিৎসক প্রেষণে রয়েছেন। ফলে চিকিৎসা বিঘ্ন ঘটছে।
তবে যে কয়জন ডাক্তার রয়েছে তারাও দিনের বেশিরভাগ সময়ে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যক্তিগত চেম্বারে মাঝেমধ্যে রোগী দেখেন; ফলে চিকিৎসক সংকট ও ডাক্তারদের বাইরে রোগী দেখায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ রোগীরা। এই হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসার জন্য গাইনী, শিশুরোগ ও ইএনটি বিশেষজ্ঞও নেই বলে জানা গেছে।
হাসপাতালের অনিয়ম ও হাসপাতাল সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানতে চাইলে স্থানীয় গোলাম হায়দার নামের এক অবসরপ্রাপ্ত মেজরকেও স্থানীয় লোকজন ও হাসপাতালের স্টাফ দিয়ে নাজেহাল করা হয় বলে ওই মেজরের অভিযোগ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজন মত জনবল না থাকার পরও ডাক্তারদের অনিয়ম ও অবহেলার কারণে সঠিক চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেনা সাধারণ রোগীরা। দৈনিক ওষুধ সরবরাহের তালিকায় রোগীদের ওষুধ দেওয়ার বিধান থাকলেও তেমন কোন ওষুধই দেওয়া হয় না। তবে, হাসপাতালটির চিকিৎসকদের দাবি হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। সংকট রয়েছে ওষুধেরও।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগ, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে হাসপাতালের ডাক্তারদের সখ্যতা থাকায় কমিশনের বিনিময়ে তাদের ওষুধ পেসক্রিপশনে লিপিবদ্ধ করে থাকেন। এছাড়া হাসপাতালে সিডিউল অনুসারে রোগীদের খাবার দেওয়া হয়না। সরকারি ওষুধও মাঝেমধ্যে চুরি করে বাইরে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এছাড়া রোগী ও তার স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে হাসপাতালটির স্টাফরা।
গত কয়েক দিন আগে সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগী সিটে থাকলেও অধিকাংশ ডাক্তার, নার্স ও স্টাফরা ছিলেন অনুপস্থিত। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আসতে থাকেন ডাক্তার, নার্স ও স্টাফরা। হাসপাতালে দীর্ঘ সময় অপেক্ষমাণ ৪/৫ মাসের শিশুদের কোলে নিয়ে চিকিৎসা সেবা পাওয়ার আসায় বসে আছেন মায়েরা। তবে হাসপাতালে অপেক্ষমান রোগীর চেয়ে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতি বেশী লক্ষ্য করা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালটির একাধিক স্টাফ অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালটিতে কর্মরত আরিফা আক্তার নামের এক আয়া নিয়মিত হাসপাতালে অনুপস্থিত থেকেও সরকারি বেতন তুলে নিচ্ছেন! আনুমানিক পাঁচ বছর ধরে তিনি এ কাজ করে যাচ্ছেন। তবে মাঝেমধ্যে উপস্থিত হলেও উপস্থিতির স্বাক্ষর দিয়ে চলে যান। সারাদিন আর খোঁজ মিলেনা। এছাড়া ওই আয়া মাসিক দুই হাজার টাকার বিনিময়ে হাসিনা নামের এক মহিলাকে দিয়ে ডিউটি করান। সেও দায়সারা কাজ করেন। তবে, আয়া আরিফা আক্তারের পরিবারের দাবি অভিযোগটি সঠিক নয়। সে (আরিফা) হাসপাতালে নিয়মিত ডিউটি করেন।
হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা স্থানীয় রোগী ও রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জয়দেব কুমার সরকার অধিকাংশ সময়ে কার্যালয়ে থাকেন না। অফিস চলাকালীন বেশির ভাগ সময় মিটিং করার অজুহাতে বাহিরে থাকেন। দিনের কিছুটা সময় তিনি আরোগ্য সদন দি ল্যাব নামের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখেন। ওয়ার্ডবয় ও অন্য স্টাফদের দিয়ে রোগীদের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন অফিসিয়াল কার্যক্রম চলছে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। আর এসবই নাকি হচ্ছে ডা. জয়দেব সরকারের ছত্রছায়ায়। এসময় ভূক্তভোগি রোগী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলাপকালে বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতি ও ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরেন তারা।
হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা নগরকান্দা পৌরসভার সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমার সন্তান শিশুকে নিয়ে দু’দিন যাবৎ বসে আছি। কোন ওষুধ পাচ্ছি না। হাসপাতালে খাবার-দাবারের মানও ভালো না। চিকিৎসকরা ঠিকমতো আসেন না রোগীর কাছে। নার্স ও আয়া’রাও ভালো ব্যবহার করেননা।
নগরকান্দার জুঙ্গুরদী এলাকার বাসিন্দা মানসুরা বেগম নামের একজন মা বলেন, আমার শিশুকে নিয়ে এসেছি প্রায় দু’দিন হয়েছে। কিন্তু ডায়রিয়া রোগী, চিকিৎসার জন্য ডাক্তার ও ওষুধ কোনটিই পাচ্ছিনা। তার অভিযোগ ডাক্তাররা নিয়মিত না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে রোগীরা।
নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জয়দেব সরকারের কাছ বিষয়টি জানতে চাইলে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবহেলার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। এছাড়া আয়া আরিফা আক্তারের বিষয়ে জানতে চাইলেও কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি এ বিষয়ে সরাসরি এ প্রতিবেদকের সাথে দেখা করে বাকী কথা বলতে চান তখন।
এব্যাপারে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাফী বিন কবির বলেন, হাসপাতালের একজন আয়া অনুপস্থিত থেকে বেতন তুলছেন বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটা খতিয়ে দেখা হবে। যদি বিষয়টি সত্য হয় কঠোর ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
ইউএনও বলেন, এছাড়া হাসপাতালের অনিয়মের বিষয়েও যাঁচাই-বাছাই করে দেখা হবে। তবে, হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট প্রকট রয়েছে। এছাড়া অফিস টাইমে বাইরে চিকিৎসকরা রোগী দেখার বিষয়টি আমার জানা মতে সঠিক নয়। কারণ, ডাক্তারই হাতে গোনা কয়েকজন, তারা আবার চেম্বার করেন কখন! এছাড়া বাইরে ওষুধ বিক্রির বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
এসকল অভিযোগের বিষয়ে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, এসব বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বোয়ালমারীতে বালুমহল ইজারা বাণিজ্যের ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ, আহত-৩

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:৩৭ পিএম
বোয়ালমারীতে বালুমহল ইজারা বাণিজ্যের ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ, আহত-৩

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বালুমহল ইজারা বাণিজ্যের (নিকো) টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন আহত।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত রাতে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়। এ নিয়ে অভিযোগের প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলাধীন মধুমতী নদীর বালুমহল ইজারা দরপত্র বাণিজ্যের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে এ সংঘর্ষ হয় ।

প্রতি বছরের ন্যায় ১৪৩২ সালের ১ বছরের জন্য উপজেলাধীন লঙ্কারচর বালুমহল ইজারার দরপত্র আহ্বান করে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়।
এতে প্রায় ১৫ টি দরপত্র বিক্রয় হলেও দরপত্রদাতাদের মাঝে সমঝোতার ভিত্তিতে গোপন নিলাম ডাকের মাধ্যমে ক্রয়বিক্রয় সম্পাদিত হয়। সমঝোতার ভিত্তিতে দরপত্রদাতাদের মাঝে টাকা ভাগাভাগির কথা থাকলেও নিকো-বোর্ড দরপত্র দাতা জুয়েল বিশ্বাসকে পাওনা টাকা না দিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । এ নিয়ে বুধবার রাতে বোয়ালমারী উপজেলা পরিষদের সামনে মা ফার্মাসি মার্কেট চত্বরে এক শালিশ বৈঠক বসে পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল আহমেদ, বিএনপি নেতা মহসিন আলম চান, মিরাজ মৃধাসহ স্থানীয়রা। শালিশ বৈঠক শুনানির সময় দরপত্র দাতা আঁধারকোঠা গ্রামের মঈনুদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে জামায়াতে কর্মী জুয়েল বিশ্বাসের কোমরে থাকা একটি দেশীয় অস্ত্র দেখে ফেলে লোকজন। এসময় অস্ত্র উদ্ধার করতে গিয়ে জুয়েল বিশ্বাসের সাথে ধস্তাধস্তি হয় স্থানীয়দের। পরে জুয়েলের নেতৃত্বে ২৫/৩০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মা ফার্মাসিতে আক্রমণ চালায়। এতে বোয়ালমারী সরকারি কলেজের ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রবিন মোল্যা ও মা ফার্মাসির কর্ণধার রিয়াজ মৃধা মারাত্মক আহত হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় বুধবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে কাঠের বাটাম ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আঁধারকোঠা গ্রামের একদল যুবক আক্রমণ চালায়। এসময় মা ফার্মাসিতে আশ্রয় নেওয়া রাসেল আহমেদের ছোট ভাই কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রবিন মোল্যার মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করে আক্রমণ কারিরা। আক্রমণকারীদের প্রতিহত করতে গিয়ে আহত হন রিয়াজ মৃধা। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। রিয়াজ মৃধাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিলেও রবিন মোল্যা বোয়ালমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
জুয়েল বিশ্বাস জানান- বালুমহলের নিকোর ৪৫ হাজার টাকা জমা ছিলো রাসেল আহমেদ ও মিরাজ মৃধার নিকট, সে টাকা চাওয়ায় আমাকে মা ফার্মাসিতে ডেকে নেয় রাসেল আহমেদ। সেখানে গেলে তারা টাকা না দিয়ে টালবাহানার আশ্রয় নেয় ও আমার উপর আক্রমণ চালায়। খবর পেয়ে আমার গ্রামের ভাইব্রাদার আমাকে উদ্ধার করতে ছুটে আসে। সেখানে রাসেল আহমেদের ভাই রবিনকে পেয়ে তাকে মারধর করে।

এ বিষয়ে পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল আহমেদ বলেন – জামায়াতে ইসলামীর ক্যাডার জুয়েল বিশ্বাস আমার নিকট চাঁদা দাবি করে । এ বিষয়ে জানতে মহসিন আলম চান ও মিরাজ মৃধা তাকে ডাকলে সে পরিকল্পনা করে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী বাহিনী প্রস্তুত রেখে কোমরে অস্ত্র নিয়ে আসে। লোকজন তা দেখে কেড়ে নিলে আগে থেকে ওতপেতে থাকা তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের উপর হামলা চালায়, জীবন রক্ষার্থে আমি পালিয়ে গেলেও আমার ছোট ভাই মা ফার্মাসিতে আশ্রয় নেয়। সেখানে ঢুকে সন্ত্রাসী বাহিনী তাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে।

বিএনপি নেতা মিরাজ মৃধা বলেন – রাসেলের সাথে জুয়েল বিশ্বাসের দেনাপাওনা নিয়ে ফোনে কথা-কাটাকাটি হয়, পরে সমঝোতার জন্য আমার ফার্মাসিতে আসে জুয়েল। কথা বলার সময় তার কোমরে একটি ধারলো অস্ত্র দেখে লোকজন তা কেড়ে নেয়। এসময় সে পালিয়ে গিয়ে কিছু সময় পর ২৫/৩০ জনের একটি দুর্বৃত্ত দল নিয়ে আমার ফার্মাসিতে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় আমার বড় ভাই ও ছাত্রদলের কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি রবিন মোল্যার উপর হামলা চালায় এতে মারাত্মক আহত দু’জন । আক্রমণকারীরা ফার্মাসিতে ভাঙচুর ও লুটপাটও চালায় । এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন- খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিকাল ৪টা পর্যন্ত কোনো পক্ষই অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে

‘ফরিদপুরে পাওনা টাকা চাওয়ার জেরে বৃদ্ধ খুন’ থানায় হত্যা মামলা, তিনজন আটক

ফরিদপুর ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:৫২ এএম
‘ফরিদপুরে পাওনা টাকা চাওয়ার জেরে বৃদ্ধ খুন’ থানায় হত্যা মামলা, তিনজন আটক
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় পাওনা টাকা আদায়ের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে মো. আব্দুল হালিম মোল্লা (৬১) নামে এক বৃদ্ধের জিহ্বা কর্তনের ঘটন্য়া দুইদিনের মাথায় চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের একমাত্র মেয়ে রিনা বেগম (৩৭) বাদি হয়ে বুধবার সকালে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলফাডাঙ্গা থানার ওসি হারুন অর রশিদ।
এর আগে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকালে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃদ্ধ আব্দুল হালিম মোল্যা মারা যান। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে।
নিহত আব্দুল হালিম মোল্লা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পাড়াগ্রাম বাজারে নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি পাড়াগ্রামের মৃত আবু সাঈদ মোল্লার ছেলে। নিহত ব্যক্তির একটি মাত্র মেয়ে রিনা বেগমের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় এবং স্ত্রী মারা যাওয়ায় তিনি একাই বাড়িতে বসবাস করতেন।
মামলা ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মো. আব্দুল হালিম মোল্লা (৬১) তার মা তছিরণ নেছা ওরফে ছুটু বিবিকে (৭৫) নিজের ধার দেওয়া টাকা আদায়ের কথা বলে গত ১২ এপ্রিল বিকেলে আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাড়াগ্রাম নিজ বাড়ি থেকে বের হন। পরেরদিন ১৩ এপ্রিল সকালে পাড়াগ্রামের লাল্টুর পরিত্যক্ত জমিতে ওই গ্রামের নুর ইসলাম (৫৮) নামে এক ব্যক্তি আব্দুল হালিম মোল্যাকে জিব্বা কাটাসহ জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ডাক চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে হালিম মোল্যাকে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ বাবলুর সহায়তায় আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য আলফাডাঙ্গা হাসপাতাল থেকে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকালের দিকে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় বুধবার সকালে নিহতের একমাত্র মেয়ে রিনা বেগম (৩৭) বাদি হয়ে আলফাডাঙ্গা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-০৯। মামলার পর সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই এলাকার তিনজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ঘটনার দিন আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আবিদ হোসেন জানান, বৃদ্ধ আব্দুল হালিম মোল্যাকে জিব্বা কাটা অবস্থায় হাসপাতালে আনার পর অবস্থার অবনতি হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তিনি গুরুতর জখম ছিলেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা থানার ওসি হারুন অর রশিদ বলেন, খবর পেয়েই ওইদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। এ ঘটনায় নিহত আব্দুল হালিম মোল্যার মেয়ে রিনা বেগম বাদি হয়ে থানায় আজ হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তবে মামলার এজাহারে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। বাদি কারো নাম উল্লেখ করেননি। মামলার পর ঘটনাস্থল এলাকার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। হত্যার রহস্য উৎঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। আশা করি দ্রুতই প্রকৃত আসামিদের আমরা গ্রেপ্তার করতে পারবো।

ফরিদপুরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের অভিযান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:১৫ এএম
ফরিদপুরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের অভিযান
নানা অনিয়মের অভিযোগে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ফরিদপুরের উপ-সহকারী পরিচালক মো. কামরুল হাসানের নেতৃত্বে একটি দল।
অভিযানকালে সিটিজেন চার্টার না থাকাসহ নানা অনিয়ম পরিলক্ষিত হওয়ায় কিছু রেকর্ডপত্র জব্দ করা হয়। সেগুলো পর্যালোচনা করে তদন্ত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর পাঠানো হবে বলে জানান দুদক কর্মকর্তা।
দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যালয় ফরিদপুরের উপ-সহকারি পরিচালক মো. কামরুল হাসান জানান, দুদকের প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক চরভদ্রাসন উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে সিটিজেন চার্টার পাওয়া যায়নি। এছাড়া অনিয়মের কিছু রেকর্ডপত্র জব্দ করা হয়েছে। সেগুলো পর্যালোচনা করে তদন্ত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর পাঠানো হবে।