খুঁজুন
সোমবার, ৫ মে, ২০২৫, ২২ বৈশাখ, ১৪৩২

নগরকান্দায় অফিস না করেও তুলছেন সরকারি বেতন, তবুও বহাল তবিয়তে সেই আয়া!

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ৫ মে, ২০২৫, ১১:০৫ এএম
নগরকান্দায় অফিস না করেও তুলছেন সরকারি বেতন, তবুও বহাল তবিয়তে সেই আয়া!
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে চলা অনিয়ম, অবহেলা ও কর্তৃপক্ষের সেচ্ছাচারিতার চিত্র উঠে আসার পর অবশেষে নড়েচড়ে বসেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। ধারাবাহিক প্রতিবেদনে উঠে আসে একের পর এক অনিয়ম, অসঙ্গতি।
দীর্ঘদিন ধরে অফিস না করে সরকারি বেতন তোলার অভিযোগে আলোচনায় আসে আয়া আরিফা আক্তার, যা তীব্র সমালোচনা ও ক্ষোভের জন্ম দেয় জনমনে।
তবে এ অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় গত ২২ এপ্রিল অভিযুক্ত আরিফা আক্তারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছিল হাসপাতাল প্রশাসন।
জানা গেছে, অভিযুক্ত আরিফা আক্তার কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিয়েছে, তবে হাসপাতাল প্রশাসন পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে কতোটা সক্ষম হবে তা সময়ই বলে দিবে। দীর্ঘদিনের এই অপরাধের শাস্তি যেন ‘গুরু পাপে লঘুদণ্ড’ না হয় এমনই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর। হাসপাতালে কর্মরত একটি দীর্ঘদিনের ‘সিন্টিকেট’ ও কিছু কর্মচারীর একচ্ছত্র প্রভাব সামলে হাসপাতালের অন্যান্য বেশ কিছু অনিয়মের বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ কিছুটা ফলপ্রসূ হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকার সংগ্রাম করছে আয়া আরিফা আক্তার।
জানা গেছে, হাসপাতাল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের ফলে বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চারজন মেডিক্যাল এসিস্ট্যান্ট থাকলেও পুরুষ দুই জন দীর্ঘদিন পরে এখন হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাসপাতালে দায়িত্বপালন করলেও হাসপাতাল প্রশাসনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেই তারা। চেম্বার বাণিজ্যই যেন মুখ্য বিষয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নড়েচড়ে বসেছে চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পদে কর্মরত কর্মচারীরা। আপাতত সকলেই দায়িত্বের প্রতি আন্তরিকতা দেখালেও নিজ নিজ দায়িত্বের প্রতি কতদিন তাদের এমন মনোনিবেশ থাকবে তা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।
এছাড়াও নগরকান্দা উপজেলার জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি এ্যাম্বুলেন্সের সেবা নিয়েও রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। উপজেলার সর্বোত্র সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও এ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা। জরুরী প্রয়োজনে ফোন করলেও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে এড়িয়ে যান এ্যাম্বুলেন্স চালক জাহাঙ্গীর। আবার যারা সেবা পাচ্ছেন তাদের থেকে ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। নগরকান্দা থেকে ফরিদপুর সদর পর্যন্ত সরকার নির্ধারিত ভাড়া ৫৮০ টাকা হলেও রোগীর স্বজনদের গুনতে হয় ১০০০/১২০০ টাকা।
নগরকান্দা থেকে শওকত হোসাইন নামে এক ভূক্তভোগী জানান, চলতি বছরের ২০ মার্চ আমি রোগী নিয়ে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলাম, আমার নিকট থেকে ১০০০ টাকা ভাড়া নিয়েছে এবং আগেই টাকা জমা নেন।
মো. রবিন ইসলাম নামে আরোও এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, সরকারি এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া ১০০০ এর কম নেয় না এবং হাসপাতালের বাইরের রোগী টানে না বিধায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় রোগী ও রোগীর স্বজনদের।
তবে এবিষয়ে জানতে অভিযুক্ত এ্যাম্বুলেন্স চালক জাহাঙ্গীরের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এবিষয়ে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জয়দেব কুমার সরকার বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন, আরিফা আক্তার কারণ দর্শানোর (শোকজ) এর জবাব দিয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং হাসপাতালের অন্যান্য সকল অনিয়মের বিষয়ে ধাপে ধাপে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে ফরিদপুর সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, আয়া আরিফা আক্তার ‘শোকজ’ এর জবাব দিয়েছে। চাকরীর নীতিমালা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আপনাদের লেখালেখির মাধ্যমেই অনিয়মগুলো উঠে এসেছে। সকল অনিয়মের বিষয়েই আমরা ধাপে ধাপে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
গত ১৫ এপ্রিল ‘অনিয়ম-অবহেলায় চলছে নগরকান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’ এবং ২৩ এপ্রিল ‘নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়াকে শোকজ’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।

ফরিদপুর নিখোঁজের তিনদিন পর আখক্ষেতে মিলল নির্মাণশ্রমিকের মরদেহ

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ৪ মে, ২০২৫, ৩:৫৩ পিএম
ফরিদপুর নিখোঁজের তিনদিন পর আখক্ষেতে মিলল নির্মাণশ্রমিকের মরদেহ
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় নিখোঁজের তিনদিন পর তুহিন আলী (১৫) নামে এক নির্মাণশ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রবিবার (০৪ মে) সকালে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শনিবার (০৩ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামের একটি আখক্ষেত থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তুহিন আলী ওই গ্রামের কৃষক আরব আলীর ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (৩০ এপ্রিল) বাড়ি থেকে বেড়িয়ে নিখোঁজ হন তুহিন। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ওই এলাকায় মাঠে কাজ করতে যাওয়ার সময় একটি আখক্ষেতে ছেলের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তার বাবা আরব আলী। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, খবর পেয়ে ওই তরুণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

শামা ওবায়েদের গাড়ীবহরে হামলা : ফরিদপুরে ১৮ আ’লীগ নেতাকর্মী কারাগারে

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর
প্রকাশিত: রবিবার, ৪ মে, ২০২৫, ৩:৪৮ পিএম
শামা ওবায়েদের গাড়ীবহরে হামলা : ফরিদপুরে ১৮ আ’লীগ নেতাকর্মী কারাগারে
ফরিদপুরের সালথায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকুর গাড়ীবহরে হামলার মামলায় আ’লীগের ১৮ জন নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
রবিবার (০৪ মে) দুপুর ১২ টার দিকে ফরিদপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাকসুদুর রহমান ওই আ’লীগ নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে একইদিন দুপুরে ওই নেতাকর্মীরা আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
কারাগারে পাঠানো আ’লীগ নেতাকর্মীরা হলেন, নান্নু মাতুব্বর, জাহাঙ্গীর মুন্সী, বিল্লাল মাতুব্বর, রাসেল মাতুব্বর, কামরুল মোল্যা, দেলোয়ার কাজী, সরোয়ার মাতুব্বর, সিরাজুল মাতুব্বর, ইউনুস মোল্যা, ফজলু মাতুব্বর, নজরুল মাতুব্বর, আইয়ূব আলী, উজ্জ্বল মাতুব্বর, আলেপ মাতুব্বর, রেজাউল মাতুব্বর, ইয়াসিন মোল্যা, ছানো মিয়া ও নূরুল ইসলাম। তাদের সবার বাড়ি ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।
কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুর জেলা জজ কোর্টের দায়রা সহকারী মো. তমিজউদদীন বলেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের গাড়ী বহরে হামলার মামলায় দ্রুত বিচার আইনের সিআর নং: ১১২/২৪ ও ১১৩/২৪ মামলায় ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আদেশ দেওয়ার সময় এরা সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশ পাহারায় তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

ফরিদপুরের ঈশান গোপালপুর গণহত্যার ৫৪তম বার্ষিকী পালিত

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ৫:৪৪ পিএম
ফরিদপুরের ঈশান গোপালপুর গণহত্যার ৫৪তম বার্ষিকী পালিত
ফরিদপুর সদরের ঈশান গোপালপুর গ্রামের গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২ মে দুপুরের দিকে ঈশান গোপালপুর গ্রামের স্থানীয় ঈশান সরকারের জমিদার বাড়িতে ওই বাড়ির সদস্য, গ্রামবাসী ও আশ্রয় নেওয়া ২৮ ব্যক্তিকে একত্রিত করে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী।
পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ছিলেন, আশুতোষ সরকার, যোগেশ চন্দ্র ঘোশ, গৌরগোপাল ঘোষ, বাবলু ঘোষ প্রমুখ।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ফরিদপুর শহরের সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারের সদস্যরা আত্মরক্ষার জন্য ওই সরকার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পাকিস্তানী বাহিনীর এ গণহত্যায় মদদ দিয়েছিল ওই এলাকাসহ আশেপাশের এলাকার স্বাধীনতা বিরোধীরা। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ২১ এপ্রিল পাকিস্তানী হাদনাদার বাহিনী ফরিদপুরে প্রবেশ করে। ফরিদপুরে প্রবেশের পথে শহরের গোয়ালচামট মহল্লার শ্রীধাম শ্রীঅঙ্গনে কীর্তনরত নয় সাধুকে হত্যা করে।  ২ মে ঈশান গোপালপুর গ্রামের জমিদার বাড়িতে এ হত্যাকান্ড ছিল বৃহত্তর ফরিদপুরের প্রথম পরিকল্পিত গণহত্যা।
হত্যাকান্ডের পর পাকসেনারা চলে যাওয়ার পর এলাকাবাসী সরকার বাড়ির পুকুর পাড়ে ২৮ জনের মৃতদেহ গণসমাধি দেয়।
শহীদ পরিবারের সন্তান বিশিষ্ট বামপন্থী নেতা চিত্ত ঘোষ বলেন, ২০১০ সালের ২মে শহীদ পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে সেখানে ২৮ শহীদের নাম ফলক সহ একটি স্মৃতি ফলক নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালে সরকারের উদ্যোগে গণহত্যার শহীদদের উদ্দেশ্যে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।
এ গণহত্যার স্মরণে শুক্রবার (০২ মে) সকাল ৯টায় সমাধী ফলকের কাছে স্থাপিত মন্দিরে গীতাপাঠ ও নারয়াণ পূজার আয়োজন করা হয়। গীতা পাঠ ও পূজা করেন দীপক ঠাকুর। পরে সম্বলিত সৌধে ফুল অর্পণ করে এবং মোমবাতী প্রজ্জ্বলন করে শহীদদের আত্মার সগতি কামনা করা হয়। বেলা ১১টার দিকে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের মাঝে পূজার প্রসাদ বিতরণ করা হয়। এ সময় শহীদ পরিবারের সদস্য ক্ষিতিশ বিশ্বাস, অভী ঘোষসহ স্থানীয় গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন।