খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫, ১২ আষাঢ়, ১৪৩২

প্রধান অতিথি হওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে ফরিদপুরে স্থগিত হলো বিএনপির কর্মী সম্মেলন 

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫, ৭:২২ এএম
প্রধান অতিথি হওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে ফরিদপুরে স্থগিত হলো বিএনপির কর্মী সম্মেলন 

ফরিদপুর জেলা বিএনপিকে সুসংগঠিত করতে সাংগঠনিক ভাবে ৮টি উপজেলা বিএনপির কর্মী সম্মেলন শেষ হলেও সদর উপজেলা বিএনপির কর্মী সমাবেশ সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। তবে কি কারণে স্থগিত হয়েছে সে বিষয়টি কেউ সরাসরি মুখ খুলতে রাজি হননি।

বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে ফরিদপুর শহরের অম্বিকা ময়দানে সদর উপজেলা বিএনপির কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে এর আগে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কর্মী সম্মেলনকে ঘিরে অতিথি করা নিয়ে স্থগিত হয়ে যায় সম্মেলনটি। যা জেলা জুড়ে সদর উপজেলা বিএনপির কর্মী সম্মেলনটি নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।

বিএনপির দলীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি কে হবেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা না-কি ফরিদপুরের ৫ বারের সংসদ সদস্য চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ। এমন প্রশ্নে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হওয়ায় স্থগিত করা হয়েছে এ কর্মী সমাবেশ।

উল্লেখ্য, আগামী ক্রিয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৩ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা এবং সাবেক মন্ত্রী কন্যা চৌধুরী নায়াব ইউসুফ।

জানা গেছে, ফরিদপুর সদর উপজেলা বিএনপির কর্মী সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভাপতি জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আশরাফ নান্নু, সদস্য হিসেবে রয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর হোসেন চৌধুরী, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শহীদ পারভেজ, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুর লতিফ ও সদরের কৈজুরি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল হান্নান।

এ ব্যাপারে গত মঙ্গলবার রাতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির একটি সভা আয়োজন করা হয় আহ্বায়কের অফিসে। ওই সভায় সদরের সমাবেশ স্থগিত করে ফরিদপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত দল পুনর্গঠন সংক্রান্ত সাংগঠনিক কমিটির টিমের উপর ন্যস্ত করে।

ফরিদপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত দল পুনর্গঠন সংক্রান্ত সাংগঠনিক কমিটির টিম প্রধান হলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেযারম্যান আসাদুজ্জামান তপন। সদস্যরা হলেন, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান ও সেলিমুজ্জামান ।

সদর উপজেলা কর্মী সম্মেলন স্থগিত হওয়ার ব্যাপারে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদর উপজেলা বিএনপির প্রস্তুতি কমিটির সভাপতি আলী আশরাফ বলেন, কে এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হবেন বিষয়টি নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেওয়ায় এ সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, চৌধুরী নায়াব ইউসুফ ফরিদপুরের সাবেক মন্ত্রী মরহুম চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে। ২০১৮ সালে তিনি ফরিদপুর-৩ (সদর) আসন থেকে বাবার পাশাপাশি ডামি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। কামাল ইউসুফের মনোনয়ন পত্র বৈধ হওয়ার পর নায়াব তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। তিনি ফরিদপুর সদর বিএনপির কর্মী সম্মেলনের প্রধান অতিথি হতে চান। কিন্তু জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। অথচ এর আগে চরভদ্রাসন ও ভাঙ্গার কর্মী সমাবেশে সৈয়দ মোদাররেছ আলীর জায়গায় প্রধান অতিথি হয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম। ওই দুটি সভায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোদাররেছ আলী ইছা উদ্বোধক ছিলেন। সেটা নাকি ছিল তার (মোদাররেছ) ব্যক্তিগত আর সদরের বিষয়টি রাজনৈতিক বিষয়!

বিএনপির একটি সূত্র জানায়, চৌধুরী নায়াব ইউসুফ ও সৈয়দ মোদাররেছ আলী যার যার অবস্থানে ছিলেন অনঢ়। কেউ কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড়া দিতে রাজি না থাকায় এ সমাবেশের আয়োজন করা হলে মারপিট ও রক্তাক্ত সংঘাত সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা ছিল বিধায় সদরের কর্মী সমাবেশ স্থগিত হয়ে যায়।

ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন জানান, সদরের কর্মী সমাবেশের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। যার কারণে সম্মেলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী বলেন, কিছু জঠিলতা সৃষ্টি হওয়ায় সদরের সমাবেশ স্থগিত করে কর্মী সম্মেলনের আয়োজনের জন্য ফরিদপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত দল পুনর্গঠন সংক্রান্ত সাংগঠনিক কমিটির উপর ন্যস্ত করা হয়েছে।

স্থগিত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাশুকুর রহমান বলেন, এটা একটা মামুলি ব্যাপার। কোন জায়গায় কর্মী সমাবেশ আয়োজন ঘাটতি আছে, কিংবা সংঘাত হতে পারে বা কেউ অসুস্থ এ জাতীয় সমস্যা মনে হলে সমাবেশের সময় পিছিয়ে দেওয়া দোষনীয় নয়। এক্ষেত্রে হয়তো তাই হয়েছে।

তিনি বলেন, দলের সিনিয়র যদি কেউ অতিথি হতে চায়, সেই একই এলাকায় তার চেয়ে জুনিয়র যদি কেউ একই পর্যায়ে অতিথি হতে চায়, সেখানেও সমস্যা হতে পারে। বিএনপি একটা বড় দল, অনেক নেতাকর্মী নিয়ে চলাচল। তবে সংগঠন চলে দলীয় নীতিমালার আলোকে। তিনি আরও বলেন, কয়েক দিন বিলম্ব হলেও ফরিদপুর সদরের কর্মী সম্মেলন সফল ভাবে সম্পূর্ণ হবে আশা করি।

“মানসিক, শারীরিক এবং অর্থনৈতিকভাবে মাদক আমাদেরকে ধ্বংস করছে”

মফিজুর রহমান শিপন, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫, ৪:২৪ পিএম
“মানসিক, শারীরিক এবং অর্থনৈতিকভাবে মাদক আমাদেরকে ধ্বংস করছে”

ফরিদপুরে মাদকদ্রব্য অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবসে বক্তারা বলেন, মানসিক, শারীরিক এবং অর্থনৈতিকভাবে মাদক আমাদেরকে ধ্বংস করছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ফরিদপুরে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সকাল ‌সাড়ে দশটার দিকে ফরিদপুর ‌ জেলা প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এ উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের করা হয়।

ফরিদপুরের ‌ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিন্টু বিশ্বাসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় ‌ বক্তব্য রাখেন, ‌মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ফরিদপুরের উপ-পরিচালক মো. হাশেম আলী, জেলা শিক্ষা অফিসার বিষ্ণুপদ ঘোষাল, রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হালিম, ফরিদপুর টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার ( টিটিসির) অধ্যক্ষ মো. আখতারুজ্জামান।

এ সময় ‌ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ‌ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।

আলোচনা সভায় বক্তারা ‌ বলেন, আমাদের সন্তানদেরকে মাদক থেকে দূরে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। কেননা মাদক একটি পরিবার, সমাজ ও দেশকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়। এক্ষেত্রে যে যার যার জায়গা থেকে মাদকের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।

বক্তারা আরো বলেন, আগামী বাংলাদেশ হবে একটি মাদক মুক্ত বাংলাদেশ। মানুষের মানসিক, শারীরিক এবং অর্থনৈতিকভাবে মাদক আমাদেরকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। মাদক গ্রহণকারীরা অনেক সময় অসামাজিক কার্যকলাপ ও আইনশৃঙ্খলা বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে যাচ্ছে।

মাদকদ্রব্যের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের দূরারোগ্য ব্যাধি সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে। সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে মাদককে নির্মূল করতে হলে আমাদের সকলকে সচেতন থেকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ফরিদপুরে দেশি মুরগি পালনে উন্নত আবাসন ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা নিয়ে খামার দিবস

তামিম ইসলাম, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫, ৩:৩৫ পিএম
ফরিদপুরে দেশি মুরগি পালনে উন্নত আবাসন ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা নিয়ে খামার দিবস

ফরিদপুরের বাইতুল আমান এলাকার আক্কেল মোল্লার ডাঙ্গীতে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ‘বিশেষ আবাসন নিশ্চিত করে আধা-বাণিজ্যিকভাবে দেশি মুরগি পালন’ শীর্ষক এক খামার দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর অর্থায়নে ও সোসাইটি ডেভেলপমেন্ট কমিটি (এসডিসি)-এর বাস্তবায়নে এই আয়োজনে দেশি মুরগি পালনের মাধ্যমে গ্রামীণ খামারিদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, উন্নত আবাসন ব্যবস্থাপনা এবং রোগবালাই প্রতিরোধের কৌশল নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ফরিদপুরের জেলা ভেটেরিনারি অফিসার ডা. মনমথ কুমার সাহা।

তিনি বলেন, “দেশি মুরগির উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য উন্নত আবাসন ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাচ্চা ফুটানোর পর থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত সঠিক খাদ্য, পরিচর্যা এবং পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে খামারিরা অধিক লাভবান হতে পারবেন।”

বিশেষ অতিথি এসডিসির প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ রবিউল ইসলাম সজীব দেশি মুরগি পালনে রোগবালাই প্রতিরোধের কৌশল তুলে ধরেন। তিনি জানান, “নিয়মিত টিকা প্রদান, সঠিক পরিচর্যা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আবাসন ব্যবস্থা উৎপাদন খরচ কমাতে এবং ফলন বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।”

অনুষ্ঠানে স্থানীয় খামারিরা তাদের সম্মুখীন হওয়া চ্যালেঞ্জ, যেমন আবাসন জনিত সমস্যা ও বাজার সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেন। তারা দেশি মুরগির উৎপাদন ও বাজার সম্প্রসারণে সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা কামনা করেন।

এসডিসির এক কর্মকর্তা জানান, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে দেশি মুরগি পালন একটি সম্ভাবনাময় খাত। এ লক্ষ্যে তারা খামারিদের প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং বাজার সংযোগ স্থাপনে কাজ করে যাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানে শতাধিক স্থানীয় খামারি অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা শেষে খামারিদের মাঝে দেশি মুরগি পালন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এই খামার দিবসটি খামারিদের জন্য তথ্যবহুল ও ব্যবহারিক দিকনির্দেশনামূলক একটি আয়োজন ছিল, যা তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও ব্যবসায়িক দক্ষতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ফরিদপুরের মধুমতি নদীতে এক মৎস্যজীবীর বৈঠার আঘাতে নিখোঁজ অপর মৎস্যজীবী 

তৈয়বুর রহমান কিশোর, বোয়ালমারী:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫, ৩:২৬ পিএম
ফরিদপুরের মধুমতি নদীতে এক মৎস্যজীবীর বৈঠার আঘাতে নিখোঁজ অপর মৎস্যজীবী 

ফরিদপুরের মধুমতি নদীতে মাছ ধরার সময় শৌখিন খান (৩৮) নামে এক মৎস্যজীবী প্রতিপক্ষ মৎস্যজীবী জব্বার মোল্যার (৩৭) হাতে থাকা বৈঠার আঘাতে নিখোঁজ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুর ২টা পর্যন্ত নদীতে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল অভিযান চালিয়েও নিখোঁজ মৎস্যজীবী শৌখিনের সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে ঘটনাস্থল এলাকায় গিয়ে জানা গেছে।

এর আগে বুধবার (২৫ জুন) দিবাগত রাত ৩টার দিকে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলা এবং মাগুরা জেলার মহম্মদপুর সীমান্তে মধুমতি নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

নিখোঁজ মৎস্যজীবী শোখিন খান মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের পাল্লা চরপাড়া গ্রামের ছাত্তার খানের ছেলে। সকাল থেকেই নিখোঁজের স্বজনরা ও এলাকাবাসী মধুমতি নদীর বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া ঘাটে আহাজারি করতে দেখা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও নিখোঁজ মৎস্যজীবীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের ন্যায় মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের পাল্লা চরপাড়া গ্রামের ছাত্তার খানের ছেলে মৎস্যজীবী শোখিন খান ও ফরিদপুর জেলার নওপাড়া গ্রামের আহমদ শেখের ছেলে হুমায়ূন শেখ নৌকায় চায়না জাল নিয়ে বুধবার রাত ১০টার দিকে মাছ ধরতে বের হয়। একই সময়ে পাশেই মাছ ধরতেছিল ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার নওপাড়া গ্রামের ছলেমান মোল্লার ছেলে জব্বার মোল্লা (৩৮), রবিউল মোল্লা (৩০) ও একই গ্রামের নৌকা চালক ছলেমানের ছেলে সানি শেখ।
ওইদিন রাত পৌনে ৩টার দিকে বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলার সীমান্তবর্তী চন্ডিবিলা মাঝিপাড়া ঘাট এলাকা দিয়ে মৎস্যজীবী শোখিন খান ও হুমায়ূন শেখ নৌকা নিয়ে ফিরছিলেন। এ সময় অপর মৎস্যজীবী জব্বার মোল্লা (৩৮) ও রবিউল মোল্লা (৩০) শৌখিনদের বলে, আমাদের জালের উপর আসলি কেন? ঘটনার সময় দুই মৎস্যজীবী পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জব্বার মোল্লা শৌখিনের মাথায় বৈঠা দিয়ে আঘাত করলে নদীর পানিতে ডুবে যায়।

খবর পেয়ে ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালিয়েও নিখোঁজ মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করতে পারেনি। সকাল থেকেই নিখোঁজের স্বজনরা ও এলাকাবাসী মধুমতি নদীর বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া ঘাটে আহাজারি করতে দেখা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সৌখিনের সাথে থাকা অপর মৎস্যজীবী হুমায়ুন শেখ জানান, রবিউল ও জব্বারের পেতে রাখা কারেন্ট জালের উপর দিয়ে নৌকা চালানো হয়েছে দাবী করে জব্বার সৌখিনের মাথায় আঘাত করলে সে নদীর মধ্যে পড়ে যায়। তাৎক্ষণিক তাকে পাওয়া না গেলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত তার কোন সন্ধান মেলেনি।

উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি গনি আমিন জানান, আমরা ঘটনাস্থলে এসে জানতে পারি রাতে মাছ মারার সময় এক মৎস্যজীবী অপর মৎস্যজীবীকে আঘাত করলে একজন পানিতে পড়ে নিখোঁজ হন। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে নিখোঁজের সন্ধান পাওয়া যায়নি। অক্সিজেন শেষ হয়ে যাওয়ায় মাঝখানে অভিযান স্থগিত করা হয়। পরে পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়েছে। এখনো ওই ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছে।