খুঁজুন
শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

হৃদয় কাঁপাচ্ছে আয়নাঘর

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৯:৫২ পিএম
হৃদয় কাঁপাচ্ছে আয়নাঘর

আয়নাঘর নিয়ে চলছে তোলপাড়। বেরিয়ে আসছে একের পর এক রোমহর্ষক কাহিনি। যে কাহিনি কাঁপাচ্ছে সবার হৃদয়।  স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের সময় বিরোধিতাকারীদের ধরে নিয়ে আটকে রাখা হতো ছোট্ট এক ঘরে। লোহার খাঁচায় গুম হওয়া মানুষ আটকে রেখে করা হতো মধ্যযুগীয় নির্যাতন। গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে আয়নাঘরের নির্মম অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন ভুক্তভোগীরা। উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম জানান, তাঁকে যে কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল, সেই কক্ষে টয়লেট ছিল ছোট্ট বেসিনের মতো।

সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহিল আমান আযমী বলেন, তাঁর কক্ষটি ছিল ঘুটঘুটে অন্ধকার। দিন-রাতের পার্থক্য বোঝার উপায় ছিল না। টয়লেটে নিয়ে যাওয়া হতো চোখ বেঁধে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আহমাদ বিন কাসেম আরমান বলেন, ‘আমি আট বছর বন্দি ছিলাম। দিনের বেলা চোখ বেঁধে ও হাতকড়া পরিয়ে রাখত। রাতের বেলা হাতকড়া পরা অবস্থায় পিছমোড়া করে রাখা হতো।’ এভাবেই স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে নির্যাতিত ব্যক্তিরা তাঁদের ওপর নেমে আসা নির্যাতনের বর্ণনা দেন। বিরোধী দলের নেতা-কর্মী, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, ছাত্র-শিক্ষক, শ্রমিক, নারী, শিশুসহ কারোরই কোনো নিরাপত্তা ছিল না।

গত ১৬ বছরে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে যখন যাকে মন চায় গুম করা হতো, নির্যাতন করা হতো, বন্দি করে রাখা হতো। হত্যা করা হয়েছে অসংখ্য মানুষকে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তৈরি আয়নাঘর নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগীদের বর্ণনায় বেরিয়ে আসছে একের পর এক রোমহর্ষক কাহিনি।

আয়নাঘর পরিদর্শনের পর তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে গ্রেপ্তার করে ইন্টারোগেশন করা হয়েছে অনেক। যতক্ষণ রুমে থাকতাম, চোখ খোলা থাকত। হাতকড়া খুলে দিত। রুম থেকে বের করার সময় চোখ বাঁধত, হাতকড়া পরাত।’

তিনি জানান, আয়নাঘরগুলো আর আগের মতো নেই। তাঁকে যে কক্ষে রাখা হয়েছিল ৫ আগস্টের পর কক্ষের দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং রং করা হয়েছে। আসিফ ভূঁইয়া জানান, তাঁকে যে কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল সেই কক্ষের দেয়ালের ওপরের অংশের খোঁপগুলোতে অ্যাগজস্ট ফ্যান ছিল, এখন নেই।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহিল আমান আযমী বলেন, ‘আমাকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে গাড়িতে চোখ বেঁধে দেয়। অন্ধকার এক ঘরে নিয়ে গিয়ে ফেলে রাখা হয়। আমি আট বছর সেখানে বন্দি থাকাবস্থায় পৃথিবীর কোনো আলো দেখিনি, আকাশ দেখিনি, সূর্য দেখিনি। প্রতি রাতেই ক্রসফায়ারের ভয়ে থাকতাম। তারা খুব দুর্ব্যবহার করত আমার সঙ্গে। তাদের নির্যাতনে রাতের পর রাত কেঁদে কেঁদে সময় কেটেছে। মাঝে মাঝে তারা চোখ এমনভাবে বাঁধত, মনে হচ্ছিল আমার চোখের মণি ফেটে যাবে। হাতকড়া পরা থাকতে থাকতে হাতে ঘা হয়ে যেত।’

ভুক্তভোগী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আহমাদ বিন কাসেম আরমান বলেন, ‘আমাকে আট বছর বন্দি করে রাখা হয়েছিল। নামাজের সময় পর্যন্ত দিত না। তারা আমার ওপর নারকীয় নির্যাতন চালিয়েছে। ২৪ ঘণ্টা চোখ ও হাত বেঁধে বসিয়ে রাখত। উঠতে দিত না, দাঁড়াতে দিত না। কেন এমন করছেন, প্রশ্ন করলে তারা বলত, স্যার আসবেন। চোখ বাঁধা অবস্থায় দেয়ালের দিকে ফিরে বসে থাকতাম।’ ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট তাঁকে মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

ভুক্তভোগী আরেক যুবক বলেন, ‘২০২০ সালে হাতিরঝিল এলাকা থেকে আমাকে তুলে নেওয়া হয়। প্রথমে নারায়ণগঞ্জে র‌্যাব-১১ কার্যালয়ে একটা গুম সেলে রাখা হয়। পরদিন রাতে ঢাকায় নিয়ে এসে একটি গোয়েন্দা কার্যালয়ের টর্চার সেল বা আয়নাঘরে বন্দি করা হয়। বন্দি অবস্থায় বারবার আমার পরিবারের কথা মনে পড়ে। চোখের সামনে ভাসে দুই শিশুসন্তানের মুখ। আমি বুঝতে পারছিলাম, আমাকে হয়তো এরা শেষ পর্যন্ত মেরেই ফেলবে।’

Source: Bd-pratidin

ফরিদপুরে মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ২৭ জন

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫, ৫:৪৪ পিএম
ফরিদপুরে মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ২৭ জন
কোনো তদবির কিংবা ঘুষ ছাড়াই মাত্র ১২০ টাকার আবেদন ফিতে পুলিশে কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়েছেন ফরিদপুর জেলার ২৭ জন চাকরিপ্রার্থী।
শতভাগ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগের এ প্রক্রিয়া পরিচালনা করেছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল জলিল।
সম্প্রতি পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় কোনো প্রার্থীকে অর্থ, পৃষ্ঠপোষকতা বা সুপারিশের আশ্রয় নিতে হয়নি। নিয়োগপ্রাপ্তদের অধিকাংশই দিনমজুর বা নিম্ন আয়ের পরিবারের সন্তান।
বুধবার (১৪ মে) রাতে ফরিদপুর পুলিশ লাইন্সে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন এসপি মো. আব্দুল জলিল।
এ তালিকায় ২৭ জনকে নিয়োগ ও আরও পাঁচজনকে অপেক্ষমাণ (ওয়েটিং) তালিকায় রাখা হয়। ফলাফল ঘোষণার পর উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে আনন্দ-উল্লাস ও আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে পুলিশ কনস্টেবল পদে যাঁচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু হয়। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে চাকরি প্রার্থীরা আবেদন করেন। এর মধ্যে ৪ মে অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ৩৫৩ জন, যাদের মধ্যে ৯১ জন উত্তীর্ণ হন। পরে ১৪ মে দিনব্যাপী মৌখিক (ভাইভা) পরীক্ষা নেওয়া হয় এবং সেদিন রাতেই চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিয়োগপ্রাপ্তদের একজন  বলেন, আমার কোনো সুপারিশ ছিল না। ভেবেছিলাম চাকরিটা হবে না। কিন্তু চূড়ান্ত তালিকায় নিজের নাম সবার ওপরে দেখে বিশ্বাস করতে পারিনি। এ স্বচ্ছ ও ন্যায্য প্রক্রিয়ার জন্য বর্তমান পুলিশ প্রশাসন ও নিয়োগ বোর্ডকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
ফরিদপুর জেলা পুলিশ জানায়, নিয়োগ প্রক্রিয়াটি শতভাগ স্বচ্ছতা ও নিয়ম অনুযায়ী সম্পন্ন হয়েছে। তিনটি ধাপ—শারীরিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় যারা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন, তারাই নিয়োগ পেয়েছেন।

সালথায় ৭শ’ পিস ইয়াবাসহ মাদক কারবারি আটক

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫, ৩:৫৯ পিএম
সালথায় ৭শ’ পিস ইয়াবাসহ মাদক কারবারি আটক
ফরিদপুরের সালথায় ৭শ’ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ রমজান মোল্যা (৩৫) নামে এক মাদক কারবারীকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান।
আটককৃত রমজান মোল্যা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের নারানদিয়া গ্রামের আফজাল মোল্যার ছেলে।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে নারানদিয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে রমজান মোল্যাকে আটক করা হয়। এসময় তার ঘরের মধ্যে থেকে ৭’শ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। আটককৃতর বিরুদ্ধে মাদকদ্র্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ফরিদপুরে ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদ: শহরের সৌন্দর্য ও পরিবেশ রক্ষায় শিক্ষার্থীরা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫, ৩:৪৭ পিএম
ফরিদপুরে ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদ: শহরের সৌন্দর্য ও পরিবেশ রক্ষায় শিক্ষার্থীরা
ফরিদপুর শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং সড়কের ডিভাইডারে লাগানো গাছগুলো সংরক্ষণের লক্ষ্যে ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদে নেমেছে ফরিদপুর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল সাড়ে দশটা থেকে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এই সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন তারা।
শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড়, মেডিকেল সড়ক, নদী গবেষণা সড়ক, রাজবাড়ী রাস্তার মোড়সহ বিভিন্ন সড়কের ডিভাইডারে রোপণ করা গাছের উপর ঝুলে থাকা ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ করা হয়। এই কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেন ফরিদপুর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কাজী রিয়াজ, মুখপাত্র কাজী জেবা তাহসিন এবং সহ-মুখপাত্র উম্মে হাবিবাসহ অন্যান্য সদস্যরা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যানার-ফেস্টুনের কারণে ফরিদপুর শহরের সৌন্দর্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে সড়কের ডিভাইডারে এসব ব্যানারের কারণে গাছগুলো মারা যাচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এছাড়াও, এসব ব্যানার সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। তারা বলেন, “বিশেষ করে রাজনৈতিক ও প্রচারণামূলক ব্যানার বেশি দেখা যায়। আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন গাছের ওপর ব্যানার না ঝুঁলিয়ে পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসেন। আমাদের লক্ষ্য ব্যানার-ফেস্টুন মুক্ত একটি সুন্দর ফরিদপুর।”
এই উদ্যোগে স্থানীয় বাসিন্দারা খুশি প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, এই ধরনের কার্যক্রম ফরিদপুরকে একটি স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। স্থানীয় বাসিন্দারা আশা করছেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ফরিদপুর হবে একটি পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব শহর।