খুঁজুন
শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ৮ কার্তিক, ১৪৩২

দেশের নীতিনির্ধারকরা এখন আগামী নির্বাচনের অপেক্ষায়

অদিতি করিম
প্রকাশিত: বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫, ১:০১ পিএম
দেশের নীতিনির্ধারকরা এখন আগামী নির্বাচনের অপেক্ষায়

অন্তর্বর্তী সরকারের ১৪ মাস পেরিয়ে গেছে। দেশের নীতিনির্ধারকরা এখন আগামী নির্বাচনের অপেক্ষায়।

অনেকে মনে করছেন, উপদেষ্টারা সেফ এক্সিটের পথ খুঁজছেন। কেউ কেউ এমন অভিযোগও করছেন যে তাদের আখের গোছানো নাকি শেষ। প্রতিদিন উপদেষ্টারা নিরাপদ প্রস্থান নিয়ে গণমাধ্যমে নানানরকম কথা বলছেন। পাল্টাপাল্টি অভিযোগের খেলা চলছে দেশে।

রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় যাওয়ার হিসাবনিকাশ করতে ব্যস্ত। পিআর, গণভোট, জুলাই সনদ ইত্যাদি জটিল অঙ্কের হিসাবনিকাশ চলছে রাজনীতির ভিতর-বাইরে। এর মধ্যে সাধারণ মানুষ কোথায়? জনগণ কেমন আছে? তাদের খবর নেওয়ার সময় কি আছে কারও?

দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি কিংবা সমাজ সবখানেই আজ এক অদ্ভুত অস্থিরতা। যার প্রভাব সরাসরি এসে পড়েছে সাধারণ মানুষের জীবনে। আয় নেই, কাজ নেই, ব্যবসাবাণিজ্য স্থবির, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, আর তার সঙ্গে সর্বত্র নিরাপত্তাহীনতার আতঙ্ক-সব মিলে সাধারণ মানুষের জীবন যেন এক অবিরাম দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

একজন দিনমজুর সকালে ঘুম থেকে উঠে কাজের আশায় বের হন, কিন্তু ফেরেন খালি হাতে। একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী দোকানের ঝাঁপ খুলেও বসে থাকেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কেনাকাটা নেই, ক্রেতা নেই। একজন শিল্পোদ্যোক্তা অসহায়। বিনিয়োগের ন্যূনতম পরিবেশ নেই। শিল্পপতি, ব্যবসায়ীরা নানান ধরনের হয়রানির শিকার।

অনেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে রাখা হয়েছে মাসের পর মাস। তদন্তের নামে চলছে কালক্ষেপণ আর চরিত্রহননের কুৎসিত খেলা। এসব দেখে কেউ নতুন বিনিয়োগ করতে আগ্রহী নন। নতুন কর্মসংস্থান নেই। একজন স্নাতক যুবক প্রতিদিন চাকরির বিজ্ঞাপন খোঁজেন, কিন্তু মেলে না কোনো নিশ্চিত ভবিষ্যৎ। এ বাস্তবতা এখন একক কারও নয়, বরং লাখো মানুষের।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা যায়, কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর বড় অংশই এখন কোনো না কোনোভাবে বেকার বা আংশিক কর্মরত। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানও আশাব্যঞ্জক নয়। গ্রামীণ অর্থনীতি, ক্ষুদ্র শিল্প, এমনকি শহরের ছোট ব্যবসা-সবখানেই মন্দা। রেমিট্যান্স বৃদ্ধি অর্থনীতিতে একমাত্র স্বস্তি। কিন্তু প্রবাসে কর্মসংস্থান কমে যাওয়ায় রেমিট্যান্স কত দিন এ রকম থাকবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বাংলাদেশের জন্য ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী। বহু দেশে ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তরুণ সমাজ হতাশ হয়ে পড়ছে। এ হতাশা অনেকের জীবন থেকে বিশ্বাস, উদ্যম ও স্বপ্ন কেড়ে নিচ্ছে। একসময় যে মানুষটি প্রতিদিনের আয় দিয়ে সংসার চালাতেন, আজ তিনি ধারদেনার জালে জড়িয়ে পড়েছেন। পরিবারের ভরণপোষণ, সন্তানের পড়াশোনা, বয়স্ক পিতা-মাতার চিকিৎসা-সবকিছুই যেন অসম্ভব হয়ে উঠেছে। বাজারের আগুনে পুড়ছে মানুষ। জীবনযাত্রার ব্যয় এখন নাগালের বাইরে। চাল, ডাল, তেল, নুন, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসের দাম দিনদিন বাড়ছেই। সরকারি প্রতিবেদন বলছে, মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়েছে; কিন্তু বাস্তবে বাজারে গিয়ে যে কোনো মানুষ জানেন দামের সঙ্গে আয় মেলানো আজ অসম্ভব। মাসের শুরুতেই অনেকে ঋণ করে বাজার করেন, মাসের শেষ আসার আগেই হাত খালি। মধ্যবিত্ত শ্রেণি আজ নিম্নবিত্তে পরিণত হচ্ছে। আর নিম্নবিত্তের জীবন চলছে শোচনীয় অবস্থায়। দেশের বাজারে এখন পুঁজির অভাবের পাশাপাশি আস্থারও অভাব দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, প্রশাসনিক জটিলতা ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পিছিয়ে যাচ্ছেন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হচ্ছে একের পর এক। গ্রামাঞ্চলের হাটবাজারেও একই অবস্থা। কেনাবেচা নেই, টাকার প্রবাহ নেই। একসময় যে দোকানদার প্রতিদিন পণ্য বিক্রি করে হাসিমুখে ফিরতেন, এখন তিনি সারা দিন বসে থেকেও বিক্রি না হওয়া পণ্যগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকেন।
অর্থনীতির এ স্থবিরতা শুধু সংখ্যার গল্প নয়; এটি হাজারো পরিবারের বেঁচে থাকার প্রশ্ন।

অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সঙ্গে যোগ হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা। ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মবসন্ত্রাস-সবকিছুই বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতেও সাধারণ মানুষ নিরাপদ বোধ করছে না। রাতে বাইরে বের হওয়া দূরের কথা, দিনের আলোতেও মানুষ আজ ভয়ে ভয়ে চলাফেরা করছে। অপরাধের শিকার হচ্ছে পথচারী, দোকানি, এমনকি শিক্ষার্থী পর্যন্ত। ১৪ মাসের বেশি সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলছে নানান ধরনের অস্থিরতা। কখনো শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, কখনো শিক্ষকদের দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন, কখনো শিক্ষার্থীদের নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার উপক্রম। মবসন্ত্রাসের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো সমাজে নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। যে সমাজে মানুষ নিজের বিচার নিজেই নিতে চায়, সেখানে আইনের প্রতি আস্থা হারিয়ে যায়। আর আইন ও ন্যায়বিচারের প্রতি এ অবিশ্বাসই সমাজে অরাজকতার বীজ বপন করে।

আমাদের সমাজে দারিদ্র্য এখন আর কেবল খাদ্যের অভাব নয়; এটি আত্মসম্মানের ক্ষয়, নিরাপত্তার অভাব এবং ভবিষ্যতের প্রতি গভীর অনিশ্চয়তা।
দুর্নীতি কমেনি, বরং প্রতিদিন নিত্যনতুন দুর্নীতির খবর আকাশে বাতাসে ভাসছে। মূলধারার গণমাধ্যম অজানা আতঙ্কে সেলফ সেন্সরশিপের চাদরে নিজেদের ঢেকে রেখেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনটা গুজব আর কোনটা সত্যি তা কে বলবে? দেশের মানুষ এখন আশাহত, হতাশ। অনেকে নিজেদের প্রতারিত মনে করছেন। শুধু দেশের জনগণ নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপুলভাবে সমর্থন জানায়। বিশ্বনেতারা অভিনন্দনে সিক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। এত অভিনন্দন অতীতে কোনো সরকারপ্রধান পেয়েছেন কি না আমার জানা নেই। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলেও এখন বাংলাদেশ নিয়ে হতাশার সুর। সর্বশেষ হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন তার প্রমাণ। পশ্চিমা অনেক দেশ বলতে শুরু করেছে, বাংলাদেশ আরেকটি সুযোগ নষ্ট করেছে। যখন রাষ্ট্র নীতি নির্ধারণে ব্যস্ত, রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতার সমীকরণে মত্ত তখন সাধারণ মানুষ দিশাহারা। এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে হেঁটে যাচ্ছে বাংলাদেশ। রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব নাগরিকের নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও ন্যায্য জীবনযাত্রা নিশ্চিত করা। কিন্তু আজ এ তিন ক্ষেত্রেই ব্যর্থতার চিত্র প্রকট। নীতি ও বাস্তবতার ফারাক যত বাড়ছে, ততই সাধারণ মানুষের আস্থা কমছে।

রাষ্ট্র যদি মানুষের পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে সমাজের স্থিতি নষ্ট হয়ে যায়। মানুষের ক্ষোভ, হতাশা ও অনিশ্চয়তা যখন চরমে পৌঁছায়, তখন তা সামাজিক অস্থিরতায় রূপ নেয়। এ পরিস্থিতি উত্তরণের একমাত্র উপায় জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ধারণ করা। জনগণের কণ্ঠস্বর শোনা। আর জনগণের অনুভূতি উপলব্ধির প্রধানতম উপায় হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। এ নির্বাচন উপলক্ষে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা সরাসরি জনগণের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের চাওয়াপাওয়া, আশানিরাশার কথা জানতে পারেন। বিজয়ী দল ক্ষমতায় গিয়ে জনগণের প্রত্যাশাপূরণে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাজ করতে পারে।

এ কারণেই বাংলাদেশের সামনে নির্বাচনের বিকল্প নেই। রাজনৈতিক দলগুলো কোনোভাবেই যেন নির্বাচন বানচালের ফাঁদে পা না দেয়। তাদের বিতর্ক, মতবিরোধ নিয়ে যাক জনগণের কাছে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া হোক জনগণের হাতে। জনগণই সিদ্ধান্ত নিক তারা কী চায়। নির্বাচন না হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে জনগণ।

ইস্কনের দ্বারা গুম-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান তাহাফফুজে দ্বীন পরিষদের

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ৬:২৩ পিএম
ইস্কনের দ্বারা গুম-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান তাহাফফুজে দ্বীন পরিষদের

বাংলাদেশে সম্প্রতি ইসকন কর্তৃক পরিচালিত খুন, গুম এবং মুসলমানদের উপর নির্যাতন ও প্ররোচণামূলক কর্মকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তাহাফফুজে দ্বীন পরিষদ বাংলাদেশ।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে গণমাধ্যম পাঠানো
এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মাদ জাকির হুসাইন ফরিদী এবং মহাসচিব মুফতী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইসকনের নামে দেশে যে ধরনের গুম, খুন এবং উসকানিমূলক ও বিদ্বেষপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, তা বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি, শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

নেতৃদ্বয় বলেন, “আমরা দেশের সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও আলেম সমাজকে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বিশেষ করে, দেশের সব মসজিদের সম্মানিত ইমাম ও খতিবদের প্রতি আমাদের অনুরোধ— ‘আজকের জুমার খুতবায় যেন মুসল্লিদের সামনে ইসকন কর্তৃক পরিচালিত এই সন্ত্রাস ও নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়, যাতে মানুষ সত্যটি জানতে পারে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে।”

সংগঠনটি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলে—
“ধর্মীয় সম্প্রীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার্থে উগ্রবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। ইসকন একের পর এক উসকানিমূলক ও ঘৃণাবাদী জঙ্গি কার্যক্রম চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।”

রাতে বাসর, সকালে সালথায় আখক্ষেতে মিলল বরের ঝুলন্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ৫:৫৮ পিএম
রাতে বাসর, সকালে সালথায় আখক্ষেতে মিলল বরের ঝুলন্ত লাশ

পারিবারিকভাবে হয় বিয়ে। ধুমধামে বরযাত্রী নিয়ে কনেকে আনা হয় বরের বাড়িতে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাতে নবদম্পতিকে পাঠানো হয় বাসরঘরে। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস- সকালেই আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় বরের লাশ পাওয়া যায়।

ঘটনাটি ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের পিসনাইল গ্রামে ঘটে।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে পিসনাইল গ্রামের মাঠে একটি আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় বরের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত বরের নাম মো. জামাল ফকির (২৮)। সে পিসনাইল গ্রামের মো রোজব ফকিরের ছেলে। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জামাল ছিলেন সেজো। তবে বরের এই মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের দাবি, জামাল গলায় গামছা পেঁচিয়ে আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের আড়ার সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। আর স্থানীয়রা বলছেন, আখক্ষেতের বেড়ার ওই বাঁশের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করা অসম্ভব।

বরের পরিবার জানান, গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে পারিবারিকভাবে পাশ্ববর্তী নগরকান্দা উপজেলার পুরাপাড়া ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামের মো. লিটন ভূঁইয়ার মেয়ে রোকেয়া আক্তারকে (২৩) বিয়ে করেন জামাল ফকির। বিকেলে কনেকে নিয়ে বাড়িতে আসেন বর। রাতে নবদম্পতি বাসরঘরে শুয়ে ছিলেন।

শুক্রবার সকালে পিসনাইল গ্রামের মাঠে নিজ বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে একটি আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সাথে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় বর জামালের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান স্থানীয় কৃষকরা। পরে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে লাশটি নামিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

স্থানীয়রা জানান, গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের যেভাবে মরদেহ ঝুলে ছিল, তাতে মনে হয় না সে আত্মহত্যা করেছে। কারণ বাঁশের আড়ার উচ্চতা ছিল ২ থেকে আড়াই ফুট। সেখানে ঝুলে আত্মহত্যা করলে পা মাটিতে মিশে যাবে।

 

নিহত বরের স্ত্রী রোকেয়া বলেন, সকালে মানুষের চিৎকার শুনে দরজা খুলতে গেলে দেখি দরজার বাইরে শিকল লাগানো। পরে প্রতিবেশীরা দরজা খুলে দিলে দেখি আমার স্বামীর লাশ জমির মধ্যে পড়ে আছে।

নিহতের বড় ভাই জালাল ফকির বলেন, আমার ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টি খুবই রহস্যজনক। সে কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা করেনি। ঠিক কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল, বুঝে উঠতে পারছি না।

 

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার ওই ছেলেটি বিয়ে করেন। রাতে বাসর ঘরে নতুন বউকে তিনি শুয়ে ছিলেন। সকালে বাড়ির পাশে একটি আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের আড়া থেকে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান পরিবার। ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ফরিদপুরে বাসের পিছনে ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ২

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৪৩ পিএম
ফরিদপুরে বাসের পিছনে ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ২

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের ভাঙ্গামুখী লেনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসের পেছনে দ্রুতগামী ট্রাকের ধাক্কায় দু’জন নিহত হয়েছেন। এতে কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়।

শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) ভোর রাতে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তারাইল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে শিবচর হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

নিহতরা হলেন, মাগুরার শালিখা উপজেলার ঘোষগাতী গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে মিনহাজুর রহমান সাকিব (২৪) এবং পাবনার বেড়া উপজেলার বনগ্রাম এলাকার জুয়েল রানার স্ত্রী ফারজানা ইয়াসমিন (৩০)।

শিবচর হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সাতক্ষীরাগামী যমুনা লাইন পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো ব-১৫-৯১৪৯) দ্রুতগতিতে চলার সময় প্রথমে অজ্ঞাত একটি গাড়ির পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে বাসটির সামনের অংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্ঘটনার পর যাত্রীরা নেমে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকলে, একই লেনে থাকা ঝিনাইদহগামী একটি ট্রাক (ঝিনাইদহ ট-১১-১৬৬১) এসে বাসটির পেছনে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই পরিবহনের যাত্রী মিনহাজুর রহমান সাকিব নিহত হন এবং অন্তত ৭ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক গুরুতর আহত ফারজানা ইয়াসমিনকে মৃত ঘোষণা করেন।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকিবুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি ভাঙ্গা উপজেলার মধ্য হলেও এটি শিবচর হাইওয়ের এরিয়ার মধ্যে। এ কারণে বিষয়টি শিবচর হাইওয়ের থানা পুলিশ দেখবেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম জানান, ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় দুইজন মারা গেছেন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।