ফরিদপুরে বিয়ের একমাসের মাথায় ডাকাতের হাতে প্রাণ গেল প্রবাসীর

সৌদি থেকে দীর্ঘ ২৮ বছর পর এবার রমজানের আগে বাড়িতে আসেন তিনি। ততদিনে জামালের বয়স ৫৫ হয়ে যায়। এই বয়সেই তিনি মাত্র একমাস আগে বিয়ে করেন। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে বিয়ের মেহেদীর রং হাত থেকে মুছে যাওয়ার আগেই শুক্রবার (৪ এপ্রিল) গভীররাতে নিজ বসতঘরে ডাকাতদলের হাতে নির্মমভাবে প্রাণ দিতে হয়েছে জামালকে।
নিহত জামাল ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের কোনাগ্রামের মৃত হাতেম মোল্যার একমাত্র ছেলে। ঘটনার পর শনিবার (০৫ এপ্রিল) সকালে নিহত জামালের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবার ও প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
নিহত জামালের বৃদ্ধ মা শিরি বেগম বলেন, আমি বাড়িতে ছিলাম না। শুক্রবার রাতে আমার একমাত্র ছেলে জামাল তার নতুন স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে ছিলেন। আর কেউ বাড়িতে ছিল না। ভোররাতে খবর পেলাম ডাকাতরা আমাদের ঘরে ঢুকে আমার ছেলে মেরে ফেলে লুটপাট করে নিয়ে গেছে।
জামালের খালাতো বোন সাথী বেগম বলেন, জামালের পুরুষাঙ্গের অন্ডকোষে আঘাত করে ডাকাতদলের সদস্যরা ঘরে থাকা নগদ ৫ লাখ টাকা ও ১০ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা এসে জামালকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ভোর ৪ টার দিকে কর্মরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষনা করেন। তিনি আরো বলেন, জামালের এমন মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছে না। এখন এই পরিবারে আলো জ্বালানোর মতো আর কেউ রইল না। পরিবারের একমাত্র সদস্য জামালের বৃদ্ধ মা যেকোনো সময় বিদায় নেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।
তবে স্থানীয়দের ধারনা, এটা ডাকাতির ঘটনা নাও হতে পারে, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতেও পারে। বিষয়টি গুরুত্ব তদন্ত করার জন্য পুলিশ-প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেছেন তারা।
ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-নগরকান্দা) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে গভীররাতে জামালের ঘরে দুই জন চোর বা ডাকাত ঢুকে তার অন্ডকোষে আঘাত করে হত্যা করে। তাকে হত্যার সময় ঘরের বাহিরে আরো লোকও থাকতে পারে। ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা গুরুত্ব দিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্ত করছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবো।
আপনার মতামত লিখুন
Array