খুঁজুন
শনিবার, ৭ জুন, ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

ফরিদপুরে বিয়ের একমাসের মাথায় ডাকাতের হাতে প্রাণ গেল প্রবাসীর

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:৫৪ এএম
ফরিদপুরে বিয়ের একমাসের মাথায় ডাকাতের হাতে প্রাণ গেল প্রবাসীর
৭১ সালে বাবা হাতেম মাতুব্বরকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনী। তখন একমাত্র ছেলে জামাল মাতুব্বর মায়ের গর্ভে ছিল। তার বয়স হয়েছিল মাত্র দুই মাস। স্বামীর হারানোর শোকের মধ্যেই শিরি বেগমের কোলজুড়ে দুনিয়ায় আগমন করে জামাল। পরে শিশু সন্তানের চিন্তাও করে শিরি বেগমও আর বিয়ে করেনি। অপরদিকে জামাল বড় হওয়ার পর সংসারের হাল ধরতে ২৮ বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান।

সৌদি থেকে দীর্ঘ ২৮ বছর পর এবার রমজানের আগে বাড়িতে আসেন তিনি। ততদিনে জামালের বয়স ৫৫ হয়ে যায়। এই বয়সেই তিনি মাত্র একমাস আগে বিয়ে করেন। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে বিয়ের মেহেদীর রং হাত থেকে মুছে যাওয়ার আগেই শুক্রবার (৪ এপ্রিল) গভীররাতে নিজ বসতঘরে ডাকাতদলের হাতে নির্মমভাবে প্রাণ দিতে হয়েছে জামালকে।

নিহত জামাল ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের কোনাগ্রামের মৃত হাতেম মোল্যার একমাত্র ছেলে। ঘটনার পর শনিবার (০৫ এপ্রিল) সকালে নিহত জামালের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবার ও প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

নিহত জামালের বৃদ্ধ মা শিরি বেগম বলেন, আমি বাড়িতে ছিলাম না। শুক্রবার রাতে আমার একমাত্র ছেলে জামাল তার নতুন স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে ছিলেন। আর কেউ বাড়িতে ছিল না। ভোররাতে খবর পেলাম ডাকাতরা আমাদের ঘরে ঢুকে আমার ছেলে মেরে ফেলে লুটপাট করে নিয়ে গেছে।

জামালের খালাতো বোন সাথী বেগম বলেন, জামালের পুরুষাঙ্গের অন্ডকোষে আঘাত করে ডাকাতদলের সদস্যরা ঘরে থাকা নগদ ৫ লাখ টাকা ও ১০ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা এসে জামালকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ভোর ৪ টার দিকে কর্মরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষনা করেন। তিনি আরো বলেন, জামালের এমন মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছে না। এখন এই পরিবারে আলো জ্বালানোর মতো আর কেউ রইল না। পরিবারের একমাত্র সদস্য জামালের বৃদ্ধ মা যেকোনো সময় বিদায় নেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।

তবে স্থানীয়দের ধারনা, এটা ডাকাতির ঘটনা নাও হতে পারে, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতেও পারে। বিষয়টি গুরুত্ব তদন্ত করার জন্য পুলিশ-প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেছেন তারা।

ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-নগরকান্দা) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে গভীররাতে জামালের ঘরে দুই জন চোর বা ডাকাত ঢুকে তার অন্ডকোষে আঘাত করে হত্যা করে। তাকে হত্যার সময় ঘরের বাহিরে আরো লোকও থাকতে পারে। ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা গুরুত্ব দিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্ত করছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবো।

সালথায় ঈদের দিনে জিকা গাছে ঝুলছিল যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ 

সালথা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ৭ জুন, ২০২৫, ১:০২ পিএম
সালথায় ঈদের দিনে জিকা গাছে ঝুলছিল যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ 
ফরিদপুরের সালথায় ঈদুল আজহার দিনে আকাশ মোল্লা (২০) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (০৭ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের কাউলিকান্দা মোল্লার মোড় নামক একটি জিকা গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত আকাশ মোল্লা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের মৃত হারুন মোল্লার ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আকাশের মা দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ ফরিদপুর সদরের তালতলা এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। গতকাল (৬ জুন) শুক্রবার  রাত ১১টার দিকে ওই বাসা থেকে অজ্ঞাত কারণে বের হয় আকাশ। পরে শনিবার ঈদের দিন সালথা’র কাউলিকান্দা মোল্লার মোড় মেইন সড়কের পশ্চিম পাশে একটি জিকা গাছের সাথে লাইলনের রশি পেঁচানো আকাশের ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, আকাশ মাদকাসক্ত হওয়ায় দীর্ঘদিন ফরিদপুর রিহ্যাব সেন্টারে থেকে চিকিৎসা নিয়ে তিন মাস পূর্বে বের হয়। গতকাল রাতে ভাড়া বাসা থেকে অজ্ঞাত কারণে বের হওয়ার পর ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মারুফ হাসান রাসেল বলেন, খবর পেয়ে যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ফরিদপুরে উৎসের উদ্যোগে স্বামীহারা এক নারীর দোকান ‘সকাল টি স্টোর’ পুনর্গঠন ও হস্তান্তর

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ৭ জুন, ২০২৫, ১০:১১ এএম
ফরিদপুরে উৎসের উদ্যোগে স্বামীহারা এক নারীর দোকান ‘সকাল টি স্টোর’ পুনর্গঠন ও হস্তান্তর

ফরিদপুরের একটি মানবিক উদ্যোগে আবারও প্রমাণ হলো-একটি সামান্য সহায়তাও বদলে দিতে পারে একটি মানুষের জীবন। কুরবানির পবিত্র সময়কে সামনে রেখে ধলার মোড়ে উৎস সোশ্যাল অর্গানাইজেশন এর পক্ষ থেকে এক স্বামীহারা নারীর জীবিকার একমাত্র উৎস ‘সকাল টি স্টোর’ নতুনভাবে নির্মাণ ও পূর্ণ মালপত্রসহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

দোকানটির টিনের চালা ছিল চৌচির আর ভেতরে ছিল না ন্যূনতম প্রয়োজনীয় মালামাল। এমন অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে জীবন চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন ওই নারী। বিষয়টি জানতে পেরে উৎস সোশ্যাল অর্গানাইজেশন তার পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

উৎস-এর স্বেচ্ছাসেবীরা দোকানটি নতুনভাবে নির্মাণ করে, ছাউনির সমস্যা মেরামত করে এবং প্রয়োজনীয় চা-নাস্তার মালামাল সরবরাহ করে পুনরায় ব্যবসা শুরু করার উপযোগী করে তোলে।
সংগঠনের এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন,

“এই ঈদে আমরা শুধু পশু কোরবানি নয়, ত্যাগ ও ভালোবাসার কোরবানিকেই সবচেয়ে বড় করে দেখেছি। একজন মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে পারা-এটাই আমাদের ঈদের আনন্দ।”

‘সকাল টি স্টোর’ এখন শুধুই একটি দোকান নয়, বরং একজন নারীর আত্মমর্যাদায় ফিরে আসার প্রতীক হয়ে উঠেছে।

ফরিদপুরে বেহাল মহাসড়কে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি, ডাকাতির শঙ্কা

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫, ৬:২৪ পিএম
ফরিদপুরে বেহাল মহাসড়কে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি, ডাকাতির শঙ্কা

 

 

ভাঙ্গা উপজেলা থেকে ফরিদপুর জেলা সদর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় এবারের ঈদ যাত্রায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ঘর মুখো মানুষকে।

একদিকে খানাখন্দে ভরপুর সড়ক দিয়ে চলাচলে প্রায়শ ভেঙ্গে যাচ্ছে যানবাহনের যন্ত্রপাতি, অন্যদিকে ওই সড়ক অতিক্রমে ভোগান্তির পাশাপাশি ধীর গতির কারণে যথাসময়ে গন্তব্যে পৌছাতে না পারাসহ রাতে ছিনতাই ও ডাকাতির শংকা রয়েছে ঘরমুখো যাত্রীদের মাঝে। যদিও ফরিদপুরের পুলিশ সুপার বলছেন, ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ওই অংশে রাতের বেলায় পুলিশ টহল বাড়ানো হয়েছে। তাই শংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

বরিশাল-ফরিদপুর মহাসড়কের ভাঙ্গা উপজেলা এক্সপ্রেসওয়ের শেষ প্রান্ত থেকে ফরিদপুরের দুরত্ব ৩০ কিলোমিটার, যা দীর্ঘদিন প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে খানাখন্দে ভরে গেছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বেড়েছে খানা-খন্দের পরিমান।

এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ওই সড়ক ব্যবহার করে যাতায়াত করা ফরিদপুরসহ অন্তত ১০ জেলার মানুষ। ফরিদপুরের সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তাদের এই সড়কটির ব্যাপারে উদাসীনতাকে দায়ি করছে এই সড়কে যাতায়াতকারীরা।

ওই সড়ক ব্যবহারকারী যানবাহন চালক ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খানাখন্দের কারণে প্রায়শ গাড়ীর যন্তপাতি ভেঙ্গে যাচ্ছে। এছাড়া ধীর গতিতে যানবাহন চালাতে হচ্ছে, ফলে নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পেছানো যাচ্ছেনা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।

এই সড়ক দিয়ে ঢাকাগামী মাইক্রোচালক আবুল হোসেন বলেন, এয়ারপোর্টে যাচ্ছি যাচ্ছি আনতে ভাঙ্গা থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত সড়কের যে অবস্থা তাতে গাড়ির গতিসিমা সর্বোচ্চ ১৫ বেশি চালানো যায় না। মহাসড়কের গতি যদি এরকম হয় সে ক্ষেত্রে ডাকাতি সহ নানা পদের ঝামেলার আশঙ্কা থাকে।

এদিকে গাড়ী নষ্ট হওয়া ও ধীর গতির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন ঘরমুখো মানুষেরাও। এছাড়া রাতে ধীর গতির কারণে ছিনতাই বা ডাকাতির মতো ঘটনার শংকাও রয়েছে তাদের মধ্যে। সড়কটি দ্রুত সংস্কার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবী তাদের।

যদিও ছিনতাই ও ডাকাতির বিষয়টি মাথায় রেখে ওই অংশে পুলিশ টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল।

তিনি জানান, ৩০ কিলোমিটার মহাসড়ককে চারটি ভাগে ভাগ করে পুলিশ টহলের ব্যবস্থা করা হযেছে। কোনো ধরনের সমস্যা বা সন্দেহ হলে দ্রুত পুলিশকে জানানোর আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। এদিকে জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শফিকুর রহমান জানিয়েছে, আপাতত চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক করতে সড়কটির সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে।