খুঁজুন
সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫, ২৩ আষাঢ়, ১৪৩২

ফরিদপুরে ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদ: শহরের সৌন্দর্য ও পরিবেশ রক্ষায় শিক্ষার্থীরা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫, ৩:৪৭ পিএম
ফরিদপুরে ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদ: শহরের সৌন্দর্য ও পরিবেশ রক্ষায় শিক্ষার্থীরা
ফরিদপুর শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং সড়কের ডিভাইডারে লাগানো গাছগুলো সংরক্ষণের লক্ষ্যে ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদে নেমেছে ফরিদপুর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল সাড়ে দশটা থেকে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এই সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন তারা।
শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড়, মেডিকেল সড়ক, নদী গবেষণা সড়ক, রাজবাড়ী রাস্তার মোড়সহ বিভিন্ন সড়কের ডিভাইডারে রোপণ করা গাছের উপর ঝুলে থাকা ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ করা হয়। এই কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেন ফরিদপুর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কাজী রিয়াজ, মুখপাত্র কাজী জেবা তাহসিন এবং সহ-মুখপাত্র উম্মে হাবিবাসহ অন্যান্য সদস্যরা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যানার-ফেস্টুনের কারণে ফরিদপুর শহরের সৌন্দর্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে সড়কের ডিভাইডারে এসব ব্যানারের কারণে গাছগুলো মারা যাচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এছাড়াও, এসব ব্যানার সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। তারা বলেন, “বিশেষ করে রাজনৈতিক ও প্রচারণামূলক ব্যানার বেশি দেখা যায়। আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন গাছের ওপর ব্যানার না ঝুঁলিয়ে পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসেন। আমাদের লক্ষ্য ব্যানার-ফেস্টুন মুক্ত একটি সুন্দর ফরিদপুর।”
এই উদ্যোগে স্থানীয় বাসিন্দারা খুশি প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, এই ধরনের কার্যক্রম ফরিদপুরকে একটি স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। স্থানীয় বাসিন্দারা আশা করছেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ফরিদপুর হবে একটি পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব শহর।

বোয়ালমারীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল জাহাজ মাস্টারের

বোয়ালমারী প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫, ৬:৪৭ পিএম
বোয়ালমারীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল জাহাজ মাস্টারের

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিদ্যুতস্পৃষ্টে হয়ে মো. নাসির মোল্যা (৪৫) নামে এক জাহাজ মাস্টারের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

সোমবার (৭ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বড়গাঁ নতুন বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে।

তিনি পাশ্ববর্তী আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের বারাংকুলা গ্রামের মো. আমীর হোসেন মোল্যার ছেলে এবং খুলনায় অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন জাহাজের মাস্টার হিসেবে চাকরিরত ছিলেন তিনি।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, খুলনায় অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন জাহাজের মাস্টার হিসেবে চাকরি করতেন মো. নাসির মোল্যা। কিছুদিন আগে তিনি ছুটি নিয়ে জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার বারাংকুলা গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। সম্প্রতি তিনি আলফাডাঙ্গার সীমান্ত পাশ্ববর্তী বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বড়গাঁ নতুন বাজারে নিজ মালিকানাধীন জমিতে একটি দোকান নির্মাণের কাজ করছিলেন। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নবনির্মিত দোকানের ফ্লোর ও ওয়ালে পানি দিতে গিয়ে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাবরিনা হক টুম্পা জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। পুলিশকে জানানোর আগেই স্বজনেরা তার মৃতদেহ নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন।

এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার পরিদর্শক তদন্ত (ওসি তদন্ত) আল আমীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, হাসপাতাল থেকে স্বজনরা মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে গেছে। আমরা ঘটনাস্থলে আছি। নিহতের বাড়ি পার্শ্ববর্তী আলফাডাঙ্গা থানায় হওয়ায় আলফাডাঙ্গা থানাকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। দুই থানা পুলিশ সমন্বয় করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাজালাল আলম জানান, বোয়ালমারী থানা থেকে খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটি টিম মৃতের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। যেহেতু ঘটনাস্থল বোয়ালমারী থানাধীন তাই পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা তারা গ্রহণ করবে। আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

ফরিদপুরে ভুয়া ডেন্টাল ডাক্তারের এক বছরের  কারাদণ্ড ও লাখ টাকা জরিমানা

আলফাডাঙ্গা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫, ৬:৪২ পিএম
ফরিদপুরে ভুয়া ডেন্টাল ডাক্তারের এক বছরের  কারাদণ্ড ও লাখ টাকা জরিমানা

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে মো. নাসির উদ্দিন (৩৬) নামে এক ভুয়া ডেন্টাল ডাক্তারকে এক বছরের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।

সোমবার (০৭ জুলাই) বিকেল চারটার দিকে উপজেলা পৌর সদরের থানার সামনে নাসির ডেন্টাল নামে একটি প্রতিষ্ঠানে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

মো. নাসির উদ্দিন উপজেলার বানা ইউনিয়নের কোঠরাকান্দি গ্রামের মৃত ওলিয়ার রহমান মোল্লা।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, নাসির উদ্দীন “নাসির ডেন্টাল” নামে চেম্বার খুলে দীর্ঘদিন ধরে ডেন্টাল ডাক্তার হিসেবে রোগী দেখে আসছিলেন। চিকিৎসা সনদ, নিবন্ধন ছাড়াই একজন ভূয়া দন্ত চিকিৎসক হিসেবে চেম্বার খুলে রোগী দেখে আসছিলেন। এ সময় তার চেম্বারে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া যায়। এছাড়াও একজন দন্ত চিকিৎসক ও তার চেম্বার হিসেবে যা যা থাকার কথা তার কিছুই নেই।

এর সত্যতা নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ কে এম রায়হানুর রহমান বলেন, তিনি একজন ভূয়া দন্ত চিকিৎসক। তার নেই কোন সনদপত্র, নিবন্ধন। তিনি একজন ভূয়া দন্ত চিকিৎসক হিসেবে রোগীদের দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা করে আসছিলেন। গোয়েন্দা সংস্থার ভিত্তিতে তার চেম্বারে অভিযান চালিয়ে সত্যতার প্রমাণ পেয়ে এবং একজন ভূয়া দন্ত চিকিৎসক প্রমাণিত হওয়ায় পরে তাকে জেল-জরিমানা প্রদান করা হয়েছে।

ফরিদপুরে নকল ওষুধ ও প্রসাধনী কারখানায় যৌথবাহিনীর অভিযান

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫, ১:২১ পিএম
ফরিদপুরে নকল ওষুধ ও প্রসাধনী কারখানায় যৌথবাহিনীর অভিযান

ফরিদপুরে নকল ওষুধ ও প্রসাধনী সামগ্রী প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। এ সময় বিভিন্ন কোম্পানীর নামে প্যাকেটজাত করা বিপুল পণ্য জব্দ করা হয়। সেগুলো নকল বিএসটিআই লোগো ও কোম্পানীর নামে প্যাকেট করে বাজারজাত করা হতো। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে রিয়াজ শিকদার (২৬) নামে এক বিক্রয় প্রতিনিধিকে একমাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে ওষুধ ও প্রসাধনী সামগ্রী আইনে মামলা দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

সোমবার (০৭ জুলাই) দুপুরে জেলা ড্রাগ সুপার মো. রোকনুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে রোববার (০৬ জুলাই) বিকেলে ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুরে একটি ৩ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় এই অভিযান চালানো হয়।

এ সময় সেনাবাহিনী, কোতয়ালী থানা পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বি ও জেলা ড্রাগ সুপার মো. রোকনুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

মানব শরীরের ব্রনসহ চর্মজনিত সমস্যার ওষুধ তৈরি করে প্যাকেটজাত করা হতো এখানে। এছাড়া শ্যাম্পু, ফেসওয়াশ, বডিওয়াশ, সাবান, শিশুদের ব্যবহৃত সাবান তৈরিসহ অসংখ্য পণ্য ও কেমিক্যাল সামগ্রীও রয়েছে। এখান থেকে কিটোজেল, পারনিক্স, পারকিট সহ অসংখ্য নামি-বেনামি কোম্পানীর প্যাকেটজাত করা হতো।

স্থানীয় ও অভিযান সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম খাবাসপুর মাওলানা আব্দুল আলিম সড়কের রহিমের মোড় এলাকায় জুয়েল নামের এক ব্যক্তির ভাড়াটিয়া মাহফুজুর রহমান শিপন (৩৫) নয় মাস আগে বাসাটি ভাড়া নেন। এরপর থেকে লোকচক্ষুর আড়ালে এসব কর্মকান্ড শুরু করেন। অভিযানের সময় তিনি পালিয়ে যান। শিপনের বাড়ি জেলার সদরপুর উপজেলার বেপারীডাঙ্গী এলাকায়।

জেলা ড্রাগ সুপার মো. রোকনুজ্জামান জানান, দুই ইউনিট ভাড়া বাসায় অবৈধ কারখানা গড়ে তুলেন। কারখানাটিতে লাইসেন্স বা ওষুধ উৎপাদনের কোনো বৈধতা নেই। সেক্ষেত্রে ওষুধ প্রশাসন আইনানুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি বলেন, যেহেতু কোনো অনুমোদন ছাড়াই ওষুধসহ এসব উৎপাদন করে আসছিলেন সেক্ষেত্রে এগুলো নিম্মমানেরও হতে পারে এবং মানবদেহের জন্য ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। তবে এগুলোর নমুনা নিয়ে পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে গুনগত মান পরীক্ষা করা হবে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বি জানান, অবৈধভাবে পণ্য উৎপাদন করায় আটক একজন কর্মচারীকে ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর ৪৫ ধারা মোতাবেক এক মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া মালিকের বিরুদ্ধে ওষুধ ও কসমেটিকস আইন ২০২৩ এর ১৪(১) ধারা মোতাবেক মামলা করার জন্য ড্রাগ সুপারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও এর সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও তিনি জানান।