খুঁজুন
সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৫, ১৮ কার্তিক, ১৪৩২

ফরিদপুরে সূর্যের হাসি নিয়ে ফুটেছে সূর্যমুখী, দেখতে মানুষের ভিড়

পান্না বালা, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৮:৫৭ পিএম
ফরিদপুরে সূর্যের হাসি নিয়ে ফুটেছে সূর্যমুখী, দেখতে মানুষের ভিড়

ফরিদপুর সদরের ডোমরাকান্দিতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রে সূর্যমুখীর দুটি বাগানে ফুটেছে হাজারো সূর্যমুখী। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, দুটি হলুদ গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। সূর্যের হাসি নিয়ে ফুটে থাকা এসব সূর্যমুখী দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

মূলত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে চার মাসের জন্য করা হয়েছে এই দুটি বাগান। বাগান দুটির আকার প্রায় পাঁচ একর। গত ১৮ থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত বপন করা হয়েছে বারি সূর্যমুখী-৩ জাতের সূর্যমুখী ফুলের বীজ। বর্তমানে বীজ থেকে হওয়া প্রায় প্রতিটি গাছে ফুল ফুটেছে। পরিপক্ব হওয়ার পর আগামী ৮ মার্চ থেকে বীজ সংগ্রহ করা শুরু হবে।

ফরিদপুর শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে বাগান দুটির অবস্থান। ফুলগুলো বাতাসে দোল খেয়ে আমন্ত্রণ জানায় দর্শনার্থীদের। সূর্যমুখীর সৌন্দর্য দেখতে ভিড় বাড়ে বিকেল ও ছুটির দিনে।

সম্প্রতি সূর্যমুখীর বাগানে ঘুরে দেখা যায়, শত শত মানুষের ভিড়ে বাগানের রক্ষণাবেক্ষণ করতে হিমশিম অবস্থা কর্তৃপক্ষের। দর্শনার্থীরা যেন বাগানের ভেতর গিয়ে বা পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে গিয়ে বাগান নষ্ট না করেন, ফুলে হাত না দেন; এ জন্য সার্বক্ষণিক হ্যান্ডমাইক নিয়ে সচেতন করে চলেছেন এক মালি।

বিএডিসি কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৭ বছর ধরে এখানে সূর্যমুখীর চাষাবাদ হচ্ছে। শুরুতে চাষের পরিধি ছিল খুবই সামান্য। বর্তমানে বিশাল এলাকাজুড়ে সূর্যমুখীর বাগান করা হচ্ছে।

বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে এসেছেন সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকিয়া জুঁই। তিনি বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে আমরা বন্ধুরা মিলে শহরের কোথাও না কোথাও ঘুরতে বের হই। আজ এ বাগানে এসেছি। হাজার হাজার ফুল দেখে মনে এক অনাবিল শান্তি অনুভব করছি।’

সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের বাংলা বিভাগের সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শুভ বিশ্বাস বলেন, ‘প্রতিবছরই সূর্যমুখীর বাগান দেখতে এখানে আসি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এখানে এলে সবুজের সংস্পর্শ পাওয়া যায়, সূর্যমুখী ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য পাওয়া যায়।’

বিএডিসির কর্মকর্তারা বলেন, ১ একর জমিতে ৭০০ থেকে ৮০০ কেজি বীজ হয়। ১ একর জমি চাষ করতে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়।

বিএডিসির বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রের উপসহকারী পরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর উৎপাদিত বীজ থেকে তেল উৎপাদন করে বিক্রি করা হবে না। এবার এই বীজ কৃষকদের মধ্যে প্রণোদনা হিসেবে বিতরণ করা হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, এ বছর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মোট ২৬ দশমিক ৮৫ একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ করা হয়েছে। গত বছর আবাদ করা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৪৪ একর জমিতে। দিনে দিনে ফরিদপুরে সূর্যমুখীর চাষাবাদ বাড়ছে।

পদত্যাগ করেছেন ফরিদপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র জেবা তাহসিন

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:০৪ এএম
পদত্যাগ করেছেন ফরিদপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র জেবা তাহসিন

পদত্যাগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফরিদপুরের জেলা শাখার মুখপাত্র কাজী জেবা তাহসিন।

রোববার (০২ নভেম্বর) রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে স্টাটাস দিয়ে তিনি পদত্যাগের এ ঘোষণা দেন।

পদত্যাগপত্রে জেবা তাহসিন লিখেছেন, ‘আমি কাজী জেবা তাহসিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফরিদপুর জেলার মুখপাত্র হিসেবে দীর্ঘদিন যাবৎ দায়িত্বরত ছিলাম এবং এই পথচলাটা আমার জীবনের এক মূল্যবান অধ্যায়। তবে কিছু মাস আগে বৈছআ সারাদেশের কমিটি স্থগিত করা হয় কিন্তু আজকে পুনরায় আবার এ কমিটি সচল করার পর আমি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে বৈছাআ ফরিদপুর জেলা এর মুখপাত্র পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিচ্ছি।’

তিনি আরও লেখেন, ‘এই পদ থেকে সরে গেলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতি আমার ভালোবাসা, বিশ্বাস ও দায়বদ্ধতা আগের মতোই অটুট থাকবে। আমি সবসময় এই আন্দোলনের পথে থাকবো — হয়তো ভিন্ন ভূমিকায়, কিন্তু একই লক্ষ্য নিয়ে — বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার স্বপ্নে।’

ফরিদপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩৫

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:৩১ পিএম
ফরিদপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩৫

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তার ও শালিশ বৈঠককে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রবিবার (০২ নভেম্বর) বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের গুপিনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গুপিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা সায়মন শেখ (৫০) গ্রুপ ও কুদ্দুস মুন্সি গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছোট হামিরদির মোতালেব মাতুব্বরের দোকানে এসে সায়মন শেখ কুদ্দুস মুন্সির লোকজনের সামনে কুদ্দুস মুন্সিকে নিয়ে গালিগালাজ করে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। এ ঘটনায় রবিবার বিকেলে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে গুপিনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শালিশ বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সায়মন শেখ গ্রুপ শালিশ বৈঠক প্রত্যাখান করে। পরে এ নিয়ে এক পর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩৫ জন আহত হন।

স্থানীয় ছোট হামিরদী গ্রামের বাসিন্দা সাহাদাৎ ফকির বলেন, দুই পক্ষের শালিশ বৈঠক ছিল। একপক্ষ শালিশ বৈঠকে উপস্থিত না হলে পরে উভয় পক্ষের লোকজন ঢাল-সরকি,দা-বটি নিয়ে সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়ে।

সংঘর্ষে আহত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি সবুজ শেখ বলেন, উভয় পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। আজ একটি বিষয় নিয়ে শালিশ বৈঠকে সায়মন পক্ষের লোকজন হাজির না হলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ লেগে যায়।

এ ব্যপারে কুদ্দুস মুন্সি বলেন, সায়মন শেখের লোকজন শালিশ বৈঠকে উপস্থিত না হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের লোকজন ওপর হামলা চালায়। এ সময় আমার পক্ষের লোকজনের প্রায় ২০ টি বাড়ি তিনটি দোকান ভাংচুর-লুটপাট করা হয়। এতে আমার পক্ষের কমপক্ষে ২৫ জনের মতো আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সায়মন শেখের সঙ্গে মোবাইল একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা তানসিভ জুবায়ের নাদিম বলেন, সংঘর্ষে গুরুতর আহত চারজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আরো রোগী আসতেছে।

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ফরিদপুরে জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস পালিত

মাহবুব হোসেন পিয়াল, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:০৬ পিএম
ফরিদপুরে জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস পালিত

জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস উপলক্ষে ফরিদপুরে বর্ণাঢ্য র‍্যালি, আলোচনা সভা ও রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের আয়োজনে রবিবার (০২ নভেম্বর ) সকাল ১০টায় এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

প্রথমে বর্ণাঢ্য র‍্যালিটি সিভিল সার্জন অফিস প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের সভাকক্ষে গিয়ে শেষ হয়।

পরে সেখানে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সোহরাব হোসেন।

এসময় সন্ধ্যানী ফরিদপুর ডোনার ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান শামিম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক অধ্যাপক এম.এ সামাদ, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. আল আমিন সরোয়ার সহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

সভায় বক্তারা বলেন, রক্তদান একটি মানবিক ও মহৎ কাজ, যা অন্যের জীবন বাঁচাতে সহায়তা করে। সবাইকে সঠিক ও সরকারি নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় ও দক্ষ টেকনিশিয়ানের মাধ্যমে ব্লাড স্ক্যানিং করানোর আহ্বান জানান তারা।

এছাড়া মরণোত্তর চক্ষুদানের গুরুত্ব সম্পর্কেও আলোচনা হয়। বক্তারা বলেন, চক্ষুদান একটি পবিত্র ও মহৎ কাজ। যে মানুষটি জীবদ্দশায় পৃথিবীর আলো দেখতে পারেননি, তাকে মৃত্যুর পর নিজের চোখ দান করে আলো দেখার সুযোগ করে দেওয়া সবচেয়ে বড় মানবিক অবদান।