খুঁজুন
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ২৯ বৈশাখ, ১৪৩২

ফরিদপুরে সূর্যের হাসি নিয়ে ফুটেছে সূর্যমুখী, দেখতে মানুষের ভিড়

পান্না বালা, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৮:৫৭ পিএম
ফরিদপুরে সূর্যের হাসি নিয়ে ফুটেছে সূর্যমুখী, দেখতে মানুষের ভিড়

ফরিদপুর সদরের ডোমরাকান্দিতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রে সূর্যমুখীর দুটি বাগানে ফুটেছে হাজারো সূর্যমুখী। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, দুটি হলুদ গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। সূর্যের হাসি নিয়ে ফুটে থাকা এসব সূর্যমুখী দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

মূলত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে চার মাসের জন্য করা হয়েছে এই দুটি বাগান। বাগান দুটির আকার প্রায় পাঁচ একর। গত ১৮ থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত বপন করা হয়েছে বারি সূর্যমুখী-৩ জাতের সূর্যমুখী ফুলের বীজ। বর্তমানে বীজ থেকে হওয়া প্রায় প্রতিটি গাছে ফুল ফুটেছে। পরিপক্ব হওয়ার পর আগামী ৮ মার্চ থেকে বীজ সংগ্রহ করা শুরু হবে।

ফরিদপুর শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে বাগান দুটির অবস্থান। ফুলগুলো বাতাসে দোল খেয়ে আমন্ত্রণ জানায় দর্শনার্থীদের। সূর্যমুখীর সৌন্দর্য দেখতে ভিড় বাড়ে বিকেল ও ছুটির দিনে।

সম্প্রতি সূর্যমুখীর বাগানে ঘুরে দেখা যায়, শত শত মানুষের ভিড়ে বাগানের রক্ষণাবেক্ষণ করতে হিমশিম অবস্থা কর্তৃপক্ষের। দর্শনার্থীরা যেন বাগানের ভেতর গিয়ে বা পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে গিয়ে বাগান নষ্ট না করেন, ফুলে হাত না দেন; এ জন্য সার্বক্ষণিক হ্যান্ডমাইক নিয়ে সচেতন করে চলেছেন এক মালি।

বিএডিসি কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৭ বছর ধরে এখানে সূর্যমুখীর চাষাবাদ হচ্ছে। শুরুতে চাষের পরিধি ছিল খুবই সামান্য। বর্তমানে বিশাল এলাকাজুড়ে সূর্যমুখীর বাগান করা হচ্ছে।

বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে এসেছেন সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকিয়া জুঁই। তিনি বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে আমরা বন্ধুরা মিলে শহরের কোথাও না কোথাও ঘুরতে বের হই। আজ এ বাগানে এসেছি। হাজার হাজার ফুল দেখে মনে এক অনাবিল শান্তি অনুভব করছি।’

সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের বাংলা বিভাগের সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শুভ বিশ্বাস বলেন, ‘প্রতিবছরই সূর্যমুখীর বাগান দেখতে এখানে আসি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এখানে এলে সবুজের সংস্পর্শ পাওয়া যায়, সূর্যমুখী ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য পাওয়া যায়।’

বিএডিসির কর্মকর্তারা বলেন, ১ একর জমিতে ৭০০ থেকে ৮০০ কেজি বীজ হয়। ১ একর জমি চাষ করতে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়।

বিএডিসির বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রের উপসহকারী পরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর উৎপাদিত বীজ থেকে তেল উৎপাদন করে বিক্রি করা হবে না। এবার এই বীজ কৃষকদের মধ্যে প্রণোদনা হিসেবে বিতরণ করা হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, এ বছর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মোট ২৬ দশমিক ৮৫ একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ করা হয়েছে। গত বছর আবাদ করা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৪৪ একর জমিতে। দিনে দিনে ফরিদপুরে সূর্যমুখীর চাষাবাদ বাড়ছে।

`সোশ্যাল মিডিয়ার সদ্ব্যবহার নিরাপদ সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে`

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ১১ মে, ২০২৫, ৬:৪৭ পিএম
`সোশ্যাল মিডিয়ার সদ্ব্যবহার নিরাপদ সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে`

নারীর মর্যাদা ও উন্নয়নে কাজ করা সংগঠন নন্দিতা সুরক্ষা’র আয়োজনে এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর সমতায় তারুণ্য প্রকল্প, কিংডম অফ দ্যা নেদারল্যান্ডস, জাগো ফাউন্ডেশন এর সহায়তায়  ফরিদপুরে অনুষ্ঠিত হলো একটি ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন—‘ইনক্লুসিভ ইন্টারেক্টিভ ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ডিস্কাশন।’

আলোচনা শেষে মুক্ত পর্বে অংশগ্রহণকারী তরুণরা বলেন, ডিজিটাল সেইফটি এখন একটি অতি প্রয়োজনীয় বিষয় এবং এই বিষয়ে জনসচেতনতা গড়ে তোলার জন্য তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য। তারা আরও বলেন, সচেতনতামূলক কার্যক্রমে সক্রিয় নাগরিক ভূমিকা এবং সোশ্যাল মিডিয়ার সদ্ব্যবহার একটি সমতার ও নিরাপদ সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে।

শনিবার (১০ মে) দিনব্যাপী  ফরিদপুর শহরের টেরাকোটা রেস্টুরেন্টের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় অংশ নেন তরুণ অ্যাক্টিভিস্ট, কমিউনিটি  লিডার এবং বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

আয়োজনের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন নন্দিতা সুরক্ষা–এর প্রতিষ্ঠাতা তাহিয়াতুল জান্নাত রেমি। এরপর পরপর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের তরুণ সদস্যরা। জেন্ডার সমতা বিষয়ে বক্তব্য দেন সোমাইয়া জানাহ উর্মী, ডিজিটাল সেইফটি নিয়ে আলোচনা করেন মোহাম্মদ তুষার আব্দুল্লাহ, স্ট্যান্ডআপ কমেডি পরিবেশন করেন মেহেজাবিন হোসেন দিবা। মিডিয়া স্বাক্ষরের প্রভাব নিয়ে কথা বলেন  তরুণ অ্যাক্টিভিস্ট শাহরীন ইসলাম মাহিন এবং লবিং ও অ্যাডভোকেসি নিয়ে আলোচনা করেন তিহান আহাম্মেদ।

ডিস্কাশনের সঞ্চালিকা এবং সংগঠন এর সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌসী মিতু বলেন, আমাদের আয়োজনটি অংশগ্রহণকারীদের দৃষ্টিভঙ্গিকে সমৃদ্ধ করেছে এবং আগামীর জন্য ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তনের পথ উন্মুক্ত করেছে বলে মনে করছি।

আওয়ামী লীগের ‌‌কর্মকাণ্ড ‌নিষিদ্ধ করায় ‌‌ফরিদপুরে আনন্দ মিছিল

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ১১ মে, ২০২৫, ৬:৩৮ পিএম
আওয়ামী লীগের ‌‌কর্মকাণ্ড ‌নিষিদ্ধ করায় ‌‌ফরিদপুরে আনন্দ মিছিল
অন্তবর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ‌সকল রাজনৈতিক ‌কর্মকাণ্ড ‌নিষিদ্ধ করায় আনন্দ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত পথসভা করেছে ফরিদপুর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‌নেতাকর্মীরা। মিছিলে ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মীরাও অংশ নেয়।
 ‌‌
শনিবার (১০ মে) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে‌ শহরের জনতা ব্যাংকের মোড় থেকে ‌একটি আনন্দ মিছিল শুরু হয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাব সামনে গিয়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করা হয়। এ সময় মিষ্টি বিতরণ করেন সমাবেশে আসা নেতাকর্মীরা।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ফরিদপুর শহর শিবিরের ‌সভাপতি মো. আকমল হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‌মুখ্য সমন্বয়ক আনিসুর রহমান সজল, ‌ফরিদপুর জেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি জিহাদুল ইসলাম রত্ন, হাসিবুল হাসান ও মোহাম্মদ আহমাদুল্লাহ প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়া বাংলাদেশের জন্য বড় বিজয়। আগামীতে কোন‌‌ ফ্যাসিবাদ ‌শক্তি যাতে ‌দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ না করতে পারে সেজন্য সকলকে সচেতন থাকতে হবে।
আওয়ামী লীগের ‌বিগত দিনের বিভিন্ন কার্যক্রমকে‌‌ সমালোচনা করে তারা বলেন, ‌দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ করার পায়তারা করলে তাদেরকে শক্ত হাতে দমন করা হবে। বক্তারা আরো বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম‌ নিষিদ্ধ হলেও তারা আগামীতে ‌ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে ‌এজন্য সবাইকে ‌ লক্ষ্য রাখতে হবে। আগামী ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে ‌জুলাই ঘোষনা পত্র‌ প্রকাশ করার কথা জানান তারা।
অপরদিকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের খবরে জেলার বোয়ালমারী পৌরসদরে আনন্দ মিছিল করেছে ছাত্রশিবির।

ফরিদপুরে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল কিশোরের

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ১১ মে, ২০২৫, ৬:৩১ পিএম
ফরিদপুরে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল কিশোরের
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে ইয়াসিন খালাসী (১৬) নামে এক ওয়ার্কশপ শ্রমিক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় রায়হান ও সজীব নামে দুই যুবককে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়।
রবিবার (১১ মে) দুপুরে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শনিবার (১০ মে) দিনগত রাত ১০টার দিকে উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের থানমাত্তা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইয়াসিন খালাসী ওই গ্রামের জাহাঙ্গীর খালাসীর ছেলে।
এদিকে ইয়াসিনের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে প্রতিপক্ষ বাদশা শরীফের বাড়িসহ অন্তত ১০-১২টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটের ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার থানমাত্তা গ্রামে বহু পুরাতন একটি বটগাছ রয়েছে। সেই বটগাছের নিচে স্থানীয় নুরা নামে একজন আসর বসিয়ে রাতভর গানবাজনা করতেন। গত দুই বছর হলো তিনি মারা যান। এরপর থেকে তার স্ত্রী হালিমা সেখানে বসবাস করেন। গত কয়েক মাস আগে বটগাছের একটি ডাল দোকানের ওপর পড়লে ডালটি কেটে ফেলেন শরীফ গ্রুপের দোকান মালিক। সেই ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে হালিমার পক্ষ নেন জাহাঙ্গীর খালাসী। অন্য গ্রুপের পক্ষ নেন বাদশা শরীফ ও আলমগীর শরীফ।
এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর জের ধরে শনিবার রাত ১০টার দিকে থানমাত্তা বটতলা এলাকা থেকে ইয়াসিন খালাসীকে পার্শ্ববর্তী কালামৃধা ইউনিয়নের ফুলমাল্লিক গ্রামের আউয়াল বেপারীর ছেলে ইসমাইল বেপারীকে দিয়ে ইয়াসিনকে ডেকে নেয়। পরে পার্শ্ববর্তী নির্জন এলাকায় ব্রিজের নিচে ধানক্ষেতে নিয়ে ইয়াসিনকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়।
নিহত ইয়াসিনের বাবা জাহাঙ্গীর খালাসি জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ডেকে নিয়ে নির্জন স্থানে ধানক্ষেতে আমার ছেলেকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। কিন্তু খুনিদের ভেতরে দুইজন আহত হলে তাদের লোকজনের খবরে আমার ছেলেকে দেখতে পাই। তা না হলে ছেলের মরদেহও পাওয়া যেত না। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আলমগীর সরদার বলেন, খুনে অভিযুক্তদের পক্ষে দুজন ঠেকাতে গিয়ে তারাও আহত হয়েছেন। তারা হচ্ছেন ওই গ্রামের ফকু শেখের ছেলে রায়হান শেখ (১৮) ও তার আত্মীয় সজীব মাতব্বর। তার বাড়ি কাশেমপুর এলাকায়।
আজিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাজাহান হাওলাদার বলেন, যতটুকু জানতে পেরেছি নিহত ইয়াসিনের সঙ্গে কালামৃধা গ্রামের কয়েকজন কিশোরের পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, মৌখিকভাবে ঘটনা জানতে পেরেছি। পূর্ব শত্রুতার জেরে ডেকে নিয়ে খুন করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল থেকে নিহতের মরদেহ এসে পৌঁছেনি। অফিসিয়াল কোনো কাগজপত্রও পাইনি। নিহতের মরদেহ আসার পর বিস্তারিত তথ্য জানানো সম্ভব হবে।