খুঁজুন
শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল : সালথায় মাহিন্দ্রা চলাচল বন্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নুরুল ইসলাম, সালথা-নগরকান্দা, ফরিদপুর
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৩:১৫ পিএম
বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল : সালথায় মাহিন্দ্রা চলাচল বন্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
মাহিন্দ্রা (থ্রি হুইলার) গাড়ি চলাচল বন্ধের দাবিতে সালথা-ফরিদপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় পরাপর দুই জন শিক্ষক নিহত ও দুই জন পঙ্গু হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সালথা-ফরিদপুর সড়কের মেম্বার গট্টি এলাকায় এই বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।
এ সময় সড়কের দুই পাশে গাছের গুড়ি ও বাঁশ ফেলে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে তারা। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী, সালথা থানার ওসি মো. আতাউর রহমান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক খন্দকার খায়রুল বাসার আজাদ ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষার্থীরা ইউএনওর কাছে বেশ কয়েকটি দাবি-দাওয়া তুলে ধরে সড়ক অবরোধ তুলে নেয়।
বিক্ষোভ চলাকালে বক্তব্য রাখে শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান, শাহিন খা, সাকিবুল ইসলাম, সজিব শেখ, তুহিন হাসান, মাইমুনা সুলতানা, মারজিয়া ও রাদিয়া আক্তার।
তারা বলেন, শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে মাহিন্দ্র গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে রাঙ্গারদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আসমা বেগম নিহত হন। এর আগে ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর সড়ক দুর্ঘটনায় গোয়ালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. এসকেন্দার আলী মারা যান। এ ছাড়া সম্প্রতি মাহিন্দ্রা দুর্ঘটনায় খারদিয়া মিয়া মিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাজিয়া আক্তার গুরুতর আহত হন। পরে তার পা কেটে ফেলা হয়। একইভাবে ভাওয়াল সরকারি প্রথামিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্তারুজ্জামান পঙ্গু বরণ করেছেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সালথা-ফরিদপুর সড়ক মাহিন্দ্রা গাড়ি দখল করে নিয়েছেন। এই গাড়ি বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে। অদক্ষ ও নেশাগ্রস্ত ড্রাইভাররা মাহিন্দ্রা গাড়ি চালাচ্ছেন। এমনকি শিশুদের হাতে মাহিন্দ্র গাড়ি তুলে দিচ্ছে পরিবার। যে কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এতে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। অনেকে পঙ্গু হয়ে ঘরে বসে আছে। এমন অবস্থায় আমরা এই সড়কে আর  মাহিন্দ্র গাড়ি চালাতে দেব না।
সালথা-ফরিদপুর সড়কে বাস চালু করার জন্য তিন দিনের আল্টিমিটাম দিয়ে বলেন, সালথা-ফরিদপুর সড়কে মাহিন্দ্রা গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়ে নতুন করে বাস চালু করার জন্য প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আগামী তিন দিনের মধ্যে যদি মাহিন্দ্রা বন্ধ করে দিয়ে বাস চালু না করা হয়, তাহলে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, শিক্ষার্থীরা সালথা-ফরিদপুর সড়কে মাহিন্দ্রা গাড়ি চলাচল বন্ধ করে বাস চালুর দাবি জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিল। খবর পেয়ে ওসিসহ আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একমত পোষণ করেছি। আমরা শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো এবং এর একটা সমাধান করে দেব।
তিনি বলেন, পাশাপাশি বাস চালু করার বিষয় মালিক সমিতির সাথে যোগাযোগ করা হবে। আশা করি, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পূরণ হবে।

ফরিদপুরে মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ২৭ জন

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫, ৫:৪৪ পিএম
ফরিদপুরে মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ২৭ জন
কোনো তদবির কিংবা ঘুষ ছাড়াই মাত্র ১২০ টাকার আবেদন ফিতে পুলিশে কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়েছেন ফরিদপুর জেলার ২৭ জন চাকরিপ্রার্থী।
শতভাগ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগের এ প্রক্রিয়া পরিচালনা করেছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল জলিল।
সম্প্রতি পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় কোনো প্রার্থীকে অর্থ, পৃষ্ঠপোষকতা বা সুপারিশের আশ্রয় নিতে হয়নি। নিয়োগপ্রাপ্তদের অধিকাংশই দিনমজুর বা নিম্ন আয়ের পরিবারের সন্তান।
বুধবার (১৪ মে) রাতে ফরিদপুর পুলিশ লাইন্সে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন এসপি মো. আব্দুল জলিল।
এ তালিকায় ২৭ জনকে নিয়োগ ও আরও পাঁচজনকে অপেক্ষমাণ (ওয়েটিং) তালিকায় রাখা হয়। ফলাফল ঘোষণার পর উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে আনন্দ-উল্লাস ও আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে পুলিশ কনস্টেবল পদে যাঁচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু হয়। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে চাকরি প্রার্থীরা আবেদন করেন। এর মধ্যে ৪ মে অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ৩৫৩ জন, যাদের মধ্যে ৯১ জন উত্তীর্ণ হন। পরে ১৪ মে দিনব্যাপী মৌখিক (ভাইভা) পরীক্ষা নেওয়া হয় এবং সেদিন রাতেই চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিয়োগপ্রাপ্তদের একজন  বলেন, আমার কোনো সুপারিশ ছিল না। ভেবেছিলাম চাকরিটা হবে না। কিন্তু চূড়ান্ত তালিকায় নিজের নাম সবার ওপরে দেখে বিশ্বাস করতে পারিনি। এ স্বচ্ছ ও ন্যায্য প্রক্রিয়ার জন্য বর্তমান পুলিশ প্রশাসন ও নিয়োগ বোর্ডকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
ফরিদপুর জেলা পুলিশ জানায়, নিয়োগ প্রক্রিয়াটি শতভাগ স্বচ্ছতা ও নিয়ম অনুযায়ী সম্পন্ন হয়েছে। তিনটি ধাপ—শারীরিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় যারা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন, তারাই নিয়োগ পেয়েছেন।

সালথায় ৭শ’ পিস ইয়াবাসহ মাদক কারবারি আটক

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫, ৩:৫৯ পিএম
সালথায় ৭শ’ পিস ইয়াবাসহ মাদক কারবারি আটক
ফরিদপুরের সালথায় ৭শ’ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ রমজান মোল্যা (৩৫) নামে এক মাদক কারবারীকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান।
আটককৃত রমজান মোল্যা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের নারানদিয়া গ্রামের আফজাল মোল্যার ছেলে।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে নারানদিয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে রমজান মোল্যাকে আটক করা হয়। এসময় তার ঘরের মধ্যে থেকে ৭’শ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। আটককৃতর বিরুদ্ধে মাদকদ্র্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ফরিদপুরে ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদ: শহরের সৌন্দর্য ও পরিবেশ রক্ষায় শিক্ষার্থীরা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫, ৩:৪৭ পিএম
ফরিদপুরে ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদ: শহরের সৌন্দর্য ও পরিবেশ রক্ষায় শিক্ষার্থীরা
ফরিদপুর শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং সড়কের ডিভাইডারে লাগানো গাছগুলো সংরক্ষণের লক্ষ্যে ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদে নেমেছে ফরিদপুর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল সাড়ে দশটা থেকে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এই সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন তারা।
শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড়, মেডিকেল সড়ক, নদী গবেষণা সড়ক, রাজবাড়ী রাস্তার মোড়সহ বিভিন্ন সড়কের ডিভাইডারে রোপণ করা গাছের উপর ঝুলে থাকা ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ করা হয়। এই কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেন ফরিদপুর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কাজী রিয়াজ, মুখপাত্র কাজী জেবা তাহসিন এবং সহ-মুখপাত্র উম্মে হাবিবাসহ অন্যান্য সদস্যরা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যানার-ফেস্টুনের কারণে ফরিদপুর শহরের সৌন্দর্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে সড়কের ডিভাইডারে এসব ব্যানারের কারণে গাছগুলো মারা যাচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এছাড়াও, এসব ব্যানার সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। তারা বলেন, “বিশেষ করে রাজনৈতিক ও প্রচারণামূলক ব্যানার বেশি দেখা যায়। আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন গাছের ওপর ব্যানার না ঝুঁলিয়ে পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসেন। আমাদের লক্ষ্য ব্যানার-ফেস্টুন মুক্ত একটি সুন্দর ফরিদপুর।”
এই উদ্যোগে স্থানীয় বাসিন্দারা খুশি প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, এই ধরনের কার্যক্রম ফরিদপুরকে একটি স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। স্থানীয় বাসিন্দারা আশা করছেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ফরিদপুর হবে একটি পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব শহর।