বিএনপির শামা ওবায়েদের গাড়ী বহরে হামলায় সালথায় আ’লীগ নেতা গ্রেপ্তার

বৃষ্টি হলেই রাস্তা জুড়ে হাঁটুপানি, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী ও পথচারীরা। এ চিত্র ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের বাঁকাইল পাগলের আস্তানা থেকে বিশ্বাস পাড়া জামে মসজিদ প্রর্যন্ত প্রায় ৭০০মিটার সড়কে।
এ অবস্থার জন্য সরকারি খালের ওপর অপরিকল্পিতভাবে স্থপনা নির্মাণ, অপর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন স্থানীয়রা। তারা বলেছেন সামান্য বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় এ সড়ক। চলাচলেল অনুপযোগী হয়ে পড়ে সড়কটি। হাঁটুপানি সড়কে অনেক সময় অটোভ্যান ও মোটরসাইকেল উল্টে পড়ে যায়। অনেকেই আহত হয়েছেন।
আলফাডাঙ্গা সদরে প্রবেশ মুখে বাঁকাইল এলাকার সড়কটি এখন হাঁটুপানি রয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পানি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে কয়েক শতাধিক অটোভ্যান, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। বিশেষ করে পৌরসভার এই কার্পেটিং সড়ক দিয়ে অবৈধ মাটির ট্রলি চলাচল করে রাস্তার বেহাল দশা হয়েছে।
সরেজমিন রাস্তায় গিয়ে দেখা গেছে, গত দুই দিনের বৃষ্টিতে রাস্তার মাঝে হাঁটুপানি জমে গেছে। কোনো মানুষ পায়ে হেঁটে চলতে পারছে না। প্রায় আধা কিলোমিটার ঘুরে অন্য সড়ক দিয়ে সদর বাজারে প্রবেশ করতে হচ্ছে পথচারীদের। পানি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সড়কের পাশ দিয়ে কোনো একসময় সরকারি খাল ছিল, অনেকেই সেই খালের জায়গা দখল করে অপরিকল্পিতভাবে বড় বড় স্থাপনা তৈরি করেছেন। যার জন্য পানি বের হতে পারছেনা।
স্থানীয় বাসিন্দা উপজেলার চরডাঙ্গা মর্নিংস্টার স্কুলের শিক্ষিকা চায়না রাণী সাহা বলেন, এ সড়ক সংলগ্ন আমাদের বাসা। সড়কে পানি জমে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। এখন বাসা থেকে বের হতে পারছি না। অচিরেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ সড়ক দিয়ে রোজ শত শত যানবাহন যাতায়াত করে। আমরা খুব সমস্যার মধ্যে রয়েছি। এর একটি স্থায়ী সমাধান করতে হবে।
স্থানীয় ভূক্তভোগী উপজেলার কামারগ্রাম কাঞ্চন একাডেমীর সহকারী শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বৃষ্টি হলেও পানি জমে যায়, পানি বের হওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। আমার মোটরসাইকেল অন্যের বাড়িতে রাখতে হচ্ছে। এ সড়কটি পৌরসভার মধ্যে একটি ব্যস্ততম সড়ক। এলাকাবাসীর দাবি এর একটি স্থায়ী সমাধান।
সড়ক সংলগ্ন বাসিন্দা মরণ সাহা বলেন, এই সড়কটি যখন নতুন করে কার্পেটিং করে অনেক উচু ছিল ও ভালো ছিল। কিন্তু এ সড়ক দিয়ে প্রায় দিনই মাটির ট্রাক প্রবেশ করে রাস্তার বেহাল দশা করে ছেড়েছে। রাস্তাটি সংষ্কার করে মাটির ট্রাকসহ ভারি যান চলাচল বন্ধ করতে হবে।
আলফাডাঙ্গা পৌরসভার প্রকৌশলী জাকারিয়া আলম জানান, আপনার মাধ্যমে খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিষয়টি অবগত করেছি। পানি নিষ্কাশন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আলফাডাঙ্গা পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল ইকবাল বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যামে জানতে পারলাম। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এর একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। বর্ষার মৌসুম শেষ হলে সড়কের কাজ ধরা হবে। তার আগে পানি নিষ্কাশন করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। খাল দখল ও অবৈধ স্থাপনার বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন রাসেল ইকবাল।
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় আলামিন মোল্লা (২৬) নামে এক মাদককারবারিকে ৪ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। পাশাপাশি ওই যুবককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (০৩ আগস্ট) দুপুরের দিকে আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামে ঘটনাস্থলেই আদালত বসিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম রায়হানুর রহমান এ দন্ডাদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামের আহাদ মোল্যার ছেলে আলামিন মোল্যা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক কারবারী করছিল এবং তিনি নিজেও মাদক সেবন করতেন। রবিবার মাদক সেবন করে এলাকাবাসীর সাথে অস্বাভাবিক আচরণ করে উশৃঙ্খলতা করছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম রায়হানুর রহমান। এ সময় তাকে মাদক সেবন অবস্থায় আটক করা হয়। পরে ঘটনাস্থলে আদালত বসিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২০১৮ এর ৩৬ (৫) ধারায় ৪ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাশাপাশি তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা তরে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা উপজেলা সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম রায়হানুর রহমান বলেন, আলামিন মোল্লা মাদক সেবন করে এলাকাবাসীর সঙ্গে অশান্তি সৃষ্টি করে দা উচিয়ে লোকজনকে হুমকি দিচ্ছিল। খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে আটকের পর ৪ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়েছে।
ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় কুমার নদ থেকে অবৈধ ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। এতে নদীর দুই পাড়ে বসবাসকারী এলাকাবাসী চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। নদীর তলদেশ গভীর হয়ে যাওয়ায় ভাঙনের আশঙ্কা বাড়ছে, পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছে অদূরে নির্মিত নতুন সেতুসহ আশপাশের স্থাপনা।
শনিবার (০২ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া নতুন ব্রীজের পশ্চিম পাশে গিয়ে দেখা যায়, দক্ষিণ পাড়ে প্রভাবশালী কামাল মেম্বারের ছত্রছায়ায় মিজানুর রহমান নামের এক ব্যক্তি অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দিনে-রাতে সমান তালে ড্রেজার চালিয়ে কুমার নদকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একাধিক স্থানে গভীরভাবে বালু উত্তোলন করার ফলে নদীর পাড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। নতুন নির্মিত সেতুর ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিসুর রহমান বালী বলেন, আমরা বিভিন্ন স্থানে অবৈধ ড্রেজারের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। যেখানেই তথ্য মিলছে, সেখানে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। দ্রুত ওই এলাকায়ও অভিযান চালানো হবে।
স্থানীয়রা অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে নদী ও পরিবেশ রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাঁরা বলেন, যদি এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে নদী ভাঙন, পরিবেশ দূষণ এবং অবকাঠামোগত বিপর্যয় ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়বে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে গট্টি ইউনিয়নের বড়দিয়া বাজারে এক সমাবেশে বক্তৃতাকালে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে কুমার নদে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু তারপরও বন্ধ হয়নি এ চক্রের দৌরাত্ম্য।
আপনার মতামত লিখুন
Array