খুঁজুন
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২ আশ্বিন, ১৪৩২

সালথায় গ্রেপ্তার এড়াতে প্রেসক্লাব গঠন করে সভাপতি হলেন শ্রমিকলীগ নেতা!

হাসানউজ্জামান, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৬:৫০ পিএম
সালথায় গ্রেপ্তার এড়াতে প্রেসক্লাব গঠন করে সভাপতি হলেন শ্রমিকলীগ নেতা!
গ্রেপ্তার এড়াতে নতুন প্রেসক্লাব গঠন করে নিজে সভাপতি হয়েছেন ফরিদপুরের সালথা উপজেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ আশরাফ টুটু চৌধুরী।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সালথা উপজেলা প্রেসক্লাব গঠন করা হয়। ওই প্রেসক্লাবের সভাপতি হয়েছেন টুটু চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. আরিফুল ইসলাম।
স্থানীয় সংবাদকর্মীরা জানান, একটি হোটেলে তিন-চার জন বসে সালথা উপজেলা নামক প্রেসক্লাবের ১৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির তালিকা ঘোষণা করা হয়। এই কমিটিতে মাত্র একজন সাংবাদিক থাকলেও বাকিরা কেউ সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত নয়। সাংবাদিক হিসেবে তাদের কেউ তেমন চিনেনও না।
এর মধ্যে সদস্য পদ পাওয়া শওকত হোসেন মুকুল ফরিদপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া রুবেল রানা ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক পদ আরিফুল ইসলাম উপজেলা ছাত্রলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক।
স্থানীয়রা সাংবাদিকরা অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলীয় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে সালথা প্রেসক্লাবের সদস্য হন টুটু চৌধুরী। এরপর তিনি একটি পত্রিকার আইডি কার্ড ভাগিয়ে আনেন। টুটু চৌধুরী পঞ্চম শ্রেণি পাস। নিউজ লিখতে না পারলেও নিজেকে বড় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে চাঁদাবাজি শুরু করেন। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে গিয়ে কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে নানা অজুহাতে চাঁদা তুলেন। অবৈধ মাটি-বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ শুরু করেন। এমন কোনো অপরাধ নেই তিনি করতেন না। তার এহন কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেন এলাকাবাসী। তবে স্থানীয় আ’লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সহযোগি হওয়ায় ভয়ে কেউ টুটু চৌধুরীর বিরুদ্ধে মুখ খুলেননি। লাবু চৌধুরীর ছত্রছায়ায় থেকে বছরের পর বছর মাদক ব্যবসা, টেন্ডার বাণিজ্য ও থানায় দালালি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর টুটু চৌধুরীকে সালথা প্রেসক্লাব থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন। সম্প্রতি সাবেক এমপি শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর সম্পদের পাহাড় নিয়ে নিউজ করায় কালের কণ্ঠের সালথা-নগরকান্দা প্রতিনিধি নুরুল ইসলামকে হত্যার হুমকি দেন টুটু চৌধুরী।
স্থানীয়রা জানান, সালথা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ইমদাদ আলী খুসরুর সৎ ভাই টুটু চৌধুরী। তাই আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর টুটু চৌধুরীও ভল্ট পাল্টিয়ে ফেলেন। টুটুর এক ভাই বিএনপি নেতা ও আরেক ভাই জামায়াত নেতা। যে কারণে তিনি এখন নিজেকে বিএনপি নেতার ভাই পরিচয় দিয়ে থানায় দালালি ও ফের চাঁদাবাজি শুরু করেছেন।
টুটু চৌধুরীর এমন কর্মকাণ্ড পুলিশ-প্রশাসনের নজরে এলে তিনি নতুন একটি প্রেসক্লাব গঠন করার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী টাকার বিনিময় কতিপয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ভুঁইফোর অনলাইন ও কিছু অখ্যাত পত্রিকার কার্ড বানিয়ে দেন। এর মধ্যে কম্পিউটারের দোকান থেকে ভূয়া আইডি কার্ড বানিয়েও সদস্য করা হয়েছে। চলমান অভিযানে গ্রেপ্তার এড়াতে, পুলিশ-প্রশাসনের থেকে সুবিধা পেতে ও ফের চাঁদাবাজি করার পরিকল্পনা থেকেই টুটু চৌধুরী এই প্রেসক্লাব গঠন করেছেন বলে মনে করেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।
এ ব্যাপারে সালথা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. সেলিম মোল্যা বলেন, টুটু চৌধুরীকে আমি সংবাদ লেখতে দেখিনি। সে একজন উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি। তার খারাপ আচরণের কারণে সালথা প্রেসক্লাব থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন জানতে পারলাম, তিনি নামধারী একটি সাংবাদিক সংগঠন করে কিছু লোকজন নিয়ে সালথা প্রেসক্লাবের ভবন দখলের হুমকি দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা আইনি সহযোগিতা নিব। এ ছাড়া সালথা উপজেলা প্রেসক্লাব নামক সংগঠনে আমার মালিকানাধীন পত্রিকার আইডি কার্ডধারী দুই জন সদস্য দেখা যায়। যারা আমার পত্রিকার প্রতিনিধি না, তাদের আমি কোনো আইডি কার্ড দেই নাই, এরা ভূয়া।
এসব অভিযোগের বিষয়ে সালথা উপজেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ আশরাফ টুটু চৌধুরীর মোবাইলে একাধিকবার কল করে যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সালথা সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে এই প্রথম জানতে পারলাম। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। এলাকায় কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রশাসনের আশ্বাসে ভাঙ্গায় আগামী শনিবার পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২:৩২ পিএম
প্রশাসনের আশ্বাসে ভাঙ্গায় আগামী শনিবার পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত

ফরিদপুরে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ও পুরোনো সীমানা বহালের দাবিতে মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করেছেন আন্দোলনকারীরা। এ কর্মসূচি আগামী শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এ ঘোষণা দেন তারা।

জানা যায়, জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে ও দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে মানুষের ভোগান্তি যাতে না হয় এজন্য আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পর থেকে রাস্তা ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেন তারা। সে অনুযায়ী আগামী বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত কোন অবরোধ থাকবে না বলে জানায় আন্দোলনকারী সমন্বয়ক কর্তৃপক্ষ।

তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি কাউকে হয়রানি করার চেষ্টা করে, সেক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা। এ সময়, আগামী রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) তাদের ৫ দফা দাবি মেনে নেয়া না হলে, পুনরায় লাগাতার আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।

উল্লেখ্য, এর আগে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের দাবিতে আন্দোলনকারী বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙ্গা থানা, হাইওয়ে থানা, ইউএনও অফিস, নির্বাচন অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করে।

৪ সেপ্টেম্বর গেজেটের মাধ্যমে ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে কেটে ফরিদপুর-২ আসনের নগরকান্দায় যুক্ত করা হয়েছে। ওই ঘটনার পর থেকেই ভাঙ্গায় মহাসড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন স্থানীয় জনতা।

 

ফরিদপুর-৪ আসনের সীমানা পুনর্বহালে ইসিকে ডিসির চিঠি

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২:২৮ পিএম
ফরিদপুর-৪ আসনের সীমানা পুনর্বহালে ইসিকে ডিসির চিঠি

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় মহাসড়ক অবরোধ-রেলপথ বন্ধের পর সহিংস ঘটনাও ঘটে। এরপর ফরিদপুর-৪ আসনের সীমানা পুনর্বহালে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) চিঠি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্যা।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশন বরাবর এ চিঠি দেন ডিসি।

চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ফরিদপুর-০২ এবং ফরিদপুর-০৪ এর সংসদীয় সীমানা পুনঃনির্ধারণ করা হয়।

ওই তালিকায় ফরিদপুর- ৪ এর অন্তর্গত ২টি ইউনিয়ন, আলগী ও হামিরদী জাতীয় সংসদীয় আসন ফরিদপুর-২ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তালিকা প্রকাশিত হওয়ার ফলে গত ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ থেকে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নসহ ভাঙ্গা উপজেলার সাধারণ জনগণ ওই আসনবিন্যাস বাতিলের দাবিতে মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে থাকে।
ফলশ্রুতিতে ক্রমান্বয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, সর্বশেষ আজ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে বিক্ষোভকারীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়, ভাঙ্গা থানা, হাইওয়ে পুলিশের কার্যালয় ও সরকারি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

এছাড়া বিক্ষোভকারীরা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে রাখে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যাহত হবার কারণে সাধারণ জনগণকে তীব্র ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। বিক্ষোভকারীরা তাদের দাবির সমর্থনে কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে।

 

চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, ফরিদপুর-০৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) সংসদীয় আসনের ভাঙ্গা থেকে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-০২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করে সংসদীয় আসন পুনঃনির্ধারণের বিষয় দুইটি সংসদীয় আসনের জনগণ মেনে নিতে পারেনি। ওই দুইটি আসনের সর্বস্তরের জনগণ এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে মর্মে জানা যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা না হলে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বড় ধরনের অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।

বর্ণিতাবস্থায়, জাতীয় সংসদীয় আসন ২১২ ফরিদপুর- ২ (নগরকান্দা ও সালথা) এর অন্তর্গত ভাঙ্গা উপজেলার ২টি ইউনিয়ন আলগী ও হামিরদীকে জাতীয় সংসদীয় আসন ২১৪ ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) এর মধ্যে পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনাপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সবিনয় অনুরোধ করা হলো।

এর আগে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের দাবিতে আন্দোলনকারী বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙ্গা থানা, হাইওয়ে থানা, ইউএনও অফিস, নির্বাচন অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

৪ সেপ্টেম্বর গেজেটের মাধ্যমে ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে কেটে ফরিদপুর-২ আসনের নগরকান্দায় যুক্ত করা হয়েছে। ওই ঘটনার পর থেকেই ভাঙ্গায় মহাসড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন স্থানীয় জনতা।

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় তান্ডব : পুলিশের ৮ গাড়ি ও ১৯ মোটরসাইকেল ভাঙচুর

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১১:১৭ পিএম
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় তান্ডব : পুলিশের ৮ গাড়ি ও ১৯ মোটরসাইকেল ভাঙচুর

ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গা উপজেলার দুটি ইউনিয়ন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ-আন্দোলনের অংশ হিসেবে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে থানা, হাইওয়ে থানা ও উপজেলা পরিষদে আগুন-হামলা-ভাঙচুর চালিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, আন্দোলনকারীরা প্রথমে উপজেলা পরিষদের হল রুমে ঢুকে শতাধিক চেয়ার, ১০টি ফ্যান ও ৩৫ টির বেশি লাইট ভাঙচুর করে। এরপর তিনতলা বিশিষ্ট উপজেলা পরিষদ ভবনের প্রতিটি তলায় সাতটি করে মোট ২১টি কক্ষে ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষের কাচ ও আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয়। এসময় উপজেলা পরিষদ চত্বর ও অফিসার্স ক্লাবের গ্যারেজে থাকা সাতটি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া উপজেলা অফিসার্স ক্লাবও ভাঙচুর করা হয়।

এদিকে, ভাঙ্গা থানায় হামলা চালিয়ে পুলিশের তিনটি গাড়ি ও একটি বড় রিজার্ভ ভ্যান ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। থানা চত্তরে থাকা অন্তত চারটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়। থানার ব্যানার ও ভবনের কাচ সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাংচুর করা হয়।

অপরদিকে, ভাঙ্গা হাইওয়ে থানায় আন্দোলনকারীরা ব্যাপক হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে। আন্দোলনকারীরা চারটি পিক-আপ, একটি রেকার, একটি জলকামান গাড়ী, আটটি মোটরসাইকেল, একটি এম্বুলেন্স ও দুইটি আলামতের গাড়ী ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

ভাঙ্গা বাজার ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম জানান, থানা, হাইওয়ে ও উপজেলায় ভাঙচুরের সময় লোকজন হঠাৎ করে রামদা-লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে। ওইসব অস্ত্র দিয়ে তাণ্ডব চালায় এবং পেট্রল দিয়ে মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আর এসব করতে আধা ঘণ্টার মতো সময় লাগে।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. রোকিবুজ্জামান বলেন, হামলা-ভাংচুরের সময় কয়েকজন কনস্টেবলকে কৌশলে থানা থেকে বের করে দেওয়া হয়। আর আমরা কয়েকজন থানার রান্না ঘরের পাশে একটি বাথরুমে আশ্রয় নেই। হামলাকারীরা গাড়ী, মোটরসাইকেলসহ অফিসের ল্যাপটপ, টিভি থেকে শুরু করে এমন কোথাও নেই যে ভাংচুর করতে বাকি রেখেছে। তারপরও বিস্তারিত দেখে পরবর্তীতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের তথ্য জানানো যাবে।

ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মিজানুর রহমান এ ব্যাপারে কোন কথা বলতে রাজি হননি।

প্রসঙ্গত, ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গা উপজেলা থেকে আলগী ও হামিরদী নামে দুটি ইউনিয়ন কেটে নিয়ে ফরিদপুর-২ আসনের নগরকান্দায় সংযুক্ত করার প্রতিবাদে দুই সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করে আসছেন স্থানীয় জনতা। তারা আসনগুলোর পূর্বের অবস্থায় বহাল চান। আন্দোলনের অংশ হিসেবে রোববার থেকে টানা তিন দিন বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সোমবার দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি চলছে। বেলা ১১টা থেকে ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। এরপর ভাঙ্গা উপজেলা সদরে এসে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটানো হয়।