হারিয়ে যাচ্ছে সালথার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

একসময় নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক বস্তু হিসেবে মাটির তৈরি থালা, বাসন, হাড়ি, পাতিল, ঘটি, বাটি, খেলনা ইত্যাদি ব্যবহার করলেও আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিপন্ন হতে বসেছে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প।
আধুনিক যুগের প্লাস্টিক সামগ্রীসহ অন্যান্য জিনিস পত্রের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পারায় এই শিল্পে ধস নেমেছে। সেই সাথে মৃৎশিল্পে জড়িত এ উপজেলার কুমার পরিবারগুলোও আর্থিক সংকটসহ নানা অভাব অনটনে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে মৃৎশিল্প থেকে। মৃৎশিল্পীদের আজ বড়ই দুর্দিন। অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত কুমাররা। যদিও এর উপর নির্ভর করে তিনবেলা ডাল-ভাত জোটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। তবুও জীবন জীবিকার তাগিদে কঠোর পরিশ্রম করে এ উপজেলার অর্ধশত পরিবার এখনও বাপ-দাদার এ পেশাকে আঁকরে ধরে আছেন।
নন্দিনী রানী পাল নামের এক মৃৎশিল্পী বলেন, অন্যান্য জিনিসের চেয়ে এই কাজে প্রচুর শ্রম ও সময় লাগে কিন্তু বিক্রি হয় কম। তিনি আরও বলেন, পরিশ্রমের তুলনায় তেমন অর্থ আসেনা। মাঝেমধ্যে এই পেশা ছেড়ে দিতে মন চায় কিন্তু কী করব?
উপজেলাটির ৭০বছর বয়সী প্রবীণ মৃৎশিল্পী মৌমিতা রানী পাল বলেন, এই কাজ করতে শরীরে প্রচুর শক্তি দরকার, কোমরেও জোর থাকতে হয়। এই কাজ করতে করতে আমার কোমর অচল হয়ে গেছে, তাই আর কাজ করতে পারি না।
কুমার পরিবারগুলোর নেই কোন আধুনিক মেশিন ও সরঞ্জাম। অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য কাজের দিকে চলে যাচ্ছে। তবে সরকারি বা কোনও দাতা সংস্থার পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মৃৎশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে চান এ উপজেলার মৃৎশিল্পীরা।
আপনার মতামত লিখুন
Array