খুঁজুন
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২ পৌষ, ১৪৩২

এ.কে. আজাদের বাড়িতে চড়াও : ফরিদপুরে ১৬ বিএনপি নেতাকর্মীর নামে থানায় অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫, ৮:৫৪ এএম
এ.কে. আজাদের বাড়িতে চড়াও : ফরিদপুরে ১৬ বিএনপি নেতাকর্মীর নামে থানায় অভিযোগ

ফরিদপুরে এ.কে. আজাদের বাড়িতে চড়াওয়ের ঘটনায় মহনগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ (৫৫) সহ ১৬ জন বিএনপির নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে এজাহার দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনাম আরও ২৫/৩০ জনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

শনিবার (০৫ জুলাই) সকালে কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আহাদউজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে শুক্রবার (০৪ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে হামীম গ্রুপের ল্যান্ড কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাফিজুল খান (৪০) বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় এ এজাহারটি জমা দেন।

এজাহারটি গ্রহণ করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ডিউটি কর্মকর্তা এসআই মো. আহাদউজ্জামান বলেন, গত বৃহস্পতিবার এ.কে. আজাদের বাড়িতে সংঘটিত ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বর্তমানে বাইরে আছেন। তিনি (ওসি) এলে বিষয়টি তাকে অবগত করা হবে।

এজাহারে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই ) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তিনি হামীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ.কে. আজাদের শহরের ঝিলটুলীস্থ অফিস কাম বাসভবন কর্মরত ছিলেন।
সে সময় তার সাথে প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. সোলাইমান হোসেন, সিকিউরিটি গার্ড মো. মেহেদী হাসান, কেয়ারটেকার মো. জালাল শেখ, পরিচ্ছন্ন কর্মী আব্দুল হান্নান, গৃহপরিচারিকা মাজেদা বেগম, সিসিটিভি অপারেটর সেলিম হোসেন ও সহকারী শাওন শেখ উপস্থিত ছিলেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, ওই সময়ে একদল উগ্র সন্ত্রাসী হঠাৎ বাড়ির সিকিউরিটি গার্ড মো. মেহেদী হাসানকে খুন জখমের হুমকি দিয়ে এ. কে. আজাদ এর বাসায় প্রবেশ করে ত্রাস সৃষ্টি করে। তারা বাড়ির ভিতর ঢুকে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, তিনি (রাফিজুল) আসামীদের গালাগালী শুনে কক্ষ হতে বের হয়ে উঠানে আসার সাথে সাথে গোলাম মোস্তফা মিরাজ হুমকি দিয়ে বলেন, তোর স্যার এ.কে. আজাদ যেন ফরিদপুর না আসে। যদি আসে তা হলে তাকে হত্যা করে লাশ পদ্মা নদীতে ভাসিয়ে দেব। গোলাম মোস্তফাসহ অন্য আসামীরা আরো হুমকি প্রদান করে যে এ.কে. আজাদ এর বাড়ি, ঘর, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যা আছে আগুন ধরিয়ে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ভস্ম করে দেব । জনসেবা করার স্বাদ মিটিয়ে দেব।

এজাহারে আরও বলা হয়, পরে আসামীরা ‘‘এ.কে. আজাদের চামড়া তুলে নিব আমরা” সহ বিভিন্ন প্রকার প্রাণনাশক ও অরাজক উক্তির স্লোগান দিতে দিতে জনমনে আতঙ্ক ও ত্রাস সৃষ্টি করতে করতে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যায়।

এজাহারে ফরিদপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। এজাহারে অন্য যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শাহরিয়ার হোসেন শিথিল (৩৮), কোতয়ালী থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান চৌধুরী (৫৬), মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান (৫৫), মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম (৪৪), মহানগর ছাত্রদল সহ সভাপতি ক্যাপ্টেন সোহাগ (৪০) প্রমুখ।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল জলিল বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ বলেন, ওই বাড়িতে আওয়ামী লীগের গোপন সভা হচ্ছে এ তথ্য পেয়ে আমরা গিয়েছিলাম। ওখানে আমি নিজে কিংবা আমার সাথে যারা ছিলেন তারা কেউ কোন হুমকি ধমকি দেয়নি। একটি ঢিলও ছোড়া হয়নি। তিনি বলেন, কেউ থানায় অভিযোগ করতেই পারেন, তবে তা তাকে প্রমাণ করতে হবে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, হামীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং দৈনিক সমকাল ও চ্যানেল টুয়েন্টি ফোর এর সত্ত্বাধীকারী এ.কে. আজাদের ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলীস্থ বাস ভবনে চড়াও হয় মহানগর বিএনপি, মহানগর ছাত্রদল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা। ‘এ.কে. আজাদের বাড়িতে গোপন বৈঠক করছে আওয়ামী লীগ’- কথিত এ অভিযোগ এনে ওই বাড়িতে চড়াও হন তারা।

কচুলতায় জেগে উঠছে সম্ভাবনা, বদলাচ্ছে কৃষকের ভাগ্য

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৫৭ এএম
কচুলতায় জেগে উঠছে সম্ভাবনা, বদলাচ্ছে কৃষকের ভাগ্য
কচুলতায় এসেছে কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তনের বার্তা। দেড়শ বিঘা দিগন্তজুড়ে কচুর লতার সফল চাষ মৌলভীবাজার জেলায় সৃষ্টি করেছে নতুন সম্ভাবনা। তুলনামূলক কম খরচ, কম পরিশ্রম এবং বেশি লাভজনক হওয়ায় কচুর লতা চাষে এক ধরনের কৃষি বিপ্লব দেখা যাচ্ছে এ জেলায়।

জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা প্রচলিত অনেক ফসলের তুলনায় বেশি আয়ের আশায় কচুর লতি চাষে ঝুঁকছেন। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি মৌলভীবাজার থেকে প্রতিদিনই লতি পাঠানো হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় তিনশ হেক্টর জমিতে কচুর লতি চাষ হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর, শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের যাত্রাপাশা এবং কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর গ্রামে।

গিয়াসনগর এলাকায় দেখা গেছে, পুরো গ্রামজুড়ে এখন বাণিজ্যিকভাবে লতি চাষ হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, কয়েক বছর আগেও দুই-তিন বিঘা জমিতে বিচ্ছিন্নভাবে লতি চাষ হলেও বর্তমানে তা ব্যাপক বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে। শুধু গিয়াসনগর এলাকাতেই মৌসুমে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে লতির চাষ হচ্ছে।

গিয়াসনগর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, তিনি ২১ শতাংশ জমিতে লতিরাজ বারি কচু–১ রোপণ করেছেন। প্রায় এক মাস ধরে তিনি লতি তুলছেন। প্রতি সপ্তাহে ৭০ থেকে ৭৫ কেজি লতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। মৌসুম যত এগোচ্ছে, দামও বাড়ছে। প্রায় ৩০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে তিনি দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভের আশা করছেন।

একই গ্রামের কৃষক আবদুল আজিজ জানান, তিনি এক কিয়ার জমিতে লতি চাষ করেছেন এবং আরও জমিতে চারা রোপণের পরিকল্পনা করছেন। কৃষক মিলন, কাজিম ও আফাই মিয়াসহ অনেকেই বড় পরিসরে লতি চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলায় কচুর লতি চাষে সফল হয়েছেন বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার। উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামে তার উদ্যোগে লতি চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তার দেখাদেখি স্থানীয় অন্যান্য কৃষকরাও লতি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

এ ছাড়া শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের যাত্রাপাশা গ্রামের এংরাজ মিয়া, রোকন মিয়া, আব্দুল মজিদ ও ইউনুস মিয়া বাণিজ্যিকভাবে কচুর লতি চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছেন।

স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিরোজ কান্তি রায় বলেন, গিয়াসনগর গ্রামে লতি এখন একটি সমৃদ্ধ ফসলে পরিণত হয়েছে। চার-পাঁচ বছর আগে যেখানে দুই-তিন বিঘা জমিতে লতি চাষ হতো, এখন সেখানে মৌসুমে ১৫০ বিঘা জমিতে লতির আবাদ হচ্ছে। সারা বছর ৫০ থেকে ৭০ বিঘা জমিতে লতি চাষ হয়। লতি অত্যন্ত লাভজনক ফসল এবং এতে রোগবালাই তুলনামূলক কম। গ্রামটি যেন এখন ‘লতার গ্রাম’ হয়ে উঠছে।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দিন বলেন, কচুর লতি এ অঞ্চলে একটি দীর্ঘমেয়াদি ও লাভজনক ফসল। অল্প খরচে কৃষকরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। লতি চাষ সম্প্রসারণে কৃষি বিভাগ সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে।

সালথায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কৃষকলীগ নেতা আটক

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:০৯ পিএম
সালথায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কৃষকলীগ নেতা আটক

ফরিদপুরের সালথায় ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামীকে ধরতে গিয়ে খোরশেদ খান (৪৫) নামে এক কৃষক লীগ নেতার হামলার শিকার হয়েছেন পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল। এ ঘটনায় ওই হামলাকারী কৃষকলীগ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আগুলদিয়া মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

খোরশেদ খান গট্টি ইউনিয়নের কৃষকলীগের সহ-সভাপতি ও ওই গ্রামের উচমান খানের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আগুলদিয়া মোড় এলাকায় এক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে ধরতে যায় একদল পুলিশ। এ সময় ওই আসামীকে ধরতে বাধা দেন কৃষক লীগ নেতা খোরশেদ খান। এক পর্যায়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল আহত হন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলু রহমান খান বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামীকে ধরতে গেলে খোরশেদ খান বাধা প্রদান করেন এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল আহত হন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

মহান বিজয় দিবসে চরভদ্রাসনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৬:৩৩ পিএম
মহান বিজয় দিবসে চরভদ্রাসনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা

মহান বিজয় দিবসে ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে চরভদ্রাসন সরকারী কলেজ মাঠে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জালাল উদ্দিন।

সভার শুরুতে উপজেলার প্রায়াত মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

পরে ইউএনও জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) যায়েদ হোছাইন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ ও মো. ফখরুজ্জামান প্রমুখ।