খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ, ১৪৩২

ডাক্তারদের উপঢৌকন বন্ধ হলে ৩০% কমবে ওষুধের দাম

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১০:৫৭ এএম
ডাক্তারদের উপঢৌকন বন্ধ হলে ৩০% কমবে ওষুধের দাম

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। বেলা ১১টা।

বহির্বিভাগের ডাক্তারের কক্ষ থেকে কোনো রোগী বের হলেই তাকে ঘিরে ধরছেন বেশ কয়েকজন মানুষ। হুমড়ি খেয়ে তার হাতের প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন তারা।

 

কথা বলে জানা যায়, তারা ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি। ছবি তোলার কারণ, নিজেদের কোম্পানির ওষুধ চিকিৎসক প্রেসক্রিপশনে লিখেছেন কি না, সেটা যাচাই করে দেখা। প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা সেই ছবি কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও পাঠিয়ে দেন।

কেবল সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালেই নয়, রাজধানীর প্রায় প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তারের কক্ষ থেকে রোগী বের হওয়া মাত্রই প্রেসক্রিপশনের ছবি তোলার দৃশ্য এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। আর এর কারণ হিসেবে জানা যায়, নিজেদের কোম্পানির ওষুধ লেখার জন্য ডাক্তারদের কোম্পানির পক্ষ থেকে নিয়মিত দামি দামি উপহার এবং নগদ টাকাও দেওয়া হয়। এ ছাড়াও দেশে-বিদেশে একক বা দলগতভাবে ভ্রমণ কিংবা সেমিনারে অংশগ্রহণের ব্যবস্থাও করে ওষুধ কোম্পানিগুলো।

একটি মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক পর্যায়ের একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, এখন অধিকাংশ চিকিৎসক ওষুধ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে নানারকম সুবিধা নিয়ে থাকেন। এসব নিয়ে আর কী বলব! যারা এমন করছেন তারা আমাদেরই ছাত্র, ভাই-বন্ধু ও সহকর্মী। আবার সৎ ডাক্তার যে একেবারে নেই, তা নয়। কোনো কোম্পানি নগদ খাম দেয়, কেউ দামি উপহার দেয়, কেউ হয়তো ডাক্তারদের পরিবার-পরিজনদের দেশে-বিদেশে ট্যুরের টাকাও দেয়।

তিনি আরও বলেন, এই যে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এত এত লোকজন লাগিয়ে রেখেছে ওষুধ কোম্পানি, তারা প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলতে থাকে, কোন ডাক্তার কী ওষুধ লিখছে দেখার জন্য। এসবের তো একটা খরচ আছে। সব খরচ কিন্তু ওষুধের মূল্যের সাথেই যুক্ত হয়ে যায়।

গত কয়েক মাস থেকে দেশে ওষুধের দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ থেকে ৯০ শতাংশ। স্বল্প আয়ের মানুষ বাড়তি মূল্যে ওষুধ কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। ওষুধের দাম বৃদ্ধির ফলে জনসাধারণের মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে, ওষুধ কোম্পানি ও চিকিৎসকদের মধ্যে চলা প্রমোশনের নামে অনৈতিক লেনদেন। কারণ, ডাক্তারদের দেওয়া টাকা বা উপহার কোনো কোম্পানিই নিজেদের পকেট থেকে দেয় না। ওষুধের দাম বাড়িয়ে সেই টাকা ক্রেতাদের কাছ থেকেই আদায় করা হয়। ওষুধ কোম্পানিগুলো প্রমোশন কিংবা মার্কেটিংয়ের নামে ডাক্তারদের যে অনৈতিক সুবিধা দেয়, তা বন্ধ করা গেলে বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে ওষুধের দাম অনেকটাই কমানো সম্ভব।

ওষুধের কাঁচামাল ও উৎপাদন খরচ, লেভেলিং-প্যাকেজিং, প্রোমোশন ও মার্কেটিংসহ ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত কোন পর্যায়ে কত টাকা খরচ হয় জানতে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় ওষুধ শিল্পে ৪২ বছরের বেশি কাজের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এ বি এম জামালুদ্দিনের সঙ্গে। বর্তমানে তিনি গণস্বাস্থ্য বেসিক কেমিক্যাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

গণস্বাস্থ্য বেসিক কেমিক্যালের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালনের আগে এ বি এম জামালুদ্দিন ফাইজারের ম্যানেজার পদে ১৩ বছর, রেনেটায় ১৩ বছর, অ্যাক্টিভ ফাইন ক্যামিক্যালসে ১৫ বছর কাজ করেছেন। এ ছাড়াও ওষুধ তৈরির কাঁচামাল বিষয়ক জাতীয় এপিআই (অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্স) পলিসির স্টেকহোল্ডার হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন।

ওষুধের উৎপাদন খরচ প্রসঙ্গে জামালুদ্দিন বলেন, ওষুধের ইন জেনারেল থিউরি হচ্ছে, কস্ট অব গুডস অর্থাৎ উৎপাদন খরচ ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। মার্কেটিং, প্রোমোশন এবং অন্যান্য খরচ আরও ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কোম্পানির মুনাফা। এটা বড় কোম্পানির ক্ষেত্রে, ছোট কোম্পানির মুনাফা আরও বেশি হয়। ডাক্তারদের অনৈতিক সুবিধা না দিলে কোম্পানির মার্কেটিং খরচ ১০ শতাংশে নামিয়া আনা সম্ভব।

প্যারাসিটামল ট্যাবলেট উৎপাদনের খরচ প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, প্রতিটা প্যারাসিটামল ট্যাবলেটে গড়ে ৩০ থেকে ৫০ পয়সা খরচ হয়। এটা বিক্রি করা হচ্ছে ১.২০ টাকায়, মার্কেটিং খরচ বাদে যা থাকে সেটাই লাভ।

এ বি এম জামালুদ্দিন আরও জানান, ডায়াবেটিস রোগে ব্যবহৃত মেটফরমিন ৫০০ মি.গ্রা. এবং ৮৫০ মি.গ্রা. আকারে বাজারে পাওয়া যায়। মেটফরমিন ৮৫০ মি.গ্রা. প্রতিটির উৎপাদন খরচ হয় ৫৫ পয়সা, এর সাথে এক্সিপিয়েন্ট (সহযোগী উপাদান) যোগ করলে মোট খরচ হয় ৭০ থেকে ৮০ পয়সা। প্যাকেজিংসহ এই ওষুধে মোট প্রায় এক টাকা খরচ হয়। এটা প্রতি পিস বিক্রি হয় ছয় টাকায়। এই ছয় টাকার ১৫ শতাংশ জনগণ ভ্যাট হিসেবে দেয়। বাকি পাঁচ টাকার মধ্যে আবার প্রমোশনাল এবং মার্কেটিং বাবদ প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ব্যয় হয়। বাকিটা কোম্পানির লাভ থাকে।

উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় ব্যবহৃত লোসারটান পটাশিয়াম ১০০ মি.গ্রা. প্রতি ট্যাবলেটে উৎপাদন খরচ হয় দশমিক শূন্য ছয় পয়সা। সহযোগী কেমিক্যাল, প্যাকেজিং সব মিলে প্রতি ট্যাবলেটে ১.২৫ টাকার মতো খরচ হয়। এটা কোম্পানি ভেদে বিক্রি করা হয় ১০ থেকে ১২ টাকায়। এর মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মার্কেটিং ও প্রমোশন খরচ।

এ বি এম জামালুদ্দিন বলেন, কোনো ওষুধের গায়ে যদি মূল্য ১০০ টাকা থাকে, সেইখান থেকে সরকার ভ্যাট ১৫ টাকা পায়, ফার্মেসির লাভ থাকে ১৫ টাকা। বাকি ৭০ টাকার মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কাঁচামালসহ উৎপাদন খরচ, এর সাথে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মার্কেটিং ও প্রোমোশন খরচ, বাকিটা কোম্পানির মুনাফা।

তিনি জানান, ওষুধের দাম বাড়ার একটা বড় কারণ; ডাক্তারদের স্পিড মানি, খাম ও উপহার সামগ্রী দেওয়ার মাধ্যমে প্রায় কোম্পানির ৩০ শতাংশ ব্যয় হয়ে যায়। ডাক্তারদের যদি এসব না দিতে হতো তাহলে ওষুধের দাম বর্তমান বাজার মূল্যের থেকে ৩০ শতাংশ কম থাকতো।

ওষুধ কোম্পানির পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের উপহার দেওয়ায় প্রবণতা বন্ধ হলে ওষুধের দাম কমতে পারে কি না জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ সাব্বির হায়দার বাংলানিউজকে বলেন, প্রমোশনের নামে চিকিৎসকদের বিভিন্ন উপহার, টাকা-পয়সা দেওয়াসহ অনৈতিক সব ব্যয় ওষুধের মূল্যের সাথে যুক্ত হয়। সেই মূল্য ভোক্তাকেই পরিশোধ করতে হয়। কোম্পানি অযৌক্তিক এসব ব্যয় কমালে ওষুধের মূল্য বেশ কমে আসবে।

ওষুধ কোম্পানি এবং ডাক্তারদের অনৈতিক সুবিধা আদান-প্রদান বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, এটাকে আমরা বলি অ্যাগ্রেসিভ মার্কেটিং। ওষুধের দাম যদি সরকারের প্রাইসিং ফর্মুলার ভিত্তিতে হয়, তাহলে কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত মূল্য নেওয়ার সুযোগ থাকবে না। অতিরিক্ত মূল্য যখন নিতে পারবে না তখন ওষুধ কোম্পানির সারপ্লাস থেকেই অ্যাগ্রেসিভ মার্কেটিংয়ের খরচ বহন করতে হবে। তখন তারা এই অ্যাগ্রেসিভ মার্কেটিং থেকে সরে আসবে।

তিনি আরও বলেন, এখন যেহেতু কোম্পানি নিজেরাই দাম নির্ধারণ করে, তাই দাম ১০ টাকা বাড়িয়ে দিয়ে সেখান থেকে ডাক্তারকে ৮ টাকা দিলে তো তাদের ক্ষতি নাই। তারা যেহেতু দাম নির্ধারণ করে তাই তারা এটা করতে পারছে। কিন্তু দাম যখন সরকারের অথরিটি নির্ধারণ করবে, তখন এটা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই সমস্ত প্রকার ওষুধের দাম ফর্মুলার ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে হবে। এজন্য একটা জাতীয় ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি তৈরি করতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া) সাবেক উপদেষ্টা এবং স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, ডাক্তারদের যেমন নৈতিকতা মেনে চিকিৎসাসেবা দেওয়া উচিত ঠিক তেমনি ওষুধ কোম্পানিগুলোকেও নৈতিকতার সঙ্গে ব্যবসা করা উচিত। যদি ওষুধ কোম্পানিগুলো নৈতিকতার সঙ্গে ব্যবসা করে এবং ডাক্তারদের কোনোরকম অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা না দেয়, তাহলে ওষুধের দাম অবশ্যই কমে আসতে পারে।

Source: Banglanews24

সালথায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার: মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন!

নুরুল ইসলাম নাহিদ, সালথা:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫, ৪:০২ পিএম
সালথায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার: মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন!

ফরিদপুরের সালথায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের সরকারি ঘর থেকে নাসিমা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বড় খারদিয়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের সরকারি ঘর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

তিনি ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা কাইয়ুম মাতুব্বরের স্ত্রী। তবে ওই গৃহবধুর মৃত্যু নিয়ে এলাকায় নানা প্রশ্ন উঠেছে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা জানান, নাসিমা শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রান্ত। গতকাল বুধবার রাতে নাসিমার সাথে তার স্বামী কাইয়ুমের ঝগড়া হয়। পরে রাতেই নাসিমা শ্বাসকষ্টে মারা যায় বলে আশ্রয়ণ প্রকল্পে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে নাসিমার ছোট ভাই আবুল হাসান শরীফ জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে পুলিশকে জানান তার বোনকে মেরে ফেলা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। তবে নাসিমার স্বামীর দাবি, তিনি শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, খবর পেয়ে বড় খারদিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের সরকারি ঘর থেকে নাসিমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে শ্বাসকষ্টের মারা গেছে বলা হলেও তাদের কথাবার্তায় সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। কেউ বলছে শ্বাসকষ্টে মারা গেছে আবার কেউ বলছে মেরে ফেলা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, যদিও মরদেহের শরীরের আঘাতের কোনো দাগ নেই। আমরা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।

ফরিদপুরে ইজিবাইক চালক হত্যায় পাঁচজনের মৃত্যুদন্ড

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫, ৩:২৯ পিএম
ফরিদপুরে ইজিবাইক চালক হত্যায় পাঁচজনের মৃত্যুদন্ড

ফরিদপুরে শওকত মোল্যা (২০) নামের এক ইজিবাইক চালক হত্যায় পাঁচ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হয়। এই মামলার অপর এক আসামিকে দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে দশ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মো. মাকসুদুর রহমান এ রায় দেন।

দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মো. মেহেদী আবু কাওসার (২৫), মো. জনি মোল্লা (৩০), রাসেল শেখ (২৫), রাজেস রবি দাস (২৯) ও মো. রবিন মোল্লা ওরফে ভিকি (২৫)।

রায়ের সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে উপস্থিত আসামিদের পুলিশ পাহারায় কারাগারে পাঠানো হয়।

এদের মধ্যে মো. রাসেল শেখ পলাতক থাকায় আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। অপর আসামী রাজবাড়ীর মজলিসপুর এলাকার বাদশা শেখকে (৩১) দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে দশ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক।

‎মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর শওকত মোল্যা (২০) নামে এক যুবক নিজ বাড়ি থেকে বিকেলে ইজিবাইক নিয়ে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এরপর তার পরিবার তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পরের দিন সকাল ৭ টার দিকে ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট মোল্যা বাড়ী সড়কের শেষ মাথার বাইপাস রোডের কাছে আবুল হোসেনের ধান ক্ষেতের মধ্যে তার মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে। এরপর তার পিতা আয়নাল শেখ বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

‎এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট চৌধুরীর জাহিদ হাসান (খোকন) জানান, ইজিবাইক ছিনতাই করতে চালককে হত্যার মামলায় দীর্ঘ শুনানী ও স্বাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আদালত ৫ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ ও ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডের আদেশ দেন। এদের মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। তিনি বলেন, এই মামলায় আমরা সর্বোচ্চ রায় পেয়ে সন্তুষ্ট হয়েছি।

ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম স্থবির : সালথায় ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবী মেম্বারদের

সালথা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫, ৭:৩৭ পিএম
ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম স্থবির : সালথায় ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবী মেম্বারদের

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের গাড়ি ভাংচুর মামলা সহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত আসামী সালথা উপজেলার ৪নং ভাওয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক উজ্জমান ফকির মিয়ার অপসারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন একই ইউনিয়নের ইউপি মেম্বাররা।

বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে সালথা প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় ইউপি চেযারম্যানের অপসারণ চেয়ে বক্তব্য রাখেন, ইউপি সদস্য আবু মোল্যা, মো. মামুন সরদার, মাহবুবুর রহমান, আদেল মোল্যা, আবু বক্কার প্রমূখ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বিগত ৭/৮ মাস যাবত সালথা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ৪নং ভাওয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক উজ্জমান ফকির মিয়া বিভিন্ন মামলায় পলাতক রয়েছে। সে ইউনিয়ন পরিষদে না আসায় জনসাধারণ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, স্থবির হয়ে পড়েছে পরিষদের কার্যক্রম। গত ৫ই আগস্টের পর থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন। আমরা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যগণ জনসাধারণের সেবা নিশ্চিত করতে চেয়ারম্যানের অপসারণ চাই।

প্রতিদিনই ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নেওয়ার জন্য এসে চেয়ারম্যানকে না পেয়ে ফিরে যায় অনেক সেবা প্রত্যাশী।

তিনি পরিষদে উপস্থিত না থাকার কারণে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে অপসারণ করে প্যানেল চেয়ারম্যানের মাধ্যমে জনগণের সেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন বক্তারা।

এব্যাপারে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ভাওয়াল ইউপি চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়ার বিরুদ্ধে দুটি মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে। তাকে আটকের অভিযান চলছে।

এবিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, ভাওয়াল ইউপি চেয়ারম্যানের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।