খুঁজুন
সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ, ১৪৩২

ফরিদপুরের মধুমতি নদীতে এক মৎস্যজীবীর বৈঠার আঘাতে নিখোঁজ অপর মৎস্যজীবী 

তৈয়বুর রহমান কিশোর, বোয়ালমারী:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫, ৩:২৬ পিএম
ফরিদপুরের মধুমতি নদীতে এক মৎস্যজীবীর বৈঠার আঘাতে নিখোঁজ অপর মৎস্যজীবী 

ফরিদপুরের মধুমতি নদীতে মাছ ধরার সময় শৌখিন খান (৩৮) নামে এক মৎস্যজীবী প্রতিপক্ষ মৎস্যজীবী জব্বার মোল্যার (৩৭) হাতে থাকা বৈঠার আঘাতে নিখোঁজ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুর ২টা পর্যন্ত নদীতে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল অভিযান চালিয়েও নিখোঁজ মৎস্যজীবী শৌখিনের সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে ঘটনাস্থল এলাকায় গিয়ে জানা গেছে।

এর আগে বুধবার (২৫ জুন) দিবাগত রাত ৩টার দিকে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলা এবং মাগুরা জেলার মহম্মদপুর সীমান্তে মধুমতি নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

নিখোঁজ মৎস্যজীবী শোখিন খান মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের পাল্লা চরপাড়া গ্রামের ছাত্তার খানের ছেলে। সকাল থেকেই নিখোঁজের স্বজনরা ও এলাকাবাসী মধুমতি নদীর বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া ঘাটে আহাজারি করতে দেখা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও নিখোঁজ মৎস্যজীবীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের ন্যায় মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের পাল্লা চরপাড়া গ্রামের ছাত্তার খানের ছেলে মৎস্যজীবী শোখিন খান ও ফরিদপুর জেলার নওপাড়া গ্রামের আহমদ শেখের ছেলে হুমায়ূন শেখ নৌকায় চায়না জাল নিয়ে বুধবার রাত ১০টার দিকে মাছ ধরতে বের হয়। একই সময়ে পাশেই মাছ ধরতেছিল ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার নওপাড়া গ্রামের ছলেমান মোল্লার ছেলে জব্বার মোল্লা (৩৮), রবিউল মোল্লা (৩০) ও একই গ্রামের নৌকা চালক ছলেমানের ছেলে সানি শেখ।
ওইদিন রাত পৌনে ৩টার দিকে বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলার সীমান্তবর্তী চন্ডিবিলা মাঝিপাড়া ঘাট এলাকা দিয়ে মৎস্যজীবী শোখিন খান ও হুমায়ূন শেখ নৌকা নিয়ে ফিরছিলেন। এ সময় অপর মৎস্যজীবী জব্বার মোল্লা (৩৮) ও রবিউল মোল্লা (৩০) শৌখিনদের বলে, আমাদের জালের উপর আসলি কেন? ঘটনার সময় দুই মৎস্যজীবী পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জব্বার মোল্লা শৌখিনের মাথায় বৈঠা দিয়ে আঘাত করলে নদীর পানিতে ডুবে যায়।

খবর পেয়ে ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালিয়েও নিখোঁজ মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করতে পারেনি। সকাল থেকেই নিখোঁজের স্বজনরা ও এলাকাবাসী মধুমতি নদীর বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া ঘাটে আহাজারি করতে দেখা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সৌখিনের সাথে থাকা অপর মৎস্যজীবী হুমায়ুন শেখ জানান, রবিউল ও জব্বারের পেতে রাখা কারেন্ট জালের উপর দিয়ে নৌকা চালানো হয়েছে দাবী করে জব্বার সৌখিনের মাথায় আঘাত করলে সে নদীর মধ্যে পড়ে যায়। তাৎক্ষণিক তাকে পাওয়া না গেলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত তার কোন সন্ধান মেলেনি।

উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি গনি আমিন জানান, আমরা ঘটনাস্থলে এসে জানতে পারি রাতে মাছ মারার সময় এক মৎস্যজীবী অপর মৎস্যজীবীকে আঘাত করলে একজন পানিতে পড়ে নিখোঁজ হন। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে নিখোঁজের সন্ধান পাওয়া যায়নি। অক্সিজেন শেষ হয়ে যাওয়ায় মাঝখানে অভিযান স্থগিত করা হয়। পরে পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়েছে। এখনো ওই ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছে।

ফরিদপুরে কাঁচা রাস্তায় ৬ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫, ২:১১ পিএম
ফরিদপুরে কাঁচা রাস্তায় ৬ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

দেখে বোঝার উপায় নেই, এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন ৬ গ্রামের মানুষ। দেখে মনে হবে ধান চাষাবাদের জন্য কোনো কৃষক তার জমি হালচাষ করে রেখেছেন। আসলে এটা হালচাষের কোনো জমি নয়। এটা ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের টিটা গ্রামের একটি রাস্তা। এ রাস্তা দিয়ে টিটা, টিটা পানাইল, ইকড়াইল, শিকারপুর, মালা ও বড়ভাগসহ অনেক গামের কৃষকরা তাদের ফসলা আনা-নেওয়া করে গ্রামীণ এই রাস্তা দিয়ে। এ সমস্য দীর্ঘদিনের।

বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা রাস্তায় কিছু অংশ ইটের সলিং দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করলেও অবশিষ্ট ৫০০ মিটার রাস্তা নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও কয়েক বছরে পাকা হয়নি এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি। এ জন্য দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হাজারো মানুষ। রাস্তাটি দ্রুত পাকাকরণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

প্রায় ১৩ বছর আগের ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে রাস্তাটি হলেও এখনও পাকাকরণ হয়নি। বৃষ্টির মৌসুমে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। টিটা চরাঞ্চলের একমাত্র যাতায়াতের সড়ক এটি। এই সড়ক দিয়ে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী স্কুল-কলেজে যাতায়াত করে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ে স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারণ মানুষ।

আশপাশের অনন্ত ৬ গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক এই সড়ক দিয়ে তাদের ফসল আনা-নেওয়া করে। এখন চলছে পাট কাটার মৌসুম। সড়ক বেহাল হওয়ার জন্য অনেক কৃষক ক্ষেত থেকে পাট কাটতে পারছে না। সামান্য বৃষ্টি হলে কাদাপানিতে রাস্তা একাকার হয়ে যায়। পানিবন্ধতায় কোথাও কোথাও রাস্তা তলিয়ে কাদায় ভাগাড়ে পরিণত হয়।

টিটা গ্রামের গৃহিনী সেলিনা বেগম জানান, কয়েক দিন রান্না করার গ্যাস ফুরিয়ে গেছে, চাল ও প্রায় শেষের দিকে। এ রাস্তা দিয়ে কোনো ভ্যান চলাচল করতে পারে না। এমনকি পায়ে হেঁটে মানুষ যাতায়াত করতে পারে না। এ জন্য গ্যাসের সিলিন্ডার ক্রয় করতে পারছি না। নানাবিধ সমস্যা হচ্ছে।

স্থানীয় টিটা শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাব্বানী মিয়া জানান, এ বছর বৃষ্টি শুরুতে কাঁচা সড়কটিতে ছোট-বড় গর্ত আর খানাখন্দ হওয়ার পর স্কুলে যেতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছি। এরপর আর এ সড়ক দিয়ে স্কুলে যাওয়ার সাহস পাচ্ছি না। এদিকে আমার পাইভেট পড়া বন্ধ রয়েছে। রাব্বানীর মত এমন অনেক ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী রয়েছে এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় করে।

টিটা গ্রামের কৃষক নাছির মিয়ার প্রায় তিন একর জমিতে রয়েছে পাট। তার ভাষ্য পাট কাটার উপযোগী হয়ে পড়েছে তবে রাস্তার সমস্যার জন্য পাট কাটতে ভয় পাচ্ছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সাইদে পটু মিয়া বলেন, টিটা ভাসমান সেতু পাড় থেকে টিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কটি ইট বিছিয়ে চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। অবশিষ্ট যে অংশ এখনও কাঁচা রয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। তারা ইট বিছিয়ে রাস্তা করে দিবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

টগরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিয়া আসাদুজ্জামান একই কথা বলেছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাগত হোসেন সৈকত বলেন, বৃষ্টি মৌসুমে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির মৌসুম শেষ হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে সরেজমিন গিয়ে দেখে রাস্তাটি সংস্কার করে পাকাকরণের ব্যবস্থা করা হবে।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল ইকবাল জানিয়েছেন সরেজমিন গিয়ে সংশ্লিষ্ট লোকজনের সাথে কথা বলে রাস্তাটি সংস্কার করা হবে।

সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে সালথায় মানববন্ধন 

সালথা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৮:৫১ পিএম
সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে সালথায় মানববন্ধন 

গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ফরিদপুরের সালথায় মানববন্ধন করেছে স্থানীয় সাংবাদিকরা।

শুক্রবার (০৮ আগস্ট ) বিকেলে সালথা প্রেসক্লাবের আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

সালথা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. সেলিম মোল্লার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাহিদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, সালথা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনির মোল্লা, সহ-সভাপতি হারুন-অর-রশীদ, সাইফুল ইসলাম, রেজাউল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক শরিফুল হাসান, দপ্তর সম্পাদক জাকির হোসেন, প্রচার সম্পাদক লাভলু মিয়া, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সম্পাদক পারভেজ মিয়া, সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদক আকাশ সাহা, কার্যনির্বাহী সদস্য এম কিউ হুসাইন বুলবুল, বিডি২৪লাইভ-এর ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি মো. এহসানুল হক মিয়া প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা তুহিন হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন। এসময় বক্তারা বলেন, তুহিন হত্যার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দেশের সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (০৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় কুপিয়ে ও জবাই করে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

বিস্ফোরক মামলা : ভাঙ্গায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

আব্দুল মান্নান, ভাঙ্গা:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৮:৪৭ পিএম
বিস্ফোরক মামলা : ভাঙ্গায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (০৮ আগস্ট) সকালে উপজেলার মালিগ্রাম এলাকায় থেকে ভাঙ্গা থানার একটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে একইদিন দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। তাছাড়া ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে সে কিছুটা গা ডাকা দিয়েছিল। তিনি যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক এমপি মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর আস্তাভাজন ছিলেন।

এবিষয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, শুক্রবার সকালে ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে ভাঙ্গা থানাযর বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।