খুঁজুন
শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ২৩ কার্তিক, ১৪৩২

ফরিদপুরে এমপি প্রার্থীর প্রচারণার গেট-ব্যানার-ফেস্টুন ভাংচুর, প্রতিবাদে ঝাড়ু মিছিল

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ৩:৩২ পিএম
ফরিদপুরে এমপি প্রার্থীর প্রচারণার গেট-ব্যানার-ফেস্টুন ভাংচুর, প্রতিবাদে ঝাড়ু মিছিল

ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসনের স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী মুফতি রায়হান জামিলের নির্বাচনী প্রচারণার গেট, ব্যানার ও ফেস্টুন ভাংচুরের প্রতিবাদে ঝাড়ু মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (০৮ নভেম্বর) দুপুরে চরভদ্রাসন উপজেলা সদরে এ ঝাড়ু মিছিল বের করা হয়।

মিছিলটি উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে বিভিন্ন বয়সের সাধারণ মানুষ, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও যুব সমাজ অংশগ্রহণ করেন।

মিছিলকারীরা অভিযোগ করেন, ‘রায়হান জামিলের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকায় একটি মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে তার প্রচারণা সামগ্রী ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনায় তারা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

এসময় বক্তারা বলেন, “১০ টাকায় ইলিশ মাছ ও ১ টাকা কেজি গরুর মাংস বিতরণ করে সাধারণ মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছেন রায়হান জামিল। তার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে কেউ কেউ নোংরা রাজনীতির আশ্রয় নিয়েছে।”

প্রতিবাদ সভায় রায়হান জামিলের সমর্থকরা প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে দায়ীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

সালথায় আগুনে কৃষকের বসতবাড়ি পুড়ে ছাই

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ২:২৪ পিএম
সালথায় আগুনে কৃষকের বসতবাড়ি পুড়ে ছাই

ফরিদপুরের সালথায় আগুনে এক কৃষকের বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

শনিবার (০৮ নভেম্বর) সকাল ৮ টার দিকে উপজেলার নকুলহাটি গ্রামের কৃষক মো. আজম মোল্যার বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

আগুনে সারাজীবনের কষ্টে অর্জিত সব হারিয়ে পাগলপ্রায় ওই কৃষক পরিবার।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আজম মোল্যা বলেন, আমি সারাজীবন কষ্ট করে টিনের একটি বসতঘর নির্মাণ করেছিলাম। আজ আগুনে আমার সব শেষ হয়ে গেল। বসতঘর, পাট, ধান, পেঁয়াজসহ মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে আমার অন্তত ৬-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

সালথা উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার আব্দুল জলিল বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আমাদের দু’টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়স্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট শার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে। এতে আনুমাণিক ৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে৷

ফরিদপুরের খাল-বিলে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে কচুরিপানার ফুল

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ২:০৬ পিএম
ফরিদপুরের খাল-বিলে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে কচুরিপানার ফুল

আবহমান গ্রাম বাংলার সুপরিচিত একটি জলজ উদ্ভিদ কচুরিপানা। ফসলহীন মাঠজুড়ে, রাস্তার পাশে ডোবা-নালায় জমে থাকা পানিতে এই ফুলের সমাহার দেখা যায়। সবুজের মধ্যে সাদা, হালকা গোলাপী আর বেগুনি রংয়ের অযত্নে বেড়ে ওঠা এ ফুল মুগ্ধতা ছড়ায়। 

তেমনি ফরিদপুরের গ্রাম-গঞ্জের প্রায় প্রতিটি এলাকার খাল-বিল, বাড়ির পাশের ডোবায় ফুটেছে দৃষ্টিনন্দন কচুরিপানা ফুল। কবি গুরুর ভাষায় ‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া-ঘর হতে শুধু দু’পা ফেলিয়া’। সত্যিকার অর্থেই যেখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এমন এক অবহেলিত উদ্ভিদে এত নয়নাভিরাম, মনোমুগ্ধকর, চিত্তাকর্ষক ফুল, যা প্রকৃতি প্রেমীদের বিমুগ্ধ না করে পারে না। প্রতিটি এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন জাতের বিভিন্ন রঙের কচুরি ফুল ফোটে বিভিন্ন ঋতুতে।

তবে এ সময় কচুরিপানার ফুল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সৌন্দর্যের পাপড়ি মেলে ধরা কচুরিপানা ফুলের এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেকেই ছবি তুলছেন, বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা।

ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা জলাশয় থেকে শিশির ভেজা কচুরিপানার ফুল তুলে খেলা করছে। গ্রামের শিশু-কিশোররাও আনন্দ করে তুলে নিয়ে খেলা করছে। কচুরিপানা আপাতদৃষ্টিতে ক্ষতিকর মনে হলেও কৃষিক্ষেত্রে এর যথেষ্ট উপকারিতা রয়েছে। মাটিতে শক্তি যোগাতে ভূমিকা রাখে কচুরিপানা।

কৃষকেরা কচুরিপানা উঠিয়ে জমিতে ফলানো পেঁয়াজের ভূঁই, লালশাকসহ বিভিন্ন সবজি চাষে ব্যবহার করছেন কচুরিপানা। সেই সঙ্গে কচুরিপানা গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কচুরিপানা থেকে এখন তৈরি হচ্ছে জৈব সার।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, “কচুরিপানা গবাদিপশুর উৎকৃষ্ট খাবার, জৈবসার হিসেবে খুবই শক্তিশালী, এটা ব্যবহার করে কৃষকগণ ভাসমান শাক-সবজির চাষ করে থাকে। পুকুর ও বিলে কাপ জাতীয় মাছের বাড়তি খাবার হিসাবে কাজে লাগে, এ জলজ উদ্ভিদকে রোদে শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কচুরিপানা ফুল সব বয়সি মানুষকে আকৃষ্ট ও মুগ্ধ করে।”

ফরিদপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, পুলিশসহ আহত ২৩

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:১৯ পিএম
ফরিদপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, পুলিশসহ আহত ২৩

ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এর ফলে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বোয়ালমারীর ওয়াপদার মোড় এলাকা। সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (০৭ নভেম্বর) বিকেলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষের সময় ওয়াপদার মোড়ের পাশে হারুণ শপিং কমপ্লেক্সে বিএনপির একটি পক্ষের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। আগুন দেওয়া হয় ওই শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থাকা অন্তত ১০টি মোটরসাইকেলে। এছাড়া আশেপাশের দোকানগুলিতে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়।

বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপি কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শামসুদ্দীরন মিয়া ঝুনুর নেতৃত্বে বিভক্ত। এই দুই নেতাই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বোয়ালমারী আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে দল এ আসনে দলীয় মনোনয়ন স্থগিত করে রেখেছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা তিনটার দিকে শামসুদ্দীর মিয়ার সমর্থকরা ওয়াপদার মোড় এলাকায় এবং নাসিরুলের সমর্থকরা প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজ মোড় সমবেত হতে শুরু করেন। সমবেতদের হাতে বাঁশের লাঠির মাথায় ধানের শীষ বাধা ছিল।

বিকাল ৪টার দিকে নাসিরুলের পক্ষের লোকজন মিছিল নিয়ে ওয়াপদার মোড় এলাকার দিকে এগুতে থাকে। ওই সময় শামসুদ্দীনের সমর্থকরা কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের দিকে এগুতে থাকে। বোয়ালমারী পৌরসভার সামনে এলে দুই পক্ষ পরস্পরের প্রতি ইট নিক্ষেপ করতে শুরু করে।

তবে নাসিরুলের সমর্থকরা সংখ্যায় বেশি হওয়ায় শামসুদ্দীনের সমর্থকরা পিছু হটে ওয়াপদার মোড়ে হারুণ শপিং কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থান নেয়।

এসময় বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শিব্বির আহমেদ ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান দুই পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করেন। তবে নাসিরুল  ইসলামের সমর্থকদের হামলায় এক পর্যায়ে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এর পর নাসিরুলের সমর্থকরা হারুণ শপিং কমপ্লেক্সে সামনে থাকা অন্তত ১০টি মোটরসাইলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা ওই ভবনের নিচ তলায় অবস্থিত শামসুদ্দিন মিয়ার কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এছাড়া আশেপাশে বিভিন্ন দোকানে হামলা করে ভাঙচুর করে। এসময় হামলাকারীদের হাতে রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়।

বিকাল পাঁচটা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত নাসিরুলের সমর্থকদের হামলার সময় থানার পুলিশ সদস্যদের এক কোনে অবস্থান নিয়ে আত্মরক্ষা করতে দেখা যায়। দমকল বাহিনীর একটি গাড়ি আগুন নেভাতে এসে হামলার শিকার হয়।

শামসুদ্দীন মিয়া বলেন, “প্রশাসনকে জানিয়ে আমরা ওয়াপদার মোড়ে অনুষ্ঠান করছিলাম। এসময় নাসিরুলের লোকজন আওয়ামী লীগের লোকদের সঙ্গে নিয়ে অতর্কিতে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা ১০টি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে, আমার কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে। আমার ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। কার্যালয়ে থাকা বেগম খালেদা জিয়ার ছবি ভাঙচুর করেছে।”

খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, “আমি ছিলাম মধুখালী। আমাদের লোকজনদের ওপর হামলা করেছে। একজনকে কুপিয়ে জখম করে। ওরা হারুন শপিং কমপ্লেক্সের উপরে উঠে আমার সমর্থদের ওপর ইট ছুড়ে মারলে চার-পাঁচজন কয়েকজন আহত হন। এতে জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শপিং কমপ্লেক্সে হামলা করে।”

বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে অবস্থান নেয়। সেনাবাহিনী আসার পর দমকল বাহিনী পুনরায় ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভায়। সেনাবাহিনী থাকার পরও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর অবস্থা বিরাজ করতে দেখা যায়।

বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে বলেন, “বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে। এসময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। তবে পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”