খুঁজুন
সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

ফরিদপুরে পানিবন্দি স্বপ্ননগর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২৫০ পরিবার

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫, ৬:২০ পিএম
ফরিদপুরে পানিবন্দি স্বপ্ননগর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২৫০ পরিবার

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মধুমতি নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে ‘স্বপ্ননগর আশ্রয়ণ প্রকল্প’ এলাকায় বসবাসরত অন্তত ২৫০ পরিবার প্লাবিত হয়েছে। গত একসপ্তাহ ধরে ওই এলাকার অধিকাংশ ঘর পানিতে প্লাবিত হওয়ায় ঘর ছেড়ে কেউ রাস্তায় কেউ বা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে বসবাসরত সবচেয়ে বেশি সমস্যা পড়েছে বয়স্ক মানুষ ও গৃহপালিত পশুরা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্বপ্ননগর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো নির্মাণ করা জায়গাটি গত ১৫ বছর পূর্বে মধুমতি নদীর পানি প্রবাহ ছিল। পরবর্তীতে সেখানে চর জেগে উঠেছে। জেগে ওঠা চরের মধ্যেই অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২৫০টি ঘর। তবে ঘর গুলো নির্মাণ করার পর থেকে এই বছরই এলাকাটি মধুমতির পানিতে প্লাবিত হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, গত সরকারের আমলে ২০২০-২১ অর্থ বছরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৩ একর জমির ওপর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চরকাতলাসুর গ্রামে নির্মাণ করা হয় টিনসেট ওয়াল বিশিষ্ট ২৫০টি ঘর। এর এই এলাকাটিকে জেলা প্রশাসন ওই সময় ‘স্বপ্ননগর’ আবাসন নামকরণ করা হয়। যাদের জমি নেই, ঘর নেই এমন অসহায় পরিবারগুলোর ঠাঁই মেলে আশ্রয়ণ প্রকল্পে। তবে সরকার ঘোষিত উপহারের এই ঘরগুলো নিচু জায়গায় স্থাপন করাতে সেখানকার বাসিন্দারা পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলফাডাঙ্গা উপজেলার চরকাতলাসুর এলাকায় ‘স্বপ্ননগর’ আশ্রয়ণ প্রকল্পে প্রবেশপথে কোথাও হাঁটু পানি, আবার কোথাও তার চেয়ে বেশি। সারি সারিতে থাকা ঘরগুলির প্রতিটি গলিতেও পানি প্রায় হাঁটু সমান। বেশির ভাগ ঘরের মেঝেতে ঢুকে পড়েছে নোংরা পানি। পানিতে তলিয়ে গেছে রান্না করার চুলা। এছাড়া পানিতে তলিয়ে গেছে টয়লেটের রিং-স্লাব। এতে নোংরা পানির দুর্গন্ধে অসহনীয় হয়ে পড়েছে পরিবেশ। ছোট শিশুরা ঘর থেকে বের হতে পারছে না। সুপেয় পানির অভাব ও নোংরা-দুর্গন্ধযুক্ত পানির স্পর্শে বেড়েছে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের প্রকোপ। একই সঙ্গে দেখা দিয়েছে সাপের উপদ্রব। সেখানে বসবাসরত বাসিন্দারা দিন এনে দিন খায়। পশু পালন, ভ্যানচালানো, কৃষি কাজ, টেইলাসের কাজসহ নানান পেশায় জড়িত তারা। পানিবন্দী হওয়ার কারণে দিন এনে দিন খাওয়া বাসিন্দারা বেকার হয়ে পড়েছে। স্বপ্ননগরের বাসিন্দাদের ঘুম নেই, খাবার নেই, এর মধ্যে আবার সাপের প্রকাপ। প্লাবিত হওয়া ঘরগুলোতে বসবাসকারীদের ঘরে জ্বলছে না তিনবেলা চুলা।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩৪ নম্বর ঘরের বাসিন্দা জবেদা বেগম বলেন, ‘মধুমতি নদীতে সাতবার বাড়ি ভাঙছে। পরে সরকার এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে থাকার জন্য একটা ঘর দিয়েছে। কিন্তু এখানে এসেও চরম বিপাকে পড়েছি। ঘরের মধ্যে পানি। রান্না ঘর তলিয়ে গেছে। ঠিকমতো রান্নাবান্না করতে পারছি না আমরা। রয়েছে আবার অর্থ সংকট। তিনবেলার রান্না করার জায়গায় এক বেলা করে কোন রকম বেঁচে থাকা লাগছে।

পরনের প্যান্ট থোড়া পর্যন্ত ঘুচানো ক্যামেরা হাতে এ প্রতিবেদককে দেখে বন্যার পানিতে প্লাবিত শাহা বেগম (৭০) নামে এক বৃদ্ধা কাঠের তক্তার ওপর ভর করে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। তার কাছে পানি আসাতে কি সমস্যা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘরের ভিতর পানি বাবা, খাতি নতি পাইনে কি করবো?, গরু বাচুর বানতি পাইনে, কামাই না হলে কি খাব মনি কও’। এখন আমাদের খাটের উপর বসে থাকতে হচ্ছে।

স্বপ্ননগরের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম (৫৫) বলেন, পানি হওয়াতে সব জায়গায় তলায় গেছে। ক্ষেত খামারী যা করছিলাম সব পানির নিচে। ‘দিন না খেয়েও যাচ্ছে, তিনবেলার জায়গায় এক বেলা খাচ্ছি, এখন ঘরে খাটের উপর বসে থাকা ছাড়া কোন উপায় নাই’। তবে এর ভিতর কেউ খোঁজ খবর সরকারি ভাবে কেউ নিচ্ছে না।

ভয়ে আতঙ্কিত থাকতে হয় উল্লেখ করে সেলিনা বেগম নামে এক নারী বলেন, ‘কয়েক দিন আগে একটি সাপ দেখতে পেয়ে ভয়ে সবাই আতঙ্কিত হয়ে যায়। সাপ, পোকামাকড়ের ভয়ে রাতে না ঘুমিয়েও চোকির উপর বসে থাকতে হয়।

শিখা বেগম নামে অপর নারী বলেন, ‘টয়লেটের ময়লার রিং পানিতে তলিয়ে গেছে। খুব অসুবিধা হচ্ছে। দুর্গন্ধে ঘরে থাকা যায় না। তাছাড়া রান্নার চুলা পানিতে তলিয়ে গেছে।

দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের শিক্ষার্থী মীম খানম ও ফাতেমা খানম। তারা দুইজন স্থানীয় চর কাতলাসুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। তারা জানায়, ‘আমরা অনেক কষ্ট করে স্কুলে যাই। কোন সময় পানি দিয়ে যাওয়া আসার সময় পড়ে গিয়ে জামা-কাপড় ও বইখাতা ভিজে যায়। এদিকে শিখা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়েডা সামনে এসএসসি পরীক্ষা দিবে। পানির বাড়ার কারণে পড়ালেখায় সমস্যা হয়েছে। প্রায় দুই সপ্তাহ প্রাইভেট পড়তে যেতে পারছে না।

কাঁধে পানি ভর্তি বোতল আর হাতে অপরটি বোতল পানি ভেজা অবস্থায় যাচ্ছিলেন টুকু রানী বিশ্বাস (৬১) নামে একজন নারী। টিউবয়েলও পানিতে তলিয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি জানান, ‘ঘরে পানি, বাইরে পানি, খাটের উপর থাকতে হচ্ছে। এমনকি টিউবয়েল তলায় গেছে। জল খেতে সমস্যা হচ্ছে। গোরস্থানের টিউবয়েল থেকে জল এনে খেতে হচ্ছে। ঘরের সামনে ময়লা নোংরা পানি। রাস্তায় পানি। ময়লা পানিতে হেঁটে সন্তানদের পায়ে ঘা হয়ে গেছে। অনেক দূর থেকে খাবার পানি আনতে হয়।’

চর কাতলাসুর গ্রামের বাসিন্দা ও আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকার মুদিদোকানী ফিরোজ মোল্যা জানান, গত ১০-১৫ বছরের মধ্যে এই এলাকায় এতো বন্যা হয়নি। আমার নিজের ঘরে খাটের উপরও পানি। বউ বাচ্চাদের বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি। দোকানে তেমন বেঁচাকেনা নাই। আমার দোকানেও পানি উঠা উঠা ভাব।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. বিল্লাল মোল্যা বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পে যারা বসবাস করেন তারা খুব দরিদ্র মানুষ। তারা দিন আনে দিন খায়। তারা সকালে কাজে বের হয়, আর সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন। সারাদিন তারা বাইরে থাকেন। কিন্তু এখন তারা ঠিকমতো কাজকর্ম যেতে পারছে না’।

এ ব্যাপারে গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান খান সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ইতোমধ্যে আশ্রায়ণ প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরী করা হয়েছে। দ্রুতই তালিকাটি শেষ করে উপজেলার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেওয়া হবে। তবে সেখানে বসবাসকারীদের খোঁজ খবর রাখছি।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল বলেন, ‘স্বপ্ননগর আশ্রয়ণ প্রকল্পে জলাবদ্ধতার খবর পেয়েছি। মধুমতি নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে সেখানে হাটু সমান পানি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ভুক্তভোগীদের তালিকা করছেন।

তিনি বলেন, স্বপ্ননগরের বাসিন্দা ও মধুমতি নদীর ভাঙনে কবলে পড়া বাসিন্দাদের জন্য ৪ মে. চাল ও নগদ দুই লক্ষ টাকা সরকারি অনুদান পাওয়া গেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ইনশাল্লাহ মঙ্গলবার থেকে চাল ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হবে সংশ্লিষ্ট এলাকায়।

ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি তাবরীজের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:৪৮ পিএম
ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি তাবরীজের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের নীতি-আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি বেনজীর আহমেদ তাবরীজকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে পুনর্বিবেচনা শেষে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে তিনি পুনরায় স্বীয় পদে বহাল হলেন।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন যৌথভাবে ব*হি*ষ্কা*রাদেশ প্র-ত্যা-হারের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন।

কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশক্রমে প্রেরিত এই বার্তায় আরও উল্লেখ করেন যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের স্বাভাবিক কার্যক্রম আরও সুদৃঢ় করতে এবং ভবিষ্যৎ সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখার সুযোগ সৃষ্টি করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফরিদপুরে মন্দিরের জমির বিরোধকে ঘিরে অপপ্রচার, যা বলছে পুলিশ

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:০৩ পিএম
ফরিদপুরে মন্দিরের জমির বিরোধকে ঘিরে অপপ্রচার, যা বলছে পুলিশ

সম্প্রতি ফরিদপুরের সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজব ও অপপ্রচারের অভিযোগে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে পুলিশ।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে ফরিদপুর জেলা পুলিশ এ প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন, ‘সম্প্রতি “HINDUS NEWS” নামক একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে এবং ফেসবুক পেইজে “ফরিদপুরের সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে সংঘর্ষ- পালিয়ে যাচ্ছে হিন্দু পরিবার, টহলে পুলিশ” শিরোনাম একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত সংবাদে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের হরিনা গ্রামে রাধা গোবিন্দ মন্দিরের জমি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের বিষয়কে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে পরিস্থিতি উত্তেজনাকর সহ হামলার পর ভয়-আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এবং চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন অন্তত পাঁচ শতাধিক হিন্দু পরিবার বলে দাবী করা হয়। বিষয়টি ফরিদপুর জেলা পুলিশের নজরে এসেছে। উক্ত ঘটনাটি সম্পর্কে সরেজমিনে তদন্ত এবং প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে জেলা পুলিশ নিশ্চিত করছে যে, ছড়িয়ে পড়া ওই তথ্যটি অতিরঞ্জিত, অসত্য এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে।

প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘হরিনা মৌজার ৫৮৪ নং খতিয়ানের ৪১২/৪১৩ দাগে ৪৬ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন মহাদেব ঘোষ। আনুমানিক ৬/৭ মাস পূর্বে মহাদেব ঘোষ উক্ত জমি স্থানীয় বাবুল বেপারী ও সনাতন ধর্মাবলম্বী সুশান্ত মালো গং-এর নিকট সাব কবলা দলিল মূলে বিক্রি করেন।’

জেলা পুলিশ জানায়, ‘জমি বিক্রির বিষয়টি মহাদেব ঘোষের প্রতিপক্ষ মানিক ঘোষ গং জানতে পারলে তারা দাবি করেন যে, ওই জমিটি সার্বজনীন মন্দিরের। এ নিয়ে বিক্রেতা মহাদেব ঘোষ এবং ক্রেতা সুশান্ত মালো ও বাবুল বেপারী পক্ষের সাথে প্রতিপক্ষ মানিক ঘোষ পক্ষের বিরোধ সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ, বিরোধটি মূলত ‘জমির মালিক/বিক্রেতা ও ক্রেতা’ বনাম ‘প্রতিপক্ষ দাবিদার’-এর মধ্যে, যেখানে উভয় পক্ষেই সনাতন ধর্মাবলম্বী ও মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন জড়িত রয়েছেন।

মারামারি ও পুলিশি পদক্ষেপ:

‘গত ১৬ নভেম্বর ভোরে জমি দখলকে কেন্দ্র করে দু-পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হন। খবর পাওয়া মাত্রই সদরপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উক্ত ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সুশান্ত মালো নামের একজনকে আটক করে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পরবর্তীতে থানা পুলিশ কর্তৃক বাবুল বেপারীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

গুজব নিরসন:

‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত “হামলার ভয়ে ৫ শতাধিক হিন্দু পরিবার গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে” এবং “চরম নিরাপত্তাহীনতা”—এই তথ্যগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন । সরেজমিনে তদন্তে দেখা গেছে, কোনো পরিবার গ্রাম ছেড়ে যায়নি এবং বর্তমানে এলাকাটি পুলিশের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে।’

সতর্কবার্তা:

একটি স্বার্থান্বেষী মহল সাধারণ জমি সংক্রান্ত বিরোধকে ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ হিসেবে চালিয়ে দিয়ে জনমনে ভীতি ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ধরনের উসকানিমূলক পোস্ট শেয়ার করা থেকে বিরত থাকার জন্য সর্বসাধারণকে অনুরোধ করা হলো। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী যেকোনো অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ফরিদপুর জেলা পুলিশ কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

উক্ত ঘটনায় আতঙ্কিত না হয়ে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে।

চরভদ্রাসনের পদ্মা নদীতে অভিযান: ৬ বাঁধ, ২ ভেসাল অপসারণ

আসলাম বেপারী, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:২৩ পিএম
চরভদ্রাসনের পদ্মা নদীতে অভিযান: ৬ বাঁধ, ২ ভেসাল অপসারণ

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে নির্মিত ৬টি আড়াআড়ি বাঁধ এবং ২টি ভেসাল অপসারণসহ ১০টি চায়না দুয়ারি ও ১০ কেজি মাছ জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয়।

উপজেলা মৎস্য দপ্তর জানায়, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ বসিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকার করছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা খাতুনের নির্দেশনায় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাঈম হোসেন বিপ্লবের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে সহযোগিতায় ছিল চরভদ্রাসন থানার চৌকস পুলিশ টিম এবং উপজেলা মৎস্য দপ্তরের সকল কর্মকর্তা–কর্মচারী।

স্থানীয় সূত্র জানায়, দুটি প্রভাবশালী মহলসহ কয়েকটি জেলে গোষ্ঠী নদীতে এসব বাঁধ নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মাছ শিকার করছে। এতে নদীর প্রাকৃতিক প্রজনন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি লক্ষ লক্ষ টাকা অবৈধ আয় করার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযানে পদ্মা নদী থেকে ৬টি আড়াআড়ি বাঁধ ও ২টি ভেসাল অপসারণ করা হয়। এর মধ্যে একটি বাঁধের প্রস্থ ছিল প্রায় ১ কিলোমিটার এবং বাকি ৫টি ছিল ৫০০ মিটার করে, মোট ৩.৫ কিলোমিটার। এছাড়া জব্দ করা হয় ১০টি চায়না দুয়ারি ও ১০ কেজি মাছ। নিষিদ্ধ জাল ও দুয়ারি জনসম্মুখে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় এবং উদ্ধার করা মাছ বাদুল্লা মাতুব্বরের ডাঙ্গী মাদ্রাসায় বিতরণ করা হয়।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাঈম হোসেন বিপ্লব বলেন, পদ্মা নদীর মৎস্য সম্পদ ও প্রজনন রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। নদীতে মাছের অবাধ চলাচল ও প্রজনন নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতেও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে।