ফরিদপুরে শিশু মেয়েকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দিলেন বাবা!
ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বুধবার, ৭ মে, ২০২৫, ১২:০৩ পিএম

ফরিদপুরের নগরকান্দায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে নির্যাতন করে মৌখিকভাবে তালাক দেয়ার পর ৮ মাস বয়সী শিশু মেয়েকে ছিনিয়ে নিয়ে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। ঘটনার পর মা পপি বেগম থানা পুলিশ থেকে শুরু করে আদালতে গিয়েছেন নিজের মেয়েকে ফিরে পেতে। আদালত শিশুটিকে খুঁজে দিতে পুলিশকে নির্দেশ দিলেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে নগরকান্দা উপজেলার ফুলসূতী ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামে।
শিশুটিকে ফিরে পেতে ফরিদপুরের এক নম্বর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন শিশুর মা পপি বেগম। ওই মামলায়- স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস (৪০), তাঁর তিন বোন মিতা আক্তার, বুলি বেগম, সাগরী আক্তারসহ মোট পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
গত ৯ ডিসেম্বর এ মামলাটি দায়ের করা হয়। এর প্রেক্ষিতে আদালত গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য প্রতিবেদনসহ নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)র বরাবর সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন।
জানা যায়, তিন বছর আগে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ভাবড়াশুড় ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের হান্নান সরদারের মেয়ে পপি বেগমের সাথে পাশের ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ফুলসূতি ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামের মানিক বিশ্বাসের ছেলে কাইয়ুম বিশ্বাসের পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। এর মাঝে তাদের একটি মেয়ে শিশুর জন্ম হয়। গত পাঁচ মাস আগে কলহের জের ধরে তালাক হয়।
ভুক্তভোগী পপি বেগম জানান- তালাকের সময় জোর করে তার শিশু তানহাকে রেখে দেয় তার স্বামী। পরে শিশুকে একই উপজেলার শাখরাইল গ্রামের কুবাদ শেখের মেয়ে কহিনুর বেগমের নিকট দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেন। আর এই বিক্রির মধ্যস্থতা করেন নগরকান্দার দলিল লেখক আলমগীর তালুকদার।
পপি বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বাঁচ্চাডারে দেখবার জন্য রাতে ঘুম হয় না, খাবার পারিনা। আমার কলিজাডা শুকায় গেছে। যার কাছে বাঁচ্চা বিক্রি করা হয়েছে তাঁর মায়ের পা পর্যন্ত জড়ায় ধরছি, তবুও দেখতে দেয় নাই।
তবে এ সংক্রান্ত মামলা হওয়ার পর পপি বেগমের স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস আত্মগোপন করেন। তবে কাইয়ুম বিশ্বাসের বোন মিতা আক্তারের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে কল করলে একজন পুরুষ ব্যক্তি কলটি ধরে মিতার স্বামী পরিচয় দেন এবং ব্যস্ত আছেন বলে কেটে দেন।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ সফর আলী জানান, আদালত আমাদের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছে, সে অনুযায়ী কাজ চলছে। কিন্তু অভিযোগে বাঁচ্চাটি বিক্রির যে ঠিকানা দেয়া হয়েছে, সেখানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুটিকে খুঁজে পেলে আদালতে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন
Array