খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫, ২৫ বৈশাখ, ১৪৩২

ফরিদপুরে শিশু মেয়েকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দিলেন বাবা!

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বুধবার, ৭ মে, ২০২৫, ১২:০৩ পিএম
ফরিদপুরে শিশু মেয়েকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দিলেন বাবা!
ফরিদপুরের নগরকান্দায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে নির্যাতন করে মৌখিকভাবে তালাক দেয়ার পর ৮ মাস বয়সী শিশু মেয়েকে ছিনিয়ে নিয়ে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। ঘটনার পর মা পপি বেগম থানা পুলিশ থেকে শুরু করে আদালতে গিয়েছেন নিজের মেয়েকে ফিরে পেতে। আদালত শিশুটিকে খুঁজে দিতে পুলিশকে নির্দেশ দিলেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে নগরকান্দা উপজেলার ফুলসূতী  ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামে।
শিশুটিকে ফিরে পেতে ফরিদপুরের এক নম্বর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন শিশুর মা পপি বেগম। ওই মামলায়- স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস (৪০), তাঁর তিন বোন মিতা আক্তার, বুলি বেগম, সাগরী আক্তারসহ মোট পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
গত ৯ ডিসেম্বর এ মামলাটি দায়ের করা হয়। এর প্রেক্ষিতে আদালত গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য প্রতিবেদনসহ নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)র বরাবর সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন।
জানা যায়, তিন বছর আগে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ভাবড়াশুড় ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের হান্নান সরদারের মেয়ে পপি বেগমের সাথে পাশের ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ফুলসূতি ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামের মানিক বিশ্বাসের ছেলে কাইয়ুম বিশ্বাসের পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। এর মাঝে তাদের একটি মেয়ে শিশুর জন্ম হয়। গত পাঁচ মাস আগে কলহের জের ধরে তালাক হয়।
ভুক্তভোগী পপি বেগম জানান- তালাকের সময় জোর করে তার শিশু তানহাকে রেখে দেয় তার স্বামী। পরে শিশুকে একই উপজেলার শাখরাইল গ্রামের কুবাদ শেখের মেয়ে কহিনুর বেগমের নিকট দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেন। আর এই বিক্রির মধ্যস্থতা করেন নগরকান্দার দলিল লেখক আলমগীর তালুকদার।
পপি বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বাঁচ্চাডারে দেখবার জন্য রাতে ঘুম হয় না, খাবার পারিনা। আমার কলিজাডা শুকায় গেছে। যার কাছে বাঁচ্চা বিক্রি করা হয়েছে তাঁর মায়ের পা পর্যন্ত জড়ায় ধরছি, তবুও দেখতে দেয় নাই।
তবে এ সংক্রান্ত মামলা হওয়ার পর পপি বেগমের স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস আত্মগোপন করেন। তবে কাইয়ুম বিশ্বাসের বোন মিতা আক্তারের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে কল করলে একজন পুরুষ ব্যক্তি কলটি ধরে  মিতার স্বামী পরিচয় দেন এবং ব্যস্ত আছেন বলে কেটে দেন।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ সফর আলী জানান, আদালত আমাদের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছে, সে অনুযায়ী কাজ চলছে। কিন্তু অভিযোগে বাঁচ্চাটি বিক্রির যে ঠিকানা দেয়া হয়েছে, সেখানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুটিকে খুঁজে পেলে আদালতে পাঠিয়ে দেয়া হবে।

সালথায় যুবলীগ নেতার ভাইকে গ্রেপ্তার করায় বিএনপি নেতার ভাইকে হাতুড়িপেটা

সালথা (ফরিদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা:
প্রকাশিত: বুধবার, ৭ মে, ২০২৫, ১২:০৭ পিএম
সালথায় যুবলীগ নেতার ভাইকে গ্রেপ্তার করায় বিএনপি নেতার ভাইকে হাতুড়িপেটা
ফরিদপুরের সালথায় মো. কবির মোল্যা (৩৮) নামে এক ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে গ্রেপ্তারের একঘণ্টা পর তার সমর্থকরা স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার বড় ভাই মো. বাবলু মাতুব্বরকে (৫৫) হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার (০৭ মে) সকালে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (০৬ মে) বিকাল ৪ টার দিকে উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মাঝারদিয়া বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত বাবলু মাঝারদিয়া ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা সলেমান মাতুব্বরের ছেলে ও উপজেলা স্বোচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. হারুন মাতুব্বরের বড় ভাই। এর আগে একইদিন বিকাল ৩টার দিকে ইউপি সদস্য কবির মোল্যাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কবির মাঝারদিয়া গ্রামের আইজদ্দী মোল্যার ছেলে ও  মাঝারদিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মুরাদ মোল্যার ছোট ভাই।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. হারুন মাতুব্ব বলেন, মঙ্গলবার বিকেল ৩ টার দিকে যুবলীগ নেতা মুরাদের ভাই মাঝারদিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কবির মোল্যাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ১০-১২ টি মামলা রয়েছে। ওয়ারেন্টও আছে। যে কারণে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। কবিরকে গ্রেপ্তারের বিষয় আমার ভাই বাবলু কিছুই জানে না। অথচ কবিরকে গ্রেপ্তার করায় তার সমর্থকরা আমার নিরহ ভাইকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।  আমি এর সঠিক বিচার চাই।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, ইউপি সদস্য কবির মোল্যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ১২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় ওয়ারেন্ট রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর হামলার বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সালথায় আমগাছে ঝুলছিল যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫, ৩:৩৯ পিএম
সালথায় আমগাছে ঝুলছিল যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ
ফরিদপুরের সালথায় হাফিজুল রহমান মোল্লা (৩০) নামের এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (০৬ মে) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মুরাটিয়া গ্রামে একটি আম গাছের ডাল থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে সালথা থানা পুলিশ। হাফিজুল ওই গ্রামের ওমর আলী মোল্যার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার সন্ধ্যার পর পরিবারের অজান্তে বাড়ি থেকে বের হয় হাফিজুল। রাতভর তাকে খোঁজাখুঁজির পরও পায়নি তার পরিবার। মঙ্গলবার সকালে মুরাটিয়া গ্রামের বিল্লাল মাতুব্বরের পরিত্যক্ত বাগানের আম গাছের ডালের সাথে হাফিজুল রহমানের মরদেহ দেখতে পায় এক কৃষক। পরে সংবাদ পেয়ে সালথা থানা পুলিশ হাফিজুলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত হাফিজুল মাদকাসক্ত ছিলেন বলে জানান তারা।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, সংবাদ পেয়ে হাফিজুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতপূর্বক ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ফরিদপুরে তীব্র খরায় লিচুর ফলন বিপর্যয়, লোকসানে চাষিরা

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫, ২:৪২ পিএম
ফরিদপুরে তীব্র খরায় লিচুর ফলন বিপর্যয়, লোকসানে চাষিরা
ফরিদপুরে এবার লিচুর ফলন বিপর্যয় ফরিদপুরের মধুখালীতে এবার লিচুর ফলন বিপর্যয় হয়েছে।
ফরিদপুরের মধুখালীতে এবার লিচুর ফলন বিপর্যয় হয়েছে। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ফলন মোটেও ভালো হয়নি। মূলত অনাবৃষ্টি ও টানা তাপপ্রবাহের কারণে এ ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (০৬ এপ্রিল) মধুখালী এলাকার উল্লেখিত এলাকা ঘুরে চাষিদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য উঠে আসে।
চাষিরা জানান, লিচুর ফুল ও মুকুল ঝরে পড়ায় আশানুরূপ ফল আসেনি। আকার ছোট হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে এবছর ফরিদপুরের লিচু বাগান মালিক ও মৌসুমি লিচু ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের লোকসানে পড়তে হচ্ছে। গতবার যে বাগানে সাত লাখ টাকার লিচু বিক্রি হয়েছে, এবার একই বাগানে তিন লাখ টাকার লিচু বিক্রি হবে কি-না আশঙ্কা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার জাহাপুর গ্রামটি লিচুর জন্য বিখ্যাত। অনেকের কাছে এটি ‘লিচু গ্রাম’ নামেও পরিচিত। জাহাপুর গ্রামের প্রায় মানুষেরই লিচুর বাগান রয়েছে। অন্য ফসল উৎপাদন ছেড়ে দিয়ে এ গ্রামের সবাই লিচু চাষে ঝুঁকেছেন। লিচুগাছ-বাগান নেই, এমন একটিও বাড়ি খুঁজে পাওয়া যাবে না। প্রতিটি বাড়ি কিংবা জমিতে রোপণ করা হয়েছে লিচুগাছ। গত ২৫ বছরে এ ইউনিয়নে লিচু চাষ ব্যাপক হারে বেড়েছে।
চাষিরা জানান, দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে লিচু চাষ। কম খরচে অধিক মুনাফার আশায় প্রতি বছরই কৃষকরা ঝুঁকছেন এই চাষাবাদের দিকে। তবে উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের জাহাপুর, দোস্তরদিয়া, টেংরাকান্দি, মনোহরদিয়া, চর মনোহরদিয়া, খাড়াকান্দি ও মির্জাকান্দি গ্রামে ব্যাপকভাবে লিচুর চাষ হয়। মোজাফফরি জাতের পাশাপাশি গুটি, বোম্বাই এবং চায়না-থ্রি জাতের লিচুর চাষ বেশি হয় এসব এলাকায়। তবে এবার চরম ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, মধুখালী উপজেলার প্রায় শতাধিক বাগানে এবছর ৯৫ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে, যার মধ্যে শুধু জাহাপুরেই ৪০ হেক্টর। চলতি মৌসুমে প্রতি হেক্টরে গড় ফলন হয়েছে ৪ দশমিক ১ টন। আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রতি ১০ শতাংশ জমিতে গড়ে ৫-৭টি পূর্ণবয়স্ক লিচুগাছ থেকে প্রায় ২৫-৩০ হাজার টাকার লিচু বিক্রি করা সম্ভব।
এ বিষয়ে মধুখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব এলাহী বলেন, জাহাপুরের লিচু ফরিদপুর ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করা হয়। মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে পুরোদমে লিচু সংগ্রহ শুরু হয় এবং জুনের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে থাকে। এবার অনাবৃষ্টিতে গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়েছে। ফলনও বেশ কম হয়েছে। তবে প্রযুক্তিনির্ভর পরিচর্যা এবং সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে এই ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।