খুঁজুন
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৬ বৈশাখ, ১৪৩২

মধুখালীতে বিধবার সম্পত্তি দখলের অভিযোগ ভাতিজা ও দেবরের বিরুদ্ধে

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫, ১০:৪৫ এএম
মধুখালীতে বিধবার সম্পত্তি দখলের অভিযোগ ভাতিজা ও দেবরের বিরুদ্ধে
চার কন্যা সন্তানের জননী বিধবা সুরাইয়া বেগম (৬০) এর বসতভিটা জবরদখল করে উচ্ছেদ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে আপন দেবর ও ভাতিজার বিরুদ্ধে। কন্যাদের উপরে মারপিট করে শারীরিক ও পাশবিক নির্যাতনের মতোও গর্হিত কাজ করেছে চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার গাজনা ইউনিয়নের আশাপুর গ্রামের ঐতিহ্যবাহি মিয়া বাড়ির ঘটনা এটি।
এ বিষয়ে মধুখালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও এখনও কোন আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
জানা যায়, সুরাইয়া বেগমের স্বামী হামিদুর রহমান মিয়া ২০০৭ সালে মারা যান। হামিদুর রহমান মারা যাওয়ার পর তাদের  কোন পুত্র সন্তান না থাকায় সুরাইয়া বেগমের কাছে আফসা সম্পত্তি দাবী করে ভিটে ছাড়া করার চেষ্টা করেন মৃত হামিদুর রহমানের ছোট ভাই শহিদুর রহমান মিয়া ও আরেক ভাই ফজলুর রহমান মিয়ার ছেলে তাওয়াবুর রহমান বাবু।
এ ঘটনার পর সুরাইয়া বেগম তার শশুর মৃত আব্দুল জলিল মিয়ার জমি-সম্পত্তি বাটোয়ারার আবেদন করেন এবং তার দেবর ও ভাতিজাদেরকে জমিজমা বাগবাটোরে করে দিতে বলেন। এরপর থেকেই শুরু হয় সুরাইয়া বেগম ও তার চার কন্যার উপরে নানা ভাবে নির্যাতন। এমনকি তাদের লাগানো ফসলি জমি থেকেও ফসল তুলতে দেন না তার শরিকেরা।
সর্বশেষ গত ২৫ ফ্রেব্রুয়ারী সুরাইয়া বেগম ও তার কন্যাদের বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেন তাদের চাচাতো ভাই বাবু মিয়া ও তপু মিয়া। তৎক্ষণাৎ নির্যাতনের শিকার সুরাইয়া বেগমের ছোট কন্যা সাজিয়া আফরিন মধুখালি থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও তাওয়াবুর রহমান বাবু বিএনপি নেতা হওয়ায় পুলিশ ভয়তে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে নি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, আশাপুর গ্রামের মিয়া বাড়ির মৃত আব্দুল জলিল মিয়ার চার সন্তানের মধ্যে হাবিবুর রহমান মিয়ার কোন পুত্র সন্তান নেই। ২০০৭ সালে হামিদুর রহমান মিয়া মারা গেলে মুসলিম আইন অনুযায়ী এখন তার জীবি এক চাচা ও অন্যান্য চাচতো ভায়েরা। কিন্তু এই আফসা সম্পত্তির দাবির ছলে চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা বিধবা সুরাইয়া বেগম ও তার কন্যাদের উপর হামলা চালিয়ে বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ চেষ্টা করে।
বিধবা সুরাইয়া বেগম বলেন, আমার চার কন্যা সন্তানের মধ্যে তিন কন্যার বিবাহ হয়ে গেছে। আমি এক কন্যা নিয়ে আমার স্বামীর ভিটায় বসবাস করি। আমার স্বামীর অন্যান্য ভাইয়েরাও পাশাপাশি আলাদা বাড়ি করে বসবাস করে। তাদের সকলের জমি বাটোয়ারা করা। আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর এখন আমাদের ভিটার জমিতে আফছা জমির দাবী করে নির্যাতন চালানো শুরু করে। তারা পাশেই থাকে, আমার ঘরে কোন পুরুষ মানুষ নেই। সারাক্ষণ নিরাপত্তা হীনতায় ভুগি। গত ২৫ তারিখে আমার ছোট কন্যার জামাকাপড় ছিড়ে মারপিট করে। আমার ভাতিজা তাওয়াবুর রহমান বাবু বিএনপি নেতা হওয়ায় পুলিশও কিছু বলে না।
সুরাইয়া বেগমের সেজ কন্যা নুপুর সুলতানা বলেন, মা আর বোন একা বাড়িতে থাকে। কখন কি হয় এ দুশ্চিন্তার থাকি। কয়েকদিন আগে তারা একবার আক্রমণ করে। এজন্য আমি বাড়িতে এসেছি। বাড়ি এসে স্থানীয় গন্যমান্যদের সাথে কথা বলেছি, কেউ কোন কথা বলেন না আমাদের হয়ে। স্থানীয় মেম্বারের সহায়তায় জমির বাটোয়ারা মামলা করতে কাজ শুরু করেছি। মেম্বার মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদের ব্যবস্থা করেছি। সেখানেও তারা বিপত্তি বাধিয়েছে। আমার তৈরি ওয়ারিশ সনদকে ভুল প্রমান করাতে তারা জন্ম তারিখ বাড়িয়ে জন্মসনদ তৈরি করে আমার কাজে ক্ষতি করছে। স্থানীয় মেম্বার নজরুল ইসলাম আমাদের পাশে দাড়ালে তাকেও নানা ভাবে হয়রানি করছে। আমরা আমার বাবার পৈতৃক সম্পত্তি থেকে মুসলিম আইন অনুযায়ী আফসা সম্পত্তি প্রদান করতে চাই। এজন্য বাটোয়া মামলা করে আইনগত ভাবে সমাধান করতে চাই। কিন্তু আমার বাবার সম্পত্তি জোর করে জবরদখল হতে দেবো না।
মিয়া বাড়ির মুরব্বি ও সন্তান লুৎফর রহমান মিয়া বলেন, সুরাইয়া ও তার কন্যাদের উপর অন্যায়ভাবে নির্যাতন করছে তারা। তারা আমার কথা শোনেন না। আমি একাধিকবার বলেছি। বাবু এখন বিএনপি নেতা হওয়ায় সে কাউকে গোনেন না।
গাজনা ইউনিয়নের স্থানীয় মেম্বার নজরুল ইসলাম বলেন, এলাকার কেউ অসহায় বিধবা পরিবারটির পাশে এসে দাড়াতে সাহস পান না বিএনপি নেতা তাওয়াবুর রহমান বাবুর ভয়ে। আমি তাদের বাটোয়ারা মামলা করার বিষয়টি সমাধানের জন্য এগিয়ে যাই। মামলার প্রয়োজনীয় বিষয়ে সহায়তা করি। তাদের দেওয়া তথ্য মতে পরিষদ থেকে ওয়ারিশ সনদ বের করে দেই। এতে বাবু ক্ষিপ্ত হয় আমার উপর। আমার বিরুদ্ধে বাবু মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
গাজনা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো: গোলাম কিবরিয়া বলেন, মৃত হামিদুর রহমানের পরিবারটি একটি অসহায় পরিবার। হামিদুরের ভাই ভাতিজারা তাদের সাথে ভালো আচরণ করছেন না। আমি একাধিক বার তাদের বলেছি। তাদের নিয়ে সালিশও করেছি। কিন্তু দু পক্ষই কেউ কারো কথা শোনেন না।
মৃত হামিদুর রহমানের ভাই শহিদুর রহমান মিয়া বলেন, আমরা আমাদের জমির বাটোয়ারা করায় জন্য প্রায় ১০ বারের বেশি বসা হয়েছে। কেউই কথা শুনতে চায় না। আমার ভাই মৃত হামিদুর রহমানের পরিবার বাটোয়ারা মূলে ৩ একরের বেশি সম্পত্তি পাওয়ার কথা। কিন্তু তারা ভোগদখলে প্রায় সাড়ে ৪ একর জমি ব্যবহার করছে। তারা তা ছাড়তে চায় না। আর তারা অসহায় নয় তারা সবাই স্বাবলম্বী। আমাদের পৈতৃক ভিটায় তাদের জন্য পা রাখতে পারি না। পৈতৃক ভিটায় তো আমাদের ভাগ আছে স্মৃতি আছে। তার মেয়েরা সেখানে গেলে বলে আমাদের কুপায় দেবে। এ কথা শুনে আমার মানবতা থাকে না।
এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) মো: ইমরুল হাসান বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধ বিষয়টি আসলে বিজ্ঞ আদালতের বিষয়, এ বিষয়ে তো সিদ্ধান্ত আদালতের। তবে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা খেয়াল রাখবো।

জামায়াতে ইসলামীর দলীয় প্রচারণা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সালথায় লিফলেট বিতরণ

সালথা (ফরিদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা:
প্রকাশিত: শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৮:২১ পিএম
জামায়াতে ইসলামীর দলীয় প্রচারণা বৃদ্ধি  করার লক্ষ্যে সালথায় লিফলেট বিতরণ
ফরিদপুরের সালথা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৪ টায় সালথা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে সংগঠনের আমির মাওলানা আবুল ফজল মুরাদ এর নেতৃত্বে সালথা বাজারে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল ও সাধারণ জনগণের মাঝে তাদের দলীয় প্রচারণা বৃদ্ধি  করার লক্ষ্যে  লিফলেট বিতরণ করেন।
এ সময় সালথা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মো. তরিকুল ইসলাম , উপজেলা নায়েবে আমির আজিজুর রহমান মজনু, রামকান্তপুর ইউনিয়ন জামায়েত ইসলামীর আমির মো. ফারুক হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সালথা বাজারের ব্যবসায়ী ও জনসাধারণকে  জামায়াতে ইসলামী ও তাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত করেন এবং দলীয় সাংগঠনিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়।

ফরিদপুরে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল দুই অটোভ্যান যাত্রীর

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৮:১৮ পিএম
ফরিদপুরে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল দুই অটোভ্যান যাত্রীর
ফরিদপুরের মধুখালীতে বাসের ধাক্কায় অটোভ্যানের দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
এর আগে একইদিন সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে মধুখালীর মেছোরদিয়া মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, উপজেলার মেছরদিয়া গ্রামের মিঠুন বেপারীর ছেলে মিনহাজ বেপারী (১৫) ও কোটবাড়ির লক্ষণদিয়া গ্রামের মৃত হাসেন মাতুব্বরের ছেলে সোহরাব মাতুব্বর (৪৫)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সকালে উপজেলার মেছোরদিয়া মোড়ে একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান রাস্তা পার হওয়ার সময় খুলনা থেকে ছেড়ে আসা গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি বাস ধাক্কা দিলে ভ্যানে থাকা চালকসহ পাঁচজন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই যাত্রীর মধ্যে একজন ও ঢাকায় নেওয়ার পথে আরেকজন মারা যান।
ফরিদপুরের করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, দুজনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘাতক বাসটি জব্দ করা হয়েছে, তবে চালক ও সহযোগীরা পালিয়ে গেছেন।

ফরিদপুরে ঘরে ঝুলছিল এসএসসি পরীক্ষার্থীর মরদেহ

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৮:০৮ পিএম
ফরিদপুরে ঘরে ঝুলছিল এসএসসি পরীক্ষার্থীর মরদেহ
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় হাসিব মোল্লা (১৮) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে উপজেলার চুমুরদী গ্রামের নিজের ঘর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত হাসিব মোল্লা চুমুরদী গ্রামের মৃত লিটন মোল্লার পুত্র। সে ভাঙ্গা সরকারি পাইলট হাইস্কুলের থেকে এবারে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিল।
নিহতের মা বিউটি বেগম জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে হাসিবকে পড়তে দেখে ঘুমাতে যাই। পরে রাত তিনটার দিকে কোনও শব্দ না পেয়ে রুমে গিয়ে হাসিবকে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। পরে উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি।