খুঁজুন
শনিবার, ৩ মে, ২০২৫, ২০ বৈশাখ, ১৪৩২

সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ভাগিনা ফরিদপুরে গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ১১:৪৯ এএম
সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ভাগিনা ফরিদপুরে গ্রেফতার

আলোচিত সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ভাগিনা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইব্রাহিম শেখ ওরফে কলম মেম্বারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার দুপুরে ফরিদপুর শহরের আদালতপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। দুপুরের পর তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

 

কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ইব্রাহিম শেখ ওরফে কলম মেম্বার আলফাডাঙ্গা উপজেলার কামার গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য।

কোতোয়ালি থানার এসআই ফাহিম ফয়সাল তরফদার বলেন, দুপুর দেড়টার দিকে শহর থেকে ইব্রাহিম শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি থানায় হওয়া দ্রুতবিচার আইনের একটি মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি ইব্রাহিম শেখ ওরফে কলম। এছাড়াও তিনি ঢাকার খিলগাঁওয়ে একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

 

জানা গেছে, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ভাগিনা হওয়ার সুবাদে অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন ইব্রাহিম শেখ ওরফে কলম মেম্বার। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া মৌজায় ইব্রাহিম শেখ কলমের নামে ১৬০ শতাংশ জমি আছে। যার বাজার মূল্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। এই জমির প্রকৃত মালিক সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।

 

এছাড়াও ‘সবুজ ছায়া’ নামে ইব্রাহীম শেখ একটি ঋণদান সংস্থার মালিক। যেখানে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার বিনিয়োগ আছে তার। কিন্তু দৃশ্যত তার কোনো ব্যবসা নেই। সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার অবৈধ অর্থেই এ প্রতিষ্ঠানটি (সবুজ ছায়া) পরিচালিত হতো বলে স্থানীয়রা জানান।

 

আলোচিত ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) গ্রেফতার করে। এরপর থেকেই বিভিন্ন মামলায় কারারুদ্ধ আছেন তিনি। এছাড়া গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আছাদুজ্জামান মিয়ার শ্যালক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হারিচুর রহমান সোহানকে গ্রেফতার করেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।

 

প্রসঙ্গত, আছাদুজ্জামান মিয়া ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিএমপি কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন।

ফরিদপুরের ঈশান গোপালপুর গণহত্যার ৫৪তম বার্ষিকী পালিত

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ৫:৪৪ পিএম
ফরিদপুরের ঈশান গোপালপুর গণহত্যার ৫৪তম বার্ষিকী পালিত
ফরিদপুর সদরের ঈশান গোপালপুর গ্রামের গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২ মে দুপুরের দিকে ঈশান গোপালপুর গ্রামের স্থানীয় ঈশান সরকারের জমিদার বাড়িতে ওই বাড়ির সদস্য, গ্রামবাসী ও আশ্রয় নেওয়া ২৮ ব্যক্তিকে একত্রিত করে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী।
পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ছিলেন, আশুতোষ সরকার, যোগেশ চন্দ্র ঘোশ, গৌরগোপাল ঘোষ, বাবলু ঘোষ প্রমুখ।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ফরিদপুর শহরের সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারের সদস্যরা আত্মরক্ষার জন্য ওই সরকার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পাকিস্তানী বাহিনীর এ গণহত্যায় মদদ দিয়েছিল ওই এলাকাসহ আশেপাশের এলাকার স্বাধীনতা বিরোধীরা। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ২১ এপ্রিল পাকিস্তানী হাদনাদার বাহিনী ফরিদপুরে প্রবেশ করে। ফরিদপুরে প্রবেশের পথে শহরের গোয়ালচামট মহল্লার শ্রীধাম শ্রীঅঙ্গনে কীর্তনরত নয় সাধুকে হত্যা করে।  ২ মে ঈশান গোপালপুর গ্রামের জমিদার বাড়িতে এ হত্যাকান্ড ছিল বৃহত্তর ফরিদপুরের প্রথম পরিকল্পিত গণহত্যা।
হত্যাকান্ডের পর পাকসেনারা চলে যাওয়ার পর এলাকাবাসী সরকার বাড়ির পুকুর পাড়ে ২৮ জনের মৃতদেহ গণসমাধি দেয়।
শহীদ পরিবারের সন্তান বিশিষ্ট বামপন্থী নেতা চিত্ত ঘোষ বলেন, ২০১০ সালের ২মে শহীদ পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে সেখানে ২৮ শহীদের নাম ফলক সহ একটি স্মৃতি ফলক নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালে সরকারের উদ্যোগে গণহত্যার শহীদদের উদ্দেশ্যে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।
এ গণহত্যার স্মরণে শুক্রবার (০২ মে) সকাল ৯টায় সমাধী ফলকের কাছে স্থাপিত মন্দিরে গীতাপাঠ ও নারয়াণ পূজার আয়োজন করা হয়। গীতা পাঠ ও পূজা করেন দীপক ঠাকুর। পরে সম্বলিত সৌধে ফুল অর্পণ করে এবং মোমবাতী প্রজ্জ্বলন করে শহীদদের আত্মার সগতি কামনা করা হয়। বেলা ১১টার দিকে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের মাঝে পূজার প্রসাদ বিতরণ করা হয়। এ সময় শহীদ পরিবারের সদস্য ক্ষিতিশ বিশ্বাস, অভী ঘোষসহ স্থানীয় গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন।

তৃতীয় বিয়ে করায় ফরিদপুরে প্রথম স্বামীর হাতে নারী শ্রমিক হত্যার অভিযোগ 

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ৫:৪১ পিএম
তৃতীয় বিয়ে করায় ফরিদপুরে প্রথম স্বামীর হাতে নারী শ্রমিক হত্যার অভিযোগ 
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ময়না বেগম (৩৫) নামে জুট মিলের এক নারী শ্রমিককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রথম স্বামীর বিরুদ্ধে। বোয়ালমারী উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের মাঝিকান্দিপাড়ার বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (০২ মে) দুপুরে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার ময়নাতদন্ত করা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার (০১ মে) বিকেলে উপজেলার মাঝিকান্দিপাড়া থেকে তার লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ।
নিহত ময়না বেগম ওই গ্রামের ইউনুস শেখের মেয়ে। ১৫ বছর আগে পার্শ্ববর্তী সালথা উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের বলিভদ্রদিয়া গ্রামের শরিফুল ইসলামের সাথে তার প্রথম বিয়ে হয়। দুই মাস পরে বনিবনা না হওয়ায় তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপরে দাদপুর ইউনিয়নের পরমেশ্বরদী গ্রামের শামীম হোসেনের সাথে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। দুই বছর আগে মারা যান শামীম।  এরপর গত রোববার চুয়াডাঙ্গার জামাল হোসেন নামে এক ব্যক্তির সাথে ঘর জামাই থাকার শর্তে পারিবারিকভাবে তার তৃতীয় বিয়ে হয়।
নিহত ময়নার ভাই একরাম শেখ জানান, তৃতীয় বিয়ের খবর জানতে পেরে বুধবার সকালে ময়নাকে দলবল নিয়ে বাড়ি থেকে জোড় করে তুলে নিয়ে নির্যাতন চালায় শরিফুল। এতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতিকালে তার মৃত্যু হয়।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, নিহতের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম ফরিদপুর সফরের শতবর্ষ উদযাপন

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ৫:৩৭ পিএম
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম ফরিদপুর সফরের শতবর্ষ উদযাপন
ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের আয়োজনে পালিত হলো বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম ফরিদপুর সফরের শতবর্ষ উদযাপন।
পহেলা মে সন্ধ্যায় ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর এম এ সামাদ, সভাপতি প্রফেসর আলতাফ হোসেন, ফরিদপুর নজরুল বইয়ের সম্পাদক মফিজ ইমাম মিলন, চলচিত্র পরিচালক তাপস কুমার দত্ত, বাচিক শিল্পি রেজাউল মৃধাসহ বিশিষ্ট জনেরা।
স্বাগত বক্তব্যে মফিজ ইমাম মিলন বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম ফরিদপুরে প্রথম এসেছিলেন ঠিক একশো বছর আগে, আজকের দিনে, অর্থাৎ ১৯২৫ সালের ১ মে তারিখে বঙ্গীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে যোগ দিতে । সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহাত্মা গান্ধী , সরোজিনী নাইডু , হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীসহ বহু নেতা । দুই অধিবেশনেই সভাপতিত্ব করেছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ। তবে তিনি বক্তব্য রেখেছিলেন ২ মে । অনেক স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কবি জসীম উদদীন ।
তিনি বলেন, নজরুল ইসলাম বিভিন্ন সময়ে ফরিদপুরে সভা-সমিতি , সংবর্ধনা , রাজনৈতিক সভা ও নিজ নির্বাচনী কাজে মোট আটবার ফরিদপুর এসেছেন । তাঁর স্মৃতি জড়িত রাজেন্দ্র কলেজ মাঠ , টাউন হল যা পরবর্তীতে অম্বিকা হল / ময়দান , মৃণাল সেনের বাড়ি , হুমায়ুন কবিরের বাড়ি , কবি জসীম উদদীন এর বাড়ি, মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী লাল মিয়া সাহেবদের ‘ ময়েজ মঞ্জিলের পুকুর ঘাটলাসহ অনেক জায়গা থাকলেও নজরুলের নামে কোনো স্মৃতি ফলক বা একটা সাইনবোর্ডও নেই ফরিদপুরে ।
চলচিত্র পরিচালক তাপস কুমার দত্ত বলেন, নজরুল এমন একটি হীরা যা বাঙালির জন্য অমূল্য। নজরুলকে ধারণ করলে আমরা মহিমান্বিত হউ। আমাদের বেশি বেশি নজরুল চর্চা করা উচিৎ।
কবি রাজ্জাক রাজা বলেন, বাংলাদেশে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা বিশাল। তাঁকে দেয়া হয়েছে জাতীয় কবির মর্যাদা। এটি এক বিরল সম্মান।তার কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ।
প্রফেসর আলতাফ হোসেন বলেন , আামাদের বড় দূর্ভগ্য যে কবি নজরুল ফরিদপুরে ৮ বার এসছেন কিন্তু তার নামে কোন স্মৃতিফলক নাই। এমনকি একটি রাস্তার নামকরণও করা হয়নি। নজরুলকে নিয়ে আমরা দিধাবিভক্ত না হই। কবিকে যেন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে পারি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ মজনু, চিত্রশিল্পী সজল বাড়ৈ, শুশিল কুমার সরকার, আমরা করবো জয়ের সাধারণ সম্পাদক শরীফ খান , কণ্ঠশিল্পী সোহান শরিফ প্রমুখ।