খুঁজুন
শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ১৬ কার্তিক, ১৪৩২

সালথায় খাম ছাড়া চিঠি দেওয়ায় মহিলা কর্মকর্তাকে ধমকালেন জামায়াত কর্মী!

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ, ২০২৫, ৮:৩৩ পিএম
সালথায় খাম ছাড়া চিঠি দেওয়ায় মহিলা কর্মকর্তাকে ধমকালেন জামায়াত কর্মী!
আগামী ৮ই মার্চ নারী দিবস উপলক্ষে চিঠি দেওয়াকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের সালথায় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে ধমকিয়েছেন জামায়াতের এক কর্মী।
সালথা উপজেলা জামায়াতের আমির ও সাধারণ সম্পাদককে খাম ছাড়া চিঠি দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে মোবাইলে ফোন দিয়ে ধমকের সুরে নানা ধরনের কথা বলেন ওই জামায়াত কর্মী।
বৃহস্পতিবার (০৬ মার্চ ২০২৫) দুপুর সাড়ে ৩ টার দিকে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা ডলির ব্যবহৃত মোবাইল নম্বারে ফোন দিয়ে এমন কান্ড ঘটান ওয়ালি উজ জামান নামে এক ব্যক্তি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই ব্যক্তি সালথা উপজেলা জামায়াতের একজন সক্রিয় কর্মী। এছাড়া তিনি সালথা বাজারের ব্যবসায়ী ও স্কয়ার প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা।
মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা ডলি বলেন, নারী দিবস উপলক্ষে আমি রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের চিঠি পাঠিয়েছি। জামায়াতের নেতাদের চিঠিটি ইউএনও অফিসের অফিস সহকারী নিতাইয়ের মাধ্যমে জামান সাহেবের দোকানে পাঠানো হয়।
কারণ, আমার অফিসে লোকবল সংকট রয়েছে। ব্যস্ততার কারণে চিঠিটির খাম দেয়া হয়নি। খাম না দেয়ায় ওই অফিস সহকারীকে তাৎক্ষণিক হেনস্তা করে। পরে আমার মোবাইলে ফোন দিয়ে ধমকান যে কেন খাম ছাড়া চিঠি দিলাম।
তাঁদের কথাপোকথনের একটি কলরেকর্ড এ প্রতিবেদকের হাতে আসে। কলরেকর্ডটিতে খাম ছাড়া চিঠি দেয়ায় জামায়াতকর্মীকে উচ্চস্বরে কথা বলতে শোনা যায়। ওই জামায়াত কর্মী জানতে চান, কেন খাম ছাড়া চিঠি দেয়া হয়েছে। এক পর্যায়ে বলেন, ‘কোথায় কি জিনিস পাঠাইতে হয়, কেমনে চিঠিপত্র পাঠাতে হয় বুঝতে পারেন না? রাজনৈতিক নেতাকে চিঠি দিতে হলে খামে ভরে দিতে হয়। খামের টাকা নাই? বরাদ্দের টাকা কোথায় যায়?
তিনি আরও বলেন, ‘টাকা, বিল-ভাউচার ভাল করে খাইয়েন, এতদিন যা খাইছেন এখন বুইজ্যা-শুইন্যা খাইয়েন। তখন মহিলা কর্মকর্তা বলেন, আপনি এসব কি বলছেন। এর উত্তরে জামায়াত কর্মী বলেন, যা বলছি ভাল করেই বলছি। ভদ্রলোকের মতো চিঠি পাঠাবেন। আপনি ইউএনওকে কমপ্লিন করেন যে জামান ভাই ফোন দিয়ে এই কথা বলছে।
মহিলা কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্যে করে ওই জামায়াত কর্মীকে আরও বলতে শোনা যায়, আপনি সংশোধন হয়ে যান। আওয়ামী লীগের সময় অনেক খাইছেন। আওয়ামী লীগের ভয় দেখিয়ে অনেক মানুষকে ল্যাংঠা করছেন আপনি। চেয়ারম্যানদের পর্যন্ত ল্যাংঠা করছেন। আপনি এখন থেকে ভাল হয়ে যান।
এ সময় তিনি ওই মহিলা কর্মকর্তাকে সালথা ছাড়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, সম্ভব না হলে সালথা ছাড়েন। তখন এই কর্মকর্তা বলেন ডিপার্টমেন্টের ইচ্ছায় আমি সালথা থাকতেছি। তখন ওই কর্মী বলেন, ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের, ডিপার্টমেন্ট আপনার বাজানের না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এই জামায়াত কর্মী বলেন, আমি কোনো দলের না। আমার দোকানে উপজেলা জামায়াতের আমীর ও সেক্রেটারীকে চিঠি দেয়ার জন্য এসেছিল। ওই চিঠিতে কোনো খাম ছিল না। পরে আমি একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বিষয়টি জানতে চেয়েছিলাম, এটা ধমক হইলো কিভাবে? কারণ, উনি সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করেছেন। তাছাড়া এই কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের দোসর। আওয়ামী লীগের সময় ক্ষমতা দেখিয়েছে, প্রতিদিন দুপুর ২ টার পর অফিস করতো।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামীর উপজেলা শাখার আমীর আবুল ফজল মুরাদ বলেন, ‘ঘটনাটি ইউএনও আমাকে জানিয়েছেন। উনাকে ধমকায়নি, জানতে চেয়েছিল। তারপরও বিষয়টি নিয়ে বসা হবে। তবে চিঠি দেয়ার একটি ন্যূনতম কার্টেসী থাকা উচিৎ ছিল।’
এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনিছুর রহমান বালি বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে এ বিষয়ে আপাতত কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছিনা।’

চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙনে ৩০ মিটার জিওব্যাগের বাঁধ বিলীন

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৫২ পিএম
চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙনে ৩০ মিটার জিওব্যাগের বাঁধ বিলীন

oplus_0

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের সদর ইউনিয়নের টিলারচর গ্রামে হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে পদ্মা নদীর ভাঙ্গন।

গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে এ ভাঙনে ওই এলাকার নদী পাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিওব্যাগের ডাম্পিং করা প্রায় ত্রিশ মিটার বাঁধ ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

ভাঙন এলাকা হতে প্রায় ৯০ মিটার দূরে রয়েছে এমপি ডাঙ্গী ও জাকেরেরশুরা হয়ে জেলা শহর ফরিদপুরের যাতায়াতের পাকাসড়ক, শতশত বসত বাড়ি ও সরকারী স্কুল।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পদ্মা নদীর পানি কমতে থাকা অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে হঠাৎ করে নদী ভাঙন দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে নদী পাড়ের মানুষ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরজমিনে ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এখানে নদীর তীর রক্ষা স্থায়ী বাঁধের সাথে আপদকালীন সময়ে জিওব্যাগের ডাম্পিং করা বাঁধের বড় একটা অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া কয়েকটি অংশের মাটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে।

ভাঙনের বিষয়ে নদী পাড়ের বসতি শেক মেতালেব (৫৩) ও মো. ইমারত হোসেন (২৫) জানায়, বুধবার সকাল থেকে ওই এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। কিছু সময় পর পর মাটির বড় বড় অংশ পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।

তারা বলেন, দ্রুত ভাঙন রোধে কাজ না করলে বিলীন হয়ে যাবে ফসলি জমি, পাকা সড়ক সহ স্থানীয় শত শত বসত বাড়ি।

ভাঙনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরা খাতুন বলেন, “আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার নিকট থেকে ওই এলাকায় নদী ভাঙনের খবর পেয়েছি। জায়গাটি পরিদর্শন করে দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলব।

ভাঙনের বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, “ টিলারচর গ্রামের কয়েকটি পয়েন্টে আপদকালীন ভাঙন রোধে বর্ষা মৌসুমে জিওব্যাগের ডাম্পিং করা হয়েছিল। ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া ভাঙন রোধে চরভদ্রাসন উপজেলার কয়েকটি পয়েন্ট মিলে ৩.১৫ কি.মি. জায়গায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে রয়েছে বলেও জানান পাউবোর এই নির্বাহী প্রকৌশলী।

ফরিদপুরে কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থামানোর দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৩৬ পিএম
ফরিদপুরে কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থামানোর দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

ফরিদপুর শহরের এডুকেশন জোন খ্যাত বাইতুল আমান কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থামানোর দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন ফরিদপুর রেল স্টেশন পরিদর্শনে আসলে তার কাছে বাইতুল আমান এলাকাবাসী ও আশেপাশে কলেজগুলোতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা তাদের এই দীর্ঘদিনের দাবি তুলে ধরেন এবং স্মারকলিপি প্রদান করেন।

স্মারকলিপি প্রদানের সময় ফরিদপুর কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থামানো দাবি কমিটির সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর সৈয়দ আলাওল হোসেন তনু, ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সৈয়দ আদনান হোসেন অনু, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাহিম, ফরিদপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সভাপতি মো. পার্থ আহমেদ, মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান,মোহাম্মদ রোমন চৌধুরী, মো. আব্দুস সালাম সহ স্থানীয় এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, বাইতুল আমান কলেজগেটে বহু আগে থেকেই রেলের একটি স্টেশন রয়েছে, সেখানে আগে ট্রেন এসে থামতো, অজ্ঞাত কারণে এখন আর এখানে ট্রেন থামে না । এলাকাটি ফরিদপুরের মধ্যে এডুকেশন জোন নামে খ্যাত। যেখানে রয়েছে‌ ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, সরকারি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, ফরিদপুর সরকারি কলেজ, ফরিদপুর সিটি কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ।

সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিলে ৫০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। এই শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের একেক জেলার একেক প্রান্ত থেকে তারা শিক্ষা লাভের জন্য কেউ বাসে, কেউ লঞ্চে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এবং অধিক ভাড়া দিয়ে তারা ফরিদপুর থেকে যাতায়াত করেন। অথচ বায়তুল আমান কলেজগেট স্টেশন থেকে কলেজের কোনোটির দূরত্ব ৪০০ মিটার, ৫০০ মিটার, ৬০০ মিটার। বাইতুল আমান কলেজ গেট স্টেশনে যদি ট্রেন থামানো হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূর হবে তাদের সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্প ভাড়ায় তারা বাড়িতে যাতায়াত করতে পারবে।

এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূর করতে বাইতুল আমান রেলগেট স্টেশনে পুর্বের মতো ট্রেন থামানো নির্দেশনার মতো একটি সুন্দর সিদ্ধান্ত নিতে রেলের মহাপরিচালকের কাছে আবেদন এলাকাবাসী ও প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থীর।

‘আমি এমপি হলে আমার কাছে আসতে কোন নেতা ধরতে হবে না’ — স্থপতি মুজাহিদ বেগ

সোহাগ মাতুব্বর, ভাঙ্গা:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:১৩ পিএম
‘আমি এমপি হলে আমার কাছে আসতে কোন নেতা ধরতে হবে না’ — স্থপতি মুজাহিদ বেগ

‘আমি এমপি হলে আমার কাছে আসতে কোন নেতা ধরতে হবে না। সরাসরি আমার সাথে দেখা করতে পারবেন। কথা বলতে পারবেন বলে মন্তব্য করেছেন ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মো. মুজাহিদ বেগ।’

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের উচাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক উঠান বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মুজাহিদ বেগ বলেন, ‘আমি যদি ফরিদপুর-৪ আসনের এমপি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে আমি আপনাদেরকে নিয়ে এই আসনটি এমনভাবে সাজাবো যাতে বাংলাদেশের মধ্যে রোল মডেল হিসেবে তৈরি হয়।’

এসময় তিনি আরো বলেন, ফরিদপুর-৪ আসনের একটা যুবক ভাই বেকার থাকবে না। যুবক ভাইয়েরা আমার হৃদয়ে আছে। তাদের শিক্ষা নিশ্চিত করা, খেলাধুলা করার সুযোগ তৈরি করার জন্য সব করব।

হাফেজ কুব্বাত মাতুব্বরের সভাপতিত্বে ও সাগর বেগের সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন- হায়দার হোসেন, সোবাহান হোসেন, বাকী মাতুব্বর, সেলিম মাহমুদ, সহিদুল ইসলাম, আল-আমিন, মো. রাসেল মোল্লা ও সৌরভ বিশ্বাস প্রমূখ।