খুঁজুন
শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ৮ কার্তিক, ১৪৩২

সালথার সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫, ৩:০৭ পিএম
সালথার সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ফরিদপুরের সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতুব্বর (৪৮) ও তাঁর স্ত্রী রুমা আক্তারের (৪০) বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার এজাহারে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন, মিথ্যা তথ্য প্রদান ও জ্ঞাত আয়ের থেকে প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকা মূল্যের অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্যের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকালে দুদকের জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রতন কুমার দাশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুর বিজ্ঞ সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন ফরিদপুর দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রতন কুমার দাশ।

জানা যায়, ওয়াদুদ মাতুব্বর সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের কাঠিয়াগট্টি এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে। তিনি পরপর দুইবার সালথা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং সর্বশেষ চেয়ারম্যান পদে থাকাকালীন ২০২৪ সালের আগস্টে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর সরকারের এক ঘোষণায় অপসারিত হোন। বর্তমানে তিনি একটি মামলায় কারাগারে রয়েছেন। তিনি আওয়ামীলীগ নেতা হলেও দলীয় কোনো পদে ছিলেন না এবং ফরিদপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহাদাব আকবর লাবু চৌধুরীর আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এছাড়া তাঁর স্ত্রী রুমা আক্তার পাশ্ববর্তী সিংহপ্রতাপ গ্রামের বাসিন্দা ও আওয়ামীলীগ নেতা ইমামুল হোসেন তারা মিয়ার মেয়ে। স্বামী ওয়াদুদ মাতুব্বর চেয়ারম্যান থাকাকালীন রুমা আক্তারের নামে ঠিকাদারি লাইসেন্স করেন।

জেলা দুদক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, তাঁদের দুজনের বিরুদ্ধে অবেধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে দুদকে অভিযোগ করা হয়। ওই অভিযোগের সূত্র ধরে গত ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর সম্পদ বিবরনী দাখিল করেন এবং ২০২৪ সালের ৬ অক্টোবর অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেন দুদক। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় ওয়াদুদ মাতুব্বর ও তাঁর স্ত্রী রুমা আক্তারের বিরুদ্ধে পৃথক এ মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ওয়াদুদ মাতুব্বর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বিবরনীতে মোট ২৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৮৪ টাকার মূল্যের সম্পদ উল্লেখ করেন। অনুসন্ধানকালে ৮৬ লাখ ৪৯ হাজার ৬৩১ টাকার সম্পদের সন্ধান মিলে। এরমধ্যে ৫৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬৪৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করে সে। অপরদিকে ২০ লক্ষ টাকা ঋণের মিথ্যা তথ্য প্রদান করেন দুদকে। এছাড়া ২০১২-১৩ থেকে ২৩-২৪ অর্থ বছরে আয়কর রিটার্নের তথ্যমতে বৈধ সম্পদের পরিমান ৩১ লাখ ২০ হাজার ১৬৭ টাকার কথা উল্লেখ করেন দুদক।

অপর মামলার এজাহারে বলা হয়, তাঁর স্ত্রী রুমা আক্তার ৭৪ লক্ষ ৪১ হাজার ৮৯৮ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন করে এবং মিথ্য তথ্য প্রদান করে। অনুসন্ধানকালে তাঁর নামে প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য পায় দুদক। যারমধ্যে এক কোটি ১১ লাখ ৮২ হাজার ১৩৭ টাকা অবৈধ সম্পদ জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ। এই সম্পদের মধ্যে ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট এলাকায় একটি ফ্লাটবাসাও তাঁর রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া তাঁর বৈধ আয় ১৯ লক্ষ ৭২ হাজার ৬১৭ টাকা মূল্যের সম্পদের কথা উল্লেখ করেন।

মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে দুদকের জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রতন কুমার দাশ বলেন, “ওয়াদুদ মাতুব্বর ও তাঁর স্ত্রীর এসব সম্পদ অর্জনের বৈধ আয়ের উৎস বা তথ্য পাওয়া যায়নি।”

ইস্কনের দ্বারা গুম-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান তাহাফফুজে দ্বীন পরিষদের

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ৬:২৩ পিএম
ইস্কনের দ্বারা গুম-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান তাহাফফুজে দ্বীন পরিষদের

বাংলাদেশে সম্প্রতি ইসকন কর্তৃক পরিচালিত খুন, গুম এবং মুসলমানদের উপর নির্যাতন ও প্ররোচণামূলক কর্মকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তাহাফফুজে দ্বীন পরিষদ বাংলাদেশ।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে গণমাধ্যম পাঠানো
এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মাদ জাকির হুসাইন ফরিদী এবং মহাসচিব মুফতী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইসকনের নামে দেশে যে ধরনের গুম, খুন এবং উসকানিমূলক ও বিদ্বেষপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, তা বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি, শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

নেতৃদ্বয় বলেন, “আমরা দেশের সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও আলেম সমাজকে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বিশেষ করে, দেশের সব মসজিদের সম্মানিত ইমাম ও খতিবদের প্রতি আমাদের অনুরোধ— ‘আজকের জুমার খুতবায় যেন মুসল্লিদের সামনে ইসকন কর্তৃক পরিচালিত এই সন্ত্রাস ও নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়, যাতে মানুষ সত্যটি জানতে পারে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে।”

সংগঠনটি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলে—
“ধর্মীয় সম্প্রীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার্থে উগ্রবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। ইসকন একের পর এক উসকানিমূলক ও ঘৃণাবাদী জঙ্গি কার্যক্রম চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।”

রাতে বাসর, সকালে সালথায় আখক্ষেতে মিলল বরের ঝুলন্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ৫:৫৮ পিএম
রাতে বাসর, সকালে সালথায় আখক্ষেতে মিলল বরের ঝুলন্ত লাশ

পারিবারিকভাবে হয় বিয়ে। ধুমধামে বরযাত্রী নিয়ে কনেকে আনা হয় বরের বাড়িতে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাতে নবদম্পতিকে পাঠানো হয় বাসরঘরে। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস- সকালেই আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় বরের লাশ পাওয়া যায়।

ঘটনাটি ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের পিসনাইল গ্রামে ঘটে।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে পিসনাইল গ্রামের মাঠে একটি আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় বরের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত বরের নাম মো. জামাল ফকির (২৮)। সে পিসনাইল গ্রামের মো রোজব ফকিরের ছেলে। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জামাল ছিলেন সেজো। তবে বরের এই মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের দাবি, জামাল গলায় গামছা পেঁচিয়ে আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের আড়ার সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। আর স্থানীয়রা বলছেন, আখক্ষেতের বেড়ার ওই বাঁশের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করা অসম্ভব।

বরের পরিবার জানান, গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে পারিবারিকভাবে পাশ্ববর্তী নগরকান্দা উপজেলার পুরাপাড়া ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামের মো. লিটন ভূঁইয়ার মেয়ে রোকেয়া আক্তারকে (২৩) বিয়ে করেন জামাল ফকির। বিকেলে কনেকে নিয়ে বাড়িতে আসেন বর। রাতে নবদম্পতি বাসরঘরে শুয়ে ছিলেন।

শুক্রবার সকালে পিসনাইল গ্রামের মাঠে নিজ বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে একটি আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সাথে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় বর জামালের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান স্থানীয় কৃষকরা। পরে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে লাশটি নামিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

স্থানীয়রা জানান, গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের যেভাবে মরদেহ ঝুলে ছিল, তাতে মনে হয় না সে আত্মহত্যা করেছে। কারণ বাঁশের আড়ার উচ্চতা ছিল ২ থেকে আড়াই ফুট। সেখানে ঝুলে আত্মহত্যা করলে পা মাটিতে মিশে যাবে।

 

নিহত বরের স্ত্রী রোকেয়া বলেন, সকালে মানুষের চিৎকার শুনে দরজা খুলতে গেলে দেখি দরজার বাইরে শিকল লাগানো। পরে প্রতিবেশীরা দরজা খুলে দিলে দেখি আমার স্বামীর লাশ জমির মধ্যে পড়ে আছে।

নিহতের বড় ভাই জালাল ফকির বলেন, আমার ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টি খুবই রহস্যজনক। সে কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা করেনি। ঠিক কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল, বুঝে উঠতে পারছি না।

 

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার ওই ছেলেটি বিয়ে করেন। রাতে বাসর ঘরে নতুন বউকে তিনি শুয়ে ছিলেন। সকালে বাড়ির পাশে একটি আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের আড়া থেকে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান পরিবার। ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ফরিদপুরে বাসের পিছনে ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ২

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৪৩ পিএম
ফরিদপুরে বাসের পিছনে ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ২

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের ভাঙ্গামুখী লেনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসের পেছনে দ্রুতগামী ট্রাকের ধাক্কায় দু’জন নিহত হয়েছেন। এতে কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়।

শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) ভোর রাতে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তারাইল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে শিবচর হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

নিহতরা হলেন, মাগুরার শালিখা উপজেলার ঘোষগাতী গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে মিনহাজুর রহমান সাকিব (২৪) এবং পাবনার বেড়া উপজেলার বনগ্রাম এলাকার জুয়েল রানার স্ত্রী ফারজানা ইয়াসমিন (৩০)।

শিবচর হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সাতক্ষীরাগামী যমুনা লাইন পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো ব-১৫-৯১৪৯) দ্রুতগতিতে চলার সময় প্রথমে অজ্ঞাত একটি গাড়ির পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে বাসটির সামনের অংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্ঘটনার পর যাত্রীরা নেমে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকলে, একই লেনে থাকা ঝিনাইদহগামী একটি ট্রাক (ঝিনাইদহ ট-১১-১৬৬১) এসে বাসটির পেছনে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই পরিবহনের যাত্রী মিনহাজুর রহমান সাকিব নিহত হন এবং অন্তত ৭ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক গুরুতর আহত ফারজানা ইয়াসমিনকে মৃত ঘোষণা করেন।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকিবুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি ভাঙ্গা উপজেলার মধ্য হলেও এটি শিবচর হাইওয়ের এরিয়ার মধ্যে। এ কারণে বিষয়টি শিবচর হাইওয়ের থানা পুলিশ দেখবেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম জানান, ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় দুইজন মারা গেছেন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।