খুঁজুন
শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫, ২৯ কার্তিক, ১৪৩২

ফরিদপুরে হেলিকপ্টারে চড়িয়ে বৃদ্ধ চাচার স্বপ্ন পূরণ করলেন ভাতিজা

মিয়া রাকিবুল, আলফাডাঙ্গা:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫, ৭:৩৩ এএম
ফরিদপুরে হেলিকপ্টারে চড়িয়ে বৃদ্ধ চাচার স্বপ্ন পূরণ করলেন ভাতিজা

বৃদ্ধ চাচার স্বপ্ন ছিল জীবনে একবার হলেও হেলিকপ্টারে চড়বেন। আর সেই স্বপ্নের কথা ভাতিজাকে জানালেন চাচা। সেই স্বপ্ন পূরণ করলেন তার মরিশাস প্রবাসী ভাতিজা মো. আকাশ মিয়া।

সোমবার (২৩ জুন) বিকেলে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা সদরের আরিফুজ্জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে হেলিকপ্টারে চড়িয়ে একমাত্র চাচাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি।

এ সময় এ দৃশ্য দেখতে মাঠে ভিড় করেন আশপাশের শত শত মানুষ। বৃদ্ধ চাচা টুকু মিয়াকে (৬৫) সঙ্গে নিয়ে হেলিকপ্টারে ওঠার আগে প্রবাসী আকাশ মিয়াকে গ্রামের মানুষ ও তার আত্মীয়স্বজনেরা বিদায় দেন।

জানা যায়, আকাশ মিয়া (৩৯) আলফাডাঙ্গা উপজেলার জাটিগ্রাম পশ্চিমপাড়া এলাকার জাকির মিয়ার ছেলে। প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে মরিশাসে প্রবাস জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। ২০ দিন আগে মরিশাস থেকে দেশে ফেরেন তিনি। সোমবার বিকেলে একমাত্র চাচা টুকু মিয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে হেলিকপ্টারযোগে তাকে নিয়ে নিজ উপজেলা থেকে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান। তারপর ওইদিন সাড়ে ৭টায় আবার মরিশাসে ফিরে যান তিনি।

প্রবাসী আকাশ মিয়া বলেন, ‘আমার বাবা ও চাচার স্বপ্ন ছিল তারা হেলিকপ্টারে চড়বেন। তাই গতবার প্রবাস থেকে দেশে এসে বাবাকে হেলিকপ্টারে চড়ানোর স্বপ্ন পূরণ করেছি। এবার দেশে এসে একমাত্র চাচার স্বপ্নও পূরণ করতে পেরে খুব আনন্দ লাগছে।’

জানতে চাইলে প্রবাসী আকাশ মিয়ার চাচা টুকু মিয়া বলেন, ‘আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল হেলিকপ্টারে চড়বো। আমার ভাতিজা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে।’

স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক দশক ধরে সমাজসেবামূলক কাজে জড়িয়ে এলাকার মানুষের নিকট আস্থাভাজন হয়ে উঠেছেন মরিশাস প্রবাসী যুবক আকাশ মিয়া। বিশেষ করে ১০০টি মসজিদ-মাদ্রাসার অবকাঠামো উন্নয়নে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতে বৃহৎ কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছেন। ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক মসজিদ ও মাদ্রাসার অবকাঠামো উন্নয়নে অংশ নিয়ে তা বাস্তবায়ন করেছেন। তিনি নিঃস্বার্থভাবে গরিব মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময়কাল থেকে এলাকার কয়েকশো হতদরিদ্র পরিবারকে প্রতিমাসে চাল বিতরণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। প্রতি ঈদে বস্ত্র, গরুর মাংস ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে অসহায় হতদরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বেশকিছু হতদরিদ্র পরিবারের ঘর নির্মাণ করে প্রশংসায় ভাসছেন এ যুবক। প্রতিমাসে এলাকার দশটি মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় চাল সরবরাহ করে আসছেন তিনি।

আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজালাল আলম বলেন, ‘আজ হেলিকপ্টারে করে আলফাডাঙ্গা থেকে এক প্রবাসী তার চাচাকে নিয়ে ঢাকায় গিয়েছেন। আমার কাছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং যেকোনো দুর্ঘটনা রক্ষার্থে সহযোগিতা চেয়েছে। আমি ওখানে পুলিশ পাঠিয়ে তাঁদেরকে সহযোগিতা করেছি।’

ফরিদপুরে সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল শুরু

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৪:৪৯ পিএম
ফরিদপুরে সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল শুরু
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লকডাউনকে কেন্দ্র করে অবরোধের প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল সোয়া দশটার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ভাঙ্গা-ফরিদপুর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
এর আগে ভোর ছয়টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের শুয়াদী পাম্পের পাশে ও পুখুরিয়া এলাকায় মহাসড়কে গাছ ফেলে এবং টায়ার জ্বালিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা।
যানবাহন চলাচলের বিষয়টি নিশ্চিত করে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রোকিবুজ্জামান বলেন, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ভাঙ্গা উপজেলার শুয়াদী বাসস্ট্যান্ড ও পুখুরিয়া এলাকায় লকডাউনকে কেন্দ্র করে মহাসড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে। সকাল সোয়া দশটার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ভাঙ্গা-ফরিদপুর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এর আগে ভোর ছয়টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার শুয়াদী বাসস্ট্যান্ড ও পুখুরিয়াসহ কয়েকটি স্থানে লকডাউনকে কেন্দ্র করে মহাসড়ক অবরোধ করেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুঁড়ি ফেলে মহাসড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে। এসময় বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মিছিল করতে দেখা যায়।

ফরিদপুরের আলোচিত রোদেলা হত্যা মামলায় স্বামীর ফাঁসি

রেজাউল করিম বিপুল, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৪:৪৪ পিএম
ফরিদপুরের আলোচিত রোদেলা হত্যা মামলায় স্বামীর ফাঁসি

ফরিদপুরে বহুল আলোচিত নববধূ সাজিয়া আফরিন রোদেলা (২০) হত্যা মামলায় ঘাতক স্বামী সোহানুর রহমান সোহানকে (৩৫) মৃত্যুদন্ড দিয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতব দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক। রায়ে মামলার অন্য সব আসামিকে বেকুসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুন্যালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এই রায় দেন।

রায়ে মামলার প্রধান আসামি স্বামী সোহানকে মৃত্যুদন্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমান করা হয়। একই সাথে বিদেশে পলাতক মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি সোহানকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন। অপরাধ প্রমাণিত না
হওয়ায় মামলার অন্য সাতজন আসামিকে বেকুসুর খালাস দেওয়া হয়।

মামলায় খালাস প্রাপ্তরা হলেন, রোদেলার ননদ সুমি বেগম (৪৫), শাশুড়ী আনোয়ারা বোগম (৬০), ভাসুর মো. সুমন (৪৫), ভাসুরের স্ত্রী রেখা বেগম (৩০), শ্বশুর মোমিনুর রহমান (৭০), ননদের স্বামী মো. হাফিজ (৫০), ও সোহানের মামাতো ভাই মো. সাজিদ (৪৫)।

রোদেলা ফরিদপুর শহরের আলিপুর খাঁপাড়া মহল্লার শওকত হোসেন খান ও রুমানা খান দম্পত্তির মেয়ে এবং সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজে ইংরেজি বিষয়ে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

স্ত্রী রোদেলাকে হত্যার পর পরই বিদেশে পালিয়ে যায় সোহান। সেসময় পুলিশ রোদেলার স্বামীকে গ্রেফতার করতে না পারায় সোহানের বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠে ফরিদপুরবাসী। বেশ কয়েকবার মানববন্ধনও পালন করে তার সহপাঠীরা।সামাজিকভাবে ব্যাপক প্রভাব পড়ে এই হত্যা মামলা। দীর্ঘদিন এই নিয়ে শহরে আলোচনা সমলোচনা চললে বিষয়টি আলোচিত হয়।

২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারি ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামটের নতুন বাজার মহল্লার মমিনুর রহমান সেন্টুর ছেলে সোহানুর রহমান সোহানের সঙ্গে রোদেলার বিয়ে হয়। বিয়ের মাত্র দেড় মাসের মাথায় ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বামীর বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৮ ফেব্রুয়ারি ময়নাতদন্ত শেষে রোদেলাকে দাফন করা হয়। ১ মার্চ মা রুমানা
বেগম বাদী হয়ে রোদেলার স্বামী সোহান, শশুর-শাশুড়ী, ননদ-ভাসুর, ভাসুরীরেরমস্ত্রীসহ পরিবারের ৮ জনের নামে কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৪১৭/১৭।

রোদেলার মরদেহের ভিসেরা রিপোর্টে শ্বাসরোধ করে হত্যার আলামত পাওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গাফফার তদন্ত শেষে স্বামী সোহানসহ আটজনের নামে অভিযোগপত্র দেন।

রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবি গোলাম রব্বানী রতন বলেন, আদালেতে স্বাক্ষী প্রমাণে স্বামী সোহান দোষী সাবস্ত হয়েছে এবং আদালত তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ায় আমারা এই রায়ে খুশি। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি সোহান স্ত্রী রোদেলাকে হত্যার পর পরই বিদেশে পালিয়ে যায় বলে জেনেছি। তাই তাকে এখনো গ্রেফতার করা যায়নি। বর্তমানে তিনি সুইডেনে আছে। তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।

ফরিদপুরে মহাসড়কের পাশে থেকে লাগেজভর্তি ৩২টি পেট্রোল বোমা উদ্ধার

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৪:৩৭ পিএম
ফরিদপুরে মহাসড়কের পাশে থেকে লাগেজভর্তি ৩২টি পেট্রোল বোমা উদ্ধার

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় মহাসড়কের পাশে থেকে লাগেজভর্তি ৩২টি পেট্রোল বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ঘোষিত চলমান লকডাউন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নাশকতার উদ্দেশ্যে এসব বোমা সেখানে রাখা হয়েছিল। তবে ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করা যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা–খুলনা মহাসড়কের ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের মুনসুরাবাদ এলাকা থেকে এসব বোমা অবিস্ফোরিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

এর আগে গতকাল বুধবার আজিমনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী টিটু সরদারের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ ককটেল, পেট্রোল বোমা ও বোমা তৈরির উপাদান উদ্ধার করা হয় এবং তিনজনকে আটক করা হয়।

ভাঙ্গা থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে মুনসুরাবাদ এলাকায় নাশকতার প্রস্তুতির খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় দুর্বৃত্তরা টের পেয়ে লাগেজটি ফেলে পালিয়ে যায়। পরে সড়কের পাশ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় কালো রংয়ের লাগেজটি উদ্ধার করা হয়। পরে সেটি খুলে ভেতর ৩২ বোতল পেট্রোল বোমা পাওয়া যায়।সেভেন আপ, পেপসি ও কোকাকোলার কাচের বোতলের ভেতর পেট্রোল দিয়ে এসব বোমা বানানো হয়। তবে ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, সড়কের পাশে ফেলে যাওয়া লাগেজে ৩২ বোতল পেট্রোল বোমা পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়নি, তবে তদন্ত চলছে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।